You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.10.18 | বাংলাদেশের শরণার্থীঃ সিনেটর পার্সির বক্তৃতা ও উদ্ধৃতি | সিনেটের কার্যবিবরণী - সংগ্রামের নোটবুক

শিরোনামঃ বাংলাদেশের শরণার্থীঃ সিনেটর পার্সির বক্তৃতা ও উদ্ধৃতি
সূত্রঃ সিনেটের কার্যবিবরণী
তারিখঃ ১৮ অক্টোবর, ১৯৭১

কংগ্রেসিয় কার্যবিবরণী – সিনেট
১৮ অক্টোবর, ১৯৭১ এস ১৭০৪০
পাকিস্তানী শরণার্থী
জনাব পার্সিঃ মহামান্য রাষ্ট্রপতি, পূর্ব পাকিস্তান থেকে শরণার্থীদের অনবরত আগমন ইতোমধ্যে ভারতের অতিরিক্ত বোঝাই সম্পদের উপর নিদারুন চাপ সৃষ্টি করছে। কারণ- শরণার্থীদের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৯০ লাখ পেরিয়ে গেছে। তাই পূর্ব পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে যাওয়ার মাধ্যমে এই শরণার্থীদের স্রোত ঠেকানোর জন্য ভারতের উপর চাপ বেড়েই চলেছে। ভারত এবং পাকিস্তানের উপর এখন যুদ্ধের খড়গ ঝুলে আছে। ২৬ অক্টোবর, ১৯৭১ এ নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স এ প্রকাশিত ম্যালকম ব্রাউনের একটি কলামে পাওয়া যায়, “৫০১ জন শত্রুপক্ষকে ভারত এবং ভারতের দালাল হিসেবে চিহ্নিত করে” পশ্চিম পাকিস্তানিরা হত্যা করেছে। তাছাড়া, টাইম্‌স আরও বিবৃতি দেয় যে, “এই পরিসংখান থেকে প্রতীয়মান হয় যে ১৯৬৫ এর ইন্দো-পাক যুদ্ধের পর এখনকার লড়াই আরো তীব্ররূপ ধারণ করেছে”।
এটা খুবই স্পষ্ট যে, ইন্দো-পাক সীমান্তে সেনা মোতায়েন আসন্ন যুদ্ধের সম্ভাবনাকে আরও তীব্র করে তুলে। ১৭ অক্টোবর, ১৯৭১ ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত হয়ঃ
“কোন পক্ষই যুদ্ধ চায় না সেটাই ভেবে নেয়া হয়। প্রধান বিপত্তি হল পূর্ব পাকিস্তানের সীমানায় দুর্ঘটনাবশত তীব্রতা বেড়ে যাওয়া।“
ভারতে ক্রমশই বাড়তে থাকা পাকিস্তানী শরণার্থী বিষয়টাকে আরও ঘোরতর করে তুলেছে। ১০ অক্টোবর, ১৯৭১ এ নিউ ইয়র্ক টাইম্‌সে সিডনি হিলেল স্ক্যানবার্গ বলেন-
“ভারতের শরণার্থী গ্রহনের সদিচ্ছা সীমাহীন নয়-এর অবশ্যই একটি সীমা আছে এবং তা খুব শীঘ্রই অতিক্রম করে যেতে পারে।”
সম্প্রতি আমি নিজে পূর্ব পাকিস্তান ও ভারতে গিয়েছিলাম এবং স্বচক্ষে আটটি শরণার্থী শিবিরের দুঃখ ও দুর্দশা দেখে এসেছি। অক্টোবর ১৪ এর নিউ ইয়র্ক টাইম্‌সে ম্যালকম ব্রাউন উদ্ধৃতি দেন-
“-ভারতে পালিয়ে আসা এই লাখো অসহায় শরণার্থীদের স্রোত বিপরীত মুখী হবার সম্ভাবনা ক্ষীণ”
অবশ্যম্ভাবীভাবেই পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। এই অবস্থায়, সকল আগ্রহী জাতির উচিৎ ভারত এবং পাকিস্তানের মাঝে শান্তি বজায় রাখতে কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা চালানো এবং পাকিস্তানী শরণার্থীদের পূর্ব পাকিস্তানে নিরাপদে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করা। আমাদের নিজেদের জরাজীর্ণ বিভাগ এ উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে।