You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.06.04 | কমান্ডো আক্রমণে পাকসৈন্য মরছে | আনন্দবাজার পত্রিকা - সংগ্রামের নোটবুক

কমান্ডো আক্রমণে পাকসৈন্য মরছে

আগরতলা ৩রা জুন (ইউএনআই)- বিভিন্ন স্থানে পাকসৈন্যের ওপর মুক্তিফৌজের কমান্ডো আক্রমণে আবার জোরদার হয়ে উঠেছে। গজারিয়া, চাঁদহাট, রাজানগর ও ফরিদপুর এলাকায় মুক্তিফৌজের আক্রমণে পাকসৈন্য নাজেহাল হয়েছে।

বগুড়া অঞ্চলে পয়লা জুন মুক্তিফৌজ পাকসৈন্যের একটি সাঁজোয়া গাড়ী দখল করে নেন। ঐ গাড়ীতে তিনটি রেডিও সেট ও ছয়টি স্টেনগান ছিল। একজন কমন্ডারের গাড়ী ও মুক্তিফৌজ দখল করে নেন। পশ্চিম বগুড়ার আর একস্থানে আক্রমণ চালিয়ে তাঁরা কয়েকজন পাকসৈন্যকে খতম করেন। আর একটি সংঘর্ষে পাকিস্তানের টহলদার বাহিনীর সাতজন সৈন্য নিহত ও দুজন আহত হয়।

আসাম সংলগ্ন কানিরঘাটে মুক্তিফৌজের সঙ্গে প্রবল লড়াই চলছে। মুক্তিফৌজের এই শক্তঘাঁটিতে পাকিস্তানকে ব্যাটালিয়ন সৈন্য নিয়োগ করতে হয়েছে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে গত ২৪ ঘণ্টায় মুক্তিফৌজের কমান্ডো আক্রমণ প্রবল হয়ে উঠেছে। কোচবিহারের বিপরীত দিকে অবস্থিত ভূরুঙ্গামারী চৌকি থেকে পাকসৈন্যদের হটিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চিলহাটি ও ডোমারের মধ্যবর্তী তিস্তাসেতু এবং কাকিনা ও ভূষিরবন্দরের মধ্যবর্তী সানিয়াজানা সেতুকে মুক্তিফৌজ উড়িয়ে দিয়েছেন। ফলে পাকিস্তানী সৈন্যরা কাকিনাতে আটক হয়ে পড়েছে। তাদের লালমনিরহাটে ফিরে যাবার পথ নেই।

দিনাজপুরের জগদলে গেরিলা বাহিনী পাকসৈন্যের ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালান। প্রচুর পাকসৈন্য হতাহত হয়েছে। ঠাকুরগাঁয়ের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রেও মুক্তিফৌজ নষ্ট করে দিয়েছেন। রংপুরজেলার ডিমলা ও বাউরাতে মুসলিম লীগের সাতজন পাকিস্তানী গুপ্তচরকে মুক্তিফৌজ খতম করেন।

গত সপ্তাহে মুক্তিফৌজের কমান্ডো আক্রমণে ফেনী এলাকায় চারজন অফিসারসহ শতাধিক পাকসৈন্য নিহত হয়েছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও জগ্ননাথদিঘীর মধ্যবর্তী কোন একস্থানে সোমবার মুক্তিফৌজ পাকসৈন্যের একটি জীপের ওপর আক্রমণ চালান। বিদ্ধস্ত জীপের ৪ জন আরোহী নিহত হয়। পয়লা জুন কসবা ও আখাউড়ার মধ্যবর্তী গঙ্গাসাগরের কাছে মুক্তিফৌজের আক্রমণে কয়েকজন পাকসৈন্য হতাহত হয়েছে। ত্রিপুরার সাব্রুমের বিপরীত দিকে অবস্থিত চট্রগ্রামের রামগড় এলাকায়ও কয়েকটি সংঘর্ষ হয়েছে।

-আনন্দবাজার পত্রিকা, ৪জুন, ১৯৭১