You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.05.13 | পাকিস্তানের সামরিক সাহায্য স্থগিত করণ প্রশ্নে সিনেট পররাষ্ট্র সম্পর্কে কমিটির রিপোর্ট | সিনেটের কার্যবিবরণী - সংগ্রামের নোটবুক
শরোনাম সূত্র তারিখ
পাকিস্তানের সামরিক সাহায্য স্থগিত করণ প্রশ্নে সিনেট পররাষ্ট্র সম্পর্কে কমিটির রিপোর্ট সিনেটের কার্যবিবরণী ১৩ মে, ১৯৭১

পাকিস্তানে সামরিক সাহায্য সাময়িক স্থগিত রাখা
১৩মে, ১৯৭১
রিপোর্ট ঃ
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষক কমিটি যা পাকিস্তানে সামরিক সহযোগিতা স্থগিতের জন্য সমবর্তী রেজুলেশন ( এস কন বেস ২১) করা হয়েছিল, যার প্রতিবেদন সুবিধাজনকভাবে সংশোধনী ও সুপারিশসমূহসহ ,সংশোধিত রেজুলেশন হিসেবে বিধিবদ্ধ করা হয়েছে ।

উদ্দেশ্য ঃ
সংশোধনী হিসেবে এস কন রেস ২১ নেয়ার উদ্দেশ্য , কংগ্রেশ সহ সকল আমেরিকানদের মত পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করতে,দূর্বল পূর্ব পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধের মিমাংসা না হওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার সামরিক সহায়তা এবং পাকিস্তানের কাছে সামরিক বিক্রির অনুমতিপত্র স্থগিত করা উচিত এবং ঐ এলাকায় ত্রান সরবরাহ কর্মসূচী নেয়া উচিত ।

পটভূমি ঃ
পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তানের দলাদলির মধ্যে দীর্ঘ মতপার্থক্যের ফলে,পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় তা সত্ত্বেও পূর্ব পাকিস্তান থেকে সকল বিদেশী সাংবাদিক কর্মীদের বহিস্কার করা হয়, বিভিন্ন উৎস থেকে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তা নির্দেশ করে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যারা সামরিক অস্ত্রাদি দ্বারা সজ্জিত তারা বিশৃংখলা এবং বেসামরিক মানুষ হত্যায় জড়িয়ে পড়ছে , যা যুক্তরাষ্ট্র মানুষের সামনে প্রকাশ করতে শুরু করেছে । রাষ্ট্রীয় দপ্তরের মুখপাত্র বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক যন্ত্রপাতি পূর্বপাকিস্তানীদের হত্যা করতে ব্যবহৃত হছে তা নিশ্চিত করতে তারা অসামর্থ্য । ইহা ১৯৭১ পর্যন্ত ছিল না, পাকিস্তানী সেনাবাহিনী পূর্বপাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার প্রায় ১ মাস পর এই চিঠি রাষ্ট্রীয় দপ্তর কর্তৃক পাওয়া গিয়েছিল , এই তথ্যের উপর যখন একটি তদন্ত শুরু করেছিল তার প্রেক্ষিতে এই তথ্য এসে পৌছায় যা নির্দেশ করে, এম-২৪ ট্যাঙ্ক এবং এফ-৮৫ এয়ারক্র্যাফট সাম্প্রতিক সপ্তাহে পূর্ব পাকিস্তানে ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে । এটা ছিল এই বিষয়ের উপর প্রথম সরকারী যোগাযোগ যা বৈদশিক সম্পর্কের উপর গঠিত কমিটি দ্বারা করা হয়েছে । এই প্রতিবেদনের সাথে চিঠিটি পূনমূদ্রন করে সংযুক্ত করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রীয় সামরিক সহযোগিতা অনুক্রম
সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ,সামরিক সহযোগিতার শ্রেণি এবং পরিমাণ যাহা যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পাকিস্তানী সরকারের জন্য যোগান দেয়া হয়েছে তা শ্রেণিবিভক্ত । তথাপি এটা বলা যেতে পারে,১৯৬৫ সালে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের পূর্বে ,যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে সামরিক সাহায্য দিতে রাজি হয়েছিল ,যার মধ্যে ছিল হাজার হাজার পাকিস্তানীকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া যার পরিমাণ ছিল ১০০ মিলিয়ন ডলার । পাকভারত যুদ্ধের ফলে ,১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের জন্যই পরবর্তী সামরিক যন্ত্রপাতি পাঠানোর উপর অবরোধ আরোপ করে । এই সময় যে কোন প্রকারে কমিউনিস্ট চীনারা পাকিস্তানের জন্য অস্ত্র সরবরাহের প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে, যুক্তরাষ্ট্রও পাকিস্তানকে কিছু অস্ত্র যোগান দেয়।উদাহরণসরূপ ২৩শে এপ্রিলের চিঠিটি সংযুক্ত করা হল ।
আমরা স্পষ্ট ভাবে সম্পূর্ণ সহযোগিতা সীমাবদ্ধ করেছি এবং ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান ও ইন্ডিয়ায় সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি বন্ধ করেছি । ১৯৬৬-৬৭ সালে সীমিত পরিসরে সামরিক যন্ত্রপাতি উভয় দেশে পূর্ণবার বিক্রি শুরুর পর, ভাল মূল্য পাওয়ার জন্য শুধুমাত্র অপ্রাঙঘাতী যন্ত্রপাতি এবং যন্ত্রপাতির অংশ এবং পূর্বে আমাদের কর্তৃক সরবরাহকৃত অস্ত্রের জন্য গোলাবারুদ আমরা পাকিস্তানের কাছে বিক্রি করেছি । অপ্রাণঘাতী দ্রব্যসমূহের মধ্যে রয়েছে,প্রশিক্ষণ এবং পন্যবাহী বিমান,যোগাযোগের যন্ত্রপাতি যেমন ট্রাক এবং জীপ এবং যোগাযোগ,স্বাস্থ্য এবং প্রকৌশল যন্ত্রপাতি । ১৯৬৫ সালে নিষেধাজ্ঞার পূর্বে, বিভিন্ন ব্যাসের অস্ত্রের জন্য গোলাবারুদ সরবরাহ করা হয়, তা সব মিলিয়ে ১৯৬৬ সালের সম্পূর্ণ বিক্রির অনুক্রমের ১৫ শতাংশেরও কম ।আমাদেরকে যন্ত্রপাতির অংশ এবং গোলাবারুদ বিক্রি চলমান রাখতে হয়েছে, পূর্বে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সরবরাহকৃত যুদ্ধে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির জন্য । এই বিশ্বাস নিয়ে যন্ত্রপাতিগুলো দেয়া হয়েছে ,যাহাতে যন্ত্র অচল হলে পাকিস্তানকে বাধ্য হতে হয়,আরও ব্যয়বহুল ও আধুনিক যন্ত্র দ্বারা প্রতিস্থাপণ করতে , উপমহাদেশে সম্পদশালী প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিকভাবে একটি জাতি পেতে ।
২৩ এপ্রিলের চিঠি আরও বলে যে, ১৯৭০ সালের অক্টোবরে প্রশাসন ঘোষনা করে “ একটি ব্যতিক্রম ছাড়া সামরিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ সংক্রান্ত বানিজ্যনীতি নির্দেশ করে, পাকিস্তানে সীমিত পরিমাণে বিক্রি করতে।’ সিনেটর হিসেবে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দেয়,যখন তিনি এস কন রেস ২১ সূচনা করেছিল,যন্ত্রপাতিসমূহের অন্তর্ভূক্ত ছিল মানব বহনের সাজোয়া যান,রূপান্তরিত তহল বিমান,যুদ্ধ বিমান(এফ-১০৪) এবং বোমারু বিমান( বি-৫৭এস) এগুলোর কোনাটিই সমর্পন করা হয় নাই এবং পাইপলাইনেও নেই । ইহা লক্ষ্য করা উচিত, যাহোক যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা যদিও এই বিক্রির ব্যাপারে আলোচনা বন্ধ করছে,সরঞ্জাম বিক্রির প্রস্তাবটি বাতিল করা অয় নি ।

