You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.05.13 | প্রতিনিধি পরিষদে ই গ্যালাঘের এর বক্তৃতা ও উদ্বৃতি | কংগ্রেসের কার্যবিবরনী - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সূত্র তারিখ
প্রতিনিধি পরিষদে ই গ্যালাঘের এর বক্তৃতা ও উদ্বৃতি কংগ্রেসের কার্যবিবরনী ১৩ মে, ১৯৭১

ই ৪৩৫৪ মহাসভা-সম্পর্কিত দলিল – নজিরের ব্যাপ্তি মে ১৩, ১৯৭১
শকুনের উদর উড়বার পক্ষে অধিকপূর্ণ
জনপ্রতিনিধিদের অধিবেশনে
১২ মে, ১৯৭১।

মাননীয় স্পীকার,জনাব গ্যালঘর আমি আজ বাঙ্গালি এবং তদের সমর্থক হতে পূর্ব পাকিস্তান বা বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা প্রদান করতে চাই।১১ মে, এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিষয়ক আমার পররাষ্ট্র উপসমিতি এই বিষয়ে একটি শুনানি নির্ধারন করেন। রাজ্য দপ্তর ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা নির্বাহী অধিবেশন এবং মুক্ত অধিবেশনে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর রবার্ট ডর্ফম্যান এর পক্ষ থেকে ১৩ মে আমাদের সাক্ষীদের সাথে সাক্ষাত করার সময় নির্ধারন করা হয়। দুর্ভাগ্যবশত সেদিন শুনানি স্থগিত করা আবশ্যক হয়ে পড়ে এবং এটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুনঃনির্ধারিত করা হয়। যাই হোক না কেন রাজনীতি এই অঞ্চলে জড়িত।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতাম যে, এই আধুনিক সময়ে এটি মানুষের বিয়োগান্তক একটি বড় ঘটনা সৃষ্টি হওয়ার প্রক্রিয়া হতে পারে। আমেরিকানদের ভূমিকার ওপর অব্যহত বিতর্কের প্রেক্ষাপটে অতিরিক্ত উপাদান হিসেবে এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের ভূমিকাকে একটি মানবিক সহায়তা কর্যক্রম হিসেবে অবলম্বন করা হয়। এডওয়ার্ডের সিনেটর মি. কেনেডি এর প্রমান স্বরূপ আমি আমার সহযোগিদের মনোযোগ আকর্ষন করতে চাই যা গতকাল আমার উপসমিতির নির্ধারিত ৩ এপ্রিলের পূর্বে রিপন সোসাইটির একটি অবস্থানপত্র প্রকাশ করে এবং ১২ মে ওয়াশিংটন স্টার থেকে একটি সংবাদ প্রেরন করে।
“শকুনের উদর উড়বার পক্ষে অধিক শক্তিশালী” প্রবাদের মত দ্রুত ছড়িয়ে পড়া খবরের বুলি ইতিহাস অজ্ঞাত অনেক ব্যক্তি ই কুরুচিপূর্ণ বলে গন্য করে।যাইহোক, এটি গ্রাফিক্যালি অনেকের অবস্থানকে প্রতিফলিত করে যারা অতীত ঘটনার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত এবং ভবিষ্যতবাণী সম্পর্কে অবগত।
[ওয়াশিংটন ইভিনিং স্টার থেকে।১২ মে, ১৯৭১]
VULTURES TOO FULL TO FLY- পূ্র্ব পাকিস্তান
বিপদ বিশ্বাসকে উপেক্ষা করে
( By Moit Rosenblum)
