শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
নৌ বাহিনীর গঠন ও তার যুদ্ধ তৎপরতা | সূত্রঃ বাংলা একাডেমির দলিলপত্র | ১৯৭১ |
জলপথে অবিস্মরণীয় সাফল্য
বাংলাদেশের পানিপথে বর্তমান গেরিলা অপারেশনের সাফল্য মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্রতর আক্রমণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তাঁদের সবচেয়ে দৃষ্টান্তমূলক সাফল্য বাংলাদেশের জলপথে নয়টি সমুদ্রগামী জাহাজ ডুবিয়ে দেয়া।
১৬ অগাস্ট রাতে, মুক্তিবাহিনী মংলা(খুলনা)বন্দরে ছয়টি মধ্যম আকৃতির কার্গো জাহাজ ডুবিয়ে দেয়, যার মাঝে ছিল দুটি আমেরিকান, দুটি চাইনিজ, একটি জাপানিজ এবং একটি পাকিস্তানি। উক্ত জাহাজে পাকিস্তানি আর্মির জন্য অস্ত্র ও রসদ বোঝাই ছিল।
১৬ অগাস্টে সাহসী কমান্ডোরা চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে একটি দুর্ধর্ষ অপারেশন পরিচালনা করে ‘আল আব্বাস’ এবং ‘ফরমোসা’ নামের দুটী জাহাজ ধ্বংস করেন। জাহাজ দুটীর সক্ষমতা ছিল যথাক্রমে ১৫০০০ টন ও ১২৫০০ টন। ‘আল আব্বাস’ জাহাজটি উদ্বোধন হয় আইয়ুব খান কর্তৃক, ১৯৬৮ সালে।একই দিনে পাট বোঝাই একটি মালবাহী নৌযান গেরিলারা ডুবিয়ে দেন।
মুক্তিবাহিনীর সদর দপ্তরের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, এক দল বিশেষায়িত গেরিলা সপ্তাহব্যাপী অপারেশনে সিলেট,ঢাকা, চাঁদপুর এবং চট্টগ্রাম থেকে ২৩ টি স্টিমার লঞ্চ ও মালবাহী নৌযান আটক করেছে এবং আটটি নৌযান ডুবিয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
২৩ অগাস্ট, ১৯৭১ এ সাতক্ষীরা এলাকায় একটি গানবোট ডুবিয়ে দেয়া হয়, খাদ্য ও পণ্যবাহী ঢাকা-সিলেট রুটের একটি জাহাজ চাঁদপুরে আটক করা হয় ২১ অগাস্টে। চাঁদপুরে আরেকটি সফল অপারেশনে দুটি জাহাজ এবং কার্গোসহ একটি বড় জাহাজ ধ্বংস করা হয়।
১৫ অগাস্ট, সুনামগঞ্জের সাচনা এলাকায় গেরিলারা একটি কার্গো লঞ্চ, চারটি মালবাহী নৌযান এবং ১৬ টি লঞ্চ আটক করেন।
বর্তমান গেরিলা কার্যক্রমের ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবেশপথ বন্ধের মুখে। রিপোর্ট অনুযায়ী, হামলার পরবর্তী দিন ক্ষতির পরিমাণ নির্নয়ের জন্য লেফটেনেন্ট জেনারেল টিক্কা খান নিজে চট্টগ্রামে আসেন। গেরিলা যোদ্ধাদের সাফল্যের পর চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্বে থাকা নৌবাহিনীর কিছু সিনিয়র অফিসার এবং সব প্রহরীদের গ্রেফতার করা হয়।