You dont have javascript enabled! Please enable it! ডা. হাসিবুর রহমান | মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক - সংগ্রামের নোটবুক

জীবনচিত্র    নামঃ ডা. হাসিবুর রহমান

Dr. Hasibur Rahman

ডাকনামঃ ফারুক

পিতার নামঃ আব্দুর রহমান

ধর্মঃ ইসলাম

স্থায়ী ঠিকানাঃ গ্রাম-কুলকান্দি

উপজেলা-ইসলামপুর

জেলা-জামালপুর

জন্মঃ ১৯৩২ সাল

 

শহীদ ডা. হাসিবুর রহমান

 

ডা. হাসিবুর রহমান ওরফে ফারুক জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলাধীন কুলকান্দি গ্রামের সম্রান্ত ‘মিঞা বাড়ি’তে ১৯৩২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। স্থানীয়ভাবে তিনি ফারুক ডাক্তার নামে পরিচিত ছিলেন। তার পিতার নাম আব্দুর রহমান। তিনি একজন এল.এম.এফ. চিকিৎসক ছিলেন। তিনি দীর্ঘ ৮ বছর ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ১নং কুলকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই ইউনিয়নের যুবকদের সংগঠিত করে স্বাধীনতা সগ্রামে। যোগ দেয়ার জন্য তিনি সংগ্রাম কমিটি গঠন করেন। মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের জন্য এলাকার যুবকদের তিনি অনুপ্রাণিত করে ভারতে প্রেরণ করেন। এসব কার্যকলাপের কথা পাক হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকার ও শান্তি বাহিনীর ব্যক্তিবর্গ পাকসেনাদের ক্যাম্পে জানিয়ে দেয়। পরে পাকসেনা ও রাজাকাররা ডা. হাসিবুর রহমানকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। কুলকান্দি গ্রামের খানপাড়া টি. কে, প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পাকবাহিনী ডা. হাসিবুর রহমানকে ১৯৭১ সালের ৮ জুলাই গুলি করে হত্যা করে। ডা. হাসিবুর রহমান, তাঁর ভাই এবং চাচাসহ ঐ এলাকার মোট এগারোজন নিরপরাধ ও নিরীহ লোককে ঐদিন ঘাতকবাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে; এরা হলেন-কায়সার আমিনুর রহমান, মুরাদ আলী লোটন, সামাদ, তালেব আলী খান, হামিদ, রফিজ, নূরু, তমিজউদ্দিন বেগ প্রমুখ। কায়সার আমিনুর রহমান ছিলেন ডা. হাসিবুর রহমানের সহোদর ভাই এবং শাহজাহান ছিলেন তাঁর চাচা।

ডা. হাসিবুর রহমান ছিলেন দুস্থ মানুষের অন্তরঙ্গ বন্ধু। রোগজীর্ণ মানুষের তিনি ছিলেন নিত্যসঙ্গী; রাত নেই দিন নেই যখন যেখান থেকে ডাক আসতে তিনি ছুটে যেতেন; রোগীর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতেন। রুগ্‌ণ মানুষের সেবায় তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেনধনী-গরিব নির্বিশেষে তিনি সবাইকে একান্ত আপনজন হিসেবে কাছে টেনে নিতেন। মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল দিনগুলোতে

 

 

৩৮৬      মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসকে জীবনকাষ

 

শহীদ ডা. হাসিবুর রহমান

 

অনেকেই তাকে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে অনুরোধ করেছিলেন। মানুষের দুঃখের দিনে যিনি সেবাদানের দায়িত্ব পালন করছিলেন, সেই তিনি সবাইকে ফেলে ভারতে চলে যেতে পারেননি। পরিণতিতে তাঁকে প্রাণ দিতে হলো পাকসেনাদের হাতে। ডা. হাসিবুর রহমান বিবাহিত ছিলেন। তিনি স্ত্রী ও চার ছেলে রেখে যান। উত্তরাধিকার সূত্রে শহীদের স্ত্রী মোসাম্মৎ রিজিয়া আক্তার রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতাসহ বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট প্রদত্ত সুবিধাদি পেয়ে থাকেন। ডা. হাসিবুর রহমান প্রখ্যাত সাহিত্যিক-সাংবাদিক হাসান হাফিজুর রহমানের সহোদর।

 

প্রাসঙ্গিক উল্লেখযোগ্য তথ্যসূত্রঃ

 

ক. মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী তালিকা; তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রকাশকালঃ ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ ।

খ. যাদের রক্তে মুক্ত এ দেশ; সম্পাদনাঃ আসাদ চৌধুরী ও এনামুল কবির প্রকাশনাঃ একাডেমিক পাবলিশার্স; প্রকাশকালঃ ২৬ মার্চ ১৯৯১; পূ. ৮০

 

 

৩৮৭       মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসকে জীবনকাষ

Reference:  মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ – বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