ঢাকা, পূর্ব পাকিস্তান – গঙ্গা নদীর তীর বরাবর শকুনেরাও ভয়ানক সন্তুষ্টি নিয়ে উড়ে এসে ঠাই নিয়েছে। তারা মার্চ থেকে সম্ভত অর্ধেকেরও বেশি মিলিয়ন সংখ্যক মৃতদেহ ভক্ষন করেছে। জাতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়ে ২৫ মার্চ তাদের নিঃস্ব করার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের পূর্ব দেশীয় পক্ষের মধ্যে গৃহযুদ্বের এক বিষবাষ্প ঢুকিয়ে দেয়া হয়। হত্যা ও ধ্বংসের মধ্য দিয়ে বিশ্বাস ঘাতকতা করে।
নাটোরে একটি কূয়া থেকে হাড় ও পঁচা মাংসের স্তূপেরর চারদিকে গন্ধযুক্ত গ্যাসের বুদবুদ উৎপন্ন হয়। একটি ছোট শিশু কচুরিপানার আস্তরণে ঢাকা পুকুরের পানিতে ভাঙ্গা ল্যাভেন্ডার গাছটির দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে যেখানে তার বাবা-মায়ের লাশ ফেলে দেয়া হয়েছে।
টোল মিলিয়ন হতে পারে।
কেউ জানে না কত বঙ্গালি পরিবারকে সৈন্যবাহিনী মেশিনগানে কীভাবে হত্যা করেছে, অনেক অভিবাসী ঔপনিবেশিক বাঙ্গালি বিচ্ছিন্নবাদীদের ক্ষতবিক্ষত করে হত্যা করেছে। কিন্তু মৃতের পরিসংখ্যান ছয় থেকে মিলিয়নের পরিসীমায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রামের বন্দর নগরীতে একটি পাটকল বিনোদন ক্লাবের গাদ ও কাপড়ের স্তূপে থাকা পুতুল গড়িয়ে রক্তের ধারা প্রবাহিত হচ্ছে যেখানে ১৮০ জন বাঙ্গালি নারী ও শিশুকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কলের রাস্তা বরাবর ব্লকে অবস্থিত ঘরবাড়ি, দোকানপাট গুলোতে বিস্ফোরন ঘটিয়েছে এবং পুড়িয়ে সব মাটিতে মিশিয়ে ফেলেছে।
২৬ শে মার্চ থেকে সাংবাদিকদের পূর্ব পাকিস্তান থেকে নিষিদ্ধ করা হয় যেখানে ৪০ জন সংবাদ কর্মীকে আটক করে তাদের নোট ও ফিল্ম ছিনতাই করা হয় যতক্ষন না সরকার ৬-১১ মে পরিচালত সফরে ছয় জনকে রক্ষা করে।
সুস্পষ্ট প্রমান ও প্রত্যক্ষদর্শীকে কর্মকর্তার নির্দিষ্ট দূরুত্বের জিজ্ঞাসাবাদ অনুযায়ী নিন্মলিকিত বিবরন:
মার্চের সর্বত্র শেখ মুজিবুর রহমানের অধীনে আওয়ামী লীগ স্বায়ত্বশাসন ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে অন্যান্য সুবিধার দাবিতে একটি অসহযোগ প্রচারনার মাধ্যমে সামরিক সরকারকে জব্দ করে। উগ্র জাতীয়তাবাদীদের বিশৃঙ্খলায় বাঙ্গালিরা কিছু পশ্চিম পাকিস্তানিদের হত্যা করে। মুজিব দল জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে কিন্তু প্রেসিডেন্ট আগা মোহাম্মাদ ইয়াহিয়া খান ঢাকায় আলাপ আলোচনা বাতিল করেন এবং ইয়াহিয়া ২৫ মার্চ পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে যান। সে রাতে সৈন্যবাহিনী ব্যারাকের বাইরে গর্জে ওঠে ও পূর্ব পাকিস্তানকে রক্তাক্ত করে।
প্রফেসর হত্যা
সৈন্যরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ছাত্রাবাসে অতর্কিতে হামলা চালায় যেখানে ছাত্ররা তাদের সদর দপ্তর তৈরি করছিল।
তারা রেকোলেস রাইফেল, তারপর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও বেয়োনেট ব্যবহার করে। তারা নির্ধারিত প্রফেসর ও ছাত্রদের আবাস কপর্দকশূন্য করে দেয়। তারা অন্তত ভুলবশত নয় আরো ১৪ টি অনুষদের সদস্যদের ওপর একি কাজ সম্পাদন করে।মোটের ওপর ২০০ -র ও বেশি ছাত্র নিহত হয়।
