You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.04 | সিনেটের প্রস্তাব - ২০৭, সিনেটর হ্যারিসের বক্তব্য এবং প্রেসিডেন্ট নিক্সনের উদ্দেশ্যে সিনেটরদের পত্র | সিনেটের কার্যবিবরণী - সংগ্রামের নোটবুক

শিরোনাম – সিনেটের প্রস্তাব – ২০৭, সিনেটর হ্যারিসের বক্তব্য এবং প্রেসিডেন্ট নিক্সনের উদ্দেশ্যে সিনেটরদের পত্র
সুত্র – সিনেটের কার্যবিবরণী
তারিখ – ৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১

এস২০৫৮০ কংগ্রেশনাল রেকর্ড – সিনেট
৪ ডিসেম্বর ১৯৭১

দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির জন্যে হুমকি সম্পর্কিত সিনেট রিজল্যুশন – ২০৭ উপস্থাপন
(বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির প্রতি নির্দেশিত)

মি. হ্যারিস – মি.প্রেসিডেন্ট, এই প্রশাসনের বৈদেশিক নীতি সম্পর্কিত অধ্যায় দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ইতিহাসবিদদের অবশ্যই মনে থাকার কথা। প্রেসিডেন্টের গ্রেট ওয়াল সফরের কথা মানুষের মন থেকে মুছে যাওয়ার পর ১৯৭১ সালের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক দুর্যোগের সময় নিক্সন প্রশাসনের ভূমিকার কথা লোকজনের মনে পড়বে।
মাসের পর মাস প্রশাসনের মিত্র এবং সমালোচকগণ দক্ষিণ এশিয়াকে বিশ্বশান্তির নতুন বিপজ্জনক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন – তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে, এশিয়ায় আমেরিকার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিক্তির উপর ঝুলায়মান। আমাদের অপ্রতিরোধ্য নীতি দিয়ে আমরা দুই পক্ষের সংঘর্ষের ইন্ধন দিয়েছি। পাকিস্তানকে যথাসময়ে সাহায্য না দিয়ে তাদের ক্ষতি করেছি কারণ এতে করে নিজেদের জনগণকে ক্ষেপিয়ে তোলা হতো। অপরদিকে পূর্ব পাকিস্তানে পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক নির্মম হত্যাযজ্ঞ বন্ধে ভারতের আবেদনে সাড়া না দিয়ে তাদের ও অপমান করেছি।
এপ্রিলে আমি পাকিস্তানকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেই । সহকারী স্বরাষ্ট্র সচিব সিসকোর সাথে কঠিন শর্তে এ ব্যাপারে আলোচনা করি,যাতে এ ব্যাপারে কেউ জানতে না পারে।
সর্বোপরি এটি একটি স্মরণীয় কাজ ছিল। মিত্রদের প্রতি সদয় হওয়া এবং বিবেকের তাড়না – এই দুইয়ের যে দ্বন্দ্বার্থক আহবান,তাতে গতকাল পর্যন্ত এই প্রশাসন একটি অনৈতিক সমর্থন অব্যাহত রাখে,যার চূড়ান্ত পরিণতি হলো পুরোদমে পাক – ভারত যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়া,যাতে একদম অন্তিম সময়ে এসে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে সহকারী স্বরাষ্ট্রসচিব সিসকোর সাথে এসব সুবিধা না দেওয়ার ব্যাপারে কথা বলি।
বড় কথা হলো,এটি একটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার ছিল। জাতীয় মতবিরোধী,মিত্রদের ছলছাতুরী এবং তাদের নিজস্ব বিবেক খাটিয়ে প্রশাসন একটি দেউলিয়া এবং অনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করে যা পাক-ভারত যুদ্ধে রূপ নেয় এবং সেটা প্রত্যাশিত ছিল। এবং শেষ সম্ভাব্য মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহে পিছিয়ে গেলো এবং তাদের বিলম্বিত এবং বিদ্বেষপূর্ণ কর্মকাণ্ডে সামঞ্জস্য আনার জন্যে ওরা ভারতে সামরিক জাহাজ পাঠাবে না বলে ঘোষণা দিলো এই সপ্তাহে তারা আমেরিকানদের সাথে ছিল কিন্তু পরবর্তীতে প্রধান অস্ত্র সরবরাহক হিসেবে রাশিয়ার দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

