শিরোনাম | সুত্র | তারিখ |
১৪৩। লন্ডনে জয়প্রকাশ নারায়ণঃ বাংলাদেশ প্রশ্নে বিশ্বকে সক্রিয় হাবার আহবান | দৈনিক “যুগান্তর” | ৭ জুন, ১৯৭১ |
জয় প্রকাশের হুঁশিয়ারী
বাংলাদেশের ঘটনায় বিশ্ব সক্রিয় না হলে ভারত কড়া ব্যবস্থা নেবে
লন্ডন, ৬ই জুন(পিটিআই)- