শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
পাকিস্তানে মার্কিন অস্ত্র সাহায্যঃ সিনেটর ফ্রাংক চার্চ-এর বক্তৃতা ও প্রাসংগিক দলিল উদ্ধৃতি | সিনেটের কার্যবিবরণী | ২২ জুন, ১৯৭১ |
আর্মস টু পাকিস্তান: ফ্রাঙ্ক চার্চের রিপোর্ট এস৯৭২৪ :-
পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্বশাসন-কামী বাঙালিদের মধ্যকার যুদ্ধের সুত্র ধরে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট সিনেট ফরেন রিলেশন কমিটিকে অফিশিয়াল নীতি হিসেবে জানায় যে- যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানে অস্ত্রের চালান স্থগিত করবে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট আরো বলে, ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স তাদের আরো জানিয়েছে যে ২রা মার্চ যুদ্ধ বাধবার পর থেকে পাকিস্তান বা তাঁর এজেন্টদের কোনো সামরিক পণ্য পাঠানো হয়নি এবং পরবর্তীতে পাঠানোর কোনো তালিকাও তাদের নেই। এ রকম পরিকল্পনা না থাকলেও সেসব চালান যে পাঠানো হয়েছে তা সিনেটর ফ্রাঙ্ক চার্চ ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশ করেন। তিনি সুন্দরবন ও পদ্মা নামে দুটি পাকিস্তানী জাহাজের চালানপত্র দেখান যা নিউ ইয়র্ক বন্দর থেকে ৮মে ও ২২ জুন ছেড়ে যায়। নিচে ২২ জুনের কংগ্রেসনাল রেকর্ড থেকে সিনেটরের মন্তব্য অতিরিক্ত দলিল-পত্র সহ দেয়া হল।
মি: চার্চঃ “মিঃ প্রেসিডেন্ট, আজ সকালের নিউ-ইয়র্ক টাইমস অনুসারে, প্রশাসনের সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা স্বত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ উপকরণ পাকিস্তানে পাঠানো হয়েছে।
আমি জিনিসপত্র এবং এয়ারফোর্সের এসব চালান অন্তর্ভুক্ত করে ডেলিভারির তালিকাভুক্তির বিলগুলো দেখেছি এবং টাইমস আর্টিকেল এর সঠিকতা আমি ব্যক্তিগতভাবে নিশ্চিত করতে পারি।আমি আজ যুক্তরাষ্টের রাষ্ট্রপতি হতে সরাসরিভাবে উপযুক্ত যুক্তরাষ্টের সংস্থা এবং কর্মকর্তাদের ডেকেছি মিলিটারি উপকরণগুলোর চালান বন্ধ করতে শীঘ্রই কার্যকলাপ গ্রহণের যা আটকানো ও সরানো এখনো আমাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে।পাকিস্তানি জাহাজ পদ্মাটি আজ বিকেলে নিউ ইয়র্কের পোতাশ্রয় ছেড়েছে এবং পূর্বনির্ধারিত, আমি অবগত আছি, আগামীকাল মন্ট্রিল ডক থেকে। যদি কোস্টগার্ড আমেরিকান জলে পদ্মা রুখতে অক্ষম হয়, তাহলে আমাদের এই নিষিদ্ধ চালান পুনরুদ্ধার করতে কানাডিয়ান সরকারের সহযোগিতা অনুরোধ করা উচিত।
নিউ ইয়র্ক টাইমস এর মিস্টার টেড এর প্রকাশিত কথার গুরুত্ব এর উপরে বেশি জোর দিতে পারা যাচ্ছেনা। পাকিস্তান সরকার এর প্রতি পাঠানো এই অস্ত্রের চালানগুলো সরাসরি আমেরিকান নীতির প্রতি অবজ্ঞা যা নিক্সন প্রশাসন দ্বারা সংজ্ঞায়িত ও ঘোষনাকিত।