শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
১৬২। ‘সেন্ট্রাল এ্যাকশন কমিটি অফ বাংলাদেশ’- এর বিবৃতি এবং খসড়া প্রস্তাব | পুস্তিকা | ২৮ জুলাই, ১৯৭১ |
সেন্ট্রাল এ্যাকশন কমিটি অব বাংলাদেশ
চেয়ারম্যান .. .. .. জয়প্রকাশ নারায়ণ
ট্রেজারার .. .. .. মিসেস সাবিত্রি নিগাম
কনভেনার .. .. .. এস.কে. দে
জয়েন্ট কনভেনার .. .. .. এস.ডি. শর্মা
সহযোগী প্রতিষ্ঠান
১। সর্ব সেবা সংঘ, গোপুরি, ওয়ার্ধা
২। দিল্লি সর্বদয়া মন্ডল, রাজঘাট, নিউ দিল্লী
৩। গান্ধী স্মারক নিধি, রাজঘাট, নিউ দিল্লী
৪। ন্যাশনাল কমিটি ফর গান্ধী মিউজিয়াম, নিউ দিল্লী
৫। গান্ধী পিস ফাউন্ডেশন, দ্বীন দয়াল উপাধ্যায় মার্গ, নিউ দিল্লী
৬। সার্ভেন্টস অফ দ্য পিপলস সোসাইটি, লাজপট ভবন, নিউ দিল্লী
৭। লোকতন্ত্র রক্ষা পরিষদ, লাজপট ভবন, নিউ দিল্লী
৮। অল ইন্ডিয়া প্রহিবিশন কাউন্সিল, ২৮ থিয়েটার কমিউনিকেশন বিল্ডিং, কনাট প্লেস, নিউ দিল্লী
৯। এ্যাসোসিয়েশন অব ভলান্টারি এজেন্সিজ ফর র্যুরাল ডেভেলপমেন্ট (এভিএআরডি), এ-২৩, কৈলাশ কলোনি, নিউ দিল্লী
১০। অল ইন্ডিয়া পঞ্চায়েত পরিষদ, ১-৩৩, কৈলাশ কলোনি, নিউ দিল্লী।
কাপুর প্রিন্টিং প্রেস, দিল্লী হতে মুদ্রিত এবং সেন্ট্রাল এ্যাকশন কমিটি অফ বাংলাদেশ, নিউ দিল্লীর জন্য এস.ডি. কর্তৃক প্রকাশিত
সেন্ট্রাল এ্যাকশন কমিটি অব বাংলাদেশ
স্টেটম্যান
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ হচ্ছে বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) জনতার ইতিহাসের অন্ধকারাচ্ছন্ন দিন। এই দিনে, একচেটিয়া ব্যবসায়িক স্বার্থ দ্বারা যারা পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পূর্ববঙ্গকে উপনিবেশ হিসেবে শোষন করছিল, সেই পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক জান্তা বাহিনী নিরস্ত্র মানুষের উপর গণহত্যার ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বাংলাদেশের মানুষের অপরাধ, ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে জনগণ শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের পক্ষে জাতীয় গণপরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং রাজ্যের বিধানসভায় একচেটিয়া প্রাধান্য লাভে তাদের রায় দিয়ে আশ্বস্ত করেছিল। আওয়ামী লীগের বিজয় ছয় দফা কর্মসূচির উপর ভিত্তিতে হয়েছিলো যা বাংলাদেশের জনগণের জন্য কার্যকর স্বায়ত্তশাসনের দাবী করেছিল।
২। জবরদখল ও হস্তক্ষেপের এই সময়টাতে অগণিত নারী, পুরুষ ও শিশু প্রাণ হারিয়েছে এবং পাকিস্তানী বাহিনীর নৃশংসতা কুখ্যাত চেঙ্গিস খানকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। বস্তুত জাতিসংঘ সনদ, মানবাধিকার ঘোষণাপত্র ও বেসামরিক ব্যক্তিদের সুরক্ষা সংক্রান্ত জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘনের চাইতে বৃহত্তর কিছু হতে পারে না। নির্যাতিতরা যারা ভারতে আশ্রয় খুঁজে নিয়েছে তাদের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ৭০ লক্ষ। জীবনের জন্য পলায়নরত বাঙালীদের ক্রমাগত আগমন এখনো হ্রাস পায়নি, এই অনাখাঙ্খিত বোঝা দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিকতার উপর প্রভাব বিস্তার করছে।
