You dont have javascript enabled! Please enable it!

শিরোনামঃ শরণার্থী শিবির পরিদর্শনান্তে ই. গালাঘের বিবৃতি
সূত্রঃ প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ প্রতিনিধি পরিষদ, পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটি
তারিখঃ ৯ জুন ১৯৭১

প্রেরকঃ কংগ্রেসম্যান কর্নেলিয়াস ই গালাঘের (সি,এন,জে),
সভাপতি, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপকমিটি,
প্রতিনিধি পরিষদ, ইউএস।

“পাকিস্তানের প্রতি অর্থনৈতিক ও সামরিক সাহায্য ও সহায়তা স্থগিত রাখা উচিত।”
-গালাঘের ভারতে অবস্থিত পূর্ব পাকিস্তান শরণার্থী শিবির থেকে ফিরে এসে একথা বললেন।

“এই মুহূর্তে পাকিস্তান সরকারকে কোন ধরনের সহায়তা প্রদান করাটা হবে খুন-খারাবি ও মহামারীর ন্যায় ছড়িয়ে পড়া মরণব্যাধিকে প্রণোদনা দেয়ার শামিল,” এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপকমিটির সভাপতি কংগ্রেস সদস্য গালাঘের আজ এই কথা বললেন।
সম্প্রতি তিনি ভারতে অবস্থিত পূর্বপাকিস্তানের একটি শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে ফিরেছেন। সেখানে ৫০ লক্ষাধিক শরণার্থী রয়েছে যারা পূর্বপাকিস্তানের সংকটপূর্ণ অবস্থার কারণে ওখানে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। মে মাসে গালাঘের সাহেবের এই সংকট বিষয়ক দুই দিনের শুনানী ছিল এবং তিনি জুনের প্রথমদিকে দুই দিনের সফরে শরণার্থী শিবিরে গিয়েছিলেন।

“শরণার্থীদের এহেন দুরাবস্থা অনুধাবনের জন্য দুটি বিষয়ই যথেষ্টঃ
১) নির্বাচনে জয়ী দলের সদস্যদের নিষ্ঠুরভাবে পিষে ফেলার জন্য পাকিস্তান সরকার যে কী ভয়ানক নীতি অবলম্বন করেছে, তা বুঝার জন্য শরণার্থীদের এই সুবিশাল সংখ্যাই এক অনস্বীকার্য দলিল।
২) বিগত সপ্তাহে হিন্দু শরণার্থীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়াতে এটাকে এখন একটি ‘ধর্ম যুদ্ধ’ বলেই মনে হচ্ছে।
গালাঘের আরো বললেন, “আমাদের কখনোই ভুলে গেলে চলবে না যে, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রচলিত নিয়মানুসারে ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত হয়ে উভয় পাকিস্তানের জন্য একটি সাংবিধানিক পরিষদ গঠনে সফলতার সাথে কাজ করে আসছিল। তাই প্রচলিত অর্থে এই নেতাকর্মীদের কোনভাবেই বিচ্ছিন্নতাবাদী বা বিদ্রোহী বলে আখ্যায়িত করা উচিৎ হবে না।

প্রতিনিধি পরিষদের একটি বক্তৃতা প্রস্তুতির প্রাক্কালে গালাঘের তাঁর সহকর্মীদের বলেছিলেন, “অবর্ণনীয় ভয়াল সব ঘটনা- বিচ্ছিন্ন হাত নিয়ে শিশুরা ঘুরছে” এবং সেই সকল ঘটনা যা তিনি ১০০ (এক শত)-র অধিক শরণার্থীদের সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে বলেছিলেন।
তাঁরা সকলেই একটি ব্যাপারই বারবার বলছিলো, “পাকিস্তানী সেনারা অধ্যাপক ও ছাত্রদের হত্যার মাধ্যমে বাঙালি জাতির বুদ্ধিভিত্তিক জীবনকে ধ্বংসের পায়তারা করেছে।” এটাকে আমি আমার বিবেচনায় গণহত্যার অভিযোগ বলে বিশ্বাস করি। অধিকন্তু, ভারতে এখন গণহারে প্রবেশকারী শরণার্থীরা হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এই নিষ্পাপ লোকজন সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উস্কে দেয়ার জন্য আর্মির একটি হিসেবী সন্ত্রাসবাদের শিকার।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!