২৩ এপ্রিল,১৯৭১ বৈদেশিক সম্পর্কিত সিনেট কমিটির চেয়ারম্যান এর নিকট পাঠানো একটি চিঠিতে স্টেট ডিপার্টমেন্ট খোলাখুলিভাবে বিবৃতি দেয় যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রলায় থেকে আমাদের জানানো হয়েছে কোনরূপ সামরিক সরঞ্জামাদি পাকিস্তান সরকার বা তার দোসরদের নিকট সরবরাহ করা হচ্ছেনা যেহেতু পূর্ব পাকিস্তানে একটি যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে ২৫ মার্চ থেকে এবং এরকম অস্ত্রের কোন ডেলিভারি তাদের সম্ভাব্য তালিকায় ও নেই। এখানে স্পষ্টত মিস্টার জুলস এর দেয়া তথ্যের সাথে আমেরিকান পলিসি নিয়ে আমেরিকান স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর অফিসিয়াল বিবৃতি পারস্পরিক বিরোধী এবং এই পারস্পরিক বিরোধী বক্তব্য এই নিক্সন প্রশাসনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই অবস্থার পরিপেক্ষিতে, মিস্টার প্রেসিডেন্ট, আমি সবাইকে আহবান করছি সর্বসম্মতিক্রমে তাদের মতামত এর জন্য যে নিচের তথ্য উপাত্ত গুলোকে প্রিন্টেড রেকর্ড এ সংরক্ষণ এর জন্য।
প্রথমত, জনাব জুলসির নিউইয়র্ক টাইমস থেকে আর্টিকেল
দ্বিতীয়ত, করাচীর ন্যাশনাল শিপিং কর্পোরেশন থেকে মালপত্রে একটি বিল, পাঠানো হয়েছিলো পাকিস্তানের এম্বেসী, তারিখ ৮ এপ্রিল ১৯৭১, সুন্দরবনে পাকিস্তানি জাহাজ করে মিলিটারি সামগ্রীর চালান অন্তর্ভুক্ত করে যেটা ৮ মে নিউ ইয়র্ক থেকে যাত্রা করেছিলো।
তৃতীয়, একই কর্পোরেশনের একই বিল, সুন্দরবনের অতিরিক্ত মিলিটারি সামগ্রীর চালান অন্তর্ভুক্ত করে, তারিখ ১৬ এপ্রিল।
চতুর্থত, ডেক রশিদের একটি কপি, পূর্ব-পশ্চিম শিপিং সংস্থা থেকে পাকিস্তান দূতাবাসের প্রতিরক্ষা আসাদন বিভাগ, তারিখ ২১ মে, পাকিস্তান হতে স্পষ্টত পদ্মায় চালানের জন্য গৃহীত মিলিটারি সামগ্রী তালিকাভুক্ত করে।
পঞ্চমত, একটি চিঠির কপি আমি আজকে প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে পাঠিয়েছিলাম, তাঁর ঘোষিত নীতি জোরদার করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পণ্য নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পাকিস্তান পাঠানো
( Tad Szulc)
ওয়াশিংটন , জুন ২১ঃ
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পাকিস্তানে পাঠানো হল আমেরিকান সামরিক সরঞ্জাম । প্রশাসনিক ভাবে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রয়ের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পাকিস্তানের পতাকাবাহী ভাড়া করা একটি জাহাজ নিউ ইয়র্ক থেকে করাচীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
তদন্তে পররাষ্ট্র বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান করেন, বিক্রিত বৈদেশিক সামরিক সরঞ্জামাদি নিয়ে অন্তত আরও একটি জাহাজ যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। তাঁদের ভাষ্যে উল্লেখিত সকল সামরিক সামগ্রীসমূহ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত মজুদ এর অংশ এবং এই চালানের কারণ হিসেবে আপাতত পাকিস্তানে সামরিক সরঞ্জামাদি সরবরাহের উপর তিনমাসব্যাপী নিষেধাজ্ঞার বাস্তবায়বন সংক্রান্ত প্রশাসনিক বিভ্রান্তিকে দায়ী করেন।
.
মধ্য আগস্টে নিউইয়র্ক থেকে করাচির উদ্দেশ্যে যাত্রার জন্য জাহাজ পদ্মা আটটি বিমান, প্যারাসুট এবং হাজার পাউন্ড ওজনের শত শত অতিরিক্ত যন্ত্রাংশ ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র সহ জায়গা ও সামরিক যানবাহনের উদ্দেশ্যে তৈরি হচ্ছিল।
পাকিস্তানি নিবন্ধন করা আরেকটি জাহাজ সুন্দরবন অন্যান্য সামরিক সামগ্রী সহ সাঁজোয়া যানের কর্মীদের জন্য প্যান নিয়ে জাহাজের ম্যানিফেস্টো এবং সহযোগী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রপ্তানি লাইসেন্স মোতাবেক নিউইয়র্ক থেকে ৮ মে রওনা দেয়। এটা করাচিতে বুধবার পৌঁছানোর কথা।
যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনী এসব জিনিসপত্র পাকিস্তানের কাছে বৈদেশিক সামরিক বিক্রয় আইনের বিধান অনুযায়ী বিক্রি করে। গত ২৫ মার্চ পাকিস্তানি ফৌজের সৈন্য, বিশেষ করে পশ্চিম পাকিস্তানিদের আদেশ করা হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলন নস্যাৎ করে দেয়ার জন্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয় যে পাকিস্তানের কাছে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে এবং ১৯৬৭ সালে প্রবর্তিত কর্মসূচি “পর্যালোচনার অধীনে” রয়েছে।
আজ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পদ্মা ও সুন্দরবনের যাত্রার ব্যাপারে জবাব দিয়েছেন, তারা বলেন যে বসন্তে পশ্চিম পাকিস্তানে কঠোর নিপীড়নবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন শুরুর কিছু পরেই পাকিস্তানের উপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল সেটি প্রশাসনের সরকারি নীতি অনুযায়ী বজায় রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের হিসেব অনুযায়ী অন্তত ২ লাখ পশ্চিম পাকিস্তানি পরের যুদ্ধে মারা যায় আর ৬ মিলিয়ন শরণার্থী ভারতে পালিয়ে যায়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আজ এক সাক্ষাতকারে বলেন যে তারা ২৫ মার্চের পরে পাকিস্তানে সামরিক সরঞ্জামের চালানের ব্যাপারে অবহিত ছিলেন না।
তারা স্বীকার করেছেন যে এই ধরনের চালানে ঘোষিত নীতির লঙ্ঘন হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তাগণ বলেন যে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তাদের জানানো হয়েছে যে ২৫ মার্চ থেকে কোন সামরিক সরঞ্জাম বৈদেশিক বিক্রয় নীতির অধীনে “পাকিস্তানি সরকার অথবা এর প্রতিনিধির” কাছে বিলি করা হবেনা।
কোন ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। তারা বলেন যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সাথে আলোচনায় এই নীতি পুনরব্যক্ত করেছে। পাকিস্তানি দুতাবাসের কাছে পেশকৃত মালবোঝাই এর বিল অনুযায়ী, সুন্দরবনে তুলে দেয়া মালামাল নিউ ইয়র্কের ডকে ২৩ এপ্রিল এবং পদ্মার মালালাল সমূহ ২১ মে গৃহীত হয়, পেন্টাগনের বিবৃতি কিভাবে এর সাথে পুনর্মিলিত হয় তা তারা ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।
