শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
১৯১। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির রিপোর্ট (১৯৭১ সনের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত) | পুস্তিকা | ডিসেম্বর ১৯৭১ |
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি
প্রেসিডেন্ট
প্রফেসর এস এন সেন
ভাইস-চ্যান্সেলর , কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট
প্রফেসর পি কে বোস
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক)
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
কোষাধ্যক্ষ
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (ফিন্যান্স)
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
সেক্রেটারি
প্রফেসর ডি কে চক্রবর্তী
জয়েন্ট সেক্রেটারি
প্রফেসর ইলা মিত্র
প্রফেসর এস এন ভট্যাচার্য
প্রফেসর এস কে মিত্র
প্রফেসর এস গুপ্ত
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
সিনেট হাউজ, কলিকাতা
পশিমবঙ্গ, ভারত
১৯ ডিসেম্বর ১৯৭১
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতিঃ একটি আবেদন
আমরা আশা করছি আপনি অবগত আছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সংশ্লিষ্ট কলেজের অন্যান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ১৯৭১ সালের এপ্রিলের শুরুর দিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি গঠিত হয়, যা ইতিমধ্যে দেশপ্রেমীক বাংলাদেশীদের সমর্থনে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সত্য ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু পুস্তিকা ও ভাঁজপত্র প্রকাশ এবং বিশ্বব্যাপী প্রচার করেছে। যে সকল প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশী শিক্ষকদের সাহায্য করতে আগ্রহী তাদের জন্য সমিতি কয়েক হাজার বাংলাদেশী শিক্ষকের বায়োডাটা সংগ্রহ করে দিয়েছে। এছাড়া শরণার্থী বাংলদেশী শিক্ষকদের অস্তিত্ব রক্ষায় এখনই আর্থিক সাহায্য প্রয়োজন।
আমরা ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বাস্তুহারা শিক্ষক এবং বুদ্ধিজীবীদের মাঝে একলাখের বেশি রুপী এবং মুক্তিবাহিনীর তরুণদের এক লাখের বেশি মূল্যের অন্যান্য সহায়তা প্রদান করেছি। আমরা ভারতে আশ্রয় নেয়া বাংলাদেশীদের মাঝে আমাদের কাছে আসা অন্যান্য সাহায্যসহ ৮০ হাজার রূপীর বেশি মূল্যের ওষুধ বিতরণ করেছি।
আমরা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি তৎকালীন বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ পিবি গজেন্দ্রগাদকর এবং অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অতিন মজুমদার এবং অন্যান্যদের যাঁদের মাধ্যমে বিশাল আর্থিক সাহায্য আমরা গ্রহণ করেছি।
আপনি কি মনে করেন, ভারত সরকার কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের মত সাহায্যের আর প্রয়োজন নেই? আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, আশা করা হয়েছিল অনেক আগেই শরণার্থীরা বিশেষ করে বাস্তুহারা শিক্ষকগণের নিজ দেশে ফিরে স্বাভাবিক কাজ খুঁজে পাবে। যুদ্ধে অনেকেই তাদের বসতবাড়ি, আত্মীয় স্বজনদের হারিয়েছেন, অনেকের স্কুল-কলেজের ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি এই আবেদন সকলের কাছে পৌঁছে দিতে চাই যেন তাঁরা আর্থিক সাহায্য বা যে কোন ভাবে অবদান রাখেন। শতবছর বয়সী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্ররা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে আছেন। আমি নিশ্চিত যে, দুর্দশাগ্রস্ত মানবতার সাহাযার্থে মানুষ এগিয়ে আসবে।
ভারত সরকার দান বাড়ানোর জন্য দাতাদের আয়কর প্রদান থেকে অব্যহতি দেয়ার সদয় সম্মতি প্রদান করেছেন।
সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যালয় দাঁড়ভাঙা ভবন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা-১২, ভারতে অবস্থিত।
এস এন সেন,
উপাচার্য,
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
এবং
প্রেসিডেন্ট
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি
“*কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির নামে চেক ইস্যু করার জন্য সাহায্যদাতাদের অনুরোধ করা হচ্ছে”।
এপ্রিল, ১৯৭১
১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র, কর্মকার্তা-কর্মচারী, সংশ্লিষ্ট কলেজের শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কমিটির সদস্যদের নিয়ে এক সভায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি গঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সতেন্দ্রনাথ সেন সমিতির প্রেসিডেন্ট, অধ্যাপক পিকে বসু, উপ উপাচার্য (শিক্ষা কার্যক্রম) সমিতির কার্যকরি প্রেসিডেন্ট, শ্রী হিরেন্দ্রমোহন মজুমদার, উপ উপচার্য (অর্থ এবং বাণিজ্য) সমিতির ট্রেজারার হিসেবে নিযুক্ত হন।
প্রাথমিকভাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক দানকৃত ৫ হাজার রুপী সমিতির তহবিল গঠন করে এবং সমিতি তখন থেকেই কাজ করা শুরু করে।
সূচনালগ্ন থেকেই সমিতি যুদ্ধের শরণার্থীদের উল্লেখযোগ্য সহায়তা দিয়ে আসছে। খাবারের প্যাকেট ছাড়াও, প্রয়োজনীয় ওষুধ, প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে আমাদের কয়েক হাজার রুপী এবং যথেষ্ট পরিমাণ পরিশ্রম করতে হয়েছে কারণ শরণার্থীদের ঢল নেমেছে যাদের সংখ্যা ইতিমধ্যে ৫০ লক্ষ অতিক্রম করেছে। শ্রমতি বিনা ভৌমিক(বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী) এবং তাঁর একটি ছোট দল, শ্রীমতি কমলা বোস, শ্রীমতি মৃন্ময়ী সেন এবং অন্যান্যরা আমাদের বেশ সহায়তা করেছেন। স্কুল কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও সদা তৎপর ছিল।
১৯৭১ এর ৫ এপ্রিল আমাদের প্রেসিডেন্ট অন্যান্যদের সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী, ইউনেস্কোর ডিরেক্টর জেনারেলের কাছে টেলিগ্রাম পাঠিয়েছেন। আমাদের প্রেসিডেন্ট তাঁর টেলিগ্রামে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। বাংলাদেশের উপর পাকিস্তান সেনবাহিনীর কাপুরুষোচিত আক্রমণ, ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম সহ সারা দেশে ধ্বংসযজ্ঞ এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গণহত্যা সম্পর্কে ইউনেস্কোর ডিরেক্টর জেনারেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। ডিরেক্টর জেনারেল টেলিগ্রামের মাধ্যমে গণহত্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জাতির প্রতি তাঁর সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীও টেলিগ্রামের প্রাপ্তি স্বীকার করেছেন।
আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেছেন তাঁদের সাহায্য করা। আমরা তাঁদের কে আর্থিক সাহায্য দিয়ে যাচ্ছি এবং তাঁদের কে তালিকাভুক্ত করেছি। ডঃ অনিরুদ্ধ রায়, ইসলামি ইতিহাস এবং সংস্কৃতি বিভাগে স্নাতকোত্তর এবং তাঁর সহযোগী হিসেবে শ্রী অনিল সরকার বাণিজ্য বিভাগের স্নাতকোত্তর, শ্রী পীযূষ দাশ, শ্রী আংশুমান মল্লিক, শ্রী অনিল বসু এ বিভাগের দায়িত্বে আছেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিণ্ডিকেট বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রনালয়, ভারতের সম্মতি অনুযায়ী বাংলাদেশের স্কলারদের অতিথি অধ্যাপক বা প্রভাষক হিসেবে সাময়িক নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা করছে, যা সমগ্র ভারতে বিস্তৃত হতে পারে। রাজ্য সরকারের অনুমতি পাওয়া গেলে এই পরিকল্পনা স্কুল পর্যায়েও বাস্তবায়িত হতে পারে। আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজ্যসরকারের কাছে চিঠি দিয়ে যোগাযোগ করেছি।
আমরা আশা করছি এ সকল প্রচেষ্টা থেকে ইতিবাচক কোন ফল পাওয়া যাবে।
বর্তমান ভাঁজপত্র ছাড়াও আমরা শেখ মুজিবের ছয় দফা কেন্দ্রীক আরেকটি প্রকাশনাকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছি। শ্রী অজিত মোহন গুপ্ত(বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র), ভারত ফটোটাইপের কর্ণধার কর্তৃক এটি করা হয়েছিল। শ্রী স্বরাজ ভট্ট্রাচার্য, চিত্রগঙ্গাদার স্টাফ চিত্রগ্রাহক আমাদের বেশ কিছু মূল্যবান ফটোগ্রাফ দিয়ে সাহায্য করেন।
আমাদের প্রেসিডেন্ট সাধারণ মানুষের কাছে বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কাছে সমিতির তহবিলে মুক্তহস্তে দান করার জন্য আবেদন করেন(বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষায় প্রকাশিত)। তাঁর আবেদনের সাড়া অত্যন্ত উৎসাহজনক। আমাদের জাতীয় অধ্যাপক সতেন্দ্রনাথ বোস প্রথম ব্যক্তি হিসেবে দান করেন। এরপর স্বল্প সময়ে দানকারীদের মাঝে কৃষ্ণনগর মহিলা কলেজ, সরোজিনী নাইডু কলেজ, মহিলা কলেজ, কলকাতা লেডি ব্রাহোর্ন কলেজ, বেথুন কলেজ, ডাঃ বিসি রায় ইন্সটিটিউট অফ বেসিক মেডিসিনের শিক্ষক এবং কর্মচারী, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর বিভাগগুলোর ৬১ জন শিক্ষক, অর্থনীতি, পলিটিক্যাল সায়েন্স, ইসলামি ইতিহাস, আধুনিক ইতিহাস ও ইংরেজি বভাগের শিক্ষার্থীরা, জনাব এন এল টোদীর মাধ্যমে ভারত চ্যারিটি ট্রাস্ট, মেসার্স প্রেস এজেন্টস প্রাইভেট লিমিটেড, মেসার্স এলাইড এজেন্সি, পাস্তুর ল্যাবরেটরিসের কর্মীবৃন্দ, সিদ্ধেশ্বর হিসিয়ারি ফ্যাক্টরি, গোখালে মেমোরিয়াল গার্লস কলেজ, উমেশ চন্দ্র কলেজ, বাংলাদেশ এইড কমিটি বম্বে, শ্রী এইচপি লোহিয়া, এংলো ইন্ডিয়া জুট মিল (কর্মকর্তা ও কর্মচারী), শ্রি অজিত কুমার দত্ত-সাবেক এডভোকেট জেনারেল-পশ্চিম বঙ্গ সরকার, ফাদার পি ফ্যালোন, শ্রী অমিতেশ ব্যানার্জি, প্রিন্সিপাল নিরোদ কুমার ভট্ট্রাচার্য, প্রিন্সিপাল মমতা অধিকারী এবং বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ। বিনামূল্যের উপহারকৃত ওষুধ সংগ্রহ করেন শ্রী উৎপল চৌধুরী ও শ্রীমতি সোমা চ্যটার্জি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষার্থীরা সমিতির পক্ষ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন। আমরা আশা করছি দানকারদের সংখ্যা এবং দান অনেক বৃদ্ধি ভাবে আগামী দিনগুলোতে যেন আমরা এই সুবিশাল কর্মকাণ্ড সম্পাদন করতে পারি।
অধ্যাপক জুয়ানেস পত্রনবিস, যতীন চ্যটার্জি, দীপক হাজরা এবং পি সেন শর্মা সমিতি কার্যালয়ের সকল দায়িত্ব পালন করছেন। সমিতির কার্যালয়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে দাঁড়ভাংগা ভবনের দ্বিতীয় তলায় সকাল ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এবং ১৪, বিধান সরণির প্রথম তলায় সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৮টা।
আমাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে অর্থ প্রয়োজন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, কর্মচারী এবং শিক্ষকগণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের তহবিলে নিয়মিত মাসিক অর্থ সাহায্য দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আমরা সকলের প্রতি সাহায্য প্রদানের জন্য আবেদন জানাই। ট্রেজারার, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির বরাবর চেক পাঠানো যেতে পারে।
মে ১৯৭১
কলকাতা বিশবিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি বাংলাদেশের সমর্থনে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। আলোচ্য সময়ে সমিতির পরিচালিত কার্যক্রম সমূহঃ ১ মুক্তিফৌজকে বিভিন্ন বেসরকারি সরবরাহে সহায়তা, বিভিন্ন সময়ে একই উদ্দেশ্যে কার্যরত সমধর্মী সমিতির সাথে যৌথভাবে পরিচালিত, ২ বাংলাদেশি শিক্ষক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মচারীদের প্রতি সহায়তা, ৩ বাংলাদেশের সরকারি বিভিন্ন এজেন্সিকে তাঁদের কার্যক্রমে সমন্বয় সাধনে এবং তাঁরা যেভাবে যে মাধ্যমে সহযোগিতা চেয়েছেন সেভাবে সহায়তা করা। ১৯৭১ সালের ৯মে, রবীন্দ্রনাথের জন্ম বার্ষিকীতে সমিতির প্রথম গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা “বাংলাদেশ-দ্যা ট্রুথ” সমিতির প্রেসিডেন্ট ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এস এন সেনের লিখিত মুখবন্ধে প্রকাশিত হয়। প্রকাশনাটি পৃথিবীর সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে, গণ্যমান্য সকল ব্যক্তি, সংসদ সদস্য, সংবাদপত্রের কাছে পাঠানো হয়েছিল। আমাদের জানা মতে এই প্রকাশনাটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মাঝে বাংলাদেশে চলমান ঘটনাবলীর ব্যাপারে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করে।
সমসাময়িক আরো দুটি প্রকাশনার মাঝে অধ্যাপক আসাফ-উজ-জামান কর্তৃক “মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ” কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির মাধ্যমে প্রকাশিত হয় যেখানে রেডিয়েন্ট প্রসেসের শ্রী সুধীর চন্দ্র মুখোপাধ্যায় সহযোগিতা করেন। দি রেডিয়েটন্ট প্রসেস বিনামূল্যে কাজটি করে। শ্রী অজিত মোহন গুপ্ত কর্তৃক বাংলা ভাষায় অপর প্রকাশনাটিও সমিতির আংশিক আর্থিক সহায়তায় যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঢাকায় দেয়া ঐতিহাসিক ভাষণ প্রকাশিত হয়।
বর্তমানে আরো দুটি প্রকাশনার কাজ চলমান, ১ দুই ভলিউমের একটি ছবির এ্যালবাম, একটি ভারত ফটোটাইপ স্টুডিও এবং অপরটি রেডিয়েন্ট প্রসেস কর্তৃক প্রকাশিত হবে। দুটি প্রকাশনাই ভারতে বাংলাদেশ মিশন, কলকাতার প্রধান জনাব এম হোসেন আলীর মুখবন্ধে প্রকাশিত হবে। ২ বাংলাদেশ সম্পর্কে মিঃ ডর্ফম্যান এবং আরো দুজন আমেরিকান স্কলার কর্তৃক প্রস্তুতকৃত কিছু দলিল পত্রের পুনঃমুদ্রণ।
“প্রাথমিক যুদ্ধবিদ্যা” নামক সামরিক প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বাংলা পাঠ্য বইয়ের বেশ কিছু কপি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির মাধ্যমে বিভিন্ন বাংলাদেশী ট্রেনিং ক্যাম্পে পৌঁছে দেয়া হয়। অনেক দিন ধরে এধরনের একটি বইয়ের চাহিদা ছিল। প্রকাশক মেসার্স নয়া প্রকাশ এবং লেখক কর্তৃক বিনামূল্যে সমিতির কাছে বইগুলো দেয়া হয়।
আমাদের ছাত্রকর্মীরা কয়েকটি চিত্রপ্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর স্থান এবং তারিখ নিচে দেয়া হলোঃ
মে ৯ – সার্কাস এভিনিউ, আনুমানিক ২০০০ দর্শক
মে ২১, ২২, এবং ২৩ – নবীন চন্দ্র বড়াল এভিনিউ, আনুমানিক ৪০০০ দর্শক
মে ২৫, ২৬, এবং ২৭ – গোবরদাঙ্গা, আনুমানিক ৫০০০ দর্শক
মাসজুড়ে দলগুলোকে মুক্তিফৌজের বিভিন্ন ক্যাম্পে পাঠানো হয়। শ্রীমতি ইপ্সিতা এবং একদল কর্মী বেহরামপুরে(মুর্শিদাবাদ) অনেক ভালো কাজ করছেন। আমরা ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় গিয়েছি। অধ্যাপক পিকে বসু, আমাদের কার্যকরী প্রেসিডেন্ট এসকল ক্ষেত্রে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমরা ত্রিপুরা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর সাথে দেখা করে আমাদের অভিজ্ঞতার কথা তাঁকে জানিয়েছি।
আমাদের প্রেসিডেন্ট, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সহায়তায় একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে নয়াদিল্লীতে অবস্থান করছিলেন, এবং ভারত সরকার যেন অধিক সংখ্যক বাংলাদেশী শিক্ষককে ভিজিটিং ফেলো হিসেবে কাজে লাগায়। তাঁর উদ্যোগেই পশ্চিম বঙ্গের সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপচার্যদের সমন্বয়ে একটি উপাচার্য কমিটি গঠিত হয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শ্রী অরুন রায় এই কমিটির সচিব হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। বাংলাদেশী শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিরিক্ত ও সাময়িক ভিত্তিতে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে এ কমিটি কাজ করতে থাকে।
শরণার্থী ক্যাম্পে কলেজ এবং এর সাথে স্কুল সংযুক্তির একটি পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করা হয়। আমাদের অন্যতম যুগ্ম সচিব অধ্যাপক সৌরিন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সাথে দিল্লীতে আলোচনা করেন। আমাদের প্রেসিডেন্ট আবারো দিল্লীতে এসকল পরিকল্পনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং ভারত সরকারের সাথে আলোচনা করতে যাবেন।
১৯৭১ সালের ২১ মে, আমাদের উদ্যোগে বাংলাদেশী শিক্ষকদের সভা অনুষ্ঠিত হয় যেখানে ডঃ এ আর মল্লিক, জনাব কামরুজ্জামান, ডঃ আনিসুজ্জামানকে যথাক্রমে প্রেসিডেন্ট, এক্সেকিউটিভ প্রেসিডেন্ট এবং জেনারেল সেক্রেটারি করে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি গঠিত হয়।
২১ মে ব্রিটিশ-ভারতীয় একটি যৌথ দল এ এলাকা ভ্রমণ করে। ৩১ মে মিস্টার উইলিয়াম বার্ন্স, এমপি(কে), মিস্টার ডোনাল্ড চেসওয়ার্থ, সদস্য লন্ডন কাউন্টি কাউন্সিল, এবং চেয়ারম্যান, “ওয়্যার অন ওয়ান্ট” বাংলাদেশে অতি সংক্ষিপ্ত সফর শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আমাদের প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করেন। একই দিনে তাঁরা কলকাতা প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। শ্রীমতি মৃন্ময়ী বোস কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়তা সমিতির পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানটির কিছু অংশ আয়োজন করেন।
এ মাসে আমরা অসংখ্য বন্ধু বান্ধব শুভানুধ্যায়ীর সহযোগিতা পেয়েছি। মাসের শুরু হয়েছিল পুরো মাসের বেতন সাহায্য হিসেবে দান করার মত প্রশংসনীয় প্রতিজ্ঞা করার মাধ্যমে, যা পরবর্তীতে অধ্যাপক ডঃ আসিমা চ্যাটার্জী(ডিন, বিজ্ঞান অনুষদ) এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। এছাড়াও আমরা বিভিন্ন সংগঠন থেকে অনুদান গ্রহণ করেছি যথা বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রাম সহায়ক সমিতি, বাংলাদেশ এইড কমিটি-বোম্বে, আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয়, সুপারভাইজরি স্টাফ এ্যাসোসিয়েশন-সিডি, এগ্রা সারদা শশিভূষণ কলেজ, প্রেসিডেন্সি কলেজ, সেট সুরাজমাল জালান গার্লস কলেজ, বিদ্যাসাগর কলেজ ফর ওমেন, বিবেকানন্দ শতবার্ষিকী মহাবিদালয়, বাগনান কলেজ, যোগামায়া দেবী কলেজ, এর কে এন কলেজ অফ কমার্স-বেরহামপুর, জঙ্গীপুর কলেজ, কর্মচারী সমিতি, ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট স্টুডেন্টস অফ পিজি, পলিটিক্যাল সায়েন্স ডিপার্টমেন্ট, পিজি টিচার্স অফ জুলজি, সিওনারায়ান রামশ্বর ফতেপুরিয়া কলেজ, প্রফেসর তরুণ রায়, শ্রী এইচ পি লোহিয়া, পিজি স্টুডেন্টস অফ ডিপার্টমেন্ট অফ ইংলিশ এবং আরো অনেকে। শ্রী নিরোদ কুমার সেন মুক্তিফৌজ সদস্যদের জন্য পানির বোতল দান করেন এবং সেগুলো সংশ্লিষ্ট কোয়ার্টারে পৌঁছে দেয়া হয়। একই উদ্দেশ্যে মেসার্স দে মেডিকেল স্টোর এবং সিবা ওষুধ দান করে।
আমাদের সকল কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য অর্থ প্রয়োজন। আমরা আশা করছি, আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পাওয়া যাবে।
জুন, ১৯৭১
জুন মাসে আমাদের প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত চার রকমের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে গিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় কাটাতে হয়েছে, যে কার্যক্রমের মধ্যে ছিলঃ
১। মুক্তিবাহিনীর সহায়তা করা।
২। শিক্ষকদের সহায়তা করা।
৩। প্রকাশনা
৪। চিত্র প্রদর্শনী।
এই পর্যায়ে, আমরা মুক্তিফৌজের কর্মকর্তাদের বাড়তি সহায়তা প্রদান কার্যক্রম চালিয়ে গিয়েছি, যেমনঃ ঔষধপত্র, কৃষ্ণনগরের রেডক্রস সেণ্টারে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সহায়তা দেয়া এবং অন্যান্য রকম কার্যক্রম।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি থেকে শিক্ষকদের একটি দল, ডঃ এ মল্লিক, ভাইস চ্যান্সেলর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, এর নেতৃত্বে উত্তর প্রদেশ এবং দিল্লীতে অবস্থিত আমাদের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় প্রদর্শন করেন। D: এ আর মলিক ছাড়াও এই দলে আরো ছিলেন ডঃ আনিসুজ্জামান, জনাব সুবিদ আলি, ডঃ অনিরুদ্ধ রয়, প্রফেসর সৌরিন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রী এবং অনিলকুমার সরকার প্রমুখ। বাংলাদেশ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এর যৌথ একটি দল, বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি থেকে এলাহাবাদ, আলীগড়, দিল্লী, আগ্রা এবং লখনৌ প্রদর্শন করেন। এর সমস্ত খরচ সমিতি থেকে বহন করা হয়। দলটি যেখানেই গিয়েছে সেখানেই যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছে, এবং বাংলাদেশের শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীদের বর্তমান সমস্যাগুলো উপলব্ধি করার মত একটি অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
আমাদের ভাইস চ্যান্সেলর, প্রফেসর, এস এন সেন, এবং সি ইউ বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের শিক্ষকদের ভারতীয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে ইউজিসি ও ভারত সরকারের সাথে আলোচনা করার জন্য দিল্লী গমন করেন। যেহেতু শিক্ষামন্ত্রী দেশে ছিলেন না, তাই এখনও পর্যন্ত একাজে তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি এবং এ সমস্যা সমাধানও করা সম্ভব হয়নি। গত ১৭ জুন বঙ্গভবনে একটি প্রেস কনফারেন্সে প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের শিক্ষকদের অস্থায়ী নিয়োগ দেয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর বিশেষ গুরুত্ব প্রয়োগ করেন, এছাড়াও আমাদের ক্যাম্প-স্কুল স্কিম এবং গবেষণা কার্যক্রমগুলো কিভাবে শিক্ষার্থীদের চারদেয়ালে আটক রেখে শিক্ষাপ্রদানের চিরাচরিত নিয়ম থেকে বের করে আনবে এবং শিক্ষকদের জন্য কিছু দারুন কর্মের সুযোগ সৃষ্টি করবে সে বিষয়ে কথা বলেন।
