You dont have javascript enabled! Please enable it!

বিভিন্ন রণাঙ্গনে মুক্তিফৌজের ব্যাপক গেরিলা আক্রমণ

কৃষ্ণনগর, ১১ মে- বাংলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে আজ মুক্তিফৌজ ব্যাপক গেরিলা আক্রমণ চালায়। সীমান্তের ওপার থেকে পাওয়া খবরে জানা যায়, মুক্তিফৌজ কমাণ্ডোরা রংপুর জেলার কোলাঘাট, মোগলহাট ও অমরখানায় পাকিস্তানী সামরিক ঘাঁটিগুলির ওপর আক্রমণ চালিয়ে যায়। মুক্তিফৌজের কমাণ্ডো দলের আমচকা থানায় মোহলহাটে বহু পাকিস্তানী সেনা নিহত হয়।

দিনাজপুর জেলায় মুক্তিফৌজ পার্বতীপুর-সান্তাহার রেল রুটে পঞ্চবিবি ও জয়পুরহাট শহরে পাক সামরিক ঘাঁটিগুলির ওপর আক্রমণ চালিয়ে সড়ক-যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত করে ফেলে। জয়পুরহাটের সংঘর্ষে সাতজন পাকসেনা নিহত হয়। সেখানে মুক্তিফৌজ রেলওয়ে সিগন্যাল ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র উড়িয়ে দেয়। নিকটবর্তী উরি রেলসেতুটিও বিধ্বস্ত। হিলির পাঁচ মাইল উত্তরে পাকিস্তানী সামরিক ঘাঁটির কাছে গেরিলারা একটি ডিজেল ইঞ্জিন ও কয়েকটি বগি উড়িয়ে দেয়।

পটুয়াখালী, ভোলা ও বরিশালে মুক্তিফৌজ সক্রিয়, তৎপর। দক্ষিণ-পূর্ব রণাঙ্গনে মুক্তিফৌজে ফেনী এলাকায় শোভাপুরে পাকিস্তানীদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে বহু পাকসৈন্য খতম হয়।

মুক্তিফৌজ কমাণ্ডোরা কুড়িগ্রামে পাকিস্তানী ঘাঁটির ওপর আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিফৌজের ১২ জন বন্দী জওয়ানকে ছাড়িয়ে আনে। ধরলা ও কুড়িগ্রামের মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু কমান্ডোরা ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়। ময়মনসিংহ জেলার দুর্গাপুর থানার কাছে পাকিস্তানী সৈন্যদের সঙ্গে এক সংঘর্ষে কমাণ্ডো দল অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ ভর্তি তিনটি জীপ আটক করে।

আখাউড়া চেকপোস্ট থেকে মুক্তিফৌজ সরে গিয়েছেঃ আগরতলার খবর পাঁচদিন ধরে হানাদার বাহিনীকে বাঁধা দেওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধারা আখাউড়া চেকপোস্ট থেকে আজ বিকালে সরে গিয়েছে। মুক্তিফৌজ মহল থেকে বলা হয়েছে, সরে আসার আগে মুক্তিযোদ্ধারা ডজনখানেক পাকসেনাকে খতম করে। মুক্তিফৌজের একজন কমান্ডার জানান, রণকৌশলের অংশ হিসেবেই এই পশ্চাদপসারণ।

-আনন্দবাজার পত্রিকা, ১২ মে ১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!