সাক্ষাৎকারঃ সুবেদার গোলাম আম্বিয়া
৭ ই জুন এক এমবুশে ৩ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১২ ই জুন সিঙ্গারবিল এলাকায় এমবুশে ১৩ জন পাকসেনা নিহত ও ২ জন আহত হয়। ১৬ ই জুন এক এমবুশে ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২০ শে জুন আর এক এমবুশে ২ জন নিহত হয়। ২৩ শে জুন রাজাপুর ব্রীজ মেরামতকারি দলের উপর আমরা এমবুশ করি। এতে ২/৩ জন সাধারন নাগরিকসহ ২৭ জন মারা যায়। কয়েকজন আহত হয়। ২৪ শে জুন কাশিমপুর এলাকায় এমবুশে ১৭ জন নিহত হয়। ঐ তারিখে রূপা এলাকায় এমবুশে ২৮ জন নিহত হয়। ২৫ জুন কালাছরা চা বাগান এলাকায় আমরা আক্রমন করি। এই আক্রমনে তাদের ৪৪ জন নিহত হয়। ২৬ শে জুন রেইডে ঐ এলাকায় তিনজন নিহত হয়। ২৭ শে জুন আর এক এমবুশে ওদের ১৬ জন নিহত হয়।
২ রা জুলাই রূপা গ্রাম এলাকায় এমবুশে ১৯ জন নিহত হয়। ৪ ঠা জুলাই সিঙ্গারবিল ব্রীজ মেরামত করতে সাধারণ নাগরিকসহ ৩০ জন নিহত হয়। কালাছড়া চা বাগান এলাকায় এক রেইডে ৪ জন নিহত হয়। ১২ জুলাই মেজর খালেদ মোশাররফ আমাকে দুটো প্লাতুন নিয়ে কুলাপাথর যাবার নির্দেশ দেন।
শালদা নদী এলাকায় ক্যাপ্টেন গাফফারের নেতৃত্বে দুটো কোম্পানি ছিল। তাদের শক্তি বৃদ্ধির জন্য আমাকে কুলাপাথরে পাঠান হয়। চট্টগ্রাম আখাউড়া রেলওয়ে যোগাযোগ ব্যাহত করার জন্য আমি এক প্লাতুন নিয়ে কোনাবনে আসি। চাটুয়াখোলা প্লাটুন হেডকোয়ার্টার ছিল। ক্যাপ্টেন গাফফার আমাকে পেয়ে খুব খুশী হন।
১৬ ই জুলাই চাটুয়াখোলা থেকে এক এমবুশে একজন ক্যাপ্টেনসহ ৭ জন পাকসেনা নিহত হয়। আমাদের হাবিলদার তৈয়ব আলী গুলির আঘাতে শহিদ হন।
৯ ই আগস্ট বানিয়ারূপে এমবুশে ১৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১২ ই আগস্ট লক্ষ্মীপুর গ্রাম এলাকায় এমবুশে ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়।
২৪ শে আগস্ট কালামুড়া ব্রীজ ধ্বংস করা হয়। ৭ জন রাজাকারকে রাইফেলসহ ধরা হয়। ২৭ শে আগস্ট পাক দালাল তবদীল হোসেনকে ধরা হয় এবং বিস্ফোরকের সাহায্যে উড়িয়ে দেয়া হয়। সে আশেপাশে ২৯ জন যুবতীকে পাক অফিসারদের সরবরাহ করেছিল। তাকে মেরে তার ছেলেমেয়েদের খবর দেয়া হয়েছিল। তার মেয়ে এসে আমাকে বলে যে যে আমার পিতা নয়। ২৮ শে আগস্ত মাইজবার গ্রামে এক রেইডে ৩৬ জন পাকসেনাকে খতম করা হয়। ২৯ শে আগস্ট একটি রাজাকারকে রাইফেল সহ ধরা হয়।
২২ শে আগস্ট শ্রীপুর এলাকায় এমবুশে ২ জন পাকসেনা খতম হয়। ২৫ শে সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুরে ২ জন খতম করা হয়। ২৭ শে সেপ্টেম্বর ১ জন কে খতম করা হয়। ৯ ই অক্টোবর রেইডে লক্ষ্মীপুর এলাকায় ৪ জন পাকসেনা খতম করা হয়। ১৫০০ এম্যুনিশন, ১২ টা গ্রেনেড, ৬ টা চীনা রাইফেল, ১ টা স্তেনগান উদ্ধার করা হয়। ১০ ই অক্টোবর পানিয়ারুপে ৮ জনকে হত্যা করা হয় রেইড চালানো হয়। একজন সিপাহী মমতাজ শাহাদাত বরন করেন। ১৯ শে অক্টোবর কামালপুর রেইডে ৪ জন নিহত হয়। ২১ শে অক্টোবর কামারপুর এলাকায় ১ জন পাক অফিসার একজন অপারেটরকে হত্যা করা হয়। রেইডে ২৪ শে অক্টোবর কামালপুর এমবুশে ৩ জনকে হত্যা করা হয়। ২৬ শে অক্টোবর কামালপুর এলাকায় ৪ জনকে হত্যা করা হয়। ৩১ শে অক্টোবর লক্ষ্মিপুর এলাকায় ৪ জন রাজাকারকে হত্যা করা হয়।
২ রা নভেম্বর মঈনপুরে ৫ জন পাকসেনা ও ৩ জন রাজাকারকে হত্যা করা হয়। ১১ ই নভেম্বর মইনপুর ও কামালপুরে দুটো অপারেশনে মর্টারের সাহায্যে ১৬ জন পাকসেনা নিহত ও ১২ জন আহত হয়। ২০ শে নভেম্বর লক্ষ্মীপুর ও মইনপুর রেইডে ৬ জন পাকসেনা ও ২ জন রাজাকার নিহত হয়। ২১ শে নভেম্বর লক্ষ্মীপুরে মর্টারের সাহায্যে রেইডে ৭ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১১০০ এম্যুনিশন ও একটি চীনা রাইফেল উদ্ধার করা হয়। ঐদিন ই আমাদের আর্টিলারি ফায়ারে ওদের ১১ জন নিহত হয় মঈনপুর এলাকাতে ২২ শে নভেম্বর তাদের আর্টিলারি ফায়ারে তারু মিয়া আমাদের একজন ইপি আর শাহাদাত বরন করেন।২৪ শে নভেম্বর পানিয়ারুপে এমবুশে ১০ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২৫ শে নভেম্বর লক্ষ্মীপুর এমবুশে ৩ জন নিহত হয়।
১৩ ই ডিসেম্বর ধবম নামক জায়গায় ডিফেন্স করি। ১৪ ই ডিসেম্বর নাজিরহাটে রেইড করা হয়। ১৩ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১৬ ই ডিসেম্বর নাজিরহাট দখল করি এবং পাকসেনারা আত্মসমর্পণ করে।
স্বাক্ষরঃ সুবেদার গোলাম আম্বিয়া ২০-৭-৭৬