প্রফেসর, এস এন সেন, এবং সি ইউ বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির প্রেসিডেন্ট, উপস্থিত অন্যান্য অতিথি যেমন আলহাজ লুতফুল হক, শ্রী চিত্ত বসু, এবং শ্রী ডি এল সেনগুপ্ত, সকল এমপিদের সম্মুখেই দিল্লির এ প্রেস কনফারেন্সে ঘোষণা দেন যে আমাদের একজন শিক্ষক, এস। জে এর ইউরোপিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ শিক্ষা ডিপার্টমেন্ট প্রধান ফাদার পি ফ্যালনকে ভ্যাটিকানে শ্রদ্ধেয় পোপের সাথে দেখা করার জন্য প্রেরন করা যেতে পারে। ফাদার পি ফ্যালনের ভ্রমনসংক্রান্ত সকল খরচ কোলকাতার লর্ড বিশপ বহন করবেন।
রেডিয়েন্ট প্রসেসের কর্মকর্তা শ্রী এন বি মুখারজী ফাদার পি ফ্যালনকে তার যাত্রার পূর্বে একটি সংক্ষিপ্ত সংবর্ধনা প্রদান করেন। অল ইন্ডিয়া রেডিও এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে ফাদার ফ্যালন ইতিমধ্যেই পোপ মহোদয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করেছে এবং ইয়াহিয়ার বাহিনী দ্বারা বাংলাদেশে যে গনহত্যা চালানো হয়েছে সে বিষয়ে তাকে অবহিত করেছেন।
মিঃ ভি এন থিয়াগারাজান, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি সার্ভিস, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কমিটি এর নির্বাহী সচিবকে আমাদের কার্যালয়ে আহবান জানানো হয় এবং তিনি আমাদের বর্তমান প্রকাশনা ও ভবিশ্যতে প্রকাশিতব্য কার্যক্রমগুলোর দারুন প্রশংসা করেন। তিনি আমাদের ক্যাম্প স্কুল স্কিমের প্রতিও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, এবং আমাদের সকল কাজে সহায়তা করার নিশ্চয়তা দিয়েছেন।
এম্ব্যাসেডর এঞ্জিয়ার বিডল ডিউক, মিঃ মরটন হ্যাম্বারগ (জেনারেল কাউন্সেল-আই আর সি), মিসেস লি থ (পরিচালক,আই আর সি), ডঃ ড্যানিয়েল এল ওয়াডনার (প্রফেসর অব সার্জারি, এলবারট সিন্সট কলেজ অব মেডিসিন, নিউ ইয়র্ক) এবং মিঃ থমাস ডব্লিউ ফিপ্স (একজন লেখক)এর সমন্বয়ে ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটির একটি দল আমাদের অফিস পরিদরশনে আসেন এবং আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং আমাদের ক্যাম্পস্কুল কার্যক্রম তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বেশ কয়েকবার আলোচনার পর তারা মৌখিকভাবে আমাদের প্রতিমাসে ১০,০০০ ডলার আর্থিক সাহায্য দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এবং ইতিমধ্যেই আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী তারা বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতিতে ১০০০ ডলার প্রদান করেছে। এর সাহায্যে, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিটি ইতিমধ্যে ৭টি ক্যাম্পস্কুল শুরু করেছে। আই আর সি এর সাথে আলোচনায় সমিতির প্রফেসর সৌরিন্দ্রনাথ, জুনিয়র সেক্রেটারি এবং প্রফেসর পি সেন শর্মা প্রতিনিধিত্ব করেন এবং এখনও কার্যক্রমসমুহ নিয়ে আলোচনা চলছে।
বিভিন্ন দেশের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আমাদের সাথে কাজ করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইউনিভার্সিটি হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ায় অবস্থিত দ্যা ইন্সটিটিউট সিলনিজ স্টাডিস, কলম্বো, ঢাকা ইউনিভার্সিটির মিত্র প্রতিষ্ঠানসমুহ, লন্ডনের এ সোসাইটি অব এমিনেন্ট স্কলারস এন্ড টিচারস অব ইউকে, দ্যা বাংলাদেশ স্টুডেন্ট একশন কাউন্সিল, লন্ডন ইত্যাদি। দ্যা স্টুডেন্ট, টিচার্স এন্ড স্টাফ অব মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যে আমাদের ১৩, ২৬৫ রুপি প্রদান করেছে, অনুদানের প্রথম কিস্তি হিসাবে। এক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই উক্ত ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত প্রফেসর অতিন্দ্র মজুমদারকে ধন্যবাদ দেব, আমাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য। উক্ত ইউনিভার্সিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং স্টুডেন্ট কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্টও বাংলাদেশ বিষয়ে কাজ করার যথেষ্ট আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
কলম্বো এর দ্যা ইন্সটিটিউট সিলনিজ স্টাডিস থেকে শ্রীমতী নিমল পেরেরা আমাদের জানিয়েছেন যে তারা একটি কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন যার নাম ‘আউট টু দ্যা পিপল” এবং তারা বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বুদ্ধিস্ট সন্যাসীদের নিয়ে পূজনীয় মহানায়ক (দ্যা হাই প্রিস্ট) এর উপস্থিতিতে একটি সমাবেশ আয়োজন করতে পারেন বলে জানিয়েছেন।
প্রফেসর এসরা বেননাথান, ডিরেক্টর, ফ্রেন্ডস অব ঢাকা ইউনিভার্সিটি, ব্রিস্টল, আমাদের পাঠানো তথ্যাবলীর প্রশংসা করেছেন এবং তিনি বাংলাদেশের শিক্ষকদের পুনর্বাসনে আমাদের সহায়তা করবেন বলে জানিয়েছেন।
এসকল প্রতিষ্ঠান ছাড়া কিছু ব্যাক্তিগত উদ্যোগ যেমন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া এর মিঃ এ এইচ সাদউদ্দিন, ওটাগো ইউনিভার্সিটি, নিউজিল্যান্ড থেকে প্রফেসর প্রিয়তোষ মৈত্র এবং লন্ডন থেকে প্রফেসর নরেশ নন্দ প্রমুখ আমাদের সহায়তা করে যাচ্ছেন।
ভারতের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠান আমাদের সরবরাহকৃত বায়োডাটার ভিত্তিতে বাংলাদেশের শিক্ষকদের অস্থায়ী চাকুরির ব্যবস্থা করতে এগিয়ে এসেছেন। এক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানাই ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ এন্ড ইউনিভার্সিটি টিচার’স এসোসিয়েশনকে। এবছর রবীন্দ্র বিষয়ক লেকচারের জন্য বাংলাদেশী কিছু শিক্ষককে আহবান জানানোর কথা ভাবছে ইউনিভার্সিটি অব কেরালা।
ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ এন্ড ইউনিভার্সিটি টিচার’স এসোসিয়েশন আমাদেরকে একটি টাইপ রাইটারও ধার দিয়েছে, যার জন্য আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই।
মেসার্স রেডিয়েন্ট প্রসেসকে ধন্যবাদ জানানো প্রয়োজন, কেননা তারা “কনফ্লিক্ট ইন ইস্ট পাকিস্তান-ব্যাকগ্রাউন্ড এন্ড প্রস্পেক্টস” নামক প্রকাশনাটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মুদ্রন করেছে এবং প্রয়োজনীয় ও সম্পৃক্ত বিষয়সমুহ এতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
শ্রী সুধির মুখারজী, একজন রোটারিয়ানকেও আমরা আমাদের কাজে সহায়তা করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
শ্রী নিরোদ মুখারজী, প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ সংগ্রাম সহায়ক সমিতি, লেক গার্ডেন, আমাদের মুক্তিফৌজকে কম্বল ও পানিনিরোধক সরবরাহে সহায়তা করার জন্য, আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞ।
সমিতি তিনজন ইমিসারিকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের সর্বশেষ ঘটনাবলী সম্পর্কে ইউরোপের সম্ভ্রান্ত শ্রেনীকে অবহিত করার লক্ষ্যে। এ লখ্যে আমরা প্রয়োজনীয় সকল দলিল ও ছবি সরবরাহ করেছি ও তাদের খরচ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় সম্পুরনভাবে সমিতি থেকে বহন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রথম গিয়েছেন, ফাদার পি ফ্যালন এস।জে, যার কথা ইতিমধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে।
কলকাতা হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারক, জাস্টিস মিঃ অরুন কে দাস লন্ডনে গমন করেছেন এবং তিনি ইউরোপের অন্যান্য শহরেও যাবেন। যদিও তিনি নিজেই তার সকল খরচ বহন করবেন, কিন্তু তিনিও একজন দুত হিসাবেই দায়িত্ব পালন করবেন।
মিসেস ইলা মিত্র, আমাদের একজন নির্বাহী সচিব, যিনি মস্কো গমন করেছেন এবং তিনি সোভিয়েত ইউনিয়ন এর আরো কেন্দ্রসমূহেও যাবেন।
জুন মাসের মধ্যে, সমিতি নিম্নোক্ত প্রকাশনাসমুহ সম্পন্ন করেছেঃ
১। কনফ্লিক্ট ইন ইস্ট পাকিস্তান-ব্যাকগ্রাউন্ড এন্ড প্রস্পেক্টসঃ প্রফেসর এডোয়ারড এস মেসন, রবার্ট ডরফম্যান এবং স্টিফেন এ ম্যাগ্লিন এটি লিখেছেন। অবশ্য, আমরা বাংলাদেশ প্রচারনা ও তথ্য অধিদপ্তরের সহায়তায় এটিকে বুকলেট আকারেও পুনর্মুদ্রণ করেছি। আমরা এই বুকলেটগুলো মুলত মিডল ইস্ট এবং আফ্রিকাতে বিতরন করেছি।
২। বাংলাদেশ- থ্রু লেন্সঃ প্রথম প্রকাশিত ছবির এ্যালবাম। এই বইটি এখনও প্রেসে আছে, এবং শীঘ্রই প্রকাশিত হবে।
৩। বাংলাদেশ- দ্যা হিরোস অব নিউ লাইফঃ ডঃ বি গাঙ্গুলি ও মিসেস মিরা গাঙ্গুলি সম্পাদিত এবং এর ভুমিকা লিখেছেন শ্রী চপলকান্ত ভট্টাচার্য।
৪। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাঃ প্রফেসর যতিন্দ্রনাথ চট্টোপধ্যায় সম্পাদিত, এবং এর ভুমিকা লিখেছেন শ্রী আনন্দ শঙ্কর রয়।
৫। দ্বিতীয় প্রকাশিত ছবির এ্যালবাম।
বাংলাদেশ এর শিক্ষকদের এই দলটি কোলকাতা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সাথেও সাক্ষাত করে তাদের সমস্যার কথা বলেন এবং এই দলে তাদের সাথে আরো যোগ দেন শান্তিনিকেতন আস্রমিক সঙ্ঘের শ্রীমতী ম্রিন্ময়ী বোস। কোলকাতা ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন চ্যান্সেলর, শ্রীমতী পদ্মজা নাইডু এর সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেবার জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই ন্যাশনাল কোঅরডিনেশন কমিটি ফর বাংলাদেশ এর কনভেনার, প্রফেসর সমর গুহ, এমপিকে।তিনি আমাদেরকে শিশুখাদ্য ও ঔষধ সরবরাহে সাহায্য করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
১৭ জুনে দিল্লীতে একটি প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়েছে যার কথা ইতিমধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে। দিল্লীতে স্বল্পসময় থাকা হলেও ইউজিসি এবং অনেক সরকারি কর্মকর্তাগণের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। যোধপুর পার্ক গার্লস স্কুলের শ্রীমতী ম্রিন্ময়ী বোশ সহ দুইজনের একটি দল বোম্বে গমন করেন এবং সেখানে সকল শ্রেনির মানুষের সাথে সাক্ষাত করেন।
নবাব আলী জাভের জং, মহারাষ্ট্রের গভর্নর এবং প্যাট্রন, বাংলাদেশ এইড কমিটি এর সাথে ২৯ তারিখ যোগাযোগ করা হয়, এবং তিনি আমাদের ক্যাম্প স্কুল স্কিম বাস্তবায়নে সম্পূর্ণ সহায়তা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। মিঃ হরিশ মহিন্দ্র, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ এইড কমিটী, উক্ত মিটিঙটি বোম্বের রাজ ভবনে আয়োজন করেন।
শ্রী সলিল চৌধুরী, এস এম সবিতা চৌধুরী এবং শ্রী মান্না দে তাদের এ্যালবাম, ‘বাংলা আমার বাংলা” সকল রয়ালিটি দান করেছেন।
