You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৪৯। বাংলাদেশ প্রশ্নে পাশ্চাত্যের প্রতি জয়প্রকাশ নারায়ণের আহবান টাইম অফ ইণ্ডিয়া ১৪ জুন, ১৯৭১

জয়প্রকাশের পাশ্চাত্য হস্তক্ষেপের আহবান

জাতিসংঘ, জুন ১৩ঃ বিশ্বনেতাদের এখনো সময় আছে, যদিও বেশি সময় নেই, বাংলাদেশের সমস্যা নিরসনে এবং শান্তি পূনরুদ্ধার করার, সারভোজায়া নেতা জনাব জয়প্রকাশ নারায়ণ, গতকাল জাতিসংঘের এক র্যালির উদ্দেশ্যে বক্তৃতায় বলেন।

যদি তারা হস্তক্ষেপ না করে, গোটা উপমহাদেশ সমস্যায় উত্তেজিত হয়ে উঠবে এবং সবার জন্য অজানা বিপাকে পড়বে, তিনি হুশিয়ারী দেন।

প্রায় ১০০০জন মানুষ নিউ ইয়র্ক সেন্ট্রাল পার্ক থেকে জাতিসংঘ পর্যন্ত বাংলাদেশ রক্ষা কমিটি সংগঠিত মিছিল প্রদর্শন করতে আসেন। আসার পথে তারা নিউ-ইয়র্কের পাকিস্তানি মিশনের সামনে প্রদর্শন করে।

(পূর্বে ৩০জন পশ্চিম পাকিস্তানি জাতিসংঘ থেকে ইন্ডিয়ান মিশন পর্যন্ত মিশিল করে এবং ইন্ডিয়ার হস্তক্ষেপের প্রতি নিন্দা প্রদর্শন করে।

প্রায় ২৫০জন মানুষ মিশিলে অংশ গ্রহণ করেন। যদিও, বৃষ্টি সংখ্যা কমিয়ে দেয়, কিন্তু কিছু মানুষ অন্যান্যদের মাধ্যমে শুনতে পিছনে থেকে যায়, জনাব জয়প্রকাশ নারায়ণ এবং জনাব ইকবাল আহমেদ, একজন পাকিস্তানি আমেরকায় অধ্যাপনা করছেন এবং বেরিগান ব্রাদার্স ষড়যন্ত্র মামলার একজন অভিযুক্ত।

জনাব নারায়ণ, বিশ্বভ্রমণে একজন নতুন বলেন যে, পাকিস্তানি প্রোপাগান্ডা বলেছিল যে পূর্ব-বঙ্গের সমস্যা ইন্ডিয়া-পাকিস্তান সমস্যা অথবা হিন্দু-মুসলিম সমস্যা।

কিন্তু বিদেশি সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানায়, বিশ্ব ধীরে হলেও প্রকৃত ইস্যুর ব্যাপারে সচেতন হয় এবং পাকিস্তানি প্রোপাগানিস্টদের বিশ্বকে বোকা বানানোর এবং তাদের অপরাধ বরদাস্ত করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

ইতিহাসের সমস্যা বিশ্লেষন করে এবং বর্তমান অবস্থা যা পাচ লক্ষ মানুষ হত্যা এবং ছয় লক্ষেরও অধিক মানুষকে ইন্ডিয়ায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করা হয়েছে, জনাব নারায়ন বলেন, “এই সকল ঘটনা পশ্চিমের কিছু সাংবাদিক ব্যতিত পশ্চিমা বিশ্বকে উদাসীন ফেলে রেখেছে এবং আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপের, প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত তুচ্ছে দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে বিশ্বের বি্বেক মৃত্যূ বরণ করেছে”

জনাব নারায়ণ কথায় “মুক্ত বিশ্ব” উল্লেখ করেন এবং প্রশ্ন করেন কেন “মুক্ত বিশ্ব” এবং এর নেতাবৃন্দ স্বাধীনতার হামলায় চুপ করে আছেন।

জনাব নারায়ণ যোগ করেন, “ইহা সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট পোডগোর্নির উপর বরতায়” বন্দি পৃথিবীর নেতাদের ডাকেন তার ডাককে জোড়ালো করার জন্য এবং গণহত্যা সমাপ্ত করার প্রকাশ্য আবেদন জানায়। কিন্তু না প্রেসি্ডেন্ট নিক্সন, না প্রধান মন্ত্রী, জনাব এডওয়ার্ড হিথ, প্রেসিডেন্ট পম্পিদো কোন কিছু প্রকাশ্যে বলেন নি।

জনাব নারায়ন বাংলাদেশের তরুন যোদ্ধাদের সম্মান প্রদর্শন করেন যারা পশ্চিম্ম পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আর্টিলারি এবং বিমানে বিরুদ্ধে সাহস দেখিয়েছেন।

“শরণার্থীসহ বিভিন্ন মানুষ, এবং বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্বদের সাথে কথা বলার পরে আমার অনুভূতি এবং দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে, যে গেরিলা যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে। আমার মনে কোন সন্দেহ নাই যে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই তাদের স্বাধীনতা জয় করবে।

পাকিস্তানকে সাহায্য

জনাব নারায়ন বলেন পাকিস্তানকে দেয়া কোন সাহায্য পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক অস্ত্রে ব্যয়িত হবে এবং যারা পাকিস্তানকে সাহায্য করছে তারা পূর্ব বঙ্গের গণহত্যার জন্য দায়ী হবে।

বিশ্ব নেতাদের কাজ করতে আবেদন জানান, যদিও এখনো সেখানে সময় আছে, জনাব নারায়ণ বলেন যে মুক্ত বিশ্বের নেতাদের অবশ্যই প্রকাশ্যে এই অপরাধগুলোকে নিন্দা জানাতে হবে। তাদের অবশ্যই ইসলামাবাদে সাহায্য প্রেরণ বন্ধ করতে হবে। তাদের উচিত ইয়াহিয়ার শাসনকে লড়াই বন্ধ করতে, সেনাবাহিনীদের ব্যারাকে ফিরিয়ে আনার, সকল শেখ মুজিবুর রহমান সহ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে চাপ দেয়া এবং তাদেরকে রাজনৈতিক সমঝোতা করতে বলা।

জনাব নারায়ণ বলেন যে বিশ্বের বিস্মিত হওয়ার উচিত হবে না যদি শেখ মুজিবর রহমান এবং এমনকি অন্যান্যরা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে হাত মিলানো প্রত্যাখ্যান করে যেহেতু তার হাত হতে বাঙ্গালীদের রক্ত ঝরতেছে।

কিন্তু এটা পশ্চিম পাকিস্তানের নেতাদের বাংলাদেশের নেতাদের সাথে শান্তিপূর্ন সমঝোতার মধ্যস্ততা করার জন্য ছিল, তিনি বলেন- পিটিআই।
 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!