পাকিস্তান দূতাবাসের প্রতিরক্ষা আসাদন বিভাগের লেফটেন্যান্ট কর্নেল ম আম্রাম রাজার কাছে জাহাজিদের থেকে যোগাযোগের ২টি জাহাজের ডক রসীদ সহ ২১মে পাঠানো হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, চালানের ব্যাপারে গত শনিবার এবং আজ আবার সব তদন্তের উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কাছে। কর্মকর্তারা লোকসানের মুখেও চালানের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিরক্ষা বিভাগের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে ২৫ মার্চ থেকে পাকিস্তানে কোন বিক্রয় বা বিলির অধিকার নেই এবং বিদেশ থেকে ক্রয়কৃত সরঞ্জামের উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সিনেটর চার্চের জিজ্ঞাসায় তারা কোন মন্তব্য করেনি যেহেতু ডক্সাইড বিলি ও আসল চালান মার্চের ২৫ তারিখের পরে হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিনেটর ফ্রাঙ্ক চার্চ, আইডাহোর ডেমোক্র্যাট সেক্রেটারি স্টেট উইলিয়াম পি রজারসকে অনুরোধকৃত তথ্য অর্থাৎ সামরিক সরঞ্জামের পাকিস্তান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় লাইসেন্সের অধীনে চালানের ব্যাপারে ১৭ জুনের চিঠির এখনও জবাব দেয়নি।
সিনেট বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য চার্চ জনাব রজারসকে উপদেশ দেন যে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিছু সরঞ্জামের জন্য লাইসেন্স নং ১৯২৪২ ইস্যু করেছে।
সুন্দরবন জাহাজে বোঝাই মালামালের বিলের চেক দেখিয়েছে যে এই লাইসেন্সের অধীনে
১১.৮৯৫ পাউন্ড ওজনের ২৮ স্কিড যন্ত্রাংশ রয়েছে। এর বেশি বর্ণনা পাওয়া যায়নি।
কিন্তু সুন্দরবন জাহাজের বিশেষ করে সামরিক বাহনের জন্য যন্ত্রাংশ ও জিনিস্পত্রের জন্য অপর একটি লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র বিভাগ থেকে। সুন্দরবন জাহাজ ডক্সাইড বিতরন তালিকা অনুযায়ী মোট ২১ টি আইটেম বহন করে, যার আবরন ও কারটন গুলো “যন্ত্রাংশ ও জিনিসপত্র’’, “স্কিড ও যন্ত্রাংশ” , “বাক্স” ও “যন্ত্রাংশ” হিসেবে নির্দিষ্ট করা ছিল।
বিমান ও প্যারাসুট তালিকাভুক্ত ছিল।
পদ্মার জন্য ডকসাইড বিতরন তালিকায় দুটিতে চারটি করে উড়োজাহাজ, ১১৩টি প্যারাসুট ও যন্ত্রাংশ, অটো যন্ত্রাংশ, অন্যান্য জিনিসপত্র, স্কিড এবং কাঠের বাক্স লিপিবদ্ধ রয়েছে।
১৪,১১৩ পাউন্ডের ক্রেট, বান্ডেল ও যন্ত্রাংশ তালিকাভুক্ত হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র রবার্ট জে ম্যাকক্লস্কির ভাষ্য অনুযায়ী পাকিস্তানের কাছে সামরিক বিক্রয় শুরু হয় ১৯৬৭ সালে, যা প্রতি বছর ১০ মিলিয়ন এর কাছাকাছি। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পরে সামরিক চালানের উপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল সেটা যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তান ও ভারত উভয়ের কাছে অমারাত্মক সরঞ্জাম বিক্রয়ের ব্যাপারে ওই বছর রাজি হয়।
.
অক্টোবর, ১৯৭০ সালে প্রশাসন একটি “ব্যতিক্রমী” অপ্রকাশিত এফ-১০৪ যুদ্ধ বিমান, বি-৫৭ বোমারু বিমান এবং বহনযোগ্য oshro-shosro(বাংলাটা লিখতে পারছিনা) পাকিস্তানে বিক্রয় করতে সম্মত হয়েছিল। যাইহোক, পররাষ্ট্র দপ্তর(state department: the department in the US government dealing with foreign affairs.) জানিয়েছিল যে, কোন ধরনের “ব্যতিক্রমী” সরঞ্জাম বিতরন করা হয়নি।
কিন্তু প্রামাণিক সুত্র, যাদের চিহ্নিত করা যায় নি, জানায় যে ১৯৬৭ সাল থেকে ৩০ এপ্রিলের মাঝে বিমান বাহিনী একাই ৪৭,৯৪৪,৭৮১ পরিমাণের সামরিক সরঞ্জামাদি পাকিস্তানে বিক্রয় করেছে।