বোম্বে ফার্টিলাইজার কর্পোরেশন এর সকল অফিসার ও কর্মীরা আমাদের একটি ভাল অংকের ডোনেশন দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
শ্রী হৃষীকেশ মুখারজী এবং শ্রী হিতেন চৌধুরী তাদের নিয়মিত সাহায্যের প্রবাহ চালিয়ে যাবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
শ্রী সি এল ঘিওয়ালা, সেক্রেটারি, ঈন্দিয়ান মারচ্যান্টস চেম্বার, বোম্বে, আমাদের বিভিন্ন মানুষজনের সাথে যোগাযোগ করতে সাহায্য করছেন এবং আমাদের কমিটিতেও সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছেন।
বোম্বেতে এত মানুষের সাথে এক্সযোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে, প্রয়াত বিমল রয় এর স্ত্রী শ্রীমতি মনোবিনা রয়, ডঃ অশোক মজুমদার এবং বোম্বে হাই কোর্টের এডভোকেট শ্রী গিরিশ মুন্সী এর সাহায্যে। মিঃ বংশিভাই মেহরা ও তার স্ত্রী শ্রীমতি সুশিলা মেহতা আমাদেরকে বোম্বে থাকাকালীন সময়ে সব ধরনের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মিঃ আর সি জাভেরি ও সব ধরনের সাহায্য করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বোম্বে ইউনিভার্সিটি এর জাস্টিস গজেন্দ্রগরকার, ভাইস চ্যান্সেলর, বোম্বে ইউনিভার্সিটি, আমাদের একটি কমিটি করবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার মাধ্যমে তারা ফাণ্ড সংগ্রহ করবেন এবং কোলকাতা ইউনিভার্সিটিতে আমাদের শিক্ষক সহায়ক সমিতির সকল কার্যক্রম চালাতে সাহায্য করবেন। প্রফেসর দন্তওয়ালা, প্রফেসর মিস আলো দস্তুর, ডঃ ঊষা মেহতা এবং বোম্বে ইউনিভার্সিটির আরো অনেকজঙ্কে আমরা মনের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাই, বোম্বেতে অবস্থাঙ্কালীন সময়ে নানা ধরনের প্রোগ্রাম আয়োজন করার জন্য।
আমাদের পিকচার এ্যালবামে কিছু দারুন ছবি দিয়ে সাহায্য করার জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই, বোম্বের ফিল্ম ডিভিশনকে। ফিল্ম ডিভিশনের শ্রী অরুন চৌধুরী এবং শ্রী পি পতি এই ছবিগুলো পেতে সাহায্য করেছেন। শান্তিনিকেতন আশ্রমিক সঙ্ঘের শ্রী ডাব্লিউ এম ভান্ডারি তাদের অক্টবর মাসের ৪ দিনের চ্যারিটি ফাংশনের পুরোটা জুড়ে এই প্রকাশনাগুলো বিক্রির জন্য প্রচারনা চালাবেন বলে জানিয়েছেন। এজন্য আমরা আরো কৃতজ্ঞতা জানাই, কোলকাতার শ্রী কাশ মেন সেন কে, যিনি শ্রী ভান্ডারির সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষার জন্য আমাদেরকে একটি রোভিং টিম সরবরাহ করেছেন। AIFUCTO এর ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর কে এম দেওধরের কথাও না বলে পারছিনা,একি সাথে শ্রী প্রবির সান্ডেল, শ্রী বসন্ত ব্যানারজি, মিসেস বীনা ব্যানারজি, শ্রীমতী চিত্র বড়ুয়া, মিঃ মিনু মাসানি এবং আরো অনেকে যারা অসাধারন অবদান রেখেছেন এবং ভবিষ্যতেও রাখবেন।
ভারতীয় বিদ্যা ভবনের সেক্রেটারি, শ্রী এস রামকৃষ্ণন, আমাদের সমিতির সহায়তায় বোম্বেতে কিছু পারফর্মেন্স আয়োজন করবেন।
শ্রী শিক্ষায়তন, সিউনারাইন ও রমেশ্বর ফতেপুরিয়া কলেজ এর শিক্ষক প্রাক্তন ছাত্র ও বর্তমান ছাত্রদের একটি প্রতিষ্ঠান, দ্যা রেডিয়েন্ট প্রসেস, রাজা পেয়ারি মোহন কলেজের শিক্ষক মহোদয়গন, অমতা বালিকা বিদ্যালয়, উদ্বোধন ট্রাস্ট, সচিব টিসি মুঘেরিয়া গঙ্গাধর মহাবিদ্যালয় প্রভিতি আমাদের শ্রী সংঘ চলাকালীন সময়ে সাহায্য করেছেন।
আমাদের অর্থ সাহায্য প্রয়োজন এবং তার নিয়মিত প্রবাহেরও দরকার আছে। আমরা দেশের এবং দেশের বাইরের সকলকে আবেদন জানাই যেন তারা আমাদের সমিতির কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য নিশ্চিত করেন।
আমাদের ছাত্র সঙ্ঘের ফটোগ্রাফিক এক্সিবিশনের পোস্টারগুলো তৈরি করে সাহায্য করার জন্য আমরা শ্রী দেবব্রত মুখোপধ্যায় এবং এসএম সিপ্রা আদিত্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
সমিতির জন্য শ্রী মানস হালদার, শ্রী অনিল বসু, শ্রী অংশুমান মল্লিক এবং আরো অনেকে বাংলাদেশ থেকে আমাদের সমিতিতে যেভাবে সাহায্য করছেন, তার জন্য ধন্যবাদ না জানালেই নয়। একি সাথে কলকাতা ইউনিভার্সিটি এর সুপারভাইসর এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের কথাও উল্লেখযোগ্য।
আমাদের প্রকাশনাসমুহঃ
১। ছয় দফা দাবী
২। মুজিবরের ঐতিহাসিক ভাষন
৩। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ, Re. ১.00
৪। বাংলাদেশ, দ্যা ট্রুথ, Re. ১.00
৫। কনফ্লিক্ট ইন ইস্ট পাকিস্তান
৬। বাংলাদেশ থ্রু দ্যা লেন্স
৭। বাংলাদেশ, দ্যা হিরোস অব এ নিউ লাইফ
৮। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ
৯। পাকিস্তানিসম এন্ড বেঙ্গলি কালচার বাই উসমান জামাল, Rs. ৩.00
১০। ব্লিডিং বাংলাদেশ (এ পিকচার এ্যালবাম) Rs. ১0.00
পাওয়া যাচ্ছেঃ
* সি ইউ সেলস কাউন্টারস, কলেজ স্ট্রিট
* ফরোয়ারড পাব্লিকেশন্স, কলেজ মার্কেট
জুলাই ১৯৭১ঃ
জুলাই মাসে আমাদের কার্যক্রম মুলত ৪ টি বিভাগে বিভক্ত ছিলঃ
১) মুক্তি ফৌজকে সাহায্য করা
২) শিক্ষকদের সাহায্য করা
৩) প্রকাশনা
৪) ছবি প্রদর্শনী।
আমরা আমাদের করমকান্ডের মাধ্যমে শিক্ষকদের ক্যাম্পস্কুলে বিভিন্ন সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে পেরেছি। ক্যাম্পস্কুলগুলো ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির পরিচালনায় ও ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটির আর্থিক সাহায্যে চালু হয়েছে।
এসময়ের মধ্যে আমরা তরুণদের ক্যাম্পগুলোতে সহায়তার কার্যক্রম যেমন ওউশধ, খাদ্যদ্রব্য সাহায্য, এবং আরো নানা উপকরন সরবরাহ চালিয়ে গিয়েছি। চিফ মিনিস্টারের কমিটি বিলুপ্ত হওায় একটি ফান্ড স্বল্পতার সৃষ্টি হয়েছে যা একটি শূন্যস্থানের সৃষ্টি করছে, এবং আমাদের জন্য তা পরিপূর্ণ করা খুবি কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে।
আমাদের বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির প্রেসিডেন্ট, ভাইস চ্যান্সেলর, প্রফেসর এস এন সেন, দিল্লী গমন করেছিলেন, কিন্তু দুরভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশী শিক্ষকদের অস্থায়ী নিয়োগের বিষয়টি চুড়ান্ত হয়নি। বর্তমানে কমিটির সচিব দিল্লীতে অবস্থান করছেন যেন ইউজিসি এবং সরকারের সাথে আলোচনা করে এসকল স্কিম যা দিল্লীতে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়িত হয়।
এম পি শ্রী ডি এল সেন গুপ্ত এর সাহায্য তিনি, জুলাই এর ২২ তারিখে প্রধানমন্ত্রী এবং একি সাথে ইউনিয়ন মন্ত্রীদ্বয় শ্রী চয়ন ও শ্রী সিদ্ধার্থ সংকর এর সাথেও দেখা করেছে্ন। প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ থেকে যারা আসতে বাধ্য হয়েছে তাদের বিষয়ে অবগত করা হয়, বিশেষত শিক্ষকদের বিষয়ে। আমাদের কাজ দেখে প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়েছে, বিশেষত আমাদের প্রকাশনার প্রশংসা করেছেন। তিনি আমাদের পশ্চিম বঙ্গ সম্পরকিত ইউনিয়ন মন্ত্রী শ্রী রয় এর সাথে দেখা করার পরামর্শ দেন। ইউনিয়ন মিনিস্টার আমাদের সচিবকে দিল্লীতে পরামর্শ দেন যেন তিনি কলকাতায় তার সাথে দেখা করেন এবং আমাদের সকল সমস্যাগুলো নিয়ে সেখানে বিস্তারিত আলোচনা করেন। আমাদের শত চেষ্টা স্বত্বেও তিনি আমাদের সময় দিতে পারেননি, শুধু মাত্র আমরা ২৯ তারিখে একটি লিখিত নোট তাকে রাইটারস বিল্ডিঙ্গে হস্তান্তরিত করতে পেরেছি। আমরা এই নোট এর কপি প্রধানমন্ত্রীকেও পাঠিয়েছি।
প্রকাশনাঃ
এসময়ের মধ্যে বেশকিছু বই প্রকাশিত হয়েছে এবং বিভিন্ন ওয়ার্ল্ড সেন্টারে তা প্রেরন করা হয়েছেঃ
১) বাংলাদেশ দ্যা হিরোস অফ এ নিউ লাইফ- ডঃ বঙ্গেন্দু গাঙ্গুলি ও ডঃ মিসেস মিরা গাঙ্গুলি সম্পাদিত।
২) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ- প্রফেসর যতিন্দ্র চট্টোপধ্যায় সম্পাদিত।
এই বইটি মুলত বাংলাদেশের শিক্ষকদের অভিজ্ঞতার একটি বিবরন, যারা ছিলেন ইয়াহিয়ার প্রথম টার্গেট।
এছারাও আমরা এখন পর্যন্ত কলকাতা ইউনিভার্সিটি এর পলিটিকাল সাইন্স ডিপার্টমেন্ট এর হেড ডঃ এস কে মুখারজি সম্পাদিত, বাংলাদেশ এন্ড ইন্টারন্যাশনাল ল” বইটির ৫০০ কপি হাতে পেয়েছি। বইটি পশ্চিম বঙ্গের পলিতিক্যাল সাইন্স এসোসিয়েশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে। আমরা আমাদের মেইলিং লিস্টে অন্তর্ভুক্ত প্রথিবীর বিভিন্ন সংস্থায় বইটি প্রেরন করেছি।
আমাদের দ্বিতীয় পিকচার এলবামটি শিঘ্রই প্রকাশিত হবে। আমাদের সম্পাদক বোর্ড আরো কিছু পাণ্ডুলিপি দেখছেন।
ক্যাম্প স্কুল প্রোগ্রামঃ
এই প্রোগ্রামটি যথেষ্ট সহায়তা পাচ্ছে। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে মোট ৩১টি স্কুল চালু হয়েছে (শুধু মাত্র পশ্চিম বঙ্গেই রয়েছে ৬০৪টি ক্যাম্প)। ক্যাম্পস্কুলগুলো বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির পরিচালনায় ও ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটির আর্থিক সাহায্য এবং স্থানিয় লোকজন, ক্যাম্প পরিচালকদের সহায়তায় চলছে। আমরা মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটির সহায়তার মাধ্যমে ইতিমধ্যে সেখানে স্লেট, বইখাতা ও অন্যান্য জিনিস্পত্র ছাত্রদের মধ্যে বিতরন করেছি। এক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই শ্যামচরন স্ট্রিটের মেসার্স ভারত স্টেশনারিকে ধন্যবাদ জানাই, যারা বিনা লাভে সকল সরঞ্জাম আমাদের সরবরাহ করেছেন।
স্কুলের সকল শিক্ষারথিকে বিনামূল্যে বা বিনা লাভে বই সরবরাহ করবে বলে জানিয়েছে কোলকাতার দ্যা পাবলিশার্স এন্ড বুক সেলারস এসোসিয়েশন। তারা এমুহূর্তে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি এর পরিচালকদের সাথে এই বইগুলো কিভাবে বিতরন করা হবে তা নিয়ে আলোচনা করছেন। আমরা একি সাথে তাদের ধন্যবাদ জানাই একারনে যে তারা ক্যাম্প স্কুলের ডিরেক্টরেটের জন্য বিনামূল্যে তাদের হল ব্যবহার করতে দিয়েছে। মেসার্স নয়া প্রকাশ ও তাদের একটি অফিসে ক্যাম্প স্কুল ডিরেক্টরেটদের ব্যাবহার করতে দিচ্ছে, যাতে সকল আসবাব ও টেলিফোন সংযোগ মজুদ রয়েছে।
কলকাতার রাজ ভবনে, মহারাষ্ট্রের গভর্নর নবাব আলি জাভের জং এর সাথে সমিতির একটি দল সাক্ষাত করে যাতে উপস্থিত ছিলেন ডি কে চক্রবরতী, এস এন ভট্টাচার্য, জানেশ পত্রনবিশ ও প্রিয়দর্শন সেন শর্মা এবং হিজ এক্সেলেন্সি ক্যাম্প স্কুলের কাজে বেশ আগ্রহ দেখিয়েছেন। তার ইচ্ছে অনুযায়ী রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের একটি স্কিমও প্রফেসর পি সেন শর্মা তৈরি করেছেন এবং সেটি তাকে প্রেরন করা হয়েছে। পি ডাব্লিউ ডি এর সহকারী ইঞ্জিনিয়ার শ্রী এ কে রয় আমাদেরকে স্কুল ও হোস্টেল বিল্ডিং এর ডিজাইনটি তৈরি করে দিয়েছেন। তিনি একি সাথে খরচের একটি আগাম হিসাবো নির্ধারণ করেছেন। সমিতি তার এই সাহায্যের জন্য তাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছে।
