You dont have javascript enabled! Please enable it! ডা. শ্যামল কান্তি লালা | মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক - সংগ্রামের নোটবুক

জীবনচিত্র   নামঃ ডা. শ্যামল কান্তি লালা

Dr. Shayamal Kanti Lala

পিতার নামঃ ডা. সুধাংশু বিমল লালা

পিতার পেশাঃ চিকিৎসক

ধর্মঃ সনাতন

স্থায়ী ঠিকানাঃ আকালিয়া, খরণদ্বীপ, পটিয়া,

জেলা-চট্টগ্রাম

 

শহীদ ডা. শ্যামল কান্তি লালা

নিহত হওয়ার সময় ঠিকানাঃ শহীদ ডা. সামসুদ্দীন আহমদ সদর হাসপাতাল, সিলেট (সাবেক সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল)

জন্মঃ ২৮ জানুয়ারি, ১৯৪৮

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ

এসএসসিঃ ১৯৬২

আইএসসিঃ ১৯৬৪

এমবিবিএসঃ ০৬.০৬.১৯৭০, সিলেট মেডিকেল কলেজ

শখঃ সাহিত্য সংস্কৃতি। অগ্রগামীর (অরাজনৈতিক সংগঠন) সাধারণ সদস্য, ১৯৬৪-১৯৭০

চাকরির বর্ণনাঃ

সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেটঃ হাউজ সার্জন, ০৬.০৬.১৯৭০ হতে অমৃত্যু

হত্যাকারীর পরিচয়ঃ পাকসেনা

নিহত হওয়ার তারিখঃ ০৯.০৪.১৯৭১

মরদেহঃ

প্রাপ্তি স্থানঃ সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণ, সিলেট

প্রাপ্তি সময়ঃ মধ্য এপ্রিল, ১৯৭১

সন্ধানদানকারীঃ ডা. সৈয়দ লোকমান আলী ও অন্যান্য

কবরস্থানঃ উক্ত বধ্যভূমি

স্মৃতিফলক/ স্মৃতিসৌধঃ এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ স্মৃতিস্তম্ভ, সিলেট।(ছবি দ্রষ্টব্য)

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হিসেবে সাহায্য/দান/পুরস্কারঃ পাননি

বিয়েঃ অবিবাহিত

 

 

তথ্য প্রদানকারী

ডা. মৃগেন কুমার দাস চৌধুরী

শহীদ চিকিৎসকের সতীর্থ

সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান,

শিশু সার্জারি বিভাগ, এম এ জি

ওসমানী মেডিকেল কলেজ, সিলেট

 

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ   ৩৪৩

 

আমার হোস্টেল মেট

শহীদ ডা. শ্যামল কান্তি লালা

ডা. মৃগেন কুমার দাস চৌধুরী

 

ধর্মের ছদ্মাবরণে প্রগতিশীল বাঙালি জাতির অন্তরের সাত রাজার ধন আমাদের জাতিসত্তাকে লুটেপুটে ধ্বংস করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত একদল দস্যুর একান্ত প্রয়াস ধূলিসাৎ হয়ে যায় মুক্তিকামী বাঙালির সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। দখলদার পাকবাহিনী ও তাদের দোসর। আলবদর এবং রাজাকারদের ঘৃণিত ও ধিক্কৃত পৈশাচিক কার্যকলাপ যুগ যুগ ধরে কষ্ট দেবে বাঙালি জাতির অন্তরকে। ওদের প্রেতাত্মা পরাজয় ও হতাশার গ্লানিতে নাগিনীর বিষাক্ত নিশ্বাসে কলুষিত করছে চারদিকএ অশুভ শক্তি চিরদিনই বাঙালি জীবনে একটি অশনিসঙ্কেত। রক্তে লেখা স্বাধীনতা চিরদিন। কঠোর প্রহরায় পুষে রাখতে হবে। চিরদিন মনে ধরে রাখতে হবে, এসব বীর শহীদান যারা দেশাত্মবোধে প্রদীপ্ত হয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে উৎসর্গ করেছিলেন নিজেদের। চিরভাস্বর, চিরউজ্জ্বল তাঁরা আমাদের মধ্যে। এদেরই একজন, একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র-ডা. শ্যামল কান্তি লালা। প্রায় তিন যুগ পরেও তাঁর স্মৃতি অম্লান।

চিরাচরিত প্রথায় মৃত্যুর পর ডা. লালার মরদেহ কোনো শ্মশানভূমিতে সমাহিত হয়নি, হয়নি কোনো অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া, জ্ঞাতিগোষ্ঠী কোনো নির্দিষ্ট দিনে আয়োজন করতে পারেনি কোনো পারলৌকিক ক্রিয়া। মৃত্যুস্থানেই রচিত হয়েছিল তাঁর মহাশ্মশানস্বীয় কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গণমানুষের অন্তরের মণিকোঠায় ঠাই করে নিয়েছেন। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সঞ্চারিত হবে তার ইতিহাস। প্রতি বছর ৯ এপ্রিল এলেই শুমরে ওঠে হৃদয়। কান পাতলে শোনা যায় গুলির শব্দ, চোখে ভাসে পেট ফুঁড়ে বেরিয়ে আসা গুলি আর সাথে নাড়িভুঁড়ি। কারফিউ নিস্তব্ধতায় নির্জন স্থানে শিয়াল-কুকুরের অবাধ বিচরণ ও নরমাংস আস্বাদন।

ডা. শ্যামল কান্তি লালা, সবার প্রিয় নামলালা’জন্ম চট্টগ্রাম অঞ্চলে, খরণদ্বীপের অন্তর্গত আকালিয়া গ্রামে। পিতা খ্যাতনামা চিকিৎসক ডা. সুধাংশু বিমল লালা, এমবি। ১৯৪৮ সালের ২৪ জানুয়ারি মা-বাবার মুখ উজ্জ্বল করে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন এ সেবাব্রতী, দেশপ্রেমিক ও মানবতাবাদী চিকিৎসক। তার

 

 

৩৪৪  মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ

 

শহীদ ডা. শ্যামল কান্তি লালা

 

ভাইবোন আর কেউ ছিল কিনা জানা যায়নি। বাবা-মার কাছে থেকে শিক্ষাজীবনের প্রাথমিক স্তর সম্পন্ন হয়। বাবা নিজের মতো করে একজন সফল চিকিৎসক হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন১৯৬৪ সালের ৯ ডিসেম্বর লালা ভর্তি হন সিলেট মেডিকেল কলেজে প্রথম বর্ষ এমবিবিএস কোর্সে। ওই কলেজের তৃতীয় ব্যাচের ছাত্র তিনি। প্রতিটি প্রফেশনাল পরীক্ষায় নিয়মিত পাস করে ১৯৭০ সালের ৬ জুন ফাইনাল প্রফেশনাল। পাস করে সফলভাবে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। তখনকার একমাত্র পুরুষ ছাত্রাবাসের (বর্তমান শহীদ ডা. শামসুদ্দীন আহমেদ ছাত্রাবাসের) ‘সি’ ব্লকে থাকতেন লালা এবং ঐ একই রুমে থেকে তিনি ডাক্তার হয়েছিলেন। আমি ১৯৬৭ সালে ভর্তি হয়ে বড় ভাইদের সাহায্যে কিছুদিনের জন্য ওই ব্লকের অমিয়দার রুমে ঠাঁই নিই। তখন লালাদাকে দেখতাম, সবসময়ই নমভদ্র ও হাস্যময়সবাই লুঙ্গি পরতেন, লালাদা পরতেন পাজামা। সে সময় বহু পাকিস্তানি ছাত্রও কলেজে পড়তেন। উনি স্বচ্ছন্দে উর্দু বলতে পারতেন। শ্যামলা গড়নের, কোঁকড়ানো চুল শোভিত লালাদা চলনে-বনে-আচরণে বেশ গম্ভীর ছিলেন। তাঁর সাজানো-গোছানো পানের কৌটা ছিল। মশলাযুক্ত সুগন্ধি পান সেবন করতেন। সবার সাথে মিলেমিশে থাকতেন। আমাদের মতো কনিষ্ঠদের সাথে যদিও জ্যেষ্ঠ ভ্রাতাসুলভ ব্যবহার করতেন, তবু আমরা একটু ইতস্তত করলে তিনি নিজ থেকে ডেকে কথা বলে ঘনিষ্ঠ করে তুলতেন। তিনি ১নং মেলে (সিদ্ধ চাল/গফুরের মেস) খেতেনআমরা ২নং মেসের (আতপ চাল) সদস্য ছিলাম। হাসপাতাল ও হোস্টেলের মধ্যেই তার চলাফেরা সীমিত থাকতোঅন্য রুমে গিয়ে সচরাচর আডা জমাতে দেখিনি। রুমে পড়াশোনায় ব্যাপৃত থাকতেন। কোনো হট্টগোলে জড়িত হতে দেখিনি কখনো।

