You dont have javascript enabled! Please enable it!

রংপুরে পাক বাহিনীর যুদ্ধ প্রস্তুতি

(নিজস্ব প্রতিনিধি) রংপুর জেলার দখলীকৃত এলাকায় পাক সেনারা জোর যুদ্ধ প্রস্তুতি নিতেছে বলিয়া জানা গিয়াছে। হানাদার সেনারা এই উদ্দেশ্যে গ্রামে গ্রামে গিয়া চরম নির্যাতন চালাইয়া গ্রামের পর গ্রাম উচ্ছেদ করিতেছে ও সেখানে তাহাদের ঘাটি ও বাঙ্কারসমূহ নির্মাণ করিতেছে। নীলফামারি মহকুমার কিশােরগঞ্জ থানার নােহালি, বিদিতর, কৈ-মারি, রণচণ্ডী ও মাগুরা ইউনিয়নের গ্রামসমূহে পাকবাহিনী রাজাকারদের সহায়তায় লুঠতরাজ ও নারী নির্যাতন চালাইয়াছে। টেপা, আলমবিদিতর, কৈমারী বড়দিটাতে ঘাটি করিয়া রাজাকারদের বসাইয়াছে এবং কিশােরগঞ্জ থানা। জলঢাকাতে পাক বাহিনী মজবুত বাঙ্কার করিয়া অবস্থান করিতেছে। পাকসেনা ও রাজাকাররা গ্রামবাসীদের হাঁস মুরগী গরু ছাগল ধরিয়া আনিয়া নিজেদের আহার যােগাইতেছে। এইসব এলাকায় শত্রুরা যে-সব দালালের সাহায্য পাইতেছে তাহারা হইল নােহালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল হক • ও মেকবর অহেল চৌধুরী, আজিমউদ্দিন, তাহেরউদ্দিন, মন্তাজ আলী, মতি মামুদ, সৈয়দ আলী, বদরুল মিয়া ও আকবর চেয়ারম্যান নামক কুখ্যাত জোতদার। পাক সেনারা কচুকাটার নিকট চেড়ল ড্যাগা নদীর তীরে, রংপুর-সৈয়দপুর সড়কে বৈরাতি ও জাফরগঞ্জ পুলের উভয়দিকে শক্ত বাঙ্কার নির্মাণ করিয়াছে। | গেরিলাদের হাত হইতে বাচাইবার জন্য লালমণিরহাট পাটগ্রাম রেলপথে ৩০০ গজ অন্তর পিকেট বসাইয়া রাজাকার ও সৈন্যদের সতর্ক পাহারায় রাখা হইয়াছে। রেল লাইনের দুই পাশের জঙ্গল,  বাঁশঝাড়, আঁখকে কাটিয়া সাফ করিয়াছে এবং বিশেষ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যেমন দলজোর বড়বিল পুল, চিরিয়ানী লেভেল ক্রসিং, রইসবাগ স্টেশন, সুবর্ণমতি রেলসেতু ও যদিতমারি স্টেশনে বাঙ্কার নির্মাণ করিয়াছে। পাক বাহিনীর এই যুদ্ধ প্রস্তুতির মুখে মুক্তিবাহিনীও প্রস্তুত হইতেছে।

মুক্তিযুদ্ধ ১:১৭

৩১ অক্টোবর ১৯৭১

সূত্র:  গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড  ০৯

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!