শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বাংলাদেশ আজ গণহত্যার দৃষ্টান্তঃ সিনেটর প্রক্সমায়ার | সিনেটের কার্যবিবরণী | ২৭ জুলাই, ১৯৭১ |
এস১২১৯৮ ২৭ জুলাই, ১৯৭১
কংগ্রেশনাল রেকর্ড – সিনেট
পূর্ব পাকিস্তানে চলমান ব্যপক গণহত্যা
জনাব প্রক্সমায়ার. জনাব প্রেসিডেন্ট, যারা গণহত্যা চুক্তি অনুমোদনে কালক্ষেপণ করেন তারা আমাদের উপকূল থেকে ৮০০০ মাইল দূরবর্তী পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত ট্রাজেডি উপেক্ষা করতে পারেন না। মার্চ থেকে শুরু করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী দৃশ্যত দেশকে বলাতৎকার করছে, হাজার হাজার পুরুষ, নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে যাদের একমাত্র অপরাধ এই যে তারা হিন্দু।
এদেশ ত্যাগ করে যাওয়া সাংবাদিকদের চোখ দিয়ে আমরা বৃদ্ধ ও শিশু, গরীব চাষী, জনতা যাদের কখনই কোন বিদ্রোহী বাহিনীর সঙ্গে কোনো সংযোগ ছিল না তাদের হত্যা করতে দেখেছি। আমি ১৩ জুন লন্ডন সানডে টাইমসে প্রকাশিত একটি নিবন্ধের উদ্ধৃতি দেই:
পশ্চিম পাকিস্তানের সেনাবাহিনী মার্চের শেষ থেকে শুরু করে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে পূর্ব পাকিস্তানের হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিকের উপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। এই হল প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সরকার কর্তৃক মার্চের শেষ থেকে আরোপিত সংবাদ নিষেধাজ্ঞার পিছনের ভয়ংকর বাস্তবতা। এ কারণেই পাঁচ মিলিয়নের অধিক উদ্বাস্তু পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতের উদ্দেশ্যে স্রোতের মত চলে গিয়েছে, কলেরা এবং দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি নিয়ে।
জনাব প্রেসিডেন্ট, এই নিবন্ধটির নামকরণ করা হয়েছে শুধুই “গণহত্যা।” পূর্ব পাকিস্তানে কি ঘটে যাচ্ছে ঐ শব্দ তা বর্ণনা করে।
আমি ১৩ জুন লন্ডনের সানডে টাইমসে “কেন শরণার্থীগণ পালিয়ে গিয়েছিল” শিরোনামে একটি নিবন্ধ থেকে আবার উদ্ধৃত দেই:
হাড়-চূর্ণ করা সামরিক অপারেশনের দুটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর একটি হল গণহত্যা, কর্তৃপক্ষ যাকে “নির্মূল অভিযান” বলতে পছন্দ করে। আরেকটি হল “পুনর্বাসন প্রচেষ্টা”। এটি হল পূর্ব পাকিস্তানকে পশ্চিম পাকিস্তানের অধীন একটি উপনিবেশে রূপান্তর করার পদক্ষেপ সমূহ বর্ণনার একটি মাধ্যম। এই বহুল ব্যবহৃত বিশেষণ সমূহ এবং সরকারী দলিলাদিতে পুনঃ পুনঃ ‘দুষ্কৃতিকারী’ ও ‘অনুপ্রবেশকারী’ উল্লেখ করাও এই হেঁয়ালিরই একটি অংশ যা বিশ্ব কল্যাণে প্রণীত হচ্ছে। অপপ্রচারের আড়ালে বাস্তবতা হল উপনিবেশ স্থাপন এবং হত্যা করা।
গণহত্যা কেবল অতীতের বিষয় নয়। শুধুমাত্র দেখুন পাকিস্তানে এই মুহূর্তে কি ঘটছে। গণহত্যা কনভেনশন নিয়ে কাজ করতে আমরা আর কত দেরি করতে পারি?