তথ্য পাওয়ার দূর্লভতা
দূর্ভাগ্যজনকভাবে রাষ্ট্রীয় বিভাগ,উন্নয়নের যবানিকা টানতে প্রত্যাখ্যান করেছে।পূর্ব পাকিস্তানে উন্নয়ন সংক্রান্ত তথ্যের জন্য কমিটিকে বেসরকারী তথ্যের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে । এই ব্যাপারে কমিটি একটি চিঠি (১৯৭১ এর ৯এপ্রিল তারিখে) পেয়েছে,যা জনাব জন ই রোড কর্তৃক লিখিত যিনি জনস্বাস্থ্য বিভাগে যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মচারী, যা নিচের অংশে বর্ণনা করা হল ঃ
আমেরিকান সরকারী দলিলপত্রের দ্রষ্টব্য ঃ
সম্পূর্ণ সংবাদ প্রকাশের উপর বিবাচক এবং সাংবাদিক নির্বাসন করা হয়েছে, পাকিস্তানে বৃহত্তর রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের ফলে এবং পূর্ব পাকিস্তানে বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে সামরিক অভিজানেরর তথ্য ধবংস করা হয়েছে , এই তারিখে ঘটিত ঘটনা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া সম্ভবত আপনার জন্য কষ্টসাধ্য হবে । সেনা অভিজানের শুরু থেকে, আমেরিকান রাষ্ট্রদূত জনাব আর্চার ব্লাড এবং ঢাকাতে কর্মরত তার কর্মচারীরা প্রাথমিক সমীক্ষায় তথ্যপূর্ণ গণনাসহ তথ্য পাঠাতে থাকে। এইসব তথ্য সাবধানতার সাথে সংগ্রহ এবং সত্যতা যাচাই সহ রাষ্ট্রীয় বিভাগে পাঠানো হয় ।