ডাক্তার হওয়ার পর তখন বাধ্যতামূলক ইন্টার্নশিপ ছিল না। মেধানুসারে দু’জন হাউস সার্জন (পেয়িং) কাজ করতে সুযোগ পেতেন। বাইরে চাকরি না নিয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য তিনি হাউস সার্জন হিসেবে হাসপাতালে যোগ দেনআমার স্মৃতিতে আজও ডা. লালাকে অধ্যাপক ডা. শামসুদ্দীন আহমেদ স্যারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী অবস্থায় হাসপাতালে ঘোরাফেরা করার চিত্র ভাসে। দিনরাত হাসপাতালের কাজে ব্যস্ত থাকতেন। হাসপাতাল ও হোস্টেল ছিল কাছাকাছি। মাঝে মধ্যে পার্শ্ববর্তী রিকাবীবাজারে আনোয়ারা রেস্টুরেন্টে চা-নাশতা করতে যেতেন। আমরা নিজেদের প্রয়োজনে বা আত্মীয়-স্বজনদের চিকিৎসার প্রয়োজনে লালদার শরণাপন্ন হতাম। তিনি খুবই আন্তরিকভাবে সাহায্য করতেন। আমার একটি আঙুলের মাথায় ছোট অপারেশন করে পুঁজ বের করে দিয়েছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভিক সময়ে ডা. লালা অধ্যাপক ডা. শামসুদ্দীন স্যারের হাউস সার্জন হিসেবে কর্মরত। আদর্শবান শিক্ষকের প্রভাবে প্রভাবিত হতে দেখেছি ডা. লালাকে। যুদ্ধের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে ডা. লালার কর্মব্যস্ততা বেড়ে গেল। তখন ডাক্তারদের সংখ্যা ছিল একেবারে সীমিত। বাড়তি কাজের চাপে ডা. লালা প্রায়ই রুমে ফেরার ফুসরত পেতেন না। প্রায়ই হাসপাতালে রাত অতিবাহিত করতেন। অধ্যাপক ডা. শামসুদ্দীন আহমেদ তখন সার্জারি বিভাগের প্রধান। আমাদের ক্লিনিক্যাল ক্লাসের শুরুতে ক’মাসের জন্য স্যারকে শিক্ষক হিসেবে পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। যুদ্ধকালীন সময়েও সার ছিলেন আমাদের পথিকৃৎ। অসাধারণ দেশপ্রেম ও মানবতাবোধে উদ্দীপিত ছিল স্যারের হৃদয়। আমরা তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তার উপদেশে আমরা এপ্রোন পরে জরুরি স্কোয়াড গঠন করে হাসপাতাল ইমার্জেন্সিতে ডিউটি দিতাম‘তোমাদের যার যা কিছু আছে তা নিয়ে প্রস্তুত থেকো,..’বঙ্গবন্ধুর এমন নির্দেশনা স্যারের কণ্ঠেও প্রতিধ্বনিত হতোআমাদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে আহত ও অসুস্থদের সেবা-শুশ্ৰষা ও চিকিৎসার মাঝে তিনি নিজেও এ মূলমন্ত্রের অনুশীলন করতেনসিলেটে মার্চের শেষ ক’টা দিনে প্রায় লাগাতার কারফিউ ও গোলাগুলিতে পাকসেনারা এক নারকীয় অবস্থার সৃষ্টি করেছিল। এ সময় স্যার নিরলসভাবে হাসপাতালে চালিয়ে যান সেবাকর্ম। সাথে ঘনিষ্ঠ ছাত্র, সহকর্মী হাউস সার্জন ডা. লালা।