মি. প্রেসিডেন্ট, গত কয়েকমাসের রেকর্ড একটি বিষয় প্রমাণ করে। মহাকৌশলের অনুমিত আঁকড়ে পড়ে থাকা কখনোই বিবেকবোধ এবং সমবেদনার পরিপূরক হতে পারে না। ড. কিসিঞ্জার একজন মেধাবী মানুষ হিসেবে স্বীকৃত এবং মি. নিক্সন পররাষ্ট্রনীতিতে তার অতীত অর্জনের জন্যে প্রশংসিত হয়েছেন। কিন্তু যখন প্রেসিডেন্ট এবং তার উপদেষ্টাগণ পিকিং এ একটি প্রতীকী সফরের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন থাকেন, তখন তাদের দেখে মনে হয় না তারা দক্ষিণ এশিয়ায় ঘটতে যাওয়া মানবিক নাটকের ব্যাপারে চিন্তা করে সময় নষ্ট করতে চান। এবং আমি মনে করি,এই সফর যতই প্রতীকী হোক – আমি স্বীকার করছি বিশ্ব শান্তির বিপর্যয় ঠেকাতে এবং আমাদেত জাতীয় ইমেজের অবনমন রোধে এটা খুব কম প্রভাব ফেলবে যে, আপনার প্রশাসনের অবহেলাই ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ ঘটিয়েছে। যদি ৭৫০ মিলিয়ন লোকের জন্যে আপনার চীন সফর করা লাগে, তবে ভারতে বসবাসরত ৬৯০ মিলিয়ন লোককে ও আপনার অবহেলা করা উচিত নয়।

কিন্তু এখন কী করা যায় – যুদ্ধ তো শুরু হয়ে গেছে। এখন এই একটা ভুলের ফলে ভারত এবং পাকিস্তানের একটা জেনারেশন আমাদের অবিশ্বাস করতে থাকবে ।
আমি বলি,সমস্যার বাস্তবতা বুঝে আমরা একটা শেষ চেষ্টা করে দেখতে পারি।

প্রথম বাস্তবতা হলো, পাকিস্তানের আগের অবস্থা এখন আর নেই। এই যে আগের অবস্থায় না থাকা এর কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ নেই কিন্তু এর শুরু হয়েছে পূর্ব পাকিস্তানে তাদের রক্তচোষা শোষণের মাধ্যমে, একগুঁয়েমির মাধ্যমে এবং তাদের কিছু মূর্খ পরামর্শদাতা কমিউনিস্ট চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা।
দ্বিতীয় বাস্তবতা হলো,পৃথকভাবে পাকিস্তানের অস্তিত্ব টিকে থাকা। যদিও এখনো এই দুটি অংশ কীভাবে বিকশিত হবে সেটা স্পষ্ট নয়।তারা পৃথক এবং স্বাধীন অংশ হয়ে যেতে পারে। অথবা পূর্ব পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের স্বায়ত্তশাসন এবং স্বাধীনতার দাবি পূরণ করে তারা একত্রেও থাকতে পারে। আমার ব্যক্তিগত মত হলো, একটি স্বাধীন বাংলাদেশ এখন অপরিহার্য। কিন্তু পাকিস্তানের উচিত একটা শেষ চেষ্টা করা যাতে এরা শান্তিপূর্ণভাবে আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে।
দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় বাস্তবতা হলো, এই সমস্যা এড়িয়ে যাওয়ার জন্যে জাতিসংঘের প্রতি যে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র তার দ্বারা শান্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গণবিতর্কের একটা গুণ সবসময় থাকে সেটা হলো,এটি জাতিকে এমন এক অবস্থানে নিয়ে যায়, যার মাধ্যমে আপাতদৃষ্টিতে অরক্ষণীয় পলিসিকেও রক্ষা করা যায়।
ভারত পাকিস্তান সংকটের ব্যাপারে চুপ থাকার যে আন্তর্জাতিক ঐকমত্য দেখা যাচ্ছে তাতে করে এটা বলা যায় যে,এ ব্যাপারে আগ্রহী প্রত্যেকটি পক্ষই যে রকম থাকার কথা ছিল,তার চেয়ে কম আগ্রহ দেখাচ্ছে।
নিরাপত্তা পরিষদ আগে থেকে ব্যবস্থা নিলে পাকিস্তানের সন্ত্রাস এবং হত্যাযজ্ঞ মোটাদাগে কমানো যেতো।
জাতিসংঘ বিষয়টি নিয়ে আগে থেকে ভাবলে ভারত যাদের প্রতি সহানুভূতিশীল তাদের বিরুদ্ধে তাদের ঘৃণিত প্রতিপক্ষ দিয়ে এই ট্রাজেডিকে লেলিয়ে দিতে পারতো না।
জাতিসংঘ এই পদক্ষেপ বন্ধ করলে কমিউনিস্ট চীন কীভাবে তাদের সুপরিকল্পিত ব্যবস্থার মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানে নারকীয় হত্যাকান্ডে মদদ দিয়েছে সেটা স্বীকার করতে বাধ্য হতো।
বিশ্ব নেতৃবৃন্দ একটা পাবলিক ঘোষণা চাইলে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র এই নৃশংসতম হত্যাকান্ডের সামনে দাঁড়িয়ে পাওয়ার পলিটিক্সকে উসকে দেওয়ার মত একটা অনৈতিক কাজ সম্পর্কে একটা ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হতো।