আমরা একি সাথে সিএএসএর সাথেও যোগাযোগ করছি, যাদের পরিকল্পনার সাথে ক্যাম্প স্কুল প্রোগ্রামটির মিল রয়েছে। প্রফেসর অমিয় চৌধুরী তাদের আমন্ত্রনে দিল্লীতে বাংলাদেশের উপর একটি সেমিনারে যোগ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ অবস্থা অনুসন্ধান কমিটিঃ
আমাদের সমিটি বাংলাদেশ অবস্থা অনুসন্ধান কমিটিকে সহায়তা করছে এবং আমরা তাদের কিছু কোসচেনেয়ার মুদ্রন করে দিয়েছি।
পুনার বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রাম সহায়ক সমিতির আমন্ত্রনে আমরা চিত্র প্রদরশনীর সরঞ্জামসহ আমরা দুইজন ছাত্র প্রতিনিধিকে পুনায় পাঠিয়েছি- শ্রী মানস হালদার ও গৌতম ঘোষ । পুনার সমিতি আমাদের প্রদরশনীটি পছন্দ করেছে এবং তারা অনুরোধ করেছে যে এই প্রদর্শনীটি যেন আমরা বোম্বে ও মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানেও করি। আমরা প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় রেখেছি।
বোম্বে ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ডঃ পি বি গজেন্দ্রগরকার এর আমন্ত্রনে আমরা বাংলাদেশী শিক্ষক ও আমাদের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি দল বোম্বে ইউনিভার্সিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছি। সমিতি একিভাবে প্রসিদ্ধ সঙ্গীত শিল্পীদের একটি দল সিলনে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে এবং শ্রীমতী কনিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এই দলটির নেতৃত্ব দেবেন বলে জানিয়েছেন।
শেখ মুজিবর রহমানের প্রহসনের বিচারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি যে র্যালি করেছে তাতেও সমিটি অংশগ্রহন করে।
ত্রাণ কর্মকাণ্ডঃ
আমরা আন্ধ্রা ইউনিভার্সিটি ও সাধারন ব্রাক্ষ্ম সমাজ এর মহিলা সমিতি থেকে পোশাক ও অন্যান্য দ্রব্যাদি পেয়েছি যা আমরা সাধারন শরণার্থীদের মধ্যে বিতরন করেছি। সাধারন ব্রাক্ষ্ম সমাজ আমাদের আরো সাহায্য করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা সাধারন ব্রাক্ষ্ম সমাজ এর রেক্টর অরুন কুমার সেনকে এজন্য ধন্যবাদ জানাই। ডঃ পিকে চ্যাটারজী-একাডেমিক কাউন্সিল মেম্বার ও সিনেট সদস্য, নিয়মিত আমাদের ঔষধ সরবরাহ করে সাহায্য করছেন। সিন্ডিকেট মেম্বার, ডঃ বিবেক সেঙ্গুপ্ত, ডঃ পিকে চ্যাটারজি ও ডঃ প্রবোধ রয় আমাদের জানিয়েছেন যে গুরুতর রোগীদের চিকিতসায় তারা সাহায্য করবেন। মিঃ কল্যান মুখারজি ও তার স্ত্রী মিসেস মুখারজি তাদের খরচে কিছু আহত মুক্তিযোদ্ধার চিকিতসার ভার নিয়েছেন। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
ফাদার পি ফ্যালন তার ইউরোপ ট্যুর থেকে ফিরে এসেছেন এবং আমাদেরকে একটি বিস্তারিত রিপোরট জমা দিয়েছেন। ১৯শে জুলাই তিনি ইউনিভার্সিটিতে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজনও করেন।/ জুলাই এর ২২ তারিখে তার রিপোর্টটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে দেয়া হয়। রিপোর্ট এর কপি শ্রী শরন সিং এবং শ্রী সিদ্ধারথ শংকর রয় কেও দাওয়া হয়েছে। কোলকাতা হাই কোর্ট এর রিটায়ার্ড বিচারক, জাস্টিস একে দাস ও তার ইউরোপ ভ্রমন শেষে ফিরেছেন।
ইন্সটিটিউট অফ সিলনিস স্টাডিজঃ
ইন্সটিটিউট অফ সিলনিস স্টাদিজ বাংলাদেশের শিক্ষক এবং আমাদেরকে আমন্ত্রন জানিয়েছেন। আমাদের তরফ থেকে প্রফেসর পিকে বোস, একাডেমিক ভাইস চ্যান্সেলর এ দলের নেতৃত্ব দেবেন।
অতিথিগনঃ
জাপানিজ পারলামেন্টারি গ্রুপ ফর ওয়ার্ল্ড গভারন্মেন্ট এর জেনারেল সেক্রেটারি, ওয়ার্ল্ড এসোসিয়েশন অফ ওয়ার্ল্ড ফেডারালিস্টস এর চেয়ারম্যান এবং জাপানিজ পার্লামেন্ট এর এম পি, মিঃ কান ইচি নিশিমুরা, হনেফস, অস্ল থেকে ফেরার পথে কোলকাতায় আসেন। প্রফেসর সেন শর্মা তাকে দমদম এয়ারপোর্টে অভ্যর্থনা জানান এবং সমিতির প্রকাশনাগুলোর এক সেট ইংরেজি ভারসন তাকে উপহার দেন। আমাদের বইগুলো মিঃ নিশিমুরাকে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে। ২৬শে জুলাই আমাদের তরফ থেকে প্রফেসর অমিয় চৌধুরী ও পি সেন শর্মা তাকে বিদায়ও জানান। আমাদের অফিসে জাপানের বাংলাদেশ সলিডারিটি ফ্রন্ট এর সেক্রেটারি জেনারেল মিঃ সেতসুরি সুরুশিমা, জাপা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ এসোসিএশন এর একজন এক্সিকিউটিভ কমিটি মেম্বার মিঃ টি সুসুকি ও জাপানের একজন টিভি ক্যামেরাম্যান, মিঃ তেমিসুকাকে আমন্ত্রন জানানো হয়। তাদেরকে আমাদের প্রকাশনাগুলো উপহার দেয়া হয়, যা তারা জাপানি ভাষায় অনুবাদ করবেন এবং বাংলাদেশের জন্য প্রচারণাগুলোতে প্রচার করবেন। তারা আমাদের সমিতির সাথে আরো কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন।
পুনার বাংলাদেশ মুক্তি-সংগ্রাম সহায়ক সমিতি এর সেক্রেটারি ও মহারাষ্ট্রের সংসদের একজন এমএলএ শ্রী শ্যামকান্ত ডি মুরকেও কুয়ালালামপুরে ইন্টারন্যাশনাল পারলামেন্টারি কনফারেন্সে গমনের পূর্বে আমরা বাংলাদেশ বিষয়ে তথ্যাবলী দিয়েছি।
ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি সারভিসঃ
ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি সারভিস এর মিঃ থাইয়াগরজন আমাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন এবং আমরা আশা করছি যে আমাদের বিভিন্ন করমকান্ডে আমরা তাদের পাশে পাবো। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এর প্রসিদ্ধ ইতিহাসবিদ প্রফেসর এ এল ব্যাশাম, আমাদের অফিসে এসেছিলেন। তিনি আমাদের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন এবং আমাদের জন্য ফান্ড সংরক্ষনের প্রতিশ্রুতি দেন।
মুক্তি বাহিনিঃ
এই মাসে আমরা নিম্নোক্ত দ্রব্যাদি মুক্তি বাহিনিকে পাঠিয়েছিঃ
১। ট্রাঞ্জিস্টার রেডিও।
২। কম্বল
৩। ঔষধ
৪। চিড়া।
আর্থিক সাহায্যঃ
আমরা এসময়ের মধ্যে মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটির ছাত্র ও শিক্ষকদের কাছে থেকে আর্থিক সাহায্য পেয়েছি, যাদের মধ্যে ছিলেনঃ প্রফেসর অতিন্দ্র মজুমদার, নিউজিল্যান্ড এর ওএলিংটন থেকে ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটির ডঃ এ মজিদ খান, নিউজিল্যান্ডের ডুনেডীন এর অবস্থিত ওটাগো ইউনিভার্সিটির ইকোনমিকস বিভাগের প্রফেসর প্রিয়তোষ মৈত্র। অন্ধ্র ইউনিভার্সিটি এর ছাত্র ও শিক্ষকরাও সাহায্য করেছেন, আরো আছেন জওহরলাল নেহ্রু ইউনিভার্সিটি এর সাপোর্ট বাংলাদেশ কমিটি, ফারটিলাইজার করপোরেশন অব ইন্ডিয়া থেকে শ্রী স্বপন ভদ্র, শ্রী প্রবির সান্ডেল এর মাধ্যমে বোম্বের ইন্টার স্টেত কালচারাল ইন্টিগ্রেশন এর চেম্বুর টম্ব্রে, ইন্ডিয়ান প্লাস্টিক ফাউন্ডেশন থেকে মিঃ রুজ আন্সারি। এম/এস গুড কম্পানির শ্রী বারিন মিত্র, উলুবেড়িয়া কলেজ থেকে প্রফেসর অরুন দাসগুপ্ত, সি ইউ এর শিক্ষা ডিপার্টমেন্টের ও পালপাড়া ওয়াই এস কলেজের ছাত্র ও শিক্ষকগন, বগুলা (নদিয়া) শ্রীকৃষ্ণ কলেজের টিচার্স কাউন্সিল ও আর্থিক সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন।
সৃজনশীল শিল্পীদের সহায়তাঃ
শ্রীমতী মৃন্ময়ী বোসের অব্যাহত চেষ্টার ফলস্বরূপ, আমাদের সমিতির একজন প্রতিনিধি বাংলাদেশী কিছু সঙ্গিতশিল্পীসহ এয়ার কোলকাতা স্টেশনে অভিষিক্ত হয়েছেন। আমরা সেখানকার শ্রী বিমান ঘোষকেও এর জন্য ধন্যবাদ জানাই।
আমাদের দাতার জন্য আয়কর মওকুফঃ
আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই ভারত সরকারকে যারা আমাদের দাতার কর মওকুফ করে দিয়েছেন, যেন দাতার সংখ্যা বাড়ে।
আমাদের দুতঃ
শ্রী বংশিভাই মেহতা এবং শ্রীমতি সুশীলা মেহতা, এই দুইজনের দলটি এমুহূর্তে আমাদের আরো কিছু প্রতিনিধির সাথে ইউরোপে ভ্রমন করছেন।
আমরা আবারো সবাইকে আবেদন জানাতে চাই যে আমাদের কোলকাতা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ সহায়ক সমিতিতে যে অর্থ সহায়তা আপনারা প্রেরন করছেন, তা যেন অব্যাহত থাকে, যেন আমরা আমাদের উদ্যোগগুলোকে বাস্তবায়িত করতে পারি এবং বাংলাদেশে গনহত্যার ফলে বিপদগ্রস্থ মানুষগুলোর পাশে দাড়াতে পারি ও মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করতে পারি।
অগাস্ট ১৯৭১ঃ
কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি ৪ভাবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেঃ
(১) মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা (২) প্রকাশনা, (৩) শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীদের সহায়তা (৪) চিত্র প্রদর্শনী, এবং এছাড়াও আমরা এডভারটাইজিং কাউন্সিলের সাথে একটি নিউজ ব্যাঙ্ক স্থাপন করেছি, যাতে বড় বড় সংবাদদাতা সংস্থাগুলো সংযুক্ত আছে। এই প্রজেক্টটি বাংলাদেশী কিছু তরুন ছেলেমেয়েরা চালিয়ে যাচ্ছে।
বরাবরের মতই আমরা বিভিন্ন তরুণদের ক্যাম্পের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছি এবং আমাদের ক্ষমতা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করে যাচ্ছি। এমাসে আমরা খুবি কম সংখ্যক মশারি, বুটজুতো ইত্যাদি বিতরন করেছি তাদের মধ্যে। তারা আমাদের কাছে আরো জিনিসপত্র চেয়ে পাঠিয়েছে এবং অন্যান্য কমিটি থেকে তা সংগ্রহ করার চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি।পসছিম বঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এসোসিয়েশন এবং অন্যান্য গনকমিটিগুলোও একি লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। মিঃ কল্যান মুখারজি ও মিসেস বানি মুখারজির বদান্যতায় আমরা কিছু চিড়া ও চিনি পেয়েছি যা আমরা তাদের অনুপস্থিতিতেই তিনটি ক্যাম্পে বিতরন করেছি। আমরা দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে এ মাসে আমাদের কোন প্রকাশনা হয়নি, কিন্তু আমরা ইতিমধ্যে প্রকাশিত পুস্তকগুলি বিভিন্নস্থানে ডাকযোগে প্রেরন করে যাচ্ছি। আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে আমাদের দ্বিতীয় আলোকচিত্র এ্যালবামটি, যা সময়ের ধারানুযায়ী সন্নিবেশিত করা হয়েছে, তা ইতিমধ্যে মুদ্রনের জন্য প্রেসে দাওয়া হয়েছে এবং বোম্বের ভারতীয় বিদ্যাভবনের ডঃ অশোক মজুমদার লিখিত আরো একটি প্রকাশনা অতিশীঘ্রই প্রেসে দেয়া হবে।
ক্যাম্প স্কুল স্কিমঃ
এখন পর্যন্ত ৩১টি ক্যাম্পস্কুল চালু হয়েছে, যার মধ্যে ২১টি পশ্চিম বঙ্গে ও ১০টি আগরতলায়। এখানে বাংলাদেশের ৪০০ জনেরো বেশি শিক্ষক কাজ করছেন। গত মিটিং রিপোর্টেই বলা হয়েছিল যে মহারাষ্ট্রের গভর্নর নবাব আলী জাভের জং আমাদের ক্যাম্প স্কুল স্কিমে বেশ আগ্রহ দেখিয়েছেন। তিনি বোম্বে ফিরে গিয়েই টেলিগ্রাফের মাধ্যমে আমাদের স্কিমে কিছু পরিবর্তন আনার পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা সে অনুযায়ী পরিবর্তন করে তার বিবেচনার জন্য পাঠিয়েছি। আমরা দ্রুতই কিছু ভাল ফলাফল আশা করছি এব্যাপারে।
শিক্ষকদের সহায়তা প্রদানঃ
