You dont have javascript enabled! Please enable it!

কসবা স্টেশন ও পাকশি সেতু পাক হানাদার কবল মুক্ত

আগরতলা, ২২ শে এপ্রিল বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী আজ ভোরের দিকে আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপকণ্ঠে কসবা রেল স্টেশনটি পাকিস্তানী সৈন্যদের কবল থেকে মুক্ত করে নিয়েছেন। ময়মনসিংহ আর শ্রীহট্ট শহরটি অবশ্য গতকাল আবার পাকিস্তানী সৈন্যদের দখলে গেছে। সীমান্তের ওপার থেকে সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে এই তথ্য জানা গেছে বলে ইউএনআই জানিয়েছেন। কৃষ্ণনগর থেকে আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম খণ্ডের অধিনায়ক এম এ ওসমান চৌধুরীর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে যে, মুক্তিফৌজ প্রচণ্ড লড়াইয়ের পর পাকশী সেতু থেকে সৈন্যদের হটিয়ে দিয়েছেন। উত্তর পাকশী সেতু থেকে শুরু করে দক্ষিণে শিবতলা, বড়বাজার ও ঝিকরগাছা লাইন পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল অধিকার করে নিয়েছেন।

যশোরের পাকসৈন্যরা এখন কেবল ক্যান্টনমেন্ট এলাকাতেই আবদ্ধ আছে। সীমান্তের ওপার থেকে জানা গেছে যে, বাংলাদেশের মন্ত্রীসভা আজ বাংলাদেশের এক অজ্ঞাত স্থানে তাঁদের রাজধানীতে এক গোপন বৈঠকে মিলিত হয়ে কতকগুলি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ময়মনসিংহের পতন- ট্যাঙ্কযোগে পাক সৈন্যযোগেঃ ইউএনআই জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে মধুপুর ক্যান্টনমেন্টে সৈন্য আমদানীর পর ময়মনসিংহের পতন ঘটে। ময়মনসিংহের পতনের ফলে গত ২৭ দিনের যুদ্ধের অবশ্য কোন হেরফের হয়নি। খবরে প্রকাশ, কতকগুলি ট্যাঙ্ক ইউনিট ঐ সৈন্যদের নিয়ে আসে। ঢাকা থেকে রংপুর, পূর্ব দিনাজপুর ও কুড়িগ্রাম অঞ্চলে ও ট্যাংক ইউনিট পাঠানো হয়েছে।

শ্রীহট্টের সড়ক পথ মুক্তিফৌজ বিনষ্ট করে দিয়েছেন বলে ঐ পরিত্যক্ত শহরটির উপর দখল নেবার জন্য বিমান থেকে বহু সংখ্যক পাকসৈন্য নামানো হয়েছে।

কসবা, আখাউড়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুক্তিফৌজ রাত দুটোর কিছু আগে তিন ইঞ্চি মর্টার দিয়ে পাক সৈন্যদের উপর আচমকা আক্রমণ চালান এবং তাদের সঙ্গে ছয় ঘণ্টা লড়াই করেন। কসবায় যুদ্ধে মুক্তিফৌজ পাক বাহিনীর কয়েকজন অফিসার সহ অন্তত ৫০ জনকে গ্রেফতার করেন। পাক সৈন্যরাও মর্টার আর হালকা ফিল্ড গান থেকে গুলি চালায়।

-আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৩ এপ্রিল, ১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!