ডেনভারে বিমানবাহিনীর হিসাব ও অর্থ কেন্দ্রের সদরদপ্তর থেকে পাকিস্তান দূতাবাসের প্রতিরক্ষা সমন্বয় বিভাগকে পাঠানো একটি বার্তার প্রতিবেদন “সকল বিদেশী সামরিক বিক্রয়ের তালিকা অবমুক্ত-করন, ঘটনার মূল্য, সংগৃহীত অর্থ, উদ্ধার ও অনুদ্ধারিত অবস্থা দেখানো।
ডেনভার সদরদপ্তররের প্রধান বৈদেশিক সামরিক বিক্রয় শাখার হিসাবাধাক্ষ ইলাইন বি. লভেনথল কর্তৃক সাক্ষরিত বার্তাটির শিরোনামঃ সামরিক বিক্রয়ের লেনদেন এবং বিতরনের বিস্তারিত তালিকার USAF বাবৃতি।
অবস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ ছিল, পূর্বে ধার্যকৃত পাকিস্তানের সামরিক ক্রয়ের পরিমাণ ২৫,৬৭৯,৬৫৪.১০, মোট অনুদ্ধারিত অর্থের পরিমাণ ২১,৭৩০,৭৪০.০৭ এবং তারিখানুযায়ী নগদের পরিমাণ ২৪,৩৪২,৭৮২.৩৭।
পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা কখন এই প্রতিবেদনটি করা হয়েছিল তা সঠিকভাবে বলতে পারেনি।
বিমানবাহিনীর প্রতিবেদন অনুযায়ী পাকিস্তান সরকার ৩১ মে ১৯৭১ সালের মাঝে বা এর আগে প্রয়োজনীয় নগদ অর্থের জন্য আরও ৩,৩৭৬,২৫৩.৫১ পরিমাণ স্থানান্তর করতে হয়েছিল।
প্রতিবেদনের মুল বিষয় দেখায় যে, ১৯৭১ সালের মে মাসে ৪০৪,১১৬.৪৯ পরিমাণের একটি চেক পাকিস্তান থেকে গ্রহন করেছিল।
প্রামাণিক সুত্র জানায় যে পাকিস্তানে অতিরিক্ত বিক্রয়ের “সকল সম্ভাবনা” সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী দ্বারা হয়ে থাকতে পারে।
ইস্ট-ওয়েস্ট শিপিং এজেন্সির মুখপাত্র, পদ্মা ও সুন্দরবনের জন্য নিউ ইয়র্ক এজেন্ট, ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, পদ্মায় সম্প্রতি কয়েকটি যাত্রায় পাকিস্তানে সামরিক সরঞ্জাম এসেছিল, অতিসম্প্রতি ২২মার্চ করাচিতে প্রদান করেছিল যা পূর্ব পাকিস্তানে সেনা হামলার তিনদিন আগে।
২৫ মার্চ নিষেধাজ্ঞা জারির পর পদ্মার উপর দিয়ে প্রথম যাত্রায় করাচিতে সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে যেতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার পর সুন্দরবনের উপর দিয়ে চলতি যাত্রাটিও এধরনের সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়ায় প্রথম। কিন্তু প্রমাণিক সুত্র জানায় যে পাকিস্তানের জন্য সামরিক সরঞ্জামাদি সহ অন্যান্য জাহাজ পূর্ব ও পশ্চিম উপকুল বন্দর থেকে ২৫ মার্চ জলপথে যাত্রা করতে পারে।
বহনপত্র/মালপত্রের রসিদ
Forwarding agent-shipper’s references: Ref. Exp: 63942MVF Inter-Maritime Forwarding Co., Inc.. 30 Church St., N.Y.
Shipper: Embassy of Pakistan (Defense Procurement Div.), Washington, D.C.
Consigned to order of: C/O Embarkation Headquarters, Karachi. Pakistan.
Address arrival notice to: Commandant Officer, Central MT Stores Depot Golra. C/O Embarkation Headquarters, Karachi, Pakistan.
Also notify: None.
Vessel: S.S. Sunderbans (National Shipping Corp.).
Pier: No. 36 East River.
Port of loading: New York, N.Y.
Mark and numbers: E P: 63942 ; BAC-1/19, BAF-I/8, BAD-1. Number of packages: 28.
Description of packages and goods: Skids, parts and accessories for military vehicles (claw screw can control).
Gross weight in pounds: 11,895.
Dated at New York: 4-8-71.
