শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
২২০। পাকিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র প্রেরণ সম্পর্কে পররাষ্ট্র বিবৃতির উপর বিতর্ক | ভারতের লোকসভার কার্য বিবরণী | ২৪ জুন, ১৯৭১ |
১৬:১৫ ঘটিকা
জরুরী জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ
জাহাজযোগে পাকিস্তানে আমেরিকান অস্ত্র আমদানি সম্পর্কিত সংবাদ
শ্রী আর.বি.বড়ে(খরগোন): স্পীকার মহোদয়, আমি নিম্নলিখিত জনগুরুত্ব সম্পন্ন বিষয়ের প্রতি মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং প্রার্থণা করছি যে, এই বিষয়ে তিনি একটি বিবৃতি দেবেন:
গত মার্চ মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কতৃক আরোপিত পাকিস্তানে অস্ত্র বিক্রয়ের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে সুন্দরবন এবং পদ্মা নামের দুটি পাকিস্তানি সমুদ্র জাহাজ যেগুলি যথাক্রমে ৮ মে এবং ২১শে জুন, ১৯৭১ তারিখে আমেরিকা হতে অস্ত্র নিয়ে রওয়ানা হয় সে সম্পর্কিত সংবাদ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী (শ্রী শরণ সিং): মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাকিস্তানে সামরিক সরঞ্জাম আসা সম্পর্কিত প্রকাশিত সংবাদে সংসদের বাকি সবার মত সরকারও উদ্বিগ্ন। সুন্দরবন এবং পদ্মা নামের দুটি পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজ যথাক্রমে ৮ মে এবং ২১শে জুন, ১৯৭১ তারিখে আমেরিকা হতে অস্ত্র নিয়ে রওয়ানা হয়েছে এই মর্মে নিউ ইয়র্ক টাইমসে ২২ জুন তারিখে প্রকাশিত সংবাদ আপাতদৃষ্টিতে সঠিক বলে মনে হচ্ছে।
‘এসময় কিছু সাংসদ সমস্বরে “শেইম, শেইম!” বলে নিন্দা জ্ঞাপন করেন ‘
সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথেই আমাদের রাষ্ট্রদূত যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারী অফ স্টেটের কাছে ২২ জুন সন্ধায় বিষয়টি তুলে ধরেন। ২৩ জুন নয়াদিল্লীতে অবস্হিত মার্কিন দূতাবাসকেও বিষয়টি অবহিত করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী ২৫শে মার্চের পর থেকে পাকিস্তানি সরকারের কাছে কোন অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দেয়া হয়নি; ২৫ শে মার্চের পর থেকে পাকিস্তানীদের বানিজ্যিকভাবে কোন এক্সপোর্ট লাইসেন্স দেয়া হয়নি এবং কোন লাইসেন্স নবায়নও করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র সরকার আরো জানিয়েছো অস্ত্রের চালানে ৮ টি জঙ্গীবিমান থাকা সংক্রান্ত নিউইয়র্ক টাইমসের সংবাদটি সঠিক নয়। জাহাজদুটিতে কোন জঙ্গীবিমান ছিলনা। তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার স্বীকার করেছে যে ২৫ শে মার্চের পূর্বে অনুমোদিত কোন চালান নিউইয়র্ক টাইমসে উল্লেখিত ঐ দুটি জাহাজে উঠানো হয়ে থাকতে পারে। তারা আরো জানিয়েছে যে ২৫শে মার্চের আগে ইস্যুকৃত কোন এক্সপোর্ট লাইসেন্সের ভিত্তিতে বানিজ্যিকভাবে ক্রয়কৃত কোন জিনিষ ঐ জাহাজে থাকতে পারে। আবার কিছু কিছু সরঞ্জাম কেনার জন্য এক্সপোর্ট লাইসেন্সেরও প্রয়োজন পড়েনা। উল্লেখিত দুটি জাহাজে এধরনের জিনিষও থাকার সম্ভাবনা আছে। এসবের উপর ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে যে ২৫শে মার্চের পূর্বে অনুমোদিত কাগজপত্রের ভিত্তিতে সংগ্রহিত কোন ধরনের অস্ত্র জাহাজদুটিতে থাকার সম্ভাবনা আছে। যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারী অফ স্টেট আমাদের উদ্বেগকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন এবং তাদের বানিজ্য ব্যাবস্হার এই ত্রুটির ব্যাপারে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। পূর্বে অনুমোদিত এক্সপোর্ট লাইসেন্সের আওতায় কি কি করা যায়, সেই ব্যাপারে তিনি আমাদের বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। আগের অনুমোদনের উপর ভিত্তি করে এধরনের আরো অস্ত্রের চালান ছাড় করানো সম্ভব হবে কিনা সেটা এখনো জানা যায়নি। আন্ডার সেক্রেটারী মহোদয় জানিয়েছেন যে বিষয়টি তারা পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে দেখছেন এবং এব্যাপারে এই মুহূর্তে মন্তব্য করা সম্ভব নয়।