৩। শেখ মুজিবুর রহমানের দল এই বলপ্রয়োগের ঘটনার উপর প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন এবং একটি অস্থায়ী সরকার গঠন করেছেন, যদিও ওয়ার্ল্ড প্রেসের মাধ্যমে বাংলাদেশে যা ঘটছে তা ব্যাপকভাবে সারা জাগিয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশের সরকারও এই নজিরবিহীন অপরাধের নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এর চাইতেও খারাপ, যা হচ্ছে, কিছু কিছু দেশ হতে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক জান্তার সাহায্য হিসেবে অস্ত্রের যোগান অব্যাহত আছে যা ভারতীয় উপমহাদেশের নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতির সাম্প্রতিক বিবৃতি সামরিক জান্তা হতে রাজনৈতিক সমাধানের আশাকে আরো ধূলিসাৎ করে দিয়েছে।
৪। আমাদের সংসদে ক্ষমতাসীন দল, বিরোধী দল এবং দেশের সাধারণ মানুষ সচেতন যে বাংলাদেশের জনগণের এই জরুরী অবস্থায় যদি সাহায্য করতে না পারি তবে তা ভারতের গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। এমনতরো গুরুতর সঙ্কটে জনগণের সাংবিধানিক ইচ্ছা প্রকাশের ভিত্তিতে সর্বজনস্বীকৃতভাবে সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে যে সমাধান হিসেবে আমাদের সরকারের উচিত বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারকে স্বীকার করে নেওয়া। শুধুমাত্র তখনই বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি সম্ভাব্য সকল নৈতিক ও বৈষয়িক সাহায্য বাড়ানো যাবে। ভারত প্রথমেই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিলে অন্যান্য বিদেশী সরকার এই ব্যাপারে নেতৃত্ব দিবে না। এই উদ্দেশ্যে দ্রুতই যদি অনুকূল অবস্থার সৃষ্টি না হয় তবে লাখ লাখ শরণার্থীদের বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার কোন আশাই থাকছে না এবং যতদিন পাকিস্তানের সামরিক জান্তার পদতলের অধীনে বাংলাদেশের লোকেদের আর্তনাদ চলতে থাকবে ততদিনেও এটা সম্ভব হবে না।
৫। সম্ভবত আমাদের সবচেয়ে বড় বাঁধা হল এই ব্যাপারে সরকারে জনসমর্থনপুস্ট আমাদের কোন পথপ্রদর্শক নাই
যিনি পুরো ব্যাপারটি বুঝে নিয়ে স্বীকৃতির ব্যাপারে যুক্তিসম্মতভাবে এগিয়ে যাবেন। এই বিষয় নিয়ে অনেকেই আলোচনা করেছে এবং সম্প্রতি একটি সংগঠন এই বিষয়ের উপর উদ্বিগ্ন প্রকাশ করেছে। এইটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে শ্রী জয়প্রকাশের সভাপতিত্বের অধীনে বাংলাদেশ নিয়ে সম্পূর্ণই নির্দলীয় ও বেসামরিক কার্যকরী একটি কমিটি গঠন করা হবে যিনি মাত্রই বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের চলমান বিষয়গুলোকে ব্যাখ্যা করার দীর্ঘ যাত্রা শেষে ফিরে এসেছেন। এই কমিটি সর্ব সেবা সংঘ, সার্ভেন্টস অব দ্য পিপলস সোসাইটি, লোকতন্ত্র পরিষদ, অল ইন্ডিয়া পঞ্চায়েত পরিষদ, এসোসিয়েশন অব ভলান্টারি ফর রুর্যাল ডেভেলপমেন্ট, দিল্লী সর্বোদয়া মন্ডল, গান্ধী স্মারক নিধি, গান্ধী পিস ফাউন্ডেশন এবং এই কর্মসূচীতে অন্যান্য যারাই অংশগ্রহণ করতে চায় তাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবে। তারা দেশব্যাপী প্রচারণা শুরু করবে এবং সকল রাজ্যের যারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি আবদ্ধ সেই সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনগুলোকে সচল করবে। কার্যক্রমটি প্রাথমিকভাবে যা বিবেচনা করবে তা নিম্নরূপঃ