বহনপত্র/মালপত্রের রসিদ
Forwarding agent-shipper’s reference:
Ref Exp: 53950 MVP, Inter-Maritime Forwarding Co., Inc., 30 Church St., N. Y.
Shipper: Embassy of Pakistan (Defense Procurement Division),Washington, D.C.
Consigned to order of: C/O Embarkation Headquarters, Karachi, Pakistan.
Address arrival notice to: Commandant Officer, Central MT Stores Depot Golra, C/O Embarkation Headquarters, Karachi, Pakistan.
Also notify: None.
Vessel: SS. Sunderbans (National Shipping Corp.) Pler: No. 36 East River.
Port of loading: New York.
Marks and numbers: E P: 63950, BAG-1/9, UNI-I/13, BAD-I.
Number of packages: 23 Description of packages and goods: Pieces (22 skids, Ictn.), parts and accessories for military vehicles (shaft, screw, mount knob).
Gross weight in pounds: 18, 171.
Dated at New York: 4/16/71.
( রসিদের ঠিকানা বাংলা করিনি।)
.
ইস্ট ওয়েস্ট শিপিং এজেন্সি. বিভাগ
নিউ ইয়ার্ক এন. ওয়াই.
পাকিস্তাত দূতাবাস, ওয়াশিংটন ডি.সি. সতর্কতাঃ লেফটেন্যান্ট কর্নেল আকরাম রাজা
যুক্ত করা হয়েছে
প্রতিরক্ষা সংবাদ বিভাগ
জনাব – গত সপ্তাহে বীপনন কারীর তথ্য অনু্যায়ী বন্দর রশিদের প্রেরিত অনুলিপি পেয়ে আমরা খুসি হয়েছি। ২১ মে ১৯৭১
আমরা আপনাকে উল্লেখিত প্রাপ্ত তথ্যের উপর নির্ভর করতে অনুরোধ করছি, আপনার একান্ত বাধ্যগত
ইস্ট ওয়েস্ট শিপিং এজেন্সি. বিভাগ
————–
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিনেট
ওয়াসিংটন ডি. সি. ২২ জুন ১৯৭১
রাষ্ট্রপতি
হোয়াইট হাউজ
ওয়াসিংটন ডি.সি
শ্রদ্ধেয় রাষ্ট্রপতিঃ এটা আমার নজরে এসেছে যে আজ বিকালে মন্ট্রিয়ালের উদ্দেশ্যে পাকিস্তানি জাহাজ পদ্মা নিউ ইয়ার্ক বন্দর ত্যাগ করেছে, যেটা মার্কিন যুক্ত্রাষ্ট্রের সরবরাহকৃত অস্ত্র, অস্ত্রশস্ত্র ও আনুসাঙ্গিক খুচরা যন্ত্রপাতি বহন করছে, যা এই সময় পাকিস্তান সরকারের জন্যে সকল অস্ত্র সামগ্রী নিষিদ্ধ বিষয়ক আমাদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ও নিতি লঙ্ঘন করছে।
আমি পদ্মায় বোঝাই করা এই অস্ত্র সমূহ প্রতিরোধ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ব্যার্থয়ায় সর্বোচ্চ প্রতিবাদ জ্ঞাপন করছি । নিশ্চই আমাদের সরকারের প্রকাশ্যে এর বিরুদ্ধে ঘোষণা নীতি জারী করা উচিৎ ।
জানা গেছে যে, পদ্মা মনট্রিয়াল বন্দরে ভিড়বে আরও অগ্রসর হওয়ার আগে যদি উপকূল রক্ষাকারি বাহিনী আমেরিকার জলসীমার পথিমধ্যে এটাকে বাধা না দিতে পারে, তাহলে আমি আপনাকে অনুরোধ করছি এই নিষিদ্ধ চালান আটকাতে আপনি কানাডা সরকারের সহযোগীতার গ্রহন করুন ।
আমি আশা করছি যে আপনি ওই মামেরিকান অস্ত্রগুলো পদ্মা থেকে সরাতে দ্রুত এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন
আপনার একান্ত বাধ্যগত
ফ্রাঙ্ক চার্চ