শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের প্রশ্নই আসল সমস্যা। সিনেটর মস্কির ৪ দফা প্রস্তাব | প্রেস বিজ্ঞপ্তি | ৭ ডিসেম্বর, ১৯৭১ |
সিনেটর এডমান্ড এস. মস্কি ভারত-পাকিস্তান বিরোধ এর উপর আজ(৭ই ডিসেম্বর) নিম্নোক্ত বিবৃতি জারি করেন।
যুক্ত্রাষ্ট্রের জন্য এটি ভারত পাকিস্তান মধ্যকার যুদ্বের মীমাংসা করার সময় নয়।এই সময় হল যুদ্ব শেষ করতে যুক্ত্ররাষ্টের সাহায্য করার,পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের কষ্টের অবসান ঘটাতে সহায়তা করার,ঐ অঞ্চলের মানুষের জন্য স্থায়ী ও যথাযথ শান্তি প্রতিষ্ঠা করার।
এই কারণে আমি আমাদের সরকারকে তাড়না দিচ্ছি ইউনানেড ন্যাশনের অন্যান্য দেশের সাথে নিম্নোক্ত প্রস্তাবে যুক্ত হও্য়ার জন্যে ঃ
১। অবিলম্বে সকল সীমান্তে যুদ্ববিরতি এবং পশ্চিম সীমান্তে তাদের নিজ নিজ অঞ্চলের মধ্যকার সামরিক বাহিনীর অপসারণ।
২।্পূর্ব বাংলা হতে ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তানের সকল বাহিনীর অপসারণ এবং শৃংখলা বজায় রাখতে,অবিলম্বে ভারত হতে আগত পূর্ব পাকিস্তানী শরনার্থীদের তত্ব্বাবধায়নে রাখতে ও যুদ্বে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের লক্ষ্যে ইউনাইনেড ন্যাশন এর শান্তিরক্ষা বাহিনী দ্বারা এদের প্রতিস্থাপন করা।
৩।পশ্চিম পাকিস্তান এর কতৃপক্ষ হতে শেখ মুজিবর রহমানের মুক্তি এবং ১৯৭০ ডিসেম্বর এর সাংবিধান সভা মোতাবেক মনোনিত পূর্ব পাকিস্তান এর প্রতিনিধি ও অন্যান্য যথাযথ প্রতিনিধির সমন্বয়ে পূর্ব পাকিস্তানের একটি প্রাদেশিক নেতৃ গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করা।
৪।সমতার ভিত্তিতের, দুই সত্ত্বার ভবিষ্যত নেতৃত্বের মধ্যে সম্পর্ক বিস্তারের লক্ষ্যে পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তান এর প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা।বাহিরের কোনো ক্ষমতার হস্তক্ষেপ ছাড়া অবশ্যই একটি চূড়ান্ত রাজনৈতিক নিস্পত্তি অর্জন করা।
পূর্ব পাকিস্তানের উপর পশ্চিম পাকিস্তানের নিপীড়ন সত্ত্বেও পাকিস্তানে অস্ত্র চালান চলমান রাখতে প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে ‘এবসুলেট নিউট্রালিটি’ নীতি বজায় রাখতে দেখা গিয়েছে।
এটি কী ‘এবসুলেট নিউট্রালিটি’ ছিল যখন আমরা পূর্ব বাঙ্গালীদের গণহত্যা সত্ত্বেও পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক সাহায্য বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছিলাম এবং যার ফলাফলে ভারতে ১০ মিলিয়ন শরনার্থী পালিয়েছে ?
“এটি কী ‘এবসুলেট নিউট্রালিটি’ ছিল স্টেট ডীপার্ট্মেন্ট মুখপাত্রের জন্য ভারতকে আগ্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা?
“এটি কী ‘এবসুলেট নিউট্রালিটি’ ছিল পাকিস্তানের সাথে একই রকম সহযোগীতা বন্ধ না করে ভারতের সাথে অর্থনৈতিক অঙ্গীকার প্রত্যাহার করা?
“এটি কী ‘এবসুলেট নিউট্রালিটি’ যখন আমরা অতি সহজেই যুদ্ববিরতির ডাক দিই যেটি পূর্ব বাংলার মানুষদের অত্যাচার করা পাকিস্তানী সৈন্যদের পদাধিষ্ঠিত করবে ?
“পূর্ব বাংলার ভবিষ্যত হল গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা।ওখানে কোন স্থায়ী যুদ্বের পরিসমাপ্তি হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না পূর্ব বাংলার মানুষ তাদের সুনিশ্চিত ও যথাযথ ভবিষ্যত দেখতে পাবে।ভবিষ্যত নির্ধারন আমাদের কাজ নয় কিন্তু আমরা ঐ অঞ্চলের মানুষের সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের মঞ্চ তৈরী করতে সাহায্য করতে পারি।“