আমেরিকান রাষ্ট্রদূত জনাব ব্লাড এর সমীক্ষা ( সিনেটর এবং কংগ্রেসম্যানদের কাছে যা রয়েছে) আরও বিস্তৃত এবং অবস্থার পুর্ণ হিসাব বহন করে । যোগ করা যেতে পারে তিনি একটি বাস্তব সম্মত প্রস্তাবও উপস্থাপন করেছেন ,যাহাতে সরকার গঠন মূলক পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারে। অন্য কোন উপায় নেই, জনাব ব্লাড নিশ্চিত করে বলেছে এবং আমাদের তাকে সাহায্য করা উচিত । যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই নিশ্চুপতার সাথে সামরিক অভিজানকে সমর্থণ করে যেতে পারে না। আমরা আপনাকে ঢাকার সরকারী সরকারী করমকর্তাদের সাথে রাষ্ট্রীয় বিভাগের মুক্ত তারযোগাযোগের মাধ্যমে অগ্রসর হতে বলছি । ইহা সীমাহীন বিতরণ এবং পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা সম্পর্কে রাষ্ট্রীয় ব্যাপার সম্পর্কে । বিবৃতি না দিয়ে ,রাষ্ট্রীয় বিভাগ বাঙ্গালদের উপর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী , নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর নীতিহীন কার্যকলাপকে সমর্থণ করে যাচ্ছে । অগ্রগামী হতে এবং সংবাদদাতার উপর ধারনা করতে, জনাব রোড ,ঐ সিনেটর এবং কংগ্রেসম্যানদের এই সকল সমীক্ষা থাকবে,কমিটি রাষ্ট্রীয় বিভাগকে জজ্ঞেস করেছিল , সমীক্ষাটি সাজাতে পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তানের ডাক হতে যা পাওয়া গেছে এবং মুক্ত তার বার্তা যা ঢাকার সরকারী কর্মকর্তাদের দ্বারা পাঠানো হয়েছিল । রাষ্ট্রীয় বিভাগ উত্তর দিয়েছিল এই অনুরোধের সাথে সম্মত হতে অসামর্থ্য “ প্রচলিত ব্যবাস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া ছাড়া । ´ (সাংবাদিকের লেখা এই সমীক্ষায় সংযোজিত রয়েছে) এই প্রত্যাখ্যান পূর্বের ব্যবস্থার পরিপন্থী । এখানে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। যখন শ্রেণিবিভক্ত সমীক্ষা এবং তথ্য অতীতের কমিটির সদস্যদের কাছে দেওয়া হয়েছে ,বিশেষত যখন এটি রাষ্ট্রীয় বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী ছিল ।
কমিটির দর্শণে রয়েছে, অনুরোধকৃত তথ্যাদি পাওয়া না যায়,তাহলে স্বাধীনভাবে বিচারের ভিত্তি থাকে না এবং এ কারনে সাংবিধানিক বৈদশিক দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়া অবস্থায় থাকে না। রাষ্ট্রীয় বিভাগের এই কার্যপদ্ধতিতে তথ্য অপ্রাপ্ত হওয়া গুরুতর খারাপ লক্ষণ ,শুধুমাত্র সিনেটের জন্য নহে বরংচ সকলের জন্য ,যেমন নির্বাচিত ঐ সকল সদস্যদের জন্যও যারা জনগনের প্রতিনিধিত্ব করেন । চাহিদানুযায়ী কমিটি তথ্য অর্জন করতে পারেনি কারন তথ্য প্রাপ্তির অস্বীকৃতিতে । অবস্থার পরিবর্তনের উন্নয়ন ঘটাতে সঠিক পদক্ষেপগুলো ভবিষ্যতের সহযোগিতা বৃদ্ধির অনুপস্থিতিতে কমিতি ইহা খুজে বের করবে ।

কমিটির কার্যাবলী
সিনেট দ্বারা এস কন রেস ২১ উপস্থাপিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৫ এপ্রিল এবং ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রীয় দপ্তরে মন্তব্যের জন্য পাঠানো হয়েছিল । পরবর্তীকালে, নিম্নোক্ত সিনেটরগন রেজুলেশনের সহপ্রণেতা ছিলেন ঃ সিনেটর ব্রুক, ক্রুচ ইয়াগলেটন,হার্টকে, হার্টফিল্ড,হুগেস,জেভিট,কেনেডি,পিয়ারসন,পেল,প্রক্সামির,রিবিকফ এবং স্টিভেনশন ।
৩০ এপ্রিল যখন একটি কার্যকরী পরিষদের সভা হয়েছিল তখন রেজুলেশনটি সংক্ষিপ্তকারে আলোচনা করা হয় ,তখন ক্রিস্টোকার রাজ্যের উপ সহকারী সচিব ভ্যান হোলেন এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ সহকারী সচিব জেমস নোয়ে ,পাকিস্তানের অবস্থার সাক্ষ্য দিলেন । এই সময়ে জনাব ভেন হোলেন কমিটিকে জানালেন রেজুলেশনে কার্যকারী শাখা কোন অবস্থায়ই গঠন করা হয় নাই । কমিটি ৬ মে কার্য নির্বাহী সভায় দেখা করল এবং একটি কন্ঠভোটের মাধ্যমে এস কন রেস ২১ সিনেটর সংশোধনী সহ পাশ করা হল । কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে রাষ্ট্রীয় দপ্তরে সংক্ষিপ্তভাবে রেজুলেশনের উপর বিবৃতি প্রদান করা হল ।

