You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.04.01 | পূর্ব পাকিস্থানে শোকাবহ ঘটনা ঘটছেঃ সিনেটর হ্যারিসের মন্তব্য ও পররাষ্ট্র সিচিব উইলিয়াম রজার্সের এর লিখিত চিঠি | সিনেটের কার্যবিবরনী - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সুত্র তারিখ
পূর্ব পাকিস্থানে শোকাবহ ঘটনা ঘটছেঃ সিনেটর হ্যারিসের মন্তব্য ও পররাষ্ট্র সিচিব উইলিয়াম রজার্সের এর লিখিত চিঠি সিনেটের কার্যবিবরনী এপ্রিল ১, ১৯৭২

APRIL 1, 1971 CONGRESSIONAL RECORD—SENATE S 4387

APPALLING TRAGEDY IN EAST PAKISTAN

মি হ্যারিসঃ মি. প্রেসিডেন্ট, পুর্ব পাকিস্থানে একটি মর্মান্তিকারক ব্যাপার ঘটে যাচ্ছে, যার ব্যাপারে পুরো পৃথিবী অজ্ঞ রয়ে আছে; কারন পশ্চিম-পাকিস্থান কর্তৃপক্ষ, আন্তর্জাতিক সাংবাদিক বৃন্দদের অত্যন্ত চতুরভাবে এসব বিষয় সম্পর্কে অবহিত করা থেকে বিরত রেখেছে। তারা এমন ভাবে উপস্থাপন করেছে, যেন তাদের সৈন্যগন এভাবে শান্তিতে মৃত্যু বরণ করবে।

দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমস, নিউ দিল্লী’এর এক “নির্ভুল-স্বাধীন উৎস” এর বরাত দিয়ে, উল্লেখ করেছে, পাকিস্থানী সৈন্যরা, পুর্ব পাকিস্থানের নেতাদের জোরপূর্বক রাস্তায় এনে, নির্মম ভাবে গুলি চালিয়ে হত্যা করছে। এমন আরো অনেক অসমর্থিত প্রতিবেদন আছে, যেখানে উল্লেখ্য, পঊর্ব পাকিস্থান যেন আর কোন দিন মাথা তুলে দাড়াতে না পারে, এজন্য তথ্যদাতার সমন্বয়ে পরিকল্পনা মাফিক দেশের বুদ্ধিজীবীদের খুজে বের করা হচ্ছে এবং খুন করা হচ্ছে।
আর এসব হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে, “ধর্ম এবং অবিভক্ত পাকিস্থান” এর নামে।
কিছু কিছু প্রতিবেদন আবার চাঞ্চল্যকর বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসাবে এগুলোকে প্রদর্শিত করছে; যেহেতু পাকিস্থানি সরকার প্রেস এবং মিডিয়া বহিস্কার করেছে, তাই আমরা নিশ্চিত ভাবে কিছুই বলতে পারছি না। কিন্তু, যেহেতু, পাকিস্থানি সরকারের আন্তর্জাতিক মিডিয়ার ব্যাপারে, অনাগ্রাহত দেখে, এতটুকু কমপক্ষে বলা যায় যে, এসব সংবাদের কিছুটা হলেও সত্যি।
পৃথিবীর এখন এই মৌনতা থেকে বের হয়ে আসা দরকার। এমত অবস্থায় একমাত্র ইন্ডিয়ান সরকার, পাকিস্থানের এসব ব্যাপারে নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন। তবে ইন্ডিয়ার একার নিন্দা এবং প্রতিবাদ এর কার্যকারিতায় প্রান্তিয় ভুমিকা রাখবে, তাছাড়া, ইন্ডিয়া-পাকিস্থানের দীর্ঘ দিনের শত্রুতা, এই ঘটনা বিশ্বের সামনে ভুল ভাবে উপস্থাপন হওয়ার সম্ভবনা আছে। এটা খুবই দুঃখজনক, যে ভিয়েতনামে আমাদের কর্তৃক বিপুল মানব বিপর্যয়ের কারনে, আমেরিকা এর নৈতিক দায়িত্ব পালনে সক্ষম হচ্ছে না।
তবে তার মানে এই না যে, আমরা নিষ্কৃয় থাকবো।আমার স্পষ্টভাবে ঘোষণা করা উচিৎ যে, আমরা পাকিস্থানে সকল প্রকার সামরিক এবং অর্থনৈতিক সহোযোগীতা স্থগিত করছি। মধ্যবর্তী সময়ে, আমরা অন্যান্য দেশ, বিশেষ করে, এশিয়ার দেশগুলোকে, জাতিসঙ্ঘের দেশগুলোর মতো করে নৈতিক দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে বলতে পারি।
আমি সিনেটরদের কাছে বিনীত নিবেদন করবো, যাতে তারা আমার সাথে প্রশাসনের কাছে পকিস্থানের বিষয়টিকে সর্বচ্চ গুরুত্ব প্রদানের প্রস্তাবে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। যেখানে পূর্ব পাকিস্থানের নেতৃবৃন্দ মৃত্যুর দিন গুনছেন সেখানে আমরা এভাবে হাতের উপর হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারি না……