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে আমরা জানিয়েছি যে বাংলাদেশের নিরস্ত্র জনগণের উপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হত্যা-নির্যাতন চলা অবস্হায় তাদের কোন ধরনের সামরিক শক্তিবর্ধন শুধু উপমহাদেশ নয়, সমগ্র এলাকারই শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে। এই মুহূর্তে পাকবাহিনীকে কোন ধরনের অস্ত্র সাহায্য করার অর্থ হচ্ছে তাদের নির্মমতার অনুমোদেন দেওয়া এবং আরো বেশী নৃশংস হতে তাদের উৎসাহিত করা।
শ্রী এস.এম.ব্যানার্জি (কানপুর): আমরা আপনার থেকে আরো বেশী কিছু আশা করি। গতকাল আমেরিকান দূতাবাস থেকে আমরা আরো কিছু তথ্য পেয়েছি। জাহাজদুটির এখন কি অবস্হা?
এই সময় মন্ত্রীর বক্তব্যে বাঁধা পড়ে
শ্রী শরণ সিং: আপনি ভুল সময়ে আমাকে বাঁধা দিচ্ছেন, আমার বক্তব্য শেষ হয়নি। আমার পরের কথাগুলো শুনুন।
শ্রী এস.এম.ব্যানার্জি: ভবিষ্যতে কি হচ্ছে? সেই ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কি?
শ্রী শরণ সিং: আমি আমার অবস্হান ব্যাখ্যা করছি। আপনি ধৈর্য্য ধরছেননা কেন?
যুদ্ধাস্ত্রবাহী দুটি জাহাজকে থামানোর চেষ্টা করতে এবং পূর্ব অনুমোদনের উপর ভিত্তি করে আর নতুন কোন অস্ত্রের চালান ছাড় দেয়া হবেনা এই ব্যাপারে আমাদের নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি।
আমরা আশা করি যুক্তরাষ্ট্র সরকার, যারা …….এসময় কিছু সাংসদ সমস্বরে “শেইম, শেইম বলে চিৎকার করতে থাকেন।
শ্রী এস.এম.ব্যানার্জি: আপনার লজ্জিত হওয়া উচিত। তারা নির্মভাবে মানুষকে হ্ত্যা করছে আর আপনি শুধু আশা নিয়ে আছেন। আমরা আপনার কাছ থেকে অনেক বেশী কিছু আশা করি। (এই সময় মন্ত্রীর বক্তব্যে আবারও বাঁধা পড়ে)
শ্রী শরণ সিং: আপনি আমাকে বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত রাখতে পারেননা। আমি কি বক্তব্য দেব সেটা আপনি ঠিক করে দেয়ার অধিকার রাখেন বলে আমি মনে করিনা। আপনি চিৎকার করে যেতে পারেন, কিন্তু আমার বক্তব্য আপনি নির্ধারন করতে পারেননা। এটা আমার বক্তৃতা, আপনার নয়। আপনি ইচ্ছা করলে যেকোন প্রশ্ন করতে পারেন।
শ্রী শরণ সিং: আমরা আশা করি যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার চেতনা লালন করে, এ দুটি জিনিষ ব্যাহত হয় এরকম কোন কিছু তারা অনুমোদন করবেনা। আজকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা নির্লজ্জভাবে ব্যাহত হচ্ছে, আমরা আশা করি যুক্তরাষ্ট্র সরকার এতে কোন ধরনের সমর্থন দেবেনা। আমাদের প্রত্যাশা এই যে যতদিন পর্যন্ত পাকিস্তানী সামরিকজান্তা বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেনা, ভারতের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে শরণার্থী আসা বন্ধ হবেনা এবং ভারতে অবস্হানরত শরণার্থীরা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবেনা; ততদিন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সরকার পাকিস্তানের কাছে কোন ধরনের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করবেনা।
শ্রী আর. বি. বড়ে: মাননীয় স্পীকার মহাশয়, মাননীয় মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেছেন-
“যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে আমরা জানিয়েছি যে বাংলাদেশের নিরস্ত্র জনগণের উপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হত্যা-নির্যাতন চলা অবস্হায় তাদের কোন ধরনের সামরিক শক্তিবর্ধন ….”
