শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন এজেন্সির রিপোর্ট (অংশ) | পররাষ্ট্র দপ্তর | ২জুলাই, ১৯৭১০ |
ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট
এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট
ওয়াশিংটন ডি.সি. ২০৫২৩
দুর্যোগ মেমোঃ ৩ নম্বর ২০জুলাই, ১৯৭১
পূর্ব পাকিস্তান বেসামরিক খন্ডযুদ্ধ ও সাইক্লোন ক্ষতিগ্রস্থ
পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি
সাধারনঃ দিনে প্রায় ৫০ হাজার পাকিস্তানি উদ্বাস্তু বর্ডার পার হয়ে ভারতে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।১৪ জুলাই পর্যন্ত সর্বমোট এর সংখ্যা প্রায় ৬৮ লাখ। যাদের মধ্যে ফিরে আসার সংখ্যা খুবই নগণ্য ,মাত্র ৫০ হাজার এর মত।
২৮ জুন পাকিস্তানি রাস্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান তার বক্তব্যে উদ্বাস্তুদের দেশত্যাগ বন্ধে ও ভারতে থাকা পাকিস্তানিদের ফিরে আসতে উৎসাহিত করতে পাকিস্তান সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপঃ সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা , অভ্যর্থনা কেন্দ্র নির্মাণ, পুনর্বাসনের নিশ্চয়তা,প্রত্যাগত হিন্দুদের (উদ্বাস্তুদের বৃহদাংশ) নিরাপত্তা প্রদান , জাতিসংঘের উপস্থিতি চুক্তি, আসন্য উদ্বাস্তু ও ত্রান কার্যক্রমের জন্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নিয়োগ ইত্যাদি বিষয়ে পর্যালোচনা করেন।
উত্তর-পশ্চিম পূর্ব পাকিস্তান- একটি জরিপ দল পূর্ব পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে সাম্প্রতিক এক পরিদর্শনে গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া ও শহর ধ্বংস করাকে মানুষের স্থানচ্যুত হবার কারণ হিশেবে চিহ্নিত করে।পাবনা,বগুড়া, দিনাজপুর এবং পাকশিতে তীব্র জনশুন্যতা প্রতীয়মান হয়। একমাত্র ব্যাতিক্রম রংপুর ছিল স্থিতিশীল এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ছিল খুবই কম। স্থানীয় নিয়ন্ত্রণের অভাবে এসব এলাকাতে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় প্রথাগত বিবাদ প্রবল আকার ধারন করে। যে সকল উদ্বাস্তু এই এলাকা ছেড়ে গিয়েছিল তাদের প্রায় কেউই আর তাদের বাড়ীতে ফিরে আসেনি। সাধারন রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো বিপর্যস্ত । গুরুত্বপূর্ন আমন ধান যা অক্টোবর/নভেম্বর মাসে উত্তলিত হয় তা পূর্বের প্রত্যাশিত লক্ষমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হবে। যদি বিপুল সংখ্যক ঘরহারা মানুষ ফিরেও আসে, তাহলে খাদ্য সমস্যা আরো প্রবল আকার ধারণ করবে । প্রতিবেদনে সন্দেহ প্রকাশ করা হয় যে বিদ্রোহী বাহিনীগুলো পূর্ব পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে স্বাভাবিকতা রোধে খাদ্য পরিবহন ও কৃষি উৎপাদন ব্যহত করতে পারে।
এই এলাকার বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ আছে এবং উপস্থিতির পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় মাত্র ৫-১০ শতাংশ। কিছু লোকজনকে মাঠে কাজ করতে দেখা গেছে। নদীপথে সর্বত্র যাতায়াত সম্ভব না হওয়ায় পূর্ব পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে রেল ও সড়ক পথ সংস্কার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
শষ্য উৎপাদন বিবেচনায় সাধারনত দিনাজপুর , রংপুর, রাজশাহী এবং বগুড়াতে উদ্বৃত্ত থাকে প্রকারান্তরে পাবনা ও কুষ্টিয়ায় ঘাটতি থাকে। যেহেতু যেসকল এলাকায় সাধারণত উদ্বৃত্ত থাকে সেসব এলাকায় এখন মানুষ কম সুতরাং সেসব এলাকায় দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনা নাই কিন্তু অপেক্ষাকৃত কম উৎপাদন পাকিস্তানের সামগ্রিক উৎপাদনকে ব্যহত করবে। এই অপেক্ষাকৃত কম উৎপাদনের কারণগুলির মধ্যে পরিবহনের অক্ষমতা এবং পানি,সার,বীজ, কিটনাশক প্রভৃতির বিতরণ ব্যবস্থা এবং অপ্রতুল জনশক্তি ও ঋণ অন্যতম। নিম্নে শরৎকালীন কৃষি উৎপাদনের পর্যালোচনাঃ
আমনঃ দিনাজপুরে স্বাভাবিকের মাত্র ১০ শতাংশ; রংপুরে স্বাভাবিকের ৮০ শতাংশ।
পাটঃ ১৫ শতাংশ এর কম।
বোরো (পানিতে রোপিত ধান)-প্রায় স্বাভাবিক।
চিনিঃ ভাল কিন্তু শ্রমিক সংকট ও একটি মিল ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় কারখানার সক্ষমতা অনিশ্চিত।
রাসেল এস ম্যাক ক্লার
দুর্যোগ ত্রান সমন্বয়কারী