You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
২১৫। বাংলাদেশ ঘটনাবলির ওপর প্রধানমন্ত্রীর উত্থাপিত প্রস্তাব ভারতের লোকসভার কার্যবিবরণী ৩১ মার্চ, ১৯৭১

রেজুল্যুশনঃ পূর্ব বাংলায় পুনঃসাম্প্রতিক উন্নয়ন।

স্পিকারঃ আমরা দৃষ্টি আকর্ষণে গতি আনার আগেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উপর একটি রেজুল্যিশন উপস্থাপন করবেন। এটির উপর আর কোন আলোচনা হবেনা এবং এটি গ্রহন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী, আণবিক শক্তি মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রী এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী (শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী)ঃ নির্বাচনে বিজয় লাভ করার পর পরই আমাদের প্রতিবেশী পূর্ব বাংলায় উপর যে বিয়োগান্তর ঘটনা ঘটেছে তাদের দুঃখ কষ্ট, তাদের সুন্দর দেশ দেশকে ধ্বংস করার চেষ্টার উদ্বেগ ও তাদের ভবিষ্যতের জন্য উদ্বেগ . আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। আমি একটি রেজোলিউশন নিয়ে অগ্রসর হতে ইচ্ছুক যা বিরোধীদলীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে এবং এটি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়েছে বলে আমি আনন্দিত।

আমি নিম্নোক্ত সিদ্ধান্তগুলো পেশ করতে চাইঃ(১)এই হাউস পূর্ববাংলায় সাম্প্রতিক উন্নয়ন তার গভীর যন্ত্রণা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে প্রেষিত সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা পূর্ব বাংলার সমগ্র জনগণের বিরুদ্ধে ব্যাপক হামলা চালানো হয়েছে এবং এই হামলা তাদের আশা ও আকাংখা দমনের জন্যই চালানো হয়েছে বলে প্রতিয়মান হয়।

২) জনগনের আকাংখা যা নিশ্চিতভাবে পাকিস্তানে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে ১৯৭০ সালে, পাকিস্তান সরকার তার প্রতি সম্মান না দেখিয়ে জনগনের ম্যান্ডেট কে বিদ্রুপ করার পথ বেছে নিয়েছে।

৩)পাকিস্তান সরকার শুধুমাত্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাবই ফিরিয়ে দেয়নি এর সাথে ইচ্ছামত তার ন্যায়সঙ্গত এবং সার্বভৌম ভূমিকা ক্ষমতা গ্রহণের থেকে জাতীয় পরিষদকে প্রতিরোধ করেছে।

৪) ভারত সরকার ও ভারতের জনগণ সবসময় আশা করেছে ও কাজ করেছে পাকিস্তানের সঙ্গে, শান্তিপূর্ণ স্বাভাবিক এবং ভ্রাতৃসুলভ সম্পর্কের জন্য। যাইহোক, উপমহাদেশের জনগন শতাব্দীপ্রাচীন ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য পুরনো বন্ধন দ্বারা আবদ্ধ, এই হাউজ আমাদের সীমান্তে ঘটে যাওয়া ভয়ংকর ট্রাজেডি নিয়ে উদাসীন থাকতে পারেনা। আমাদের দেশের প্রতিটি আনাচে কানাচে থেকে মানুষ এই ঘটনার প্রতি নিন্দা জানিয়েছে, একজন নিরস্ত্র এবং নিরীহ লোকদের ওপর নজিরবিহীন মাত্রায় নৃশংসতা চালানো হচ্ছে।

৫) এই হাউস পূর্ববাংলার জনগণের গণতান্ত্রিকজীবনের জন্য জন্য তাদের সংগ্রাম সাথে গভীর সমবেদনা ও সংহতি প্রকাশ করছে।

৬) ভারতের আছে শান্তির প্রতি চিরস্থায়ী স্বার্থ এবং মানবাধিকার সম্মুনত ও রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি। এই হাউস বলপ্রয়োগের মাধ্যমে আরক্ষিত মানুষদের উপর চালানো গণহত্যার অবিলম্বে অবসানের জন্য দাবি জানাচ্ছে। এই হাউজ সাধারন মানুষের উপর পাকিস্তান সরকারের চালানো ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম যা গনহত্যার শামিল তা থেকে তাদের বিরত রাখতে দ্রুত ও গঠনমুলক পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বিশ্বের প্রতিটি নাগরিক ও প্রতিটি দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

৭) এই হাউস দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, পূর্ব বাংলার ৭৫ কোটি মানুষের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান বিজয়ী হবে। হাউস তাদের আশ্বাস দেয় যে তাদের সংগ্রাম ও উত্সর্গ ভারতের জনগণের সর্বাত্মক সমর্থন, সহানুভূতি ও শুভেচ্ছা পাবে।

শ্রী কে মনোহরন ( মাদ্রাজ / উত্তর )ঃ যদিও কোন আলোচনার অনুমতি দেওয়া হয়, সেখানে বিরোধী দলের সদস্য হিসেবে ক্ষমতাসীন দলের দ্বারা উপচয় এর জন্য কি কোন সুযোগ নেই?