একই সময় আমি মৌলভীবাজারে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আটকা পড়লাম। আমার পিতার অনুপ্রেরণায় ও স্যারের দীক্ষায় উদ্দীপিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের সাংগঠনিক কাজে জড়িয়ে পড়লাম। ট্রেনিং নিয়ে ৪নং সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলামরণাঙ্গনেই স্যার ও লালার মৃত্যুর কথা শুনলাম, প্রাণে খুব ব্যথা পেলাম। ফিরে এসে বিস্তারিত জানলামঃ

 

 

 

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ   ৩৪৫

 

শহীদ ডা. শ্যামল কান্তি লালা

 

১ এপ্রিল কারফিউ একটু শিথিল হলো। এ সময়ে পাকবাহিনীর একটি জিপ দু’জন গুলিবদ্ধ বাঙালি সেনাকে ইমার্জেন্সির বারান্দায় ফেলে রেখে দ্রুত স্থানত্যাগ করে। তাদের একজন ডা. মইনুদ্দীন (লেফটেন্যান্ট), অন্যজন ক্যাপ্টেন মাহবুব (ভালো)পরিচিত একজন নার্সকে ডেকে ডা. মইনুদ্দীন অধ্যাপক ডা. শামসুদ্দীন আহমেদকে খবর পাঠান। শামসুদ্দীন সাহেব ও ডা. লালার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ডা. মইনুদ্দীন সেরে উঠলেও ক্যাপ্টেন মাহবুবকে বাঁচানো গেল না। ৯ এপ্রিলের মধ্যবেলা। অতর্কিতভাবে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (বর্তমান শহীদ শামসুদ্দীন সদর হাসপাতাল) পাকসেনারা বিক্ষিপ্ত আক্রমণ চালালো। ডা. লালাকে নিয়ে শামসুদ্দীন স্যার ওয়ার্ডে রোগী দেখছিলেন। তাড়া রয়েছে জরুরি অপারেশনে ওটিতে ঢুকবেন। দুর্বৃত্তরা ওয়ার্ডে ঢুকে পাষণ্ডের মতো টেনে-হেঁচড়ে দু’জনকে হাসপাতালের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে আর এস কোয়ার্টার সংলগ্ন খালি মাঠে নিয়ে যায়। সাথে জড়ো করে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার, কোরবান আলী, নার্স মাহমুদুর রহমান, পিয়ন মো. মহিবুর রহমান, মকলিসুর রহমানসহ মোট সাতজনকে। পেছন থেকে গুলি ছুড়ে ঝাঝরা করে দেয় সবার শরীর গুলিতে ডান হাতের হাড় চুরমার হয়ে গেলেও মকলিসুর অলৌকিকভাবে বেঁচে যায়। সবার সাথে তাঁকেও বুট দিয়ে দলিত করে মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে স্থানত্যাগ করলো দুৰ্বত্তরা। গড়িয়ে গড়িয়ে মকলিস সরে পড়লো। সেদিনের ভয়াবহ স্মৃতি নিয়ে মকলিস আজও হাসপাতালে কার্যরত।

মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রথম গোলন্দাজ বাহিনী দ্বিতীয় ফিল্ড আর্টিলারি ব্যাটারির সাথে সম্পৃক্ত থেকে যেদিন সিলেট শহর শত্রুমুক্ত করি তার পরদিনই যাই মেডিকেলে। ইমার্জেন্সিতে বসে তদানীন্তন আরএস ডা. সৈয়দ লোকমান আলী ও অন্যদের থেকে আমাদের অনুপস্থিতিতে ঘটে যাওয়া ঐ নিৰ্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বিবরণ শুনে ক্ষোভে-ঘৃণায়-শোকে শরীর অবসন্ন হয়ে পড়লো। বধ্যভূমিতে দাঁড়িয়ে চোখের জলে সমাধিস্থল ভিজিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করি শহীদানদের প্রতি।

