আখাউড়ায় প্রচণ্ড লড়াইঃ ১৫০ পাক সেনা নিহত
আগরতলা, ৮ মে শনিবার সারাদিন ধরে বাংলাদেশের নানাস্থানে মুক্তিফৌজ ও পাক-হানাদারদের মধ্যে তুমুল লড়াই চলে। লড়াই সবচেয়ে তীব্র আকার ধারণ করে আখাউড়ায়। এখানে মুক্তিফৌজের আক্রমণে ১৫০ পাক-সেনা নিহত হয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম রণাঙ্গনে মুক্তিফৌজ বারবার অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে পাক-বাহিনীকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখে। মুক্তিফৌজের একজন কমাণ্ডার জানান, উত্তর-পূর্ব রণাঙ্গনে তারা চীনা পদ্ধতিতে আক্রমণ চালাচ্ছে। চীনা পদ্ধতি হলঃ শত্রুকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে সীমাবদ্ধ অঞ্চলে আবদ্ধ রাখা।
পশ্চিম রণাঙ্গনের রংপুর, রাজশাহী ও কুষ্টিয়া জেলার শনিবার উভয় পক্ষে প্রচণ্ড লড়াই চলে। রাজশাহী জেলার মোহনপুরে চারজন পাক- সেনা নিহত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের একজন মুখপাত্র জানান, নতুন কায়দায় যুদ্ধ শুরু করে মুক্তিফৌজ গেরিলা বাহিনী সর্বত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে পাক বাহিনীকে কোণঠাসা করে ফেলেছে। গত দু’দিন নানা স্থানে রেল লাইন উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
রংপুর জেলার মোগলহাটে ৩০ জন ও কুড়িগ্রামে ৭ জন পাক-সেনা গতকাল মুক্তিফৌজের হাতে প্রাণ হারিয়েছে। নিহতদের মধ্যে রিজভি নামে এক ক্যাপ্টেনও আছে। কুড়িগ্রামে মুক্তিফৌজ পাক-বাহিনীর একজন সেনা মানওয়ার আলিকে বন্দি করেছে। তার গায়ে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল। মোগলহাটে মুক্তিফৌজ দুজন পাক-গুপ্তচরকে গুলি করে হত্যা করেছে। একজন গুপ্তচরকে বন্দী করা হয়েছে তার নাম মহম্মদ মণ্ডল। কুষ্টিয়া, যশোর ও রংপুর এলাকায় মুক্তিফৌজ পাক সেনাবাহিনীর গাড়ীগুলির উপর চোরাগুপ্তা আক্রমণ চালালে প্রচুর পাকসেনা নিহত হয়।
বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসন ব্যবস্থা চালুঃ ইউএনআই জানাচ্ছে, বাংলাদেশের রংপুর ও দিনাজপুর জেলার মুক্ত এলাকায় অসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। মুক্তিফৌজ ঐ সমস্ত এলাকা থেকে উত্তরাঞ্চলে অভিযান চালাচ্ছে।
-আনন্দবাজার পত্রিকা ৯ মে, ১৯৭১