শুরু থেকেই আমাদের সমিতির প্রেসিডেন্ট ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর এস এন সেন, বাংলাদেশের শিক্ষকদের অতিরিক্তভাবে অস্থায়ীকিছু পদে নিয়োগ দেবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। উনি ইউজিসি ও ইউনিয়ন এডুকেশন মিনিস্টারের সাথে এবিষয়ে আলাপ করে যাচ্ছেন মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে। একিসাথে একথা জুনে এবং জুলাই মাসের শেষদিকে প্রধান্মন্ত্রীকেও জানানো হয়েছে। বরতমাঙ্কালে শিক্ষকদের অবস্থা ক্রমশ আরো সঙ্গীন হচ্ছে সে বিষয়ে ইউনিয়ন মিনিস্টারকে অবহিত করা হচ্ছে। বাংলাদেশের শিক্ষকদের ভিজিটিং ফেলো হিসেবে নিয়োগের ব্যাপারে বেশ কিছু স্কিম কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি প্রস্তুত করেছে এবং তা সরকারের কাছে জমাও দিয়েছে। দুরভাগ্যবশত এখনও এ বিষয়ে আশানুরুরপ কোন ফল পাওয়া যায়নি। আমাদের দেশের পলিসি প্রনয়ঙ্কারী ব্যাক্তিরা যদি সহায়ক সমিতির বাংলাদেশী শিক্ষকদের অস্থায়ী নিয়োগের এ প্রস্তাব অনুমোদন করতেন, সেটি খুবি দারুন একটি ফলাফল বয়ে আনতো।
যদিও আনন্দের সাথে বলা যায় যে, যোধপুর, মুজাফফরপুরে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অফ পাটিয়ালা, বোম্বের দ্যা ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি, কলকাতার দ্যা ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশন অফ সাইন্স, কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সটিটিউট ও যাদবপুর ইউনিভার্সিটি কিছু শিক্ষকদের নিয়োগ দিয়েছে। দিল্লী ইউনিভার্সিটি ও জওহরলাল নেহেরু ইউনিভার্সিটি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
এমতাবস্থায়, আমাদের শিক্ষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখতে হবে। এই বিষয়ে আমাদের অব্যাহত ফান্ড সহায়তা প্রয়োজন।
তথ্য ব্যাংকঃ
আমরা এডভারটাইজিং কাউসিলের সহায়তা ও দিকনির্দেশনায় একটি তথ্য ব্যাংক স্থাপন করেছি। হিন্দুস্তান থম্পসন এসসিয়েটস লিমিটেড এর শ্রী রাম রয় শীর্ষ সংবাদ মাধ্যমগুলোর মুখপাত্র হিসেবে এ প্রজেক্টটি দেখভাল করছেন। এর জন্য নেতাজি ভবন, কলকাতায় এর ওয়ারক সেন্টার স্থাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ ভলান্টিয়ার সারভস করপস এর কাজে সারবিক সহায়তা এবং লোকবল দিচ্ছে।
আলোকচিত্র প্রদরশনীঃ
পুনার বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রাম সমিতির আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে শ্রী মানস হালদার আমাদের চিত্র প্রদর্শনী সমেত মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেরাচ্ছেন। এটি দারুন প্রশংসিত হচ্ছে। আমাদের কাছে এস।পি কলেজ, পুনা ও অন্যান্য স্থান থেকে অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি এসেছে।
বিদেশী সংস্থার সাথে যোগাযোগঃ
আমরা বাংলাদেশ বিষয়ে কাজ করার লক্ষ্যে প্রায় ২০০ বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করেছি।
মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও ঔষধঃ
আমরা বাংলাদেশ-গ্রিন ক্রস হতে অতি সম্প্রতি একটি বার্তা পেয়েছি, যাতে তারা আমাদের বলেছে একটি বড় ঔষধপত্র ও মেডিকেল যন্ত্রপাতির পারসেল খুব শিঘ্রই তারা পাঠাচ্ছে, এবং আমরা যেন সেগুলো গ্রহন করার জন্য তৈরি থাকি।
উলের পোশাকের আবেদনঃ শীত আসছে। ইতিমধ্যেই কিছু কিছু ক্যাম্পে ঠান্ডা অনুভুত হয়। আমরা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৃদ্ধ, শিশু ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য শীতের কাপড়ের সাহায্যের আবেদন চেয়ে পাঠিয়েছি। মেয়েদের স্কুল্গুলোতে বিশেষভাবে আবেদন করা হচ্ছে।
মিস মেরি স্যাটনঃ
বাংলাদেশের সকল রেজিস্টার্ড শিক্ষকদের একটি পুরনাঙ্গ তালিকা মিস ম্যারি স্যাটন এর কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশের জন্য যে ত্রান তহবিল তার তদারকিতে আছেন।
কেরালা পরিদরশনঃ
বাংলাদেশের রাজশাহি ইউনিভার্সিটির বাংলা ডিপার্টমেন্ট এর প্রধান, ডঃ মাজহারুল ইসলাম, এ মুহূর্তে কেরালায় সেখানকার একটি ইউনিভার্সিটির আমন্ত্রনে গিয়েছেন। তিনি সেখানে রবীন্দ্রনাথের উপর লেকচার দেবেন ও কিছু সম্মানীও পাবেন। তার সকল খরচ আমরা বহন করছি।
সমিতি রেজিস্ট্রেশন ও দাতাদের আয়কর মওকুফঃ
আমরা রেজিস্ট্রেশন অব সোসাইটিস এক্ট এর আওতায় এই সময়ের মধ্যে সমিতি রেজিস্ট্রেশন করিয়েছি এবং দাতাদের আয়কর মওকুফ এর মাধ্যমে সহায়তার অংক বৃদ্ধি করেছি।
রবীন্দ্র সদনে চ্যারিটি পারফরমেন্সঃ
গত ২৩ ও ২৪শে অগাস্টে দুইটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। ২৩ তারিখের শোটি উদ্বোধন করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর এস এন সেন ও প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর এবং বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির প্রেসিডেন্ট ডঃ আজিজুর রহমান মল্লিক। ২৪শে আগস্ট উদ্বোধন করেন আমাদের কার্যকরী প্রেসিডেন্ট এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর পিকে বসু এবং প্রধান অতিথি ছিলেন জনাব আমিরুল ইসলাম এমএনএ (বাংলাদেশ)। আমরা নবনালন্দা গ্রুপ ও শান্তিনিকেতন আশ্রমিক সংঘকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই যে তারা বিনা পারিশ্রমিকে দুইটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। আমরা রবীন্দ্রসদনের কর্তৃপক্ষ এর শ্রী সুকুমার দাস, শিমান বি চক্রবর্তী, ডঃ শুরবা লাহিরি ও প্রফেসর সোমেন বোসকে ধন্যবাদ জানাতে চাই প্রচারনা চালানো ও সহায়তার জন্য।
ভ্রমন কারযক্রমঃ
আমরা দুইটি ভ্রমন কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এক্টিতে বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রন রক্ষা করতে বোম্বে যাওয়ার কার্যক্রম ও অপরটি সিলন বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রন রক্ষা করতে যাওয়ার সিলনে যাওয়ার কার্যক্রম।
দিল্লী সেমিনারঃ
বাংলাদেশের উপর নিউ দিল্লীতে যে সেমিনার হয়ে গেল তাতে সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে ডঃ অমিয় চৌধুরী অংশ নিয়েছেন।
আর্থিক সহায়তাঃ
আমরা এই সময়ের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভারসিটী অফ মেলবোর্নের ছাত্রগন ও প্রফেসর এ। মজুমদারের নিকট থেকে, ফ্রান্স প্রবাসী মিস কোলেট দুটিলার নিকট থেকে (শ্রী কে এল মুখারজীর মাধ্যমে), ইমপ্লয়ী অব কোলকাতা ইউনিভারসিটি্, লন্ডন থেকে, অন্ধ্র ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় থেকে। কোলকাতা ইউনিভার্সিটির প্রফেসর হরিকিন্তর নন্দী ও পরিসংখ্যান বিভাগের অন্যান্য শিক্ষক, বেঙ্গলি সোশ্যাল এন্ড কালচারাল এসোসিয়েশন এর পক্ষে, ওয়েস্টারন-অস্ট্রেলিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি এর প্রফেসর প্রদিপ মিত্র, পাঞ্জাব উনিভারসিটি টিচার্স এসোসিয়েশন এর প্রেসিডেন্ট মিঃ কে এল জাওরা, ও কলকাতার এডুকেশন সোসাইট কলেজ এর টিসি ভাওয়ানিপোর এর কাছ হতে আর্থিক সাহায্য পেয়েছি।
সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর, ১৯৭১ঃ
গত দুই মাসেও কোলকাতা শিক্ষক সমিতি চারভাগে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গিয়েছেঃ
১) মুক্তি ফৌজকে সাহায্য করা
২) শিক্ষকদের সাহায্য করা
৩) প্রকাশনা
৪) ছবি প্রদর্শনী।
এই সময়ে আমরা একি সাথে বর্ডারে অবস্থিত যুবক্যাম্পগুলোকে সহায়তা করেছি। বাস্তবে বাকি সকল পাবলিক কমিটিগুলোই বিলুপ্ত হচ্ছে এবং তাদের করমকান্ডের ভার আমাদের উপর ন্যাস্ত হচ্ছে। আমাদের উপর চাপ অনেক বেড়ে যাচ্ছে। আমরা কোলকাতার এক্স শেরিফ শ্রী এস সি রয় এর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছি, মুলত তিনিই বাংলাদেশ এইড কমিটির মুল দায়িত্বগুলো পালন করেন। এই কমিটির সঙ্গঠক শ্রীমতী পদ্মজা নাইডু ও শ্রী এমসি চাগ্লা এর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল কোঅরডিনেশন কমিটি ফর বাংলাদেশ, এবং এর হেডকোয়ারটার নেতাজি ভবনে অবস্থিত।
সেপ্টেম্বরের ২ তারিখে আমরা পশ্চিম বঙ্গ বিষয়ক ইউনিয়ন মিনিস্টার শ্রী সিদ্ধারথ শংকর রয় এর সঙ্গে কোলকাতায় দেখা করি এবং একটি নোট প্রদান করি যা ইতিপূর্বে প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া হয়েছে। নোটে এখন পরযন্ত আমাদের সমিতির প্রেসিডেন্টের উদ্যোগে বাংলাদেশের শিক্ষকদের সহায়তায় যা যা করা হয়েছে তার একটি বিবরনী সম্বিলিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত এবিষয়ে আমরা সরকার থেকে কোন জবাব পাইনি।
ক্যাম্প স্কুলঃ
এখন পর্যন্ত ক্যাম্প স্কুলের মোট সংখ্যা ১৫টি যার মধ্যে ১০টিই ত্রিপুরায়। এখন পর্যন্ত ৭১৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ও ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটির আর্থিক সহায়তায় এ ক্যাম্প স্কুলগুলো চলছে। ফান্ড বাড়লে এই কারযক্রমকে আরো বর্ধিত করা যায়।
শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীদের সহায়তা প্রদানঃ
বোম্বে ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর এর দায়িত্ব থেকে অবসর গ্রহনের পূর্বে ডঃ পি বি গজেন্দ্রগ্ররকার আমাদেরকে বোম্বে ইউনিভার্সিটির টিচার ও ছাত্রদের কাছে থেকে সংগ্রহকৃত মোট ৬৭,০০০ রুপি প্রদান করেন। এখন পরযন্ট একটি মাত্র ইউনিভার্সিটি থেকে প্রাপ্ত এটিই ছিল সরবোচ্চ অংকের সাহায্য। এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় অবস্থানে আছে অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি যারা কয়েকটি কিস্তিতে আমাদের প্রায় ৪১,০০০ রুপি প্রদান করেছেন। আমরা প্রফেসর টপ, বোম্বে ইউনিভার্সিটির বরতমান ভাইস চ্যান্সেলর এর সাথেও যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছি এবং আশা করি তিনি বাংল্লাদেশের শিক্ষকদের জন্য সাহায্য অব্যাহত রাখবেন।
শরণার্থী শিক্ষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষে শ্রী জয়প্রকাশ নারায়ন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রদুত মিঃ এম হুসেনের মাধ্যমে আমাদের ২ লাখ রুপি প্রদান করেছেন। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে একটি অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে এবং অচিরেই এটি বাস্তবায়িত হবে
তথ্য ব্যাঙ্কঃ
তথ্য ব্যাঙ্ক এর কাজ ধিরেধীরে এবং সুষ্ঠভাবেই আগাচ্ছে। কোলকাতার ব্রিটিশ ইনফরমেশন সার্ভিস আমাদেরকে তিনটি পত্রিকার গত তিন মাসের প্রকাশিত প্রতিটি কপি দান করেছে। অন্যান্য বিদেশি জার্নাল ও ভিডিও ক্লিপের কপিও জমা হচ্ছে। এখন চাইলে স্কলারগন বা ইতিহাসবিদগণ এই ব্যাংককে রিসার্চের সময় কাজে লাগাতে পারবেন। এ বিষয়ে আমাদের অবশ্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনাব জামিল চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানানো দরকার যার পরযবেক্ষন ও দিকনির্দেশনার মাধ্যমে বাংলাদেশের ১৪ জন ছাত্র সেখানে আমাদের জন্য কাজ করছে। বাংলাদেশ সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ডিপার্টমেন্টকেও আমরা ধন্যবাদ জানাই তাদের সাহায্যের জন্য। আমরা বরাবরের মতই এ প্রজেক্টেও অর্থ বিনিয়োগ করছি। এবিষয়ে আমাদের সহায়তা করছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি।