স্পিকারঃ না।

শ্রী সি সি দেশাই ( সাবারকান্থা )ঃ পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেন এখানে উপস্থিত নেই? এর মানে কি এই যে তিনি রেজল্যুশনের সঙ্গে একমত নন?

জনাব স্পিকারঃ সংসদে প্রশ্ন হচ্ছে, (১) এই হাউস পূর্ববাংলায় সাম্প্রতিক উন্নয়ন তার গভীর যন্ত্রণা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে প্রেষিত সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা পূর্ব বাংলার সমগ্র জনগণের বিরুদ্ধে ব্যাপক হামলা চালানো হয়েছে এবং এই হামলা তাদের আশা ও আকাংখা দমনের জন্যই চালানো হয়েছে বলে প্রতিয়মান হয়।

২) জনগনের আকাংখা যা নিশ্চিতভাবে পাকিস্তানে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে ১৯৭০ সালে, পাকিস্তান সরকার তার প্রতি সম্মান না দেখিয়ে জনগনের ম্যান্ডেট কে বিদ্রুপ করার পথ বেছে নিয়েছে।

৩)পাকিস্তান সরকার শুধুমাত্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাবই ফিরিয়ে দেয়নি এর সাথে ইচ্ছামত তার ন্যায়সঙ্গত এবং সার্বভৌম ভূমিকা ক্ষমতা গ্রহণের থেকে জাতীয় পরিষদকে প্রতিরোধ করেছে।

৪) ভারত সরকার ও ভারতের জনগণ সবসময় আশা করেছে ও কাজ করেছে পাকিস্তানের সঙ্গে, শান্তিপূর্ণ স্বাভাবিক এবং ভ্রাতৃসুলভ সম্পর্কের জন্য। যাইহোক, উপমহাদেশের জনগন শতাব্দীপ্রাচীন ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য পুরনো বন্ধন দ্বারা আবদ্ধ, এই হাউজ আমাদের সীমান্তে ঘটে যাওয়া ভয়ংকর ট্রাজেডি নিয়ে উদাসীন থাকতে পারেনা। আমাদের দেশের প্রতিটি আনাচে কানাচে থেকে মানুষ এই ঘটনার প্রতি নিন্দা জানিয়েছে, একজন নিরস্ত্র এবং নিরীহ লোকদের ওপর নজিরবিহীন মাত্রায় নৃশংসতা চালানো হচ্ছে।

৫) এই হাউস পূর্ববাংলার জনগণের গণতান্ত্রিকজীবনের জন্য জন্য তাদের সংগ্রাম সাথে গভীর সমবেদনা ও সংহতি প্রকাশ করছে।

৬) ভারতের আছে শান্তির প্রতি চিরস্থায়ী স্বার্থ এবং মানবাধিকার সম্মুনত ও রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি। এই হাউস বলপ্রয়োগের মাধ্যমে আরক্ষিত মানুষদের উপর চালানো গণহত্যার অবিলম্বে অবসানের জন্য দাবি জানাচ্ছে। এই হাউজ সাধারন মানুষের উপর পাকিস্তান সরকারের চালানো ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম যা গনহত্যার শামিল তা থেকে তাদের বিরত রাখতে দ্রুত ও গঠনমুলক পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বিশ্বের প্রতিটি নাগরিক ও প্রতিটি দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

৭) এই হাউস দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, পূর্ব বাংলার ৭৫ কোটি মানুষের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান বিজয়ী হবে। হাউস তাদের আশ্বাস দেয় যে তাদের সংগ্রাম ও উত্সর্গ ভারতের জনগণের সর্বাত্মক সমর্থন, সহানুভূতি ও শুভেচ্ছা পাবে।

স্পিকারঃ একটি একবারও ‘ না ‘ উচ্চারিত হয়নি। সুতরাং, রেজল্যুশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হলো।
 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!