ক) কেন্দ্রীয় রাজধানীসহ গ্রামাঞ্চলে, শহরে, নগরে এবং রাজ্যের রাজধানী ও ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত এলাকায় বাংলাদেশ নিয়ে কার্যক্রমের বিষয়ের উপর বিশেষভাবে ডাকা সভায় নির্ণিত সংকল্পগুলো ( সংযুক্ত খসড়ায় লাইনগুলোর উপর ইঙ্গিত করা আছে) পাবলিক সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের দ্বারা এবং জনতার দ্বারা নির্ধারিত হবে। এইসব সভায় নির্ধারিত নির্ণিত সংকল্পগুলো প্রধানমন্ত্রী বরাবরে তুলে ধরা হবে।
খ) বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারকে স্বীকৃতি প্রদানে ভারত সরকারের উপর একটি বিশেষায়িত প্রচারণার সনির্বদ্ধ অনুরোধ।
গ) উপযুক্ত সময়ে বাছাইকৃত বিষয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন।
৬। আশা করা যায় যে, ভারত সরকার যখন বাংলাদেশের বিষয়ে দৃঢ় পদক্ষেপ নিবে তখন নৈতিক ও বৈষয়িক সমর্থন আদায়ে পুরো দেশজুড়ে রাজনৈতিকভাবে নির্দলীয় রেখাচিত্রের উপর প্রকাশ্যে বিতর্কের আয়োজন করা হবে। স্বাধীন সত্ত্বা হিসেবে বাংলাদেশের স্বীকৃতির প্রাক্কালে এর সম্ভাব্য পরিণাম সম্পর্কে ভারতের জনগণকে তা প্রস্তুত করবে। যদি সরকার এই পদক্ষেপ নিতে অনীহা প্রকাশ করে, তাহলে সরকারকে এই পদক্ষেপ তৈরী করতে দেশের মধ্যে যথেষ্ট রকমের চাপ সৃষ্টি করতে এই প্রচারণা তীব্রতর করা হবে। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার এই সংবেদশীল অঞ্চলে এমনতরো পরিস্থিতির গুরুত্বের প্রতি বৈশ্বিক মতামতকে সক্রিয় করতে সাহায্য করবে।
৭। ৪ঠা জুলাই রবিবারে গান্ধী পিস ফাউন্ডেশনে চেয়ারম্যান শ্রী জয়প্রকাশ নারায়ণ অল ইন্ডিয়া পরিষদের প্রেসিডেন্ট এস.কে. দে’র সাথে কনভেনার হিসেবে এবং সার্ভেন্টস অব দ্য পিপলস সোসাইটির লোকতন্ত্র রক্ষা পরিষদের সেক্রেটারি শ্রী এস.ডি. শর্মার সাথে জয়েন্ট কনভেনার হিসেবে অনুষ্ঠিত সভায় এই উদ্দেশ্যে যেখানে একটি কার্যকরী কমিটি গঠিত হয়। বাংলাদেশ নিয়ে এ্যাকশন কমিটির হেডকোয়ার্টার লাজপত ভবন, লাজপত নহর, ২৪ নিউ দিল্লীতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যেখানে অনুগ্রহ করে সকল চিঠিপত্র, টেলিগ্রাম এবং বাংলাদেশের ঘটনার জন্য চাঁদা পাঠানো যেতে পারে।
লাজপত ভবন,
লাজপত নগর, নিউ দিল্লী-২৪,
১২ই জুলাই, ১৯৭১।
নির্ণিত সংকল্প
এই সভায়………………………………………………………………………………………………………………………এতদ্বারা
অনুগ্রহ করে নথিবদ্ধ করুন, বাংলাদেশের জনতার জন্য তাদের কষ্ট ও নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণার কাছে আমাদের গভীর সমবেদনা ও সমর্থন রয়েছে;
সামরিক শাসকদের দ্বারা বাংলাদেশের নিরস্ত্র পুরুষ, নারী এবং শিশুদের উপর এই দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দনীয় অমানবিক নৃশংসতা ও গণহত্যা যার ফলস্বরূপ, লাখ লাখ বাঙালীর ভারতের দিকে যাত্রা যা এই দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিকতার উপর অনাকাঙ্খিত বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে,
দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক তাড়না এবং তাদের যথাযথভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক জান্তা দ্বারা অবদমন জাতিসংঘ সনদ এবং মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের চরম লঙ্ঘন;
ভারতের সরকারের কাছে আবেদন এই যে জনগণের রায় মোতাবেক গঠিত বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারকে স্বীকৃতি প্রদান এবং সম্ভাব্য সকল প্রকারের নৈতিক ও বৈষয়িক সাহায্য পর্যন্ত প্রসারিত করা যাতে শরণার্থীদের বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরী করতে পারে;