আলোকচিত্র প্রদরশনীঃ
পুজার ছুটিতে প্রদর্শনী হাওড়াতে, মুর্শিদাবাদ এবং পশ্চিম বাংলার অন্যান্য স্থানেও অনুষ্ঠিত হয়।
বিদেশী সংস্থার সাথে যোগাযোগঃ
বিভিন্ন সমমনা বিদেশী সংস্থাগুলোর সাথে আমাদের যোগাযোগ প্রতিদিন কেবল বাড়ছেই, এবং এখন এ যোগাযোগ রক্ষা করা দুরুহ হয়ে পরেছে কেননা যোগাযোগ বাড়ার সাথে সাথে ডাকখরচ ও বেড়ে গেছে।
প্রবাসে ভ্রমনঃ
অক্টোবর মাসে, আমাদের দুত হিসেবে শ্রী শিবনাথ ব্যানারজি আফগানিস্তান গমন করেন। তিনি ছিলেন ১৯২২ সালে স্থাপিত কাবুলের মক্তব-এ-হাবিবিয়ার প্রাক্তন শিক্ষক। সেখানে অবস্থানকালে তিনি খান আব্দুল গাফফার খান ও অন্যান্য আফগানি নেতাদের সাথেও দেখা করেন। শ্রী ব্যানারজি তাদেরকে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত করেন এবং একি সাথে শরণার্থী শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীদের বিপদাপন্ন অবস্থার কথাও ব্যক্ত করেন।
আমাদের আরেকজন দুত, শ্রী পুরনেন্দ নারায়ন রায়, এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশ ভ্রমন করাতে শ্রী রয় এর মাধ্যমে অনেকগুলো নতুন স্থানে যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয়েছে। এমুহূর্তে ডঃ আলির নেতৃত্বে একটি নরওয়েজিয়ান টিম শ্রী রয় এর রেফারেন্সে কোলকাতায় অবস্থান করছে। তারা কম মুল্যে প্রোটিনজাত খাদ্য সরবরাহ করার জন্য ভারতে একটি উচ্চমাত্রার প্রোটিনজাত খাদ্য তৈরির ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। টীমটি ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে গিয়েছে এবং আমরাও এবিষয়ে সরকারের সাথে যোগাযোগ করছি।
বিদেশী দরশনারথীঃ
ওয়ার্ল্ড কাউন্সিল অফ ওয়ার্ল্ড ফেডারালিস্ট এসোসিয়েশন এর চেয়ারম্যান প্রফেসর নুড নিলসন কোলকাতা আসলে তাকে আমাদের পক্ষ থেকে প্রফেসর পি সেন শর্মা অভ্যর্থনা জানান। তাকে কিছু শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রফেসর নিলসন আমাদের অফিসেও এসেছিলেন এবং এখানেই তিনি বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের সাথে তাদের সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। জেনেভার ডাব্লিউএসসিএফ এর মিঃ জ্যাক ল্যাকশারকও আমাদের অফিস পরিদর্শন করেন এবং বাংলাদেশী শিক্ষকদের সাথে তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। তাকেও আমাদের প্রকাশনাগুলো দেয়া হয় এবং তিনিও অন্যান্যদের মত আমাদের একাজের জন্য আমাদের প্রশংসা করেন। এছাড়াও, নিম্নে বর্ণিত সাংবাদিক মহোদয় আমাদের অফিসে এসেছেন এবং বাংলাদেশ বিষয়ক খবরাখবরগুলো যাচাই করতে আমাদের সাহায্য চেয়েছেন।
(১) এস এ নিলসন (স্টকহোম)
(২) এ এম স্কিপার (ডেনমার্ক)
(৩) ভি এস বি ব্যাকারট (ডেনমার্ক)
(৪) এম আই ওঝা (সুইডেন)
মেডিকেল ইউনিটঃ
মেডিকেল ইউনিটের দায়িত্ব শ্রীমতি ম্রিন্ময়ী বোসকে দেয়া হয়েছে। শ্রীমতি পদ্মজা নাইডু নির্দেশ দাওয়ার পর আমরা ঔষধ সরবরাহ পাবার নিয়মিত ঔষধ সরবরাহ পাচ্ছি। স্থানীয় রেড ক্রস কর্মীরাও আমাদের সর্বাত্মক সহায়তা করে যাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের কাছে যা মজুদ আছে, তাতে শীতের সময়ে টানাটানি পরতে পারে। সেকারনেই এই বিষয়ে আরো কিছু নতুন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
শীতের কাপড় প্রদান করার আবেদনঃ
আমরা শীতের কাপড়ের জন্য সেপ্টেম্বর মাসে সকলের সাহায্য আহবান করেছিলাম এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা সাড়াও পাচ্ছি, কিন্তু আমাদের কাছে যা মজুদ আছে, তা দিয়ে শীতের সময় যথেষ্ট যোগান দেয়া সম্ভব হবেনা। সেকারনেই এই বিষয়ে আরো কিছু নতুন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
প্রকাশনাঃ
আমরা নিম্নে বর্ণিত প্রকাশনাগুলো বাজারে বিক্রির জন্য প্রকাশ করেছিঃ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওসমান জামাল রচিত পাকিস্তানিসম এন্ড বেঙ্গলি কালচার বইটি বিনামূল্যে মুদ্রন করে দিয়েছেন গুড কম্পানির বারীন মিত্র।
বাংলাদেশের উপর জাতীয় সেমিনারঃ
আমরা ইউইভারসিটি গ্র্যান্টস কমিশনের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশের উপর একটি জাতীয় সেমিনার এর আয়োজন করছি। ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বুদ্ধিজিবীগন এই সেমিনারে অংসগ্রহন করবেন। বাংলাদেশের কিছু প্রখ্যাত বুদ্ধিজিবীও এতে অংশ নিবেন বলে আমরা আশা করছি। এই সেমিনার সাব কমিটি এর কনভেনারের দায়িত্ব পালন করছেন প্রফেসর যতীন্দ্র নাথ চট্টোপাধ্যায়।
কলকাতা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির বোম্বে ইউনিট গঠনঃ
আমরা ফান্ড সংগ্রহ এবং বোম্বের বন্ধুদের মাধ্যমে তা আমাদের কাছে পৌছে দেবার জন্য একটি বোম্বে ইউনিট গঠন করেছি। এই ইউনিটের কনভেনার ট্রেজারার হলেন শ্রী নাভিন টি খান্ডওয়ালা এবং অত্যন্ত মহানুভবতার সাথে এ ইউনিটের চিফ প্যাট্রনের দায়িত্ব নিয়েছে মহারাষ্ট্রের গভর্নর হিজ এক্সেলেন্সি নবাব আলি জাভের জং। এ মুহূর্তে বোম্বে ইউনিট ফান্ড সংগ্রহের জন্য কিছু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। সম্মানিত মহারাষ্ট্রের গভর্নরসাহেব এই অনুষ্ঠানগুলোর উদ্বোধন করবেন।
আর্থিক সাহায্যঃ
এ সময়ের মধ্যে আমরা যাদের কাছ থেকে অর্থসহায়তা পেয়েছি তারা হলেন, পাঞ্জাব ইউনিভারসিটি টিচার্স এসোসিয়েশন এর প্রেসিডেন্ট প্রফেসর কে এল জাউরা, নর্থ বেঙ্গল ইউনিভারসিটি এর যুগ্ম সম্পাদক ও ট্রেজারার প্রফেসর এস কে বিষ্ণু, ওয়েস্ট বেঙ্গল গভর্নমেন্ট কলেজ টিচার্স এসোসিয়েশন এর কৃষ্ণনগর ইউনিট, মেসার্স গুড কম্পানি এর স্টাফসমুহ, লন্ডন থেকে শ্রী আর এন ভট্টাচার্য, অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ মেলবোর্ন থেকে প্রফেসর অতীন মজুমদার ও বোম্বে ইউনিভারিস্টির কথা পুরবেই বলা হয়েছে। এছাড়াও আমরা দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে কোলকাতা ইউনিভার্সিটি সুপারভাইসরি স্টাফস গত রিপোর্টকালীন সময়ে আমাদের অর্থসহায়তা করলেও তা গত রিপোর্টে উল্লেখিত হয়নি।
আমাদের এই স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমগুলোকে এগিয়ে নিতে আমাদের আরো ফান্ড প্রয়োজন এবং আমরা বিষয়ে সকলের সাহায্য কামনা করি।
নভেম্বর ও ডিসেম্বর, ১৯৭১ঃ
সমিতি শেষ দুইমাসেও একিধারায় তার কার্যক্রম চালিয়ে গিয়েছেঃ
১) মুক্তি ফৌজকে সাহায্য করা
২) শিক্ষকদের সাহায্য করা
৩) প্রকাশনা
৪) তথ্য ব্যাঙ্ক ও
৫) ক্যাম্প স্কুল
মুক্তি ফৌজকে সাহায্য করাঃ
যেমনটি সবাই জানেনে যে মুক্তিবাহিনীর তরুন সদস্যদের মৃত্যু স্বাধীনতা আন্দোলনকে আরো জোরদার করে তুলেছিল, তেমনি তাদের বিভিন্ন জিনিসের প্রয়োজনিয়তাও বেড়ে গিয়েছিল। আমরা আমাদের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তাদেরকে কম্বল, শীতের কাপড়, ট্রানজিস্টার, বই এবং ঔষধ সরবরাহ করেছি। এগুলো মুলত পাঠানো হয় রাজশাহি, খুলনা, যশোর ও কুষ্টিয়ার নিকটবর্তী মুর্শিদাবাদ, নদীয়া ও ২৪-পরগনা অঞ্চলে। এছারাও আমরা বই সরবরাহ করেছি, গেরিলা অপারেশনে আহত যোদ্ধারা আমাদের মাধ্যমে কোলকাতার বিভিন্ন হাস্পাতালে চিকিৎসা পেয়েছে। ইন্সটিটিউট অব বেসিক মেডিসিন এর শিক্ষক এবং বোর্ড অব হেলথ এর সচিব ডঃ প্রবোধ রয় এবিষয়ে আমাদের সকল সাহায্য প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
শিক্ষক ও বুদ্ধীজীবিদের সহায়তাঃ
এ পরযায়েও আমরা শরণার্থী শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছি। আমরা ভারতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার মিঃ এম হোসেন আলির মাধ্যমে শ্রী জয়প্রকাশ নারায়ন এর নিকট থেকে ১,৯৯, ৯০০ রুপি সাহায্য পেয়েছি। চট্টগ্রাম বিসব্বিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির প্রেসিডেন্ট ডঃ এ আর মল্লিক এবং মুজিবনগরে কর্মরত পরিকল্পনা অধিদপ্তর এ অর্থ ব্যয় এর পরিকল্পনা করছে। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির নিরবিচ্ছিন্ন সহায়তায় শরণার্থী শিক্ষকদের মাঝে এ অর্থ বিতরন করা হচ্ছে। এর জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সচিব ডঃ অজয়কুমার রয়, সহকারি সচিব জনাব আনোয়ারুজ্জামান ও একি সমিতির শ্রী নিত্যগোপাল সাহাকে।
প্রকাশনাঃ
আমরা এই সময়ের মধ্যে একটি চিত্র সম্বলিত বই প্রকাশ করেছি যাতে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত চলমান আন্দোলনগুলোর একটি ধারাবাহিক বিবরন রয়েছে, যার ফলসবরুপ আজ বাংলাদেশ সবাধীন একটি দেশে পরিনত হয়েছে। বইটির মুখবন্ধ লিখেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর এস এন সেন ও সারসংক্ষেপ লিখেছেন জনাব এম হোসেন আলি। বইটির শিরোনাম রক্তাক্ত বাংলাদেশ। রেডিয়েন্ট প্রসেসের শ্রী এন বি মুখারজি বইটি প্রকাশনার সকল খরচ বহন করেছেন। এই বইটির সম্পাদনার দায়িত্বেও ছিলেন এস এম শিপ্রা অদিত্য এবং প্রসিদ্ধ শিল্পী বইটির প্রচ্ছদের জন্য এক্ট দারুন স্কেচ করেছেন। আমরা ‘মুক্তিযোদ্ধার প্রতি” শিরোনামে একটি ছোট পুস্তিকা প্রকাশ করেছি, যেখানে বিভিন্ন পরযায়ের নেতাদের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য পাঠানো বারতাগুলো সংবলিত হয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির প্রফেসর যতীন্দ্রনাথ চ্যাটারজি ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির প্রফেসর সুকুমার বিশ্বাস যৌথভাবে এই বইটির সম্পাদনা করেন।
যদিও আমরা এই দুইমাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ বা স্বাধীন এলাকাগুলো থেকে সংরক্ষিত ছবিগুলো নিয়ে কোন প্রদরশণী এখনও করতে পারিনি।
তথ্য ব্যাংকঃ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্স বিভাগের ডঃ এ মজুমদারের নজরদারিতে এই সময়ের মধ্যে তথ্যব্যাঙ্কের কাজ ভালভাবেই এগিয়েছে। কোলকাতার প্রথম সারির কিছু খবরমাধ্যম এ ব্যাঙ্কের সফলতা নিয়ে নিউজ করেছে। শ্রী দুরগাদাস তরফদার এবিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং এই কাজের পরিসর আরো বড় করার জন্য কিছু দারুন পরামর্শ দিয়েছেন। মিঃ রাম রায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিউজ ফতোকপি করে রাখার দায়িত্ব নিয়েছেন। আমরা ইতিমধ্যে তাকে একাজ করার জন্য ২০০০ রুপি দিয়েছি। ব্যাকের কিছু ভলান্টিয়ার ব্যাঙ্কটিকে ঢাকা স্থানান্তরিত করে সেখানেই কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সচিব ডঃ এ কে রয়, বাংলাদেশ ভলান্টারি সার্ভিস করপস এর চেয়ারম্যান জনাব আমিরুল ইসলাম এমএনএ, মিঃ রাম রায় ও আমাএর কিছু প্রতিনিধির একটি মিটিঙে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে ব্যাঙ্কটি একসময় ঢাকাতেই স্থানান্তরিত হবে এবং এর দায়িত্বে থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বাংলাদেশ ভলান্টারি সার্ভিস করপস।