সৈন্যরা শেল একত্রিত করে ও দুটি সংবাদপত্রের অফিসে আগুন দেয় এরপর বাঙ্গালি জনসাধারনের ওপরও আগুন দেয়। এক ডজনেরও বেশি বাজারে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় এবং ঢাকার কমপক্ষে ২ টি ব্লক ধ্বংস হয়ে যায়। শাখারি পট্টির হিন্দু বাঙ্গালিদের স্বর্ণের দোকানেও এই আক্রমান স্ফীত হয়। ঢাকা রেসকোর্সের ভেরতরে দুটি গ্রামে জিহাদি উন্মত্ততার সাথে মোসলেম বাহিনী আক্রমন চালায়। গনকবরে অভিক্ষিপ্ত মৃতদেহের সংখ্যা অনুযায়ী এটাই নির্দেশিত হয় যে, ঢাকায় প্রথম কয়েক রাতে ১০,০০০ এর ও বেশি লোককে গুলি করে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
সরকারি মুখপাত্র সন্তুষ্ট ছিলেন যে, সেনাবাহিনী পরিকল্পনা অনুযায়ী পরবর্তী সকালে ৩ টায় রাষ্ট্রদ্রোহ থামাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে। তারা জোর দিয়ে বলেছিল যে, সেনাবাহিনী কাউকে হত্যা করে নি কিন্তু সৈন্যদের গুলিতে অনেকে নিহত হয়। কিন্তু অন্যান্য কর্মকর্তারা বলেন রাজদ্রোহের চক্রান্ত শুধু একটি ধৃষ্টতা ছিল মাত্র। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিকারদের মধ্যে কমপক্ষে শত শত নারীও ছিল এবং হাজার হাজার নিরস্ত্র নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়। সামরিক শাসনের গভর্নর লেফট্যানেন্ট জেনারেল টিক্কা খান বলেন,” আমি এই ভয়াবহ হতাহত প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করব”। ঢাকাকে দ্রুত সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রনে নিয়ে যাওয়া হয় কিন্তু সেনা কর্মকান্ড ৫৮,০০০ বর্গ মাইল ও ৭৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার এই প্রদেশকে বিস্মিত করে তোলে। সেনা, পুলিশ, বেসামরিক বাহিনী ও সীমান্ত বাহিনীর হাজার হাজার বাঙ্গালি বিদ্রোহ করে। বাঙ্গালি রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের নিশানায় দলত্যাগী ও সেনা সেচ্ছাসেবকেরা পশ্চিম পাকিস্তানের নিয়মিত ১১০০০ এর মত এলাকা জব্দ করে যুদ্ধে ফিরে আাসে।
বাঙ্গালি বেসামরিক এবং ” স্বাধীনতা সৈন্য” মোহাজিরের??? পশ্চিম পাকিস্তান থেকে ১৯৪৭ সালে ভাগ হওয়া ভারতীয় অভিবাসীদের একটি গনহত্যা শুরু হয়।
তারা প্রবলবেগে বাজারে ছুটে গিয়েছে এবং ছুরিকাঘাত, গুলিবর্ষণ এবং জ্বলাও পোড়াও কখনও কখনও ধর্ষন, লুন্ঠন রোধের ব্যবস্থা করেছে। সেনাবাহিনী শহরে শেল নিক্ষেপ করে এবং যা কিছু ছিল তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সেনাবাহিনীর কর্মকান্ড নইজেরিয়ান গৃহযুদ্ধে দেখা ভয়াবহতার চেয়েও বেশি বর্বর ছিল।
ইউরোপীয়ানরা এই ধ্বংসযজ্ঞকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভক্ষকদের প্রতি কঠিন আঘাত স্বরূপ বলে তুলনা করেন।