বর্তমান সংকটে দেশের জনগণের প্রতি আবেদন এই যে যেন জাতীয়ভাবে সচেতনতা এবং সংহতি বাড়িয়ে তোলা যায় এবং কোন প্ররোচনা স্বত্বেও আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্য চেতনায় সাম্প্রদায়িক শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখা; বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আবেদন যেন বাংলাদেশের মানুষের কাছে তাদের সহানুভূতি ও সহযোগীতা বাড়ানো হয় এবং সেইসব দেশের লোকদের ফেরত আনা হয় যারা এখনো পশ্চিম পাকিস্তানকে অস্ত্রের যোগান দিচ্ছে, যাতে তাদের সরকার আগুনের তেল ঢালার মতো পাকিস্তানী আগ্রাসনকে প্রতিরোধ করতে পারে; এবং
ভারত সরকারের কাছে সকল প্রকার সমর্থন এবং সহযোগীতার অঙ্গীকার পূরণের উদ্দেশ্য অনুসারে উপরোক্ত রূপরেখা বর্ণিত হয়েছে।
শ্রী জয়প্রকাশ নারায়ণের প্রেস স্টেটমেন্টের উদ্ধৃতাংশ
বর্তমান সঙ্কট এতোই গুরুত্বপূর্ণ যে হয় তা একীভূত, ঐক্যবদ্ধভাবে শক্তিশালী এবং গ্রাহ্যনীয় অথবা মনোবলহীন হিসেবে বিভ্রান্ত এবং মেরুদন্ডহীন দূর্বল যা বিশ্বের কাছেই আর কিছুতেই গুরুত্ব রাখেনা। অতএব, এই বিষয়গুলোকে যেন আর কেউই বিভ্রান্ত না করে।
আমি যা পরামর্শ দিচ্ছিলাম তা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয় বরং বাংলাদেশের জনতার সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক স্বীকৃত প্রদান। এটা সত্যি যে যখন সরকারের স্বীকৃতি ও প্রকাশ্যে মুক্তিবাহিনীকে সহায়তা করায় পাকিস্তান ভারতের সাথে যুদ্ধ করাকে প্ররোচিত না করাটা যখন প্রশ্নবিদ্ধ তখন আমি স্বীকার করছি শুরু থেকেই অবশ্যই এর ঝুঁকি আছে, কিন্তু তা গৃহীত হতেই হবে।
যদি তা ভারতকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে বলার মতো সমতুল্য হয়, তাহলে অবশ্যই আমি একজন যুদ্ধবাজ বটে। পার্থক্য বলতে আমি যতটুকু বুঝেছি, শুধুমাত্র জনতা এবং ভারত সরকারের মাঝে আমার চিন্তা করার ধরন যা হচ্ছে স্বীকৃত দেওয়া যেতে পারে এমন সঠিক মুহূর্তের জন্য পরবর্তীতে অপেক্ষা করা, আমরা বলতে চাইছি যে এখনই সঠিক সময়।
সর্বসম্মতভাবে লোকসভা কর্তৃক নির্ণিত সংকল্প গ্রহণ এই পদক্ষেপের শুরু হিসেবে চমৎকার ছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সম্প্রতি বিভেদ সৃষ্টিকারী, পক্ষালম্বী পদক্ষেপের লক্ষণ পর্যন্ত আবির্ভূত হয়েছে। এটা বোধগম্য যে কালক্রমে এমনকি বাংলাদেশের মতো নির্দলীয় বিষয়েও দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য গড়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে সরকারী দৃষ্টিভঙ্গি যখন ক্রমাগতই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে দ্বিধান্বিত।
এই মতবাদে প্রধান বাঁধাগুলো হচ্ছে, এক- ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের দ্বারা প্রতিনিধিত্বকারীরা যা নীতিগতভাবে স্বীকৃতির বিরুদ্ধাচারী নয় কিন্তু এর জন্যে প্রধানমন্ত্রীর সঠিক সময় বিবেচনার উপর ছেড়ে দেওয়া অভ্যাস জারি রাখতে চায়, যদিও কোন সেই বিষয় যা সঠিক সময় নির্ধারণ করবে তা পরিষ্কারভাবে জানাচ্ছে না। অন্য বাঁধাটি হচ্ছে প্রায় সকল বিরোধীদল সহ অনেক নির্দলীয় সংগঠন এবং আমার মতো স্বতন্ত্র ব্যক্তি যারা মনে করে স্বীকৃতি প্রদানের এখনই উপযুক্ত সময়।
২৮শে জুলাই, ১৯৭১।