মি. প্রেসিডেন্ট, কেনেডির সময়কালের এবং আমাদের ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়ের কথা একজন মহান আমেরিকান বোলস ভয়ার্তভাবে তার ডায়েরিতে লিখেছেন – যেসব অফিশিয়াল রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের নৈতিক অবনমনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তারা বিপদেত সময় কোনো কুল কিনারা করে উঠতে পারে না।
এসব ক্ষেত্রে নৈতিক ক্ষেত্রে সৎ থাকার অপপ্রয়াস হিসেবে তথ্যে পক্ষপাতিত্ব থাকে, যা যুদ্ধের জন্যে অনুপ্রেরণাদায়ক। এবং এসব ক্ষেত্রে পাওয়ার পলিটিক্সের যারা অনুরাগী তারা নৈতিকতাকে অপ্রাসঙ্গিক মনে করে এবং পথ হারিয়ে ফেলে।
রাষ্ট্রদূত বোলসের এই পর্যবেক্ষণ হলো – এই সমস্যায় আমেরিকার অবনমন ছাড়া এটা কোথাও এতটা সত্য নয়। প্রেসিডেন্ট এবং তার উপদেষ্টাগণ যখন এই পলিসি নিয়ে ভাবছিলেন তখন মিলিয়ন মিলিয়ন লোক শরণার্থী হচ্ছিলো এবং লাখ লাখ লোক মারা যাচ্ছিলো
আমি জানি ওরা ভদ্র এবং ভদ্রলোক হিসেবে তাদের নিজেদের বিবেকের কথা শোনা উচিত। কিন্তু তারা শোনে নি। এখন ওরা আমেরিকার একটা জাতি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র কে এখানে টেনে নিয়ে এসেছে। তারা পরোক্ষভাবে এই শতাব্দীর সবচেয়ে নৃশংস সন্ত্রাসবাদে আমেরিকাকে অংশগ্রহণ করিয়েছে এবং শান্তি অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। তারা একটি যুদ্ধ ডেকে এনেছে এবং এই চেম্বারের কেউ এর ফলাফল সম্পর্কে জানে না। আমি এখনো মনে করি,সঠিক কাজটি করতে আমাদের খুব দেরি হয়ে যায় নি।আসুন,এই ব্যাপার নিয়ে আমরা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যাই,যেটা আমি এবং অন্যরা কয়েক সপ্তাহ আগে আহবান জানিয়েছিলাম। এখানে সব বড় বড় শক্তিগুলো চাইলে যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে অংশগ্রহণ করতে পারে। তাদের ও অংশগ্রহণ করতে বলা যায়,তবে সেটা স্বাধীন বাংলাদেশের উপর প্রভাব না খাটিয়ে এবং তাদের প্রতিনিধিসহ। এক্ষেত্রে আমরা পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দিতে পারি না।

সবশেষে, আমরা যে অসহায়ত্বের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি তার প্রতি সৎ থাকার জন্যে নিজেদের জোর কর্তে পারি।

মি.প্রেসিডেন্ট, আজকে আমি একটা রিজলুশন উপস্থাপন করতে যাচ্ছি, যাতে সিনেটর বেহ,ক্রানস্টন,হার্ট,হ্যাটফিল্ড,হামফ্রে,ম্যাগোবার্ন,মনডেল,টুনে এবং উইলিয়ামসনসহ যা সিনেটের একটি বিষয়ে ঘোষণা দিবে যে,যুক্তরাষ্ট্র এই কোর্সটি অনুসরণ করে।
মি. প্রেসিডেন্ট, এই প্রশাসনের এবং সরকারের সদস্যরা তাদের বিবেকবোধ থেকে আমেরিকার হয়ে কথা বলবে।

সিনেট রিজল্যুশন ২০৭
যেহেতু উপমহাদেশের ভারত এবং পাকিস্তান সরকারের মধ্যে চলমান নিষ্ঠুরতার মধ্য দিয়ে একটি যুদ্ধ পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে; এবং

যেহেতু দুটি জনবহুল দেশের মধ্যকার এই দীর্ঘায়িত যুদ্ধ বিশ্বশান্তির জন্যে দুর্যোগ বয়ে আনবে এবং বহিঃশক্তিকে যুদ্ধে জড়াবে; এবং

যেহেতু যুদ্ধে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত পক্ষসমূহের নিরাপত্তা পরিষদে একটি মতবিনিময় সভার মাধ্যমে এই ভয়ানক সংঘর্ষ কমিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তির পথ সুগম করা যায়; এবং

