You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
নিরাপত্তা পরিষদে সোভিয়েত ভেটোঃ কংগ্রেস সদস্য রেরিক এবং জেরাল্ড ফোর্ড-এর মন্তব্য প্রতিনিধি পরিষদ কার্যবিবরণী ৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১

৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ কংগ্রেশনাল আভ্যন্তরীণ রেকর্ড এইচ ১১৭৮৯

জাতিসংঘের কফিনে আর একটি গজাল

জনাব র‍্যারিকঃ জনাব স্পীকার, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সপ্তাহান্তের কার্যকলাপ সবার চোখ খুলে দিতে পারে যারা কোনভাবে বিশ্বাস করেন যে জাতিসংঘ শুধুমাত্র বিশ্ব শান্তির পাথেয় হিসেবে কাজ করে।

রাশিয়া, দুইবার অস্ত্রবিরতি ও যুদ্ধবিরতির সমাধান কে প্রত্যাখ্যান করার মাধ্যমে এইটাই প্রমাণ করেছে যে তারা বিশ্বের শান্তিতে বিশ্বাস করে না যখন জয় তাদের পক্ষে। বেশ লক্ষণীয় যে, জাতিসংঘের উল্লেখিত পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে মধ্যমপন্থী অস্ত্রবিরতির এবং সীমানা থেকে ফেরত যাওয়ার যে সমাধানের তারা বিরুদ্ধে অবস্থান করছে তার একেবারেই বিপরীতে তারা অবস্থান করছে মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষেত্রে।

যুক্তরাষ্ট্র, যা জাতিসংঘের শান্তিপ্রক্রিয়াকে খর্ব করে তারা প্রথমে কোনো পক্ষকেই সমর্থন দেয় নাই এবং যখন তারা উভয়দিককেই হারানোর ভয় পায় তখন তারা অদ্ভুত যুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তানকে সমর্থন করে আর এই যুক্তি হল তারা যেহেতু ভারতকে সমর্থন করে না সুতরাং পাকিস্তানই তাদের সমর্থনের দাবীদার। যেহেতু সোভিয়েত সবসময় বৃহত্তম জনসংখ্যার সঙ্গে অসমর্থন করে এবং কিছু কারণে সংখ্যালঘু-সচেতন সুতরাং এইরকম আক্রমনাত্মক ঘটনায় কম জনবহুল দেশের প্রতি সোভিয়েত পক্ষাবলম্বন কাউকে অবাক করার কথা নয়।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী এই ব্যাপারে এবং তারা কমিউনিস্ট দলগুলোর দ্বারা বহুল আলোচিত এবং বিতর্কিত কারণ তাদের আঞ্চলিক বিষয়গুলোর সমন্ধে বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তৃতার আড়ালে বহু নিরীহ মানুষ আবার যুদ্ধের ধ্বংসলীলায় প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছিল।

আমি মনে করি যে আমেরিকান মানুষজন রাষ্ট্রপতির উল্লেখিত অবস্থানকে সমর্থন করে একটি সার্বভৌম জাতি হিসেবে চায় যে তাদের ক্ষমতার অন্তর্গত সবকিছু করার হোক, প্রথমত, যুদ্ধ থেকে দূরত্ব বজায় রাখা, এবং দ্বিতীয়ত,কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব বন্ধ করতে চাপ প্রয়োগ।

জাতিসংঘের ব্যর্থতা প্রমাণ করে যে যুক্তরাষ্ট্রের বুঝতে পারা উচিত যে জাতিসংঘের আমলাতন্ত্রের তুলনায় অনেক ভালোভাবে তারা নিজেরাই এই সমস্যার সমাধান অর্জন করতে সক্ষম।

ভারত পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবনা

জনাব জেরাল্ড আর. ফোর্ডঃ জনাব স্পীকার, ঘটনাক্রমে, তখনই ভারত-পাকিস্তান লড়াই তীব্রতর হয় যখন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক গৃহীত যুদ্ধবিরতি এবং দ্বিপাক্ষিক সেনা প্রত্যাহারের প্রচেষ্টা সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়।

জনাব স্পীকার, জাতিসংঘের এখন ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির রুপরেখা পরিচালনার দায়িত্ব নিরাপত্তা পরিষদ থেকে সরিয়ে সাধারন সভার নিকট হস্তান্তর করা আবশ্যক। একমাত্র সেখানেই বিশ্বের শান্তিকামী জাতিরা তাদের ইচ্ছার বাস্তবায়ন ঘটাতে পারবে।

যদি এই প্রাণসংহারক যুদ্ধ থামাতে হয়, তবে অবশ্যই ভারত এবং পাকিস্তানকে তাদের সৈন্যবাহিনী প্রত্যাহার করে নিজ নিজ এলাকায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। মোটকথা, জাতিসংঘে প্রবর্তিত যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবনার বিধানগুলো আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। সোভিয়েতের ভেটো উদ্ভূত পরিস্থিতিকে পরিবর্তন করতে পারেনা। পারে শুধুমাত্র যুদ্ধ বন্ধ করে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যকার কোন রাজনৈতিক মীমাংসা।

জনাব স্পীকার, অপেক্ষমান বৈদেশিক সহায়তা বিলে ভারতের জন্য ৮৪,৩৫০,০০০ ডলার মূল্যের আর্থিক সাহায্য বরাদ্দ আছে। আমি নিশ্চিত ভারত তার নিজসৃষ্ট সমস্যা মোকাবেলায় সাহায্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিকট আবেদন করবে। আমি বিশ্বাস করিনা যে, আমেরিকার জনগণ এবং তাদের কংগ্রেস প্রতিনিধিরা এধরনের আবেদন গ্রাহ্য করবে যা পাকিস্তানকে দ্বিখণ্ডিত করার প্রয়াসে ভারতের সৈন্য নিযুক্তকরনে সহায়তা করবে। অর্থাৎ, যে দেশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে সহযোগীতা করতে অস্বীকৃতি জানায়, সে দেশ আমেরিকার জনগণ বা কংগ্রেসের কাছ থেকে কোন অনুকূল পরিবেশ আশা করতে পারেনা।
 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!