You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
বাংলাদেশের পরিস্থিতির ক্রমাবনতিঃ সিনেটর স্যাক্সবীর আবারও ভাষণ সিনেটের কার্যবিবরণী ২ আগষ্ট, ১৯৭১

মি. প্রেসিডেন্ট, পূর্বপাকিস্তানে দ্রুত অবনতিশীল ঘটনাগুলো ক্রমাগত মহামারি, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এবং যুদ্ধের দিকে চালিত হচ্ছে.. প্রতিদিন ভারতীয় সীমান্তে ৪০০০০ থেকে ৫০০০০ শরণার্থী ভীড় জমাচ্ছে, যার আসন্ন সংখ্যা হতে পারে ভারতীয় সীমান্তে মোট ৭,৩৫০০০ উদ্বাস্তু। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বলেন : ভারতের সাথে আমার যুদ্ধ প্রত্যাসন্ন। তাদেরকে(ভারত) এবং বিশ্বকে সতর্ক করা যাক,মানে এটা সম্পূর্ণ যুদ্ধ। বস্তুত এটা সঠিক হতে পারে। C.L. sulzeburger ১৮ই জুলাই নিউইয়র্ক টাইমসে লিখেছেন, কিসিঞ্জার ভ্রমণ বিপদের ছাপ ফেলে গেছে যে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার ক্রমশ খারাপ হতে থাকা সম্পর্কই শান্তির পথে ব্যাপক ঝুঁকি এবং সম্ভাবনা রয়েছে যে, চীন ও রাশিয়া দ্বারা সমর্থিত এই যুদ্ধ দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশিদের মধ্যে বিস্ফারণ ঘটাবে। এতে করে নতুন আন্তর্জাতিক সাম্যাবস্থা সৃষ্টিতে ওয়াশিংটনের একই সঙ্গে মস্কো এবং পীকিং এর সাথে সম্পর্ক উন্নতি করার প্রচেষ্টা ধ্বংস হতে পারে। এখনো কেন ইয়াহিয়া যুদ্ধের হুমকি দেয়? আবুল মাল আব্দুল মুহিত, নিউইয়র্কে পাকিস্তান দূতাবাসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা এবং ইয়াহিয়া মন্ত্রীসভার সাবেক উপ-সচিব পক্ষত্যাগ করেন এবং বলেন ইয়াহিয়া শাসন “বৈধতার সব দাবি হারিয়েছে।” তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে “১৫ মিলিয়ন পূর্ব পাকিস্তানি পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে অনাহার মারা যাবে। ভারত ইয়াহিয়ার শোষণ রাজত্বের প্রায় সাত মিলিয়ন উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দেয়। তা সত্ত্বেও, ইয়াহিয়া বলেছেন তাঁর ধৈর্যের একটা সীমা আছে।” কি ধৈর্য? আমি আনন্দিত যে জাতিসংঘ পূর্ব পাকিস্তানে ১৫৬ বেসামরিক ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিশেষজ্ঞদের একটি দল পাঠাতে পারে এবং ১৫ আগস্ট জাতিসংঘ শিশু তহবিল পূর্ব ভারতে এক হাজার কেন্দ্র খুলে উচ্চ প্রোটিন যুক্ত খাবার বিতরণ করার জন্য। নিউইয়র্ক টাইমস সম্পাদকীয় গতকাল বলেছিলেন: এই সময়ে দ্ব্যর্থহীনভাবে ত্রাণ সহায়তা বন্ধ করে সকল আমেরিকান ইয়াহিয়া সরকারকে সহয়তা করা উচিত। প্রতিবেদনে প্রকাশিত জাতিসংঘ পর্যবেক্ষকদের পূর্ব পাকিস্তানে পাঠানোর আমেরিকা-সমর্থিত পরিকল্পনাটি বাঙালির দূর্দশা লাঘবে হয়ত সহায়তা করতে পারতো। কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশের এই বিস্ফোরণকে ঠেকানোর জন্য প্রয়োজনীয় যথেষ্ট রাজনৈতিক সমর্থন তা পায়নি যা হিমালয়ে আমেরিকান-চাইনিজ-সোভিয়েত সম্মুখযুদ্ধের অনাকাঙ্ক্ষিত সূচনা করতে পারে। এখনই সময় আমাদের নীতি সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার। আমি পাকিস্তানকে সাহায্য স্থগিত করার জন্য পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির যে প্রস্তাব তা সংসদে গ্রহণ এবং সিনেটকে একই রকমের স্যাক্সবি-চার্চ সংশোধনী গ্রহণ করার জন্য তাড়া দিয়েছিলাম।

এখনই সময় আমাদের নীতি সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার। আমি পাকিস্তানকে সাহায্য স্থগিত করার জন্য পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির যে প্রস্তাব তা সংসদে গ্রহণ এবং সিনেটকে একই রকমের স্যাক্সবি-চার্চ সংশোধনী গ্রহণ করার জন্য তাড়া দিয়েছিলাম।
 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!