ত্রাণ সরবরাহ বিতরণ
কমিটি এস কন রেস ২১ একটি সংশোধনী যোগ করেছিল যা প্রশাসনকে উৎসাহ যুগিয়েছিল এমন সব ব্যবস্থা নিতে যাহাতে, পূর্ব পাকিস্তানে সঠিকভাবে ত্রাণ সরবরাহ বিতরণ তরান্বিত করা যায় । রাষ্ট্রীয় দপ্তরের অনুসারে পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ রয়েছে। যাহোক অন্যান্য সুবিধাদি এবং বিতরণের অন্য পথ পরিষ্কার করা হয়ছে। এখানে একটি প্রচ্ছন্ন বিপদ হচ্ছে, একটি তীব্র খাদ্যাভাব দেখা দিতে পারে এং যার ফলে দূর্ভিক্ষ হতে পারে ।

কার্যকরী শাখার অবস্থান
রাষ্ট্রীয় দপ্তর এস কন রেস ২১ আইনের বিরুদ্ধে ছিল । ১৯৭১ সালের ৬ মে তারিখের একটি চিঠিতে দপ্তর এটা বের করেছে “ অনেক কিছুই করা হয়ে গিয়াছে ।’ যা বর্তমান রেজুলেশনের মৌলিক দিকগুলোর সাথে সমান্তরাল। যোগ করা যেতে পারে দপ্তর এটা বিবৃতি দিচ্ছে, পাকিস্তানে সামরিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ চলমান রাখার কারন দৃশ্যমান যাহাতে গঠনমূলক দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চালিয়ে যেতে পারে সাহায্য নিশ্চিতকরনে যাহাতে পাকিস্তান বাধ্য হয়ে অন্য উৎস থেকে সরবরাহ বৃদ্ধি করতে না থাকে । রাষ্ট্রীয় দপ্তরের চিঠিটি এই সমীক্ষার আপেনডিক্স এ সংযুক্ত করা হল ।

উপসংহার এবং সুপারিশসমূহ
১৯৬১ সালের বৈদশিক সাহায্য আইনের ২নং অধ্যায় অনুসারে সংশোধনীতে বৈদশিক দেশসমূহে সামরিক সহযোগিতা সজ্জিতকরন অনুমোদিত হয় । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় । যোগ করা যেতে পারে সেকশন (a) (1) (c) আইনটি এটা উপলব্ধি করে, “ কোন প্রতিরক্ষা নিবন্ধ যে কোন দেশের জন্য অনুদান হিসেবে সজ্জিত করা হবে, যদি অনুদান হিসেবে গ্রহন করতে রাজি না হয় ইহা দেয়া হবে না ´ ব্যবহার করা অথবা অন্য যে কোন উদ্দেশ্য এই রকম নিবন্ধ ব্যবহারের অনুমতিও সজ্জিত করা রয়েছে । পরন্তু সেকশন ৫০৫ এর উপধারা (d) নিম্নে দেয়া হলঃ
d) যে কোন দেশ, এই আইনের আওতায় সজ্জিত কোন দেশে প্রতিরক্ষা নিবন্ধ বা প্রতিরক্ষা সহায়তা ব্যবহার করলে,১৯৫৪ সালের পারস্পারিক নিরাপত্তা আইন সংশোধনীসহ অথবা পূর্বের যেকোন বৈদশিক সহায়তা আইন, সারগর্ভে বলা যায় এই অধ্যায় ভং করলে অথবা যেকোন চুক্তি যা এই আইনের পরিপন্থী তৎক্ষণাৎ ভাবে তা পরবর্তী সহযোগিতার জন্য অযোগ্য হবে ।
পাকিস্তানে সামরিক সহায়তা দেয়ার একটি নায্য যুক্তি হল ঐ দেশকে সক্রিয় করতে , বাইরের কমিউনিস্ট আগ্রাসনের হুমকি থেকে রক্ষা করতে এবং আভ্যন্তরীণ কমুনিউস্ট অনুপ্রবেশ এবং পরাভাব প্রতিরোধ করতে ।
কল্পনার প্রসারণ না ঘটিয়ে যাহোক ইহা দৃঢ় সংকল্প থাকতে হবে ,মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী কাউকে দমনের উদ্দেশ্যে এবং নিষ্পাপ নাগরিকদের হত্যায় এই সহযোগিতা ব্যবহৃত হবে না ।
এখানে কিছু বড় রকমের ভুল হয়ে যায় যখন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সরবারহকৃত বন্ধুক, ট্যাংক এবং বিমান সেই সব মানুষদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয় যাদেরকে রক্ষা করার কথা ছিল ।
কমিটির মতে, পূর্ব পাকিস্তানে যে পন্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে তা ১৯৬১ সালের বৈদশিক সহায়তা আইনের ২ অধ্যায়কে প্রায় স্পস্ট ভঙ্গ করে’ সংশোধনীতে , এটা সুপারিশ করা হল সিনেট এস একন রেস ২১ দেরী না করে অনুমোদন দিয়ে দেয় ।
.
পরিশিষ্ট
সম্মানিত, উইলিয়াম পি. রজার্স, ৬ এপ্রিল,১৯৭১
রাষ্ট্র সচিব,
ওয়াশিংটন, ডি.সি.