– আমি জানতে চাই আপনি ‘জেনোসাইড’ শব্দটি কেন ব্যাবহার করেননি? ‘জেনোসাইড’ শব্দের পরিবর্তে আপনি ‘এ্যাট্রোসিটিস’ শব্দটি ব্যাবহার করেছেন, এতে বাইরের দেশ সমূহের উপর কোন ভাল প্রভাব পড়েনি। পার্লামেন্টের বিবৃতিতে জেনোসাইড শব্দটি থাকা উচিত ছিল।
দ্বিতীয় কথা- পাকিস্তানী জাহাজগুলি চলে গেল, আমেরিকা তাদের কেন থামালো না? আপনি আপনার বিবৃতিতে পাকিস্তানী জাহাজগুলোকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য আমেরিকার সাথে কথা বলেছেন কিনা সেটা উল্লেখ করেননি।
তৃতীয় কথা- ঐ জাহাজগুলোতে কি ধরনের মালপত্র ছিল সে ব্যাপারে আমেরিকান দূতাবাস থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমি আপনার কাছে জানতে চাই ঐ জাহাজসমূহে কি কি মাল ছিল, আপনার বিবৃতিতে একথা বলা হয়নি।
চতুর্থ কথা- আপনি বলেছেন তাদের সামরিক সরঞ্জাম দেয়া উচিত নয়, কিন্তু আপনি কি তাদের উপর আর্থিক সাহায্য না দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছেন? নিউইয়র্ক টাইমস খবর ছেপেছে পাকিস্তানের ঐ জাহাজগুলোতে সামরিক সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। তারা আমেরিকার অর্থ সাহায্যও পাচ্ছে। এরুপ অগণতান্ত্রিক দেশকে কোন ধরনের আর্থিক সাহায্য দেয়া উচিত নয়- এ বিষয়ে কি আপনি আমেরিকাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন?
পঞ্চম কথা- যখন আপনি পালাম বিমানবন্দরে নামলেন, তখন একবারেই বলে দিলেন
” রিপোর্টটি সঠিক কিনা এ নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারছিনা”
এর অর্থ কি?
শ্রী শরণ সিং: আপনি আমার পুরো বিবৃতি পড়েননি, শুধু এই ছত্রটি উদ্ধৃত করছেন।
শ্রী আর. বি. বড়ে: আমার মনে হয় আমাদের দুতাবাস নিজের কাজে ক্ষিপ্র নয় অথবা যা কিছু সেখানে প্রকাশিত হয় যেমন নিউইয়র্ক টাইমসের সংবাদ, সেসব তথ্য আমাদের রাষ্ট্রদূত পাননা। একারনেই আপনি যখন বিমান বন্দরে আসলেন এবং নিউইয়র্ক টাইমসের সংবাদ আপনার সামনে রাখা হল, তখন আপনি বললেন,
” রিপোর্টটি সঠিক কিনা এ নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারছিনা”
আমি একথাও বলতে চাই যে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে গোপনে লেন-দেন করছে, যার সুস্পষ্ট প্রমাণ সিনেটর ফ্রাঙ্ক চার্চ-এর বক্তৃতা। ১৭ জুন তিনি অভিযোগ করেছেন যে পাকিস্তানে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে, যার উত্তর নিক্সন সরকার এ যাবত দেননি। আপনি যখন আমেরিকা গিয়েছিলেন তখন আমাদের দূতাবাস আপনাকে এই তথ্য কি দিয়েছিল?