 

৩৪৬       মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ

 

শহীদ ডা. শ্যামল কান্তি লালা

মেডিকেল কলেজের অন্যতম ছাত্ৰীনিবাস ‘শহীদ ডা. লাল ছাত্ৰীনিবাস’ এ উৎসর্গিত মানবতাবাদী, দেশপ্রেমিক শহীদের নাম গর্বভরে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে বর্তমান প্রজন্মকে। আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ডা. লালার ছবি ও তথ্য সংগৃহীত হয়ে স্থানীয় বিএমএ ও ডাক বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় ২০০০ সালে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মারক ডাকটিকিটে’ ডা. শ্যামল কান্তি লালার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। মৃত্যুর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে কৰ্তব্যনিষ্ঠা, আদর্শ শিক্ষকভক্তি, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ মানবপ্রেমের যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ডা. লালা রেখে গেছেন, বাংলাদেশের আকাশে-বাতাসে তা অনন্তকাল ঘুরে ঘুরে ফিরবে। শহীদের রক্তমাখা আমাদের পতাকা চিরদিন সমুজ্জ্বল থাকবে জাতির অন্তরে, প্রজন্ম ঘৃণা করতেও শিখবে সেই নরপশুদের।

 

প্রাসঙ্গিক উল্লেখযোগ্য তথ্যসূত্রঃ

ক. মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী তালিকা; তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার; প্রকাশকালঃ ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২।

খ. মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক তালিকা; বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) কার্যালয় বিএমএ ভবনে(তোপখানা রোড, ঢাকা) শোভিত স্মৃতিফলকে উৎকীর্ণ। (পরিশিষ্ট দ্রষ্টব্য)

গ. বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, দলিলপত্র; সম্পাদনাঃ হাসান হাফিজুর রহমান; প্রকাশনাঃ তথ্য মন্ত্রণালয়, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার; প্রকাশকালঃ আষাঢ় ১৩৯১; জুন ১৯৮৪; ৮ম খণ্ড; পৃ. ৬২৫, ৭০৭ ।

ঘ. শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মারক ডাকটিকিট; প্রকাশনাঃ বাংলাদেশ ডাক বিভাগ; ৭ম পর্যায়; ১৯৯৮ (পরিশিষ্ট দ্রষ্টব্য)

ঙ. স্মৃতি ১৯৭১; সম্পাদনাঃ রশীদ হায়দার; প্রকাশনাঃ বাংলা একাডেমী; ১ম খণ্ড, ২য় পুনর্মুদ্রণ, প্রকাশকালঃ প্রকাশকালঃ অগ্রহায়ণ ১৪০৬, ডিসেম্বর ১৯৯৯; পৃ. ৩০

চ. দৈনিক সংবাদ বিশেষ সংগ্রাহক সংখ্যা-৩, যেসব হত্যার বিচার হয়নি; পরিকল্পনায়ঃ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। প্রকাশকালঃ সোমবার ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৯৮; পৃ. ৯, ৩০, ৪৩ ।

ছ. সিলেটের যুদ্ধকথা; লেখকঃ তাজুল মোহাম্মদ; প্রকাশনাঃ সাহিত্য প্রকাশ; প্রকাশকালঃ ফাল্গুন ১৩৯৯, ফেব্রুয়ারী ১৯৯৩; পৃ. ৪৫।

জ. এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ স্মৃতিস্তম্ভ, সিলেট।

ঝ. মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক ইতিহাস; সম্পাদনাঃ আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন; প্রকাশনাঃ সাহিত্য প্রকাশ; প্রথম খন্ড।

 

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিত্সক জীবনকোষ   ৩৪৭

Reference:  মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ – বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