U. S. SENATE,
COMMITTEEONGOVERNMENTOPERATIONS.
Washington, D. C.. April 1, 1971.
HON WILLIAM P. ROGERS,
Secretary of State,
Department of State,
Washington, D. C.
জনাব সচীব মহাদয়ঃ
আমি আতংকিত এবং আমি বিশ্বাস করি যে, পূর্ব-পাকিস্থানে এরুপ বিপুল গনহত্যা এবং বাছবিচারহীন হত্যাজজ্ঞে আপনিও আতংকিত।
দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমস, নিউ দিল্লী’এর এক “নির্ভুল-স্বাধীন উৎস” এর বরাত দিয়ে, উল্লেখ করেছে, পাকিস্থানী সৈন্যরা, পুর্ব পাকিস্থানের নেতাদের জোরপূর্বক রাস্তায় এনে, নির্মম ভাবে গুলি চালিয়ে হত্যা করছে। এমন আরো অনেক অসমর্থিত প্রতিবেদন আছে, যেখানে উল্লেখ্য, পঊর্ব পাকিস্থান যেন আর কোন দিন মাথা তুলে দাড়াতে না পারে, এজন্য তথ্যদাতার সমন্বয়ে পরিকল্পনা মাফিক দেশের বুদ্ধিজীবীদের খুজে বের করা হচ্ছে এবং খুন করা হচ্ছে।
যেহেতু পাকিস্থান সরকারের আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের পূর্ব-পাকিস্থান থেকে অব্যাহতি দেয়ার কারনে, এটা কনগ্রেস মেম্বার এবং পৃথিবীর অন্যদের পক্ষে জানা অসম্ভব, পূর্ব-পাকিস্থানে আসলে কি হচ্ছে। কিন্তু যদি পাকিস্থান সরকারে আরো ভালো কিছু বলার থাক্তো, তবে তারা অবশ্যই সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার দিতেন, যারা আরো ভালো ভাবে বিশ্বকে জানাতে পারতো।
যতক্ষন পর্যন্ত না, পূর্ব-পাকিস্থানে এসব হত্যাকান্ড এবং এমন হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে সরকারি ভাবে কোন সঠিক তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে, আমি বিনীত নিবেদন করছি, যেন আমাদের সরকার, পাকিস্থানে প্রেরিত সকম মিলিটারি এবং অর্থনৈতিক সাহায্য বন্ধ করে দেয়া হোক। আমার মনে হয় না, পূর্ব-পাকিস্থানের নেতৃবৃন্দদের ধুলিস্বাৎ করার লক্ষ্যে চালিত হত্যাজজ্ঞে, আমেরিকার অস্ত্র এবং টাকা ব্যাবহার হয়েছে, এমন গঞ্জনা বিশ্বব্যাপী উঠুক।
তাছাড়া, ভিয়েতনামে আমাদের সম্পৃক্তাতায়, পৃথিবীময় যে প্রতিক্রিয়া উঠেছে, এতে আমার মতে, পাকিস্থানের বিরুদ্ধে, জাতিসঙ্ঘের দেশ গুলোর মতো নৈতিক নেতৃত্ব প্রদান, আমাদের জন্য বাস্তবসম্মত নয়। কিন্তু, আমি এটাও বিশ্বাস করি না যে, আমরা অন্যান্য দেশ গুলোকে, বিশেষ করে এশিয়ার দেশ গুলোকে সোচ্চার হতে বলবো এবং জাতিসঙ্ঘকে সমর্থন জানাতে বলবো।
বিনীত নিবেদন
ফ্রেড হ্যারিস
ইউ এস সিনেট