You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
শরণার্থীরা স্বগৃহে প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত সঙ্ঘর্ষ থামবে নাঃ সিনেটর কুপার সিনেটের কার্যবিবরণী ৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১

এস ২০৬৮৬ কংগ্রেস সভার কার্যবিবরণী ৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধ

বিধানিক অধিবেশন।

মিস্টার কুপার, জনাব রাষ্ট্রপতি, পাকিস্তান ও ইন্ডিয়ার মাঝে একটি পূর্ণ আকারের যুদ্ধ শুরু হয়েছে যার প্রধান কারণ হচ্ছে পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং নয় হতে দশ লক্ষ উদ্বাস্তুর ভারত গমন। ইতিমধ্যেই উভয় পক্ষের মধ্যে প্রচুর হতাহতের খবর পাওয়া গিয়েছে, যেহেতু ইন্ডিয়ান এবং পাকিস্তানি আর্মি যুদ্ধের আধুনিক অস্ত্র নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালনা করছে।

ভারত এবং পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর এই নিয়ে তৃতীয়বার দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পাকিস্তানে ভয়াবহ মর্মান্তিক অবস্থার চূড়ান্ত পদক্ষেপ। এটা আমার দৃষ্টিভঙ্গি যে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উপস্থিত সংঘাতের অবসান হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হবে যা নিশ্চিত করবে যে নয় হতে দশ লক্ষ উদ্বাস্তু পাকিস্তানে নিরাপদে ফিরে যেতে সক্ষম হবে, যারা পাকিস্তান সরকারের দমনমূলক কর্মসূচীর কারণে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে।

সরকারের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে যথাযথ আইন প্রয়োগের ব্যবস্থাকে আমি এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করি যার ফলে আশা করা যাচ্ছে যে ভারত উপমাহাদেশের এই যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব হবে।

নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পদক্ষেপ নেয়া।

জাতিসংঘের সনদের ৩৩ তম নিবন্ধটির অধীনে উপলব্ধ করা হয় যে, জাতিসংঘের কোনো সদস্যের যুদ্ধ সংক্রান্ত ব্যাপারে অনুরোধের ফলে যদি দেখা যায় যে আন্তর্জাতিক শান্তি এবং নিরাপত্তা রক্ষণাবেক্ষণ বিপন্ন করার সম্ভাবনা রয়েছে,তাহলে তারা সমস্যার সমাধান চাইতে পারে আপস, তদন্ত, মধ্যস্থতা, মীমাংসা, সালিসি, বিচারিক বন্দোবস্ত, রিসোর্ট আঞ্চলিক সংস্থা বা ব্যবস্থা বা তাদের নিজস্ব পছন্দের অন্যান্য শান্তিপূর্ণ পদ্ধতির দ্বারা ।

আমি আশা করি যে নিরাপত্তা পরিষদ যে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে ভারত ও পাকিস্তান সরকারের নিরাপত্তা পরিষদ তা ভালোভাবে গ্রহণ করবে যাতে খুব দ্রুত যুদ্ধটি শেষ করার ব্যবস্থা নেয়া যায়।

জাতিসংঘ তৈরি করা হয় যেন বিশ্বের দেশগুলি শান্তিপূর্ণভাবে তাদের বিরোধ সমাধান করতে পারে এবং বিবাদ ও বিরোধ রোধ করার জন্য যাতে তা যুদ্ধের দিকে মোড় না নেয়। এই দায়িত্ব সম্পর্কে তাদের ধারণা থাকা উচিত যে তাদের মূল উদ্দেশ্য সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অথবা চীন গণপ্রজাতন্ত্রীর স্বার্থ নয় বরং পুরো বিশ্বের মানুষের বিশ্বাস ধরে রাখাটাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।

যুক্তরাষ্ট্রের উচিত জাতিসংঘকে বাধ্য করা যাতে তারা নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে তাদের দায়িত্ব পালন করে অথবা সাধারন সভার মাধ্যমে তা পালন করে যদি নিরাপত্তা পরিষদ ব্যর্থ হয়।

আমি এক মিনিট আগে বলা বক্তব্যটি পুনরায় বলতে চাই যে, আমি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সমস্যাটি তুলে ধরেছি। এবং বলেছি যে এর প্রধান কারণ হচ্ছে পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং ৯ হতে ১০ লক্ষ উদ্বাস্তুর ভারত গমন। কিন্তু এখন যেহেতু তারা যুদ্ধে উপনীত হয়েছে আসল প্রশ্ন হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র কি তাদের দায়িত্ব নিবে যারা তাদেরই অন্তর্গত। আমি আশা করি এমনটাই হবে।
 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!