জনাব সচিব পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রাপ্ত ভয়াবহ সামরিক আগ্রাসনের খবর পাওয়া পূর্বক আমি মনে করি পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত সামরিক রসদ কোন পর্যায় পর্যন্ত ব্যাবহার করা হয়েছে তার একটি পূর্ণ হিসাব জরুরি দরকার।

আমি মনে করি এখানে বৈদেশিক সাহায্য আইনের অধ্যায় ২, অংশ ২ ব্যাবহার করা যেতে পারে, যেটা কোন ধরনের সামরিক সাহায্য একটি দেশকে দেয়া হবে এবং সেটার দায়ভার ও তারা কিভাবে ব্যাবহার করবে তার উদেশ্য ব্যাখ্যা করে।

এছাড়াও বর্তমানে পাকিস্তানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রস্তাবিত সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির আলোচনার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। আপনি যদি এই চিঠির জবাবে ইতিমধ্যে পাকিস্তানে পাঠানো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সরঞ্জাম, যন্ত্রাংশ ও রসদ এবং ইহা প্রাণঘাতী কিনা এরকম অস্ত্রের সর্বশেষ অবস্থা যুক্ত করে দেন তাহলে তা সহায়ক হবে।

আপনার অনুগত,
জে.ডব্লিউ.ফুলব্রাইট, চেয়ারম্যান।

সম্মানিত, উইলিয়াম পি. রজার্স, ২৩ এপ্রিল,১৯৭১
রাষ্ট্র সচিব,
ওয়াশিংটন, ডি.সি.

জনাব সচিব, পরের সপ্তাহের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী শুনানির প্রস্তুতিতে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে অনুরোধ করা হয়েছে যেন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের বর্তমান সংকট সম্পর্কিত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এছাড়াও আমি জানতে পেরেছি যে ঢাকার সরকারী কর্মকর্তাদের দ্বারা একটি খোলা চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। চিঠিটি কমিটির নিকট পাঠানো হলে এটি প্রশংসিত হবে।

আপনি যদি দ্রুততার সাথে এই অনুরোধ গুলো রাখতে পারেন তাহলে আমি আপনার নিকট কৃতজ্ঞ থাকবো।

আপনার অনুগত,
জে.ডব্লিউ.ফুলব্রাইট, চেয়ারম্যান।

ব্যারিংটন, আর১, এপ্রিল ১৫, ১৯৭১

সিনেটর জে.ডব্লিউ ফুলব্রাইট,
চেয়ারম্যান, পররাষ্ট্র নীতি কমিটি,
ইউ.এস সিনেট, ওয়াশিংটন, ডিসি।