শ্রী শরণ সিং: আমি সংক্ষেপে আমার উত্তর দেয়ার চেষ্টা করছি। ‘জেনোসাইড’ শব্দটি ব্যাবহারে আমি প্রস্তুত আছি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে আমরা ইতিমধ্যে শব্দটি ব্যাবহার করেছি। ‘জেনোসাইড’ শব্দের ব্যাবহার যদি আমার সম্মানিত বন্ধুদের খুশি করে, তবে আমি তাই করব কিন্তু আমি এটাও বলতে চাই যে আমার বক্তৃতায় ব্যাবহৃত শব্দাবলী কোন অংশেই বাংলাদেশের অবস্হাকে খাটো করে দেখাচ্ছেনা।
দ্বিতীয় প্রশ্নে উনি জিজ্ঞেস করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার কেন জাহাজদুটিকে আটকায় নাই। এর উত্তরে আমি বলতে চাই, আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে ঠিক এই কাজটাই করতে বলছি। আমাদের দাবী হচ্ছে তারা জাহাজগুলো আটক করুক এবং অস্ত্রের চালান যেন পাকিস্তানে না পৌছাতে পারে সেটা নিশ্চিত করুক।
শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ি: তাদের সিদ্ধান্ত কি?
শ্রী শরণ সিং: আমি ইতিমধ্যে আমার বক্তব্যে বলেছি যে তারা এখনো তাদের সিদ্ধান্ত জানায়নি।
উনার তৃতীয় প্রশ্নে উনি জাহাজে সরঞ্জামের একটি তালিকা চেয়েছেন। আমি দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে এই মুহূর্তে সেটি দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা।
শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ি: স্পীকার মহোদয়। বক্তাদের তালিকায় আমার নাম নেই, আমি জোর করে বলতে চাইনা। মন্ত্রী মহাশয়ের হয়তো মনে আছে, ১৯৬৫ সালে আমেরিকার কয়েকটি জাহাজ অস্ত্র নিয়ে আসছিল। সেগুলো ভারতীয় সীমান্তের ১৫ মাইলের মধ্যে থেমেছিল, তাদের থামান হয়েছিল। আমেরিকা যদি চায় তাহলে জাহাজ থামিয়ে দিতে পারে।
শ্রী শরণ সিং: আমি একমত যে আমেরিকা চাইলে এটা করতে পারে। জাহাজ থামানোর সিদ্ধান্ত নিলে তারা সেটা থামাতে পারে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। আমরা তাদের অসম্ভব কিছু করতে বলছিনা। তাদের যেটা করা উচিত আমরা ঠিক সেটিই করতে বলছি।
শ্রী শ্যামানন্দন মিশ্র (বেগুসরাই): তারা কি পাকিস্তানী জাহাজ থামাতে পারে?
শ্রী শরণ সিং: আমি জানিনা তিনি কিভাবে এতটা দ্বিধাগ্রস্ত হতে পারেন।
শ্রী শ্যামানন্দন মিশ্র: তাকে অন্য কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে চাপ দেয়া হোক।
শ্রী শরণ সিং: তালিকার ব্যাপারে দুঃখের সাথে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে পাকিস্তানি জাহাজে কি কি জিনিষ থাকতে সে ব্যাপারে আমাদের কোন ধারনা নেই।
উনার চতুর্থ আলোচ্য বিষযয়ের উত্তর হচ্ছে, পাকিস্তানের অনেকগুলো দাতা রাষ্ট্রের কাছে পাকিস্তান কতৃক বাংলাদেশে অত্যাচার বন্ধ, নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায়ন এবং শরণার্থীদের নিরাপদে ফিরিয়ে না নেয়া পর্যন্ত অর্থ সাহায্য না করতে আমরা জোর আহ্বান জানিয়েছি।
পঞ্চমত, উনি পালাম বিমানবন্দরে দেয়া আমার বিবৃতির সমালোচনা করেছেন। ব্যাপারটা আমি ব্যাখ্যা করতে চাই। আমাকে শুধু একটা ছাপা টেলিগ্রাম দেখিয়ে বলা হয়েছিল যে আমেরিকা থেকে আসা এই টেলিগ্রামে অস্ত্রসরবরাহের খবরটি এসেছে। খবরটি সঠিক কিনা আমাকে জিজ্ঞেস করা হয় এবং আমার প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়। আমার উত্তর ছিল আমি এখনো জানিনা খবরটি সঠিক কিনা, আমাকে বিস্তারিত দেখতে হবে। খবরটা যদি সঠিক হয়, তাহলে এটি হবে আমাদের দেয়া সবধরনের আশ্বাসের বরখেলাপ। আমরা সম্পূর্নরুপে এর বিরুদ্ধাচারণ করি। এটি ছিল আমার বক্তব্যের দ্বিতীয় অংশ, যেটা মাননীয় সাংসদ পড়ে শোনান নি।