যেহেতু রাজনৈতিক এবং সামরিক সংগ্রামের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানে একটি গৃহযুদ্ধের অবস্থা দৃশ্যমান ; এবং

যেহেতু নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় সকল পক্ষই প্রতিনিধিত্ব করবে ; এবং

যেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী চীন, সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় চলমান অস্থিরতা নিয়ে খুব চিন্তিত, সুতরাং এর সমাধান হওয়া উচিত। সিনেট এটা মনে করে যে,
ক) যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিগণ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে “ দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির প্রতি হুমকি” শীর্ষক প্রস্তাবনা রাখবেন।
খ)যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিগণ একই সাথে নিরাপত্তা পরিষদে যত দ্রুত সম্ভব একটি জরুরী সেশন আয়োজনের আহবান জানাবেন।
গ)বাংলাদেশি প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা পরিষদের বিতর্কে অংশগ্রহণের জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিগণ একটি দাপ্তরিক প্রস্তাব রাখবেন ; এবং
ঘ)যদিও চলমান নৈরাজ্য বন্ধ করাই হবে নিরাপত্তা পরিষদের কাজ,যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিদল সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন শেখ মুজিবের মুক্তির জন্যে, যাতে করে বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত শরণার্থীদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানো যায়।
——-

দি প্রেসিডেন্ট
দি হোয়াইট হাউজ
ওয়াশিংটন ডিসি

ভারতের সাথে পাকিস্তানের চলমান যুদ্ধ সম্ভবত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে ভয়ংকর যুদ্ধ, এবং সেটা কেবল বিশাল জনসংখ্যার জন্যে কিংবা অসংখ্য মৃত্যু ও একটি সম্ভাব্য ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক যুদ্ধের জন্যে নয়,বরং এর মাধ্যমে যে চীন, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র কে টেনে নিয়ে আসা হয়েছে সেটাও এরর ভয়াবহতার কারণ।

আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারী সিনেট সদস্যগণ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বিশ্ববাসী এই এই ভয়ানক যুদ্ধ থামানোর জন্যে কোন ধরণের কুটনৈতিক কনভেনশনের অপেক্ষা করবে না।শুধুমাত্র একটি সংগঠনের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত দুটি পক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত পক্ষসমূহের মধ্যে আলোচনায় বসতে পারে। সেটি হলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
ভারত এবং পাকিস্তানের সংঘাতের মূল কারণ হলো পূর্ব পাকিস্তানের গণমতের উপর চাপ প্রয়োগ, এর ফলে অসংখ্য মানুষ ভারতে শরণার্থী হয়েছে যারা ভারতের উপর বোঝা। আমরা আরো বিশ্বাস করি যে,নিরাপত্তা পরিষদ বাংলাদেশ থেকেও প্রতিনিধি আহবান করবে।
এইসব দাবিগুলো মনে রেখে আমরা আপনাকে সম্মানের সাথে অনুরোধ করছি যে,
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিগণ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে “ দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির প্রতি হুমকি” শীর্ষক প্রস্তাবনা আলোচ্য সূচিতে লিপিবদ্ধ করার প্রস্তাব রাখবেন এবং একই সাথেএকই সাথে নিরাপত্তা পরিষদে যত দ্রুত সম্ভব একটি জরুরী সেশন আয়োজনের আহবান জানাবেন।

যদিও চলমান নৈরাজ্য বন্ধ করাই হবে নিরাপত্তা পরিষদের কাজ,যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিদল সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন শেখ মুজিবের মুক্তির জন্যে, যাতে করে বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত শরণার্থীদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানো যায়।
ভারত পাকিস্তান এবং অন্য তিন প্রভাবশালী দেশের এই যুদ্ধ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫০ ভাগ লোকের সরাসরি ক্ষতি করবে। এই সম্ভাব্যতার পছন্দের ক্ষেত্রে, কারো মতামত যা ই হোক না কেন, এই দুর্যোগের তীব্রতা এতই প্রকট যে,এই সংকটকালে শান্তি আনয়নের জন্যে যুক্তরাষ্ট্র সব ধরণের পদ্ধতিই অনুসরণ করবে।

ওয়াল্টার এফ মনডেল,বব প্যাকউড,
ফ্রাঙ্ক ই মস,লি মিসাল্ফ,বার্চ বেহ,
ফিলিপ এ হার্ট,ফ্রেড,আর হ্যারিস, এলান ক্রানস্টন,উইলিয়াম প্রক্সমায়ার,জন বি টুনে, হার্বার্ট এইচ হামফ্রে।

ইউএস সিনেটরস