প্রিয় সিনেটর ফুলব্রাইটঃ যেহেতু আপনি পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান সেহেতু আমি জানি আপনি পূর্ব পাকিস্তানের গৃহযুদ্ধ যেটি ২৫ মে থেকে চলমান সে বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তিত। আমি এবং আমার স্বামী কিছুদিন আগেই আমার ছেলের(যে ঢাকায় বিগত ৩ বছর যাবত থাকে) সাথে পাচ সপ্তাহব্যাপী ভ্রমন শেষে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত এসেছি। যদিও আমরা শত্রুতা শুরু হওয়ার আগেই চলে এসেছি তবুও আমরা গত ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর রাজনৈতিক টানাপড়েন সম্পর্কে অবহিত ছিলাম। আমাদের হাতে আমাদের পুত্র জন, যাদের তেহরান, ইরানে ৭ এপ্রিল আরো অনেক আমেরিকান নাগরিকের সাথে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল এর একটি চিঠি এসে পৌঁছেছে। সে চিঠিটি বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির নিকট পাঠানোর অনুরোধ করেছে। চিঠিটি নিজেই কথা বলে। কিন্তু আমি চিঠিটির একটি প্যারা(তৃতীয় পৃষ্ঠা) উল্লেখ করতে চাই, যেটির সাথে আমি এবং আমার স্বামী সম্পূর্ণ একমত।

“বাঙালীদের উপর এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপের অপারদর্শিতা থাকা সত্ত্বেও, পূর্ব পাকিস্তানের সারে সাত কোটি জনতার উপর চালিত অমানবিক আচরনের বিরুদ্ধে আমি অনুরোধ করব কংগ্রেসে এবং প্রেসিডেন্ট কে একটি নিন্দা প্রস্তাব দিতে। আমাদের সরকারের নীরবতা পাকিস্তানী সেনাদের এই আক্রমণের সমর্থনমূলক ধরা হচ্ছে।

আপনার অনুগত,
এডগার এফ. রহোড

আমেরিকান এমব্যাসি
এপিও নিউ ইয়র্ক, এন.ওয়াই. এপ্রিল ৯, ১৯৭১

দুই দিন আগে আমি এবং আমার স্ত্রী ঢাকা, পূর্ব পাকিস্তান যেখানে আমি বিগত তিন বছর ধরে ইউএস এইড এর কাজে নিয়োজিত ছিলাম, সেখানে থেকে উদ্ধার হই। আমি নিশ্চিত যে আপনি ২৫ শে মার্চ সামরিক ক্র্যাকডাউনের পরের রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে অবহিত আছেন। সম্পূর্ণ সাংবাদিক সেন্সরশিপ ও সাংবাদিক বিতারনের জন্য এবং বেসামরিক লোকজনদের উপর সামরিক অভিযোগের তথ্য অবদমিত করার ফলে সম্পূর্ণ ব্যাপারের একটি পূর্নাঙ্গ চিত্র পাওয়া আপনার জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেনাবাহিনীর অপারেশনের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের কনসাল জনাব আর্চার কে ব্লাড এবং তার কর্মীরা ঢাকায় কি ঘটছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত এবং তথ্যবহুল রিপোর্ট পাঠাচ্ছে। এই রিপোর্ট গুলো সেট ডিপার্টমেন্টে পাঠানোর আগে সতর্কতার সহিত সংগ্রহ ও যাচাই বাছাই করা হয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট জনসম্মুখে বলে যে তাদের হাতে পর্যাপ্ত তথ্য নেইঃ কিন্তু আমি নিজে দেখে ঢাকা থেকে পাঠানো দীর্ঘ তথ্যবহুল রিপোর্টসমুহ। করাচীর আমেরিকান কনসাল সম্প্রতি আমাকে বলেছে যে তারাও পূর্ব পাকিস্তানে সংগঠিত ঘটনাবলীর তথ্য পেতে শুরু করেছে, যদিও ঢাকার কনস্যুলেট একদম শুরু থেকে তথ্য পাঠাচ্ছিল।

যদিও কনসাল ব্লাড এর রিপোর্টে বর্তমান অবস্থার বিশদ বর্ননা আছে, তবুও আমি বিগত সপ্তাহ গুলোতে আমার ব্যাক্তিগত পর্যবেক্ষণ সমুহের প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।