ষষ্ঠত উনি বলেছেন যে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে পাকিস্তান এবং আমেরিকার মধ্যে কোন গোপন আঁতাত চলছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তরফ থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে যে বাংলাদেশের নিরস্ত্র মানুষের উপর পাকবাহিনীর নির্যাতন, নিপীড়নের কারনে তাদের কোন ধরনের অস্ত্রসরবরাহ করা হবেনা। এর কোন বরখেলাপ হলে আমরা তার নিন্দা জানাই।
শেষ প্রশ্নটি এতই হাস্যকর যে আমি এর উত্তর দেয়ার প্রয়োজন বোধ করছিনা। আমি শুধু উনার সমালোচনাকে মরা ইঁদুরের সাথেই তুলনা করতে পারি।
শ্রী আর.ভি.বাদে: আপনি কি জেনেছিলেন যে একজন আমেরিকান সিনেটর পাকিস্তান এবং আমেরিকার গোপন আঁতাতের ব্যাপারে সরকারের কাছে চিঠি লিখেছেন?
শ্রী শরণ সিং: আমার এই তথ্য জানা ছিল। যেসব আমেরিকান সিনেটর এবং সংবাদকর্মী এই আঁতাতের ব্যাপারে তথ্যপ্রকাশ করছেন, আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
শ্রী কমল মিশ্র মাধুকর(কেসরিয়া): স্পীকার মহোদয়, এই বিবৃতি শুনে মনে হয় যে, এটি কোন আত্নসম্মান সম্পন্ন দেশের বিদেশমন্ত্রীর বিবৃতি নয়। মনে হয় এটি একটি অধীন সরকারের বিবৃতি যা আমেরিকা মহাপ্রভুর সামনে বলার সাহস রাখেনা কিমবা তার এই উপলব্ধি নেই যে, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ভিয়েতনাম, ইসরাইল, আরব রাষ্ট্র অথবা দক্ষিণ আমেরিকা বিশ্বের সর্বত্রই গণহত্যা চাপিয়েছে এবং গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। সেই সরকার সম্পর্কে আপনি নিজ বিবৃতিতে বলেছেন যে, আমাদের প্রত্যাশা, গণতন্ত্র এবং আত্ননিয়ত্রণাধিকারে বিশ্বাসী যুক্তরাষ্ট্র সরকার….আমি মনে করি বিদেশমন্ত্রীর এই বিবৃতি মার্কিন সরকারের সঠিক চিত্র প্রতিফলিত করেনা। আপনি এলেন এবং বিমান বন্দরে বিবৃতি দিলেন, তারপরেও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় যে, আমেরিকা হতে পাকিস্তানের জন্য অস্ত্র বোঝাই জাহাজ আসছে। এর অর্থ এই যে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দের সম্পর্কে আপনার ধারনা ভুল কিমবা স্পষ্টভাষায় বলার সাহস আপনার নেই। এই বিবৃতিতে কোথাও আপনি তাদের নিন্দা করেননি। কোন কঠিন শব্দ প্রয়োগও তাতে করা হয়নি…..এতদিন পরে আপনার বক্তব্যে এসেছে ২৫শে মার্চের পরে সেখানে পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের নতুন কোন সমঝোতা হয়নি, পাকিস্তানে অস্ত্র সরবরাহের কোন লাইসেন্স দেয়া হয়নি, কিন্তু তা সত্বেও পাকিস্তানে অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে এবং সেখান থেকে জাহাজ রওয়ানা হয়ে গেছে। তাহলে আপনার দূতাবাসের কর্মকর্তারা কি কানে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছিল বা আমেরিকান নাইটক্লাব সমূহে ঘুমিয়ে ছিল? তারা কোথায় ছিল যে আপনাকে খবর দিতে পারেনি? যদি না দিতে পারে তাহলে দূতাবাস রেখে কি লাভ?
দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, এভাবে যে অস্ত্র আসছে তা রুখবার জন্য আপনি কি ব্যাবস্হা নিয়েছেন সেকথা পরিষ্কারভাবে বলেননি। আপনি প্রতিবাদ নোট পাঠিয়েছেন, কিন্তু অস্ত্র সরবরাহ না করা নিশ্চিত করতে কি করেছেন?
একদিকে আপনার বিরুদ্ধে অস্ত্র দেয়া হচ্ছে, আপনাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে, অন্য দিকে আপনাকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার প্রলোভন দেখান হচ্ছে। এই দু-মুখো নীতির ব্যাপারে আপনার বলা উচিত, এরুপ অপমানজনক সহায়তা আমরা নিতে চাইনা। এই দেশের শান্তি এবং বিশ্ব শান্তির জন্য বিপদ ডেকে আনে, এরকম সাহায্যের আমরা ঘোর বিরোধী- একথা দৃঢ়তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে বলা উচিত।
আপনাকে বলতে হবে, যে পত্র আপনি নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে দিয়েছেন তার প্রতি ঐ সরকারের আচরণ কি।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিবৃতিতে সত্যতা থাকেনা। ১৯৬৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বলেছিল যে, পাকিস্তানে যে অস্ত্র দেয়া হচ্ছে তা সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে লড়বার জন্য দেয়া হচ্ছে কিন্তু তা ভারতের বিরুদ্ধে ব্যাবহৃত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশে কোন রাজনৈতিক সমাধান চায় তাহলে তার ভূমিকা কি এই হবে যে সে পাকিস্তানকে অস্ত্র দেবে? এতে সুস্হ পরিবেশের সৃষ্টি হবেনা।
বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কি? একদিকে আপনি বলছেন যে তাকেই সাহায্য করবেন, অন্য দিকে তার সমস্যাবলীর অপেক্ষা আমাদের দেশের জন্যই মাথাব্যাথা বেড়ে গেছে, এই পরিস্হিতিতে শেষ পর্যন্ত আপনার সিদ্ধান্ত কি, কিভাবে তাদের সাহায্য করতে চান তা স্পষ্ট করে কেন বলছেন না? আমার মতে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে পৃথক ভাবে তাকে সাহায্য দেয়াই বেশী ভাল।
এসব বিষয়ে আমি সরকারের ব্যাখ্যা চাইছি।
শ্রী শরণ সিং: আমি মাননীয় সাংসদকে আশ্বস্হ করতে চাই যে আমরা যুক্তরাষ্ট্র অথবা অন্য কোন দেশের ভয়ে ভীত নই। প্রত্যেক ব্যাপারেই আমাদের নিজস্ব নীতি আছে এবং কোন রাষ্ট্রের আচরণের ব্যাপারে আমাদের মত আমরা পরিষ্কারভাবেই বলি। আমরা অবশ্যই কোন দেশের নির্দেশ মেনে চলব না, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আচরণের প্রতিবাদে আমাদের বিরোধী দলীয় সাংসদ যেসব শব্দ ব্যাবহার করছেন তা আমি সমর্থন করিনা।
তার কিছু প্রশ্ন শুধুমাত্র তার বক্তব্যের অংশ, সেখান থেকে আমি সতর্কতার সাথে যে সব ক্ষেত্রে আমার কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে তার উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব।
উনি জানতে চেয়েছেন মার্কিন সংবাদপত্রে আসার আগে আমাদের দূতাবাস কেন অস্ত্র সরবরাহের তথ্য পেতে ব্যার্থ হল। আমাদের এটা বুঝতে হবে যে যুক্তরাষ্ট্রের মত এত বড় একটা দেশের কোথা থেকে কি পণ্য কোথায় সরবরাহ করা হচ্ছে তার সব কিছু জানা কোন দূতাবাসের পক্ষেই সম্ভব নয়।
শ্রী জ্যোতির্ময় বসু: তারা আমাদের দেশে এই তথ্য সাফল্যের সাথেই সংগ্রহ করে।