ক্যাম্প স্কুলঃ
গত রিপোরটে উল্লেখিত ক্যাম্প স্কুলগুলো এমাসে ভালভাবেই চলেছে। শুধুমাত্র গত ডিসেম্বরে যখন শরনারথীরা বাংলাদেশে ফিরে যেতে শুরু করেছেন, তখন কিছু ক্যাম্প স্কুলেরো বিলুপ্তি ঘটেছে। এই স্কুলের বাচ্চাদের বই কিনার জন্য ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটি একটি বেশ বড় আকারের অরথব্যায় করেছে। এই বই এর তালিকা আমাদের প্রতিনিধিগণ এবং ক্যাম্প স্কুলের পরিচালকদের একত্রে প্রস্তুত করেছেন। এক্ষেত্রে আমরা বলতে চাই, সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি এর কথা যারা আমাদের কাজের জন্য চিঠি দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি সার্ভিস, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিলের নির্বাহী সচিব, মিঃ ভি এন থিয়াগরজন আমাদের কিছু ক্যাম্পস্কুল পরিদর্শন করে এর প্রক্রিয়া নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বাংলাদেশের মানুষের শিক্ষা বিষয়ক কার্যক্রম এর জন্য একটি বড় অংকের আর্থিক সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক যোগাযোগঃ
আমাদের নয় মাসের প্রচেষ্টা মধ্যপ্রাচ্যে অবশেষে কিছুটা হলেও সচেতনতা তৈরি করেছে। কুয়েত ও আফগানিস্তান থেকে বাংলাদেশ বিষয়ে তথ্য চেয়ে চিঠি এসেছে। যদি আমরা বাংলাদেশের বাস্তবতা ও তাদের স্বাধীনতা আন্দোলন বিষয়ে তাদের ভালভাবে জানাই, তবে হয়ত ভবিষ্যতে আমরা এ বিষয়ে ভালো সাড়া পাবো। আমাদের সিলনিজ বন্ধু, সান নিমাল পেরেরা, যখন সিলন গমন করেছিলেন, তখন তিনি ইয়াহিয়ার সিলন প্রতিনিধির কাছে চট্টগ্রাম পারবত্য জেলার শ্রী ত্রিদিব রয়ের দারুন ভুমিকার কথা জানিয়েছেন। এসএম পেরেরা, বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাংলাদেশের উন্নতি কামনায় আমাদের মাধ্যমে চৌদ্দশ শতকের বুদ্ধিস্ট প্রার্থনা সংগীত পাঠিয়েছেন। আমরা ইতিমধ্যে তা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছি।
নিউজিল্যান্ডের ইউথ ইন্টারন্যাশনাল কমিটির সেক্রেটারি ও ভাইস চেয়ারম্যান, মিসেস আল্ভিন এফ আরনোল্ড এবং মিঃ ত্রেভন জে ওয়াল্টন ও নভেম্বর এর ৩০ তারিখে আমাদের অফিস পরিদরশন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়, শিকাগো থেকে বাংলাদেশ আন্দোলন এর একজন মিত্র মিঃ এভেলিন চ্যাটকিন আমাদের কিছু ক্যাম্প স্কুলে গিয়েছেন। তিনি আমাদের প্রোজেক্টগুলো চালাতে আমাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা করবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা এছারাও বাংলাদেশ ভলান্টার সার্ভিস করপ্স এর এমএনএ ও চেয়ারম্যান মিঃ আমিরুল ইসলাম, ব্রিটিশ ওয়ার ওন ওয়ান্ট এর এম পি মিঃ জন স্টরহাউসের সাথে কোলকাতায় দেখা করেছি। আমরা বাংলাদেশকে সাহায্য করার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করেছি এবং তারা আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
পূর্ব রিপোর্টের অপ্রকাশিত তথ্যঃ
আমরা ভুল্বশত গত রিপোর্টে উল্লেখ করিনি যে বাংলাদেশ ও কলকাতা ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের একটি যৌথ দল সেপ্টেম্বর মাসে বোম্বে ও আশেপাশের এলাকায় পরিদরশনের জন্য গমন করেছিল, যাতে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন চট্টগ্রাম বিসব্বিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির প্রেসিডেন্ট ডঃ এ আর মল্লিক, প্রফেসর আলি আহসান, প্রফেসর সুবিমল মুখারজি ও ডঃ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আমরা ভুলে এটিও উল্লেখ করিনি যে দিল্লীতে শ্রী জয়প্রকাশ নারায়ন বাংলাদেশের উপর যে আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করেন তাতে ডঃ বুদ্ধদেব ভট্টাচারয কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন। ভ্রমনের সকল খরচ সমিতি থেকে বহন করা হয়।
মুজিবনগর ভ্রমনঃ
বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দাওয়া উপলক্ষে আমরা জনাব এম হোসেন আলির মাধ্যমে বাংলাদেশী নেতাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছি। মুজিবনগরেও একিভাবে আমরা শুভেচ্ছা জানিয়েছি, বাংলাদেশ পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা অর্জনের পরে। একারনেই খুব সম্ভবত আমাদেরকে খুবি দ্রুত মুজিবনগরে বাংলাদেশের নেতাদের সাথে সাক্ষাত করার আহবান জানানো হয়। আমরা তরিঘরি ভাবে একটি দল গঠন করি, যাতে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন স্যার এন বোস, ডেপুটি রেজিস্টার স্যার জি সি ব্যানারজি, ডেপুটি কন্ট্রোলার অফ এক্সামিনেশন্স, এস এম এম বোস, প্রফেসর পি সেন শর্মা, শ্রী মানস হালদার, শ্রী এস মুখারজী, এবং সংশ্লিষ্টরা, যারা অভিনন্দন জানাতে গমন করেন। বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ তাদেরকে অভ্যর্থনা জানান এবং আমাদের সকল সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সৈয়দ নজরুল ইসলাম তার অনুভুতি কলকাতা ইউনিভারসিটির ভাইস চ্যান্সেলর ও সমিতির অন্যান্য সদস্যদের কাছে ব্যাক্ত করার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন যে ইচ্ছে থাকা স্বতঃতেও কাজের চাপে তিনি ইউনিভারসিটি পরিদর্শন করতে যেতে পারেননি। তিনি এরপরে কলকাতা গেলে অবশ্যই পরিদর্শনে যাবেন বলে জানান। একি সাথে বলেন, তিনি নিজেও শিক্ষক হবার কারনে শিক্ষকদের সাথে তিনি বিশেষ আত্মিয়তাসুত্রে আবদ্ধ বলে মনে করেন।
আর্থিক ও অন্যান্য সাহায্যঃ
এসময়ের মধ্যে আমরা মহারাষ্ট্রের ইস্তারি সাত সং সভা থেকে, মিঃ আজিজুর রহমান, মিঃ এস আর পরশ রমন, মিঃ এস উল্লাহ, মিঃ স প্রকাশ খান্না, মি; মুনির আলি, মিঃ ঈশ্বর লাল পাটেল, মিঃ এন সি দে, মিঃ আলাউদ্দিন, মিল এম এ চৌধুরী, নরেশ চন্দ্র নন্দ ও লন্ডনের মোজাদ্দের আলি, বেলজিয়াম এর ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি ফ্যাকাল্টি মিসেস নীপা ব্যানারজী, ব্যাঙ্কক থেকে ডঃ নিহার সরকার, মিঃ রিক রজারস, ফ্রান্সের প্রফেসর এডগার লেডেরার এবং শ্রী জয়প্রকাশ নারায়ন এর সাহায্য পেয়েছি। বাংলাদেশের সরকারের একটি নতুন সামাজিক গনতন্ত্র পুনঃনিরমানের যে বিশাল দায়িত্ব, তাতে সাহায্য করতে আমাদের এখনও প্রচুর ও নিয়মিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাহায্যের প্রয়োজন।
বিদেশ ভ্রমনঃ
আমাদের একজন প্রতিনিধি, শ্রী পি এন রয়, মাত্রই ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে তার লম্বা সফর শেষ করে ফিরেছেন এবং আমরা তার রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি।
সমিতির বোম্বে ইউনিটঃ
কোলকাতা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি এর বোম্বে ইউনিট ফেব্রুয়ারি এর ১২ তারিখ থেকে বোম্বেতে তিনটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবেন। এই শোগুলোতে পারফর্ম করার জন্য, শান্তিনিকেতন আশ্রমিক সঙ্ঘ, কোলকাতা সেন্টারের শিল্পীরা বোম্বে যাচ্ছেন। মহারাষ্ট্রের অরগানাইজারদের বোম্বেতে কাজ করতে সমিতি সাহায্য করবে।
যৌথবাহিনীর কাছে পাকিস্তানী সশস্ত্র বাহিনীর আত্মসমরপনঃ
বাঙ্গালদেশ স্বাধীন হবার সাথে সাথে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা সম্পরকিত কিছু তথ্যও প্রকাশিত হয়েছে। এসব তথ্য আমাদের সমিতির উপর কিছু গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছে। একথা বলাই যায় যে, আমাদের সমিতি বাংলাদেশের মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে। যার কারনে স্বাধীন অঞ্চলসমূহের অসহায় মানুশগুলোকে বাড়তি সাহায্য করার আবেদন ইতিমধ্যেই আসতে শুরু করেছে। এ কারনে আমাদের সমিতির ডঃ ডি লাহিরি, শ্রী ম্রিন্ময়ী বোস, প্রফেসর এ চৌধুরী, শ্রী জে চট্টোপাধ্যায়, শ্রী মানস হালদার, এবং শ্রী অনিত বোস এবং বাংলাদেশের শিক্ষক সমিতির ডঃ এ কে রয়, জনাব আনোয়ারুজ্জামান, শ্রী নিত্যগোপাল সাহা, ডঃ আনিসুজ্জামান এবং আরো অনেকজনের একটি দল যশোর, কুষ্টিয়া এবং খুলনার বিভিন্ন জেলা ভ্রমন করছেন। এসব অঞ্চলে আমরা ঔষধ, কম্বল, শিশুখাদ্য এবং কিছু ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্যও প্রদান করছি। কুষ্টিয়ায় জরুরি ভিত্তিতে নির্মাণকৃত সারকিট হাউসে আমরা প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহ করেছি। আমাদের তরফ থেকে মিঃ এন বি মুখারজি এর সকল খরচ বহন করেছেন। আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় গঠনকৃত শহিদ ফান্ডেও আর্থিক সাহায্য প্রদান করেছি। জনাব শফিউদ্দিন (বাবু) সরোয়ার এর কাছে থেকে আমরা স্বাধীনতার ঠিক পূর্বে হত্যাক্রিত বুদ্ধিজীবীদের একটি প্রাথমিক লিস্ট সংগ্রহ করেছি, যা আমরা আমাদের প্রেসেও সরবরাহ করেছি। আমাদের একজন প্রতিনিধি, প্রফেসর ভি কে শাস্ত্রিকে আমরা ঢাকায় পাঠিয়েছি এবং তার অভিজ্ঞতার একটি রিপোর্ট তিনি আমাদের জমা দিয়েছেন।
বাংলাদেশ বিষয়ে সেমিনারঃ
জরুরি কারনে ডিসেম্বরের ২১ তারিখে বাংলাদেশ বিষয়ে কোলকাতায় যে জাতীয় সেমিনার হবার কথা ছিল, তা পিছিয়ে গিয়েছে। আমরা প্রস্তাব করেছি যেন সেমিনারটি ১৯৭২ এর এপ্রিলের ১৪ তারিখ অনুষ্ঠিত হয়। আমরা আশা করছি যে ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্ট কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রফেসর ডি এস কোঠারি এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন এবং ভারতীয় স্কলারদের সাথে বাংলাদেশী কিছু স্বনামধন্য শিক্ষক ও বুদ্ধিজিবীরাও এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, ডঃ এ আর মল্লিক, ইতিমধ্যেই আমাদের আমন্ত্রনে সাড়া দিয়েছেন।
বাংলাদেশ পুনর্গঠন লক্ষে সহায়তা কার্যক্রমসমুহঃ পশ্চিমবঙ্গের গভর্নর, শ্রী এ এল ডায়াস এর পরামর্শ অনুযায়ী, আমরা বেশ কিছু কার্যক্রম এর পরিকল্পনা করেছি, যার ফলে বাংলাদেশের পুনর্নির্মাণে আমরা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারব। আমরা প্রচন্ডভাবে অনুভব করি যে, অন্তত একটি একাডেমিক সেশন পর্যন্ত বাংলাদেশে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পুননির্মাণে সম্পূর্ণ সহায়তা প্রদান করা দরকার। একি সাথে আমরা নিম্নে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানের সাথে বাংলাদেশে পরিবার কল্যানের লক্ষে কাজ করবোঃ
(১) জনাব আমিরুল ইসলাম, এম এ্ন এ, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ভলান্টিয়ার সার্ভিস, করপ্সঃ বাংলাদেশের সশস্ত্র তরুণদের সমস্যা, ত্রাণ এবং পুনর্বাসন প্রসঙ্গে।
(২) বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা অধিদপ্তর
(ক) সমবায় কৃষি বিষয়ে
(খ) শিক্ষা বিষয়ে
এসডি/…………………………
সচিব।