You dont have javascript enabled! Please enable it!

ঢাকায় আরো তীব্র হচ্ছে গেরিলা হামলা
১৫০ পাকসেনা নিহত
(অনুবাদ)

মুজিবনগর(বাংলাদেশ), ২৮শে মে- সপ্তাহের শুরুর দিকে রংপুর সেক্টরের ধরলা নদীর পারে পাকিস্তানী এবং মুক্তিবাহিনীর মধ্যবর্তী প্রবল এক সংঘর্ষে অন্তত ১৫০ জন পাকসেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পিটিআই। পাকিস্তানী আর্মিরা নদী পার হবার চেষ্টা করলে তা বানচাল করতে মুক্তিবাহিনী হামলা চালায় এবং তা প্রতিপক্ষের গুরুতর ক্ষতিসাধন করে।

এদিকে ২৬শে মে, সিলেট সেক্টরে মুক্তিবাহিনী একটি পাকিস্তানী কনভয়ে হামলা চালালে ২৫ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং আরো ১৪ জন আহত হয়। একটি ট্রাক ও একটি জীপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মুক্তিবাহিনী একইসাথে এই সেক্টরের রেমা চা বাগানে হামলা চালালে পাকিস্তানী বাহিনী তড়িঘড়ি করে সেখান তাদের দুইটি যুদ্ধযান রেখে পালিয়ে যায় এবং মুক্তিবাহিনী তা দখল করে নেয়।

মে এর ২৩ তারিখে, মুক্তি বাহিনীর একজন ছাত্র-যোদ্ধা চট্টগ্রাম এলাকার সাম্ব্রাম এলাকায় গ্রেনেড হামলা চালালে দুইজন পাকিস্তানী সেনা নিহত হয়। একি রাতে মুক্তিবাহিনী ছাগলনাইয়া অঞ্চলের নিকটবর্তী মুহুরি নদীতে অবস্থিত একটি ব্রিজ উড়িয়ে দেয়।

ময়মনসিংহের ভটিখালিতে মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানী সেনা ফাড়িতে হামলা চালায় সিলেটে জয়নায়াপুরে একটি ব্রিজ উড়িয়ে দেয়।

কুমিল্লা সেক্টরের বাজিতপুর পুলিশ স্টেশনে হামলা চালিয়ে মুক্তিবাহিনী সেখানে মজুত সকল গোলাবারুদ লুট করে নেয়।

রংপুরের পাটেশ্বরী ঘাটেও পাকিস্তানী সেনা এবং মুক্তি বাহিনীর মাঝে প্রবল সংঘর্ষ হয়, যদিও কোন হতাহতের খবর জানা যায়নি।

আমাদের শিলং অফিস আরো জানায় যে পাকিস্তানী আর্মিদের সাথে সামান্য সংঘর্ষের পর ডাউকি-সিলেট রোডে অবস্থিত সর্ববৃহৎ সারি ব্রিজটি বীর মুক্তিযোদ্ধারা গতকাল উড়িয়ে দিয়েছে।

সিলেটের মুল ভূখণ্ড থেকে পাকিস্তানী বাহিনী এখন সম্পূর্ণভাবে বিতাড়িত। অফিসিয়াল সংবাদসুত্রটি আরো জানায় যে, গোয়ালপাড়া নামক পূর্বপাকিস্তানী সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানী সেনাদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।

ডাউকি থেকে ধ্রুব মজুমদার জানান, তামাবিল এবং শ্রীপুর, এই দুই স্থানেই পাকিস্তানী আর্মি বেশ শক্ত অবস্থানে থাকলেও প্রবল সংঘর্ষের পর মুক্তিবাহিনীর হাতে তার পতন ঘটে। প্রবল যুদ্ধের পর, আন্তর্জাতিক বর্ডার থেকে ১৮ মাইল দূরে অবস্থিত জয়ন্তপুর এলাকারো দখল নিয়েছে মুক্তিবাহিনী। সীমান্ত থেকে ১০ মাইল দূরে অবস্থিত হরিপুরেও পাকিস্তানী সেনার উপর হামলা শুরু করেছে মুক্তিবাহিনী।

গত শুক্রবার সিলেটে মুক্তিবাহিনী এবং পাকবাহিনী উভয়ই বেশ একটি অস্থিতিশীল অবস্থানে ছিল বলে বলা যায়। পাকিস্তানী আর্মি তাদের অবস্থান একের পর এক হারাচ্ছিল, এবং মুক্তি বাহিনী একের পর এক যুদ্ধে বিজয় লাভ করছিল। যদিও কেউই শেষ পর্যন্ত কতখানি এলাকা দখলে রাখতে পারবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত ছিলনা।

-হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড, ২৯ মে, ১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!