শ্রী শরণ সিং: আপনার হয়তো গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ভাল কোন উপায় আছে।
শ্রী জ্যোতির্ময় বসু: আমি বলেছি “তারা”। আমাদের দেশে আমেরিকানদের শক্তিশালী গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক আছে।
শ্রী শরণ সিং: আপনি হয়তো ঠিক, হয়তো অন্য দেশেরও এরকম শক্তিশালী নেটওয়ার্ক আছে। আমরাও যতটুকু সম্ভব তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করি।
এবং আমরা নিজেদের ব্যাপারে যতটুকু সম্ভব সতর্ক থাকার চেষ্টা করি।
একজন মাননীয় সাংসদ: কিন্তু আপনারা কোন তথ্যই পান না।
শ্রী শরণ সিং: অনেক তথ্যই আমরা মাননীয় সাংসদদের দেইনা। আমাদের হাতে অনেক তথ্য থাকে, যা হয়তো আমরা সবসময় ব্যাবহার করিনা।
উনি আরো জানতে চেয়েছেন যে আমেরিকা জাহাজ না থামালে আমরা কি করতে পারি। আমরা তাদের জাহাজ থামানোর অনুরোধ করেছি, সুতরাং এই মুহূর্তে এই হাইপোথিটিক্যাল প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। তার পরবর্তী প্রশ্ন ছিল আমাদের দাবীর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের জবাব কি? আমি ইতিমধ্যে বলেছি যে মাত্র দুই দিন হয় দাবী জানানো হয়েছে, আমরা এখনো উত্তরের অপেক্ষা করছি।
শেষ প্রশ্ন ছিল বাংলাদেশের ব্যাপারে আমাদের নীতি সম্পর্কে। আমার মনে হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেকবারই বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমাদের সহানুভূতি এবং সমর্থন ব্যাক্ত করেছেন। আমরা এখন যে দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছি, তার সাথে এই প্রসঙ্গের কোন সম্পর্ক নেই।
শ্রী এন.কে.সাঙ্গী (লালোর): এস.এস.পদ্মা এবং এস.এস.সুন্দরবনের মাধ্যমে অস্ত্র সরবরাহ করাটা ভারতের লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেয়ার মত। আমাদের মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী লম্বা বিদেশ সফরে অনেকগুলো দেশে গিয়েছেন এবং বাংলাদেশের বাস্তবতা, সেখানকার গণহত্যা এবং আমাদের সমস্যাগুলোর ব্যাপারে বিশ্ব নেতৃত্বকে অবহিত করেছেন। এজন্য আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই, কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁর দেশে ফেরার ১৮ ঘন্টার মধ্যে নিউইয়র্ক টাইমস মারফত আমরা এই অস্ত্র সরবরাহের খবর পাই। এই মাত্র মাননীয় মন্ত্রী নিশ্চিত করলেন যে টেলিগ্রাম মারফত তিনিও নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত খবরটি জেনেছেন। এটা অন্ত্যন্ত দুঃখজনক যে এখন পর্যন্ত আমেরিকা থেকে আমাদের দূতাবাস এই ব্যাপারে কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য পাঠায়নি। আমেরিকার ভারতনীতিতে এটা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি পরিষ্কারভাবে বোঝার জন্য আমাদের একটু পিছনে ফিরে যেতে হবে। প্রয়াত স্টেট সেক্রেটারী জন ফস্টার ডালাস একটি নীতি প্রবর্তন করেছিলেন, ‘যারা আমেরিকার মিত্র নয় তারা সবাই আমেরিকার শত্রু’। এই কারনে ভারতকে সবসময় হুমকির মুখে রাখার জন্য তিনি পাকিস্তানের মত দেশে সমরাস্ত্র বিক্রি করা শুরু করেন।
