You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
পাক-ভারত সংঘাতে আমেরিকা যেন অবশ্যই না জড়ায়ঃ সিনেটর এলেন সিনেটের কার্যবিবরণী ২৯ নভেম্বর, ১৯৭১

মি এলেনঃ জনাব প্রেসিডেন্ট ,এশিয়াতে চলমান হিউমান ট্রেজেডি কোনমতেই যুক্তরাষ্ট্রের জড়ানো যাবে না, যেখানে ভারত পাকিস্তান নতুন করে সীমান্তযুদ্ব স্থাপন করেছে এবং সর্বোপরি যুদ্বের হুমকি দিচ্ছে।এটি এবারই প্রথম না যে এই বড় দেশগুলি একে অন্যের উপর চড়াও হয়েছে,কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না দেশগুলোর নেতারা বোধশক্তি ফিরে পাচ্ছে কম্যুনিস্ট চীন আর রাশিয়ার মধ্যকার ক্রমবর্ধমান পারস্পরিক শত্রুতার ইন্ধনে এই খন্ডযুদ্ব একটি রক্তস্রোতে পরিণত হতে পারে।
রেড চীন এই যুদ্বে পাকিস্তানকে যোগান দিচ্ছে আর অন্যদিকে রাশিয়া আর ভারত গত এপ্রিলেই একটি সমঝোতা চুক্তি সাক্ষর করেছে।
ভারত পাকিস্তান কর্তৃক উপামহাদেশে চলমান মানব দুর্দশার ব্যাপারে আমিরিকানরা উদাসীন এটি দায়ী করা যাবে না।
গত ২৫ বছরে আমিরিকানরা ভারতকে ৮০ বিলিয়নেরও বেশী সহায়তা করেছে যেটি অন্য কোনো দেশ পায়নি ,শুধুমাত্র দক্ষিণ কোরিয়া আর দক্ষিণ ভিয়েত্নাম ছাড়া যেখানে এখনো আমাদের মিলিটারী ফোর্স রয়েছে।একই সাথে আমরা পাকিস্তানকেও সহায়তা করেছি ৪.৫ বিলিয়নের মতো।এবং এই পরিমাণ গত মাসে সিনেটে পাশকৃত ১৯৭২ বৈদেশিক অর্থনৈতিক সহায়তা প্যাকেজ এর অধীনে ভারত ও পাকিস্তানের জন্য বরাদ্বকৃত যথাক্রমে ৪১৪ মিলিয়ন এবং ২২০ মিলিয়ন এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত নয়।এবং সেটি গত বছরের ট্র্যাজিক টাইফুন এবং ভারতে আগত মোটামুটি ১০ মিলিয়ন পাকিস্তানী শরনার্থীদের রিলিফের জন্যে ব্যাক্তিগতভাবে আমেরিকানদের ডোনেশনের মধ্যেও অন্তর্ভূক্ত নয়।
ভারতের ৫৫০ মিলিয়ন এবং পাকিস্তানের ১১০ মিলিয়ন মানুষের জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের এই মানবিক সহায়তা সত্ত্বেও আমরা এখন জানি যে দেশগুলো কম্যুনিস্ট রাশিয়া ও রেড চীনের সাথে মৈত্রী স্থাপন করেছে।আমরা আমাদের সাহায্য সহায়তা কর্মকান্ডের এই ধরণের মূল্যায়ন পেয়েছি।
যুদ্বে যাওয়ার জন্যে ভারত ও পাকিস্তানের দুঃখজনক জেদ প্রমাণ করে যে বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে গিয়ে যুক্ত্ররাষ্ট্রের এই দেউলিয়া অবস্থা।নিরাপত্তা পরিষদের সম্পূর্ণ অধিকার আছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব ও ক্ষমতা ব্যবহারের যখনই কোথাও শান্তির উপরে হুমকি আসে।
কিন্তু এই রেকর্ড স্পষ্টভাবে এবং অভ্রান্তচিত্তে বিশ্ব শান্তি সংরক্ষণ সংস্থা হিসেবে ইউ এন ের ব্যর্থতা চিত্রায়ন করে। ১৯৪৭ সাল থেকে,ইউ এন গঠনের মাত্র এক বছর পর পুরো বিশ্বজুড়ে ৭৪টি যুদ্ব অথবা বেসামরিক লড়াই সংঘটিত হয়েছে।কিন্তু শুধুমাত্র ১০টি পরিস্থিতে নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক শান্তিরক্ষা বাহিনী অথবা পর্যবেক্ষক দল পাঠানো হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র এতে বেশীরভাগ সময়ে বিপুল পরিমাণ সহায়তা করেছে।যদিও কিছু কার্যকলাপ ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়েছে যেমন সুয়েজ ক্যানলের ধারে ১৯৬৭ সালে ইউ এন বাহিনীর আকস্মিক অপসারনের দরূণ সৃষ্ট হও্য়া ৬ দিন ব্যাপী ইসরেয়েল এবং আরব স্টেটস মধ্যকার যুদ্ব,যে যুদ্ব যেকোনো সময় আবারও শুরু হতে পারে।এবং ইউ এন এখন কিনারে দাড়িয়ে নতুন ভারত-পাকিস্তান যুদ্ব দেখছে।
যুক্ত্ররাষ্ট্র ইউ এন এর উপর অহেতুক আস্থা রেখে চলেছে ,কিন্তু বিশ্বের আর কোনো দেশ শান্তিপূর্ণভাবে তার আন্তর্জাতিক বিরোধের সমাধানের ইচ্ছে পোষণ করে না।যেখানে লক্ষাধিক মানুষ নিয়মিত ক্ষুধা আর দারিদ্রের মধ্যে বসবাস করছে সেখানে বিপুল জনসংখ্যার অন্নসংস্থার লক্ষ্যে কৃষি অর্থনীতির উন্নয়ন অথবা কর্মস্ংস্থান ও তাদের মানুষের উপযুক্ত জীবনধারণের উদ্দেশ্যে কোনো অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেয়ে ভারত ও পাকিস্তান সরকার যুদ্বের পিছনে টাকা খরচে অধিক আগ্রহী ।
আমাদের আর কিছুই পাওয়ার নেই এবং সব কিছু হারাতে হবে যদি আমরা আরো একবার বৈদেশিক বিরোধে মধ্যস্থতা এবং পক্ষ নেও্য়ার চেষ্ঠা করি।সম্প্রতি কংগ্রেসের চাপের কারণে প্রেসিডেন্ট সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তানের মিলিটারী রসদ এর বিলি বিচ্ছিন্ন করবেন এবং আমি আশা রাখি উনি যুক্তরাষ্ট্রকে এই সমাধানের অযোগ্য বিশৃঙ্খলা থেকে দূরে রাখতে সতর্কতা অবলম্বন করবেন।
যদিও আমি ব্যথিত মানব দুর্দশা ব্যাপারে যেখানেই হোক না কেন ,তথপি আমি ভারত পাকিস্তানের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান বিরোধ এর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে পড়ার বিরুদ্বে।
 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!