You dont have javascript enabled! Please enable it!

সাক্ষাৎকারঃ মেজর বজলুল গনি পাটোয়ারী
….১৯৭৩

পাকিস্তানের ঝিলাম থেকে ১৯৭১-এর ২৫-২৬শে জুলাই শিয়ালকোট দিয়ে ভারতের পূর্ব পাঞ্জাব হয়ে কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে আমি পালিয়ে আসি। ভারতে পৌঁছানোর পর ভারতীয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আমাকে ও আমার সঙ্গী আমার সঙ্গীদের নয়াদিল্লী নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ১০ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ৭ই আগস্ট মুজিব নগরে পৌঁছাই। ৮ তারিখে পোষ্টিং হয়ে মেঘলয় সেক্টর ১১-এর প্রথম বেঙ্গলের সহ-অধিনায়ক ও কোম্পানি কমান্ডার হিসাবে কাজে যোগ দিই। আমি ঐ বাহিনীর ‘ডি’কোম্পানির কমান্ডার ছিলাম-যুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত।

আমার প্রথম অপারেশন হয় সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কামালপুর (ময়মনসিংহ) বি-ও-পি’তে। ঐ যুদ্ধে পাক বাহিনীর আনুমানিক ৩০ জন নিহত ও ৩৩ জন আহত হয়। এ সংবাদ স্থানীয় জনগণ কর্তৃক পাওয়া যায়। আমাদের পক্ষের ২ জন শহীদ ও তিনজন আহত আহত হন। ঐ যুদ্ধে পাক বাহিনী থেকে একখানি রাইফেল ও প্রচুর এ্যামুনিশন উদ্ধার করা হয় এবং একজন শত্রুর লাশও উদ্ধার করা হয়। সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে ব্যাটালিয়নকে মুভ করানো হয় ৪ নং সেক্টরে (সিলেটের দিকে)। অক্টোবর মাসে ব্যাটালিয়ন বিভিন্ন স্থানে রেইড ও এ্যামবুশ করে, যেমন-চাবাগান, শ্রীমঙ্গল রেল ষ্টেশন, পাথরখোলা, রাজঘাট, খেজুরীচরা ইত্যাদি স্থানে। পাথরখোলাতে যুদ্ধ করার পর কিছু যুদ্ধবন্দীকে নিয়ে আসা হয় ও কিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

নভেম্বর মাসের ২য় সপ্তাহে সিলেটের জাকিগঞ্জ ও আটগ্রাম রাস্তার দিকে আমার বাহিনী অগ্রসর হতে থাকে। নভেম্বর মাসের ৩য় সপ্তাহে সিলেটের কানাইঘাটের কাছে গৌরীপুরে এসে আমারা অপেক্ষা করি।কানাইঘাট ছিল পাক বাহিনীর ডিফেন্স। সেখানে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে ১২৫ জন পাকসেনা নিহত ও ৬ জন বন্দী হয়। ৪ টি মেশিনগান, ১৫টিএল-এম-জি ও ৩৬/৩৭টি রাইফেল উদ্ধার করা হয়। ঐ যুদ্ধে পাকবাহিনীর মেজর সারওয়ারও (৩১ পাঞ্জাব ব্যাটালিয়ন) নিহত হয়।

আমার বাহিনী ডিসেম্বর মাসের ৯/১০ তারিখে সিলেট এম,সি,কলেজে উপস্থিত হয়। ঐ এলাকায় ৫ দিন যুদ্ধ হয়। আমাদের ১২/১৩ জন নিহত ও ৩৬ জন সৈন্য আহত হন এবং পাকবাহিনীর ২০০-এর মত নিহত হয়। ১৭ই ডিসেম্বর সিলেট জেলায় পাক বাহিনী যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!