২৫শে মার্চ পরবর্তী বাংলাদেশের ঘটনাবলীর দিকে দৃষ্টি ফেরানো যাক। গন্ডগোল শুরু হবার পরপর যুক্তরাষ্ট্র আমাদের আশ্বস্ত করেছিল যে পাকিস্তানে কোন গোলা-বারুদ পাঠানো হবেনা। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের রবার্ট ম্যাকলাস্কি ১৬ই এপ্রিল জানিয়েছিলেন যে পাকিস্তানে কোন অস্ত্র পাঠানো হবেনা এবং পাইপলাইনেও কোন অস্ত্রের চালান নেই। তিনি বলেছিলেন জেটিতে পড়ে থাকলেও পাকিস্তানে কোন অস্ত্র যাবেনা। কিন্তু এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি জাহাজ ভর্তি গোলা-বারুদ পাকিস্তানে পাঠানো হচ্ছে। ইস্ট পাকিস্তান শিপিং এজেন্সি অফ আমেরিকা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে যে অস্ত্র ও গুলির চালান নিয়ে জাহাজ দুটি একাধিকবার আমেরিকা-পাকিস্তানে আসা-যাওয়া করেছে। ২৫শে মার্চের পরে আরো অনেকগুলি অস্ত্রবাহী জাহাজ পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে আমেরিকা ছেড়েছে। যুদ্ধের শুরুতে লজিস্টিক বিশেষজ্ঞরা আমাদের বলেছিলেন আরো ১০ দিন যুদ্ধ চললে পাকিস্তানীদের গোলা-বারুদ ফুরিয়ে যাবে। অথচ এখন তিন মাসের বেশী হয়ে গেল এবং পাকিস্তান বাংলাদেশে চার ডিভিশন সৈন্য মোতায়েন করে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। চীন, পাকিস্তান এবং অন্যান্য দেশ থেকে তারা যুদ্ধ চালানোর রসদ পাচ্ছে। আমাদের কূটনীতিক মিশনগুলোর তুলনায় পাকিস্তানের বিদেশী লবি অনেক বেশী শক্তিশালী, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড উইলসনের সাম্প্রতিক একটি উক্তি থেকে যেটা পরিষ্কার বোঝা যায়। উইলসন বলেছেন যে পাক-ভারত যুদ্ধের ব্যাপারে তাঁকে ভুল বোঝানো হয়েছিল। এখন যুক্তরাষ্ট্র সরকার আমাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি ও আশ্বাস বার বার ভঙ্গ করছে, এ ব্যাপারে আমাদের কি করা উচিত? ১৯৬৫ সালের পর তারা বলেছিল যে পাকিস্তানকে চীনের সঙ্গছাড়া করার জন্য তারা পাকিস্তানকে সাহায্য করছে। পরে আবার একই ঘটনা ঘটানোর পর তারা বলেছিল এটি শুধু একবারের জন্যই তারা করছে, এর পুনরাবৃত্তি হবেনা। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি বার বার আমাদের আশ্বাস দেত্তয়া সত্বেও তারা পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহ করেই যাচ্ছে। তাদের আমরা কতটুকু বিশ্বাস করতে পারি? এখন আমি এই বিষয়ে দুটি সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন করতে চাই। ভারতীয় সরকার কি জাতিসংঘকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবার জন্য ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেবে? এর ভেতর তারা কোন পদক্ষেপ না নিলে ভারত জাতীয় স্বার্থে তাদের অনুমতি ব্যাতিরেকে যেকোন পদক্ষেপ নেবার ক্ষমতা রাখবে। দ্বিতীয়ত বর্তমান অবস্হার প্রেক্ষিতে ভারত কি সকল ধরনের মার্কিন প্রতিষ্ঠান থেকে আসা ত্রান সাহায্য প্রত্যাখ্যান করবে? এত কিছু পরেও মার্কিন সাহায্য নেয়া সমগ্র জাতীর জন্য অপমান।
শ্রী শরণ সিং: সাংসদ মহোদয়ের সমালোচনা এবং বক্তব্যের প্রথম অংশের সাথে আমি মোটা দাগে একমত। তার বক্তব্যের সাথে কিছু প্রশ্ন সংযোজিত ছিল এবং তার বিশ্লেষনের সাথে আমি সম্পূর্ণরূপে একমত। তবে তার দেয়া পরামর্শগুলি গ্রহণ করতে পারছিনা, এই মুহূর্তে কোন সময়সীমা বেঁধে দেয়া অথবা ত্রানসাহায্য প্রত্যাখ্যান করা বুদ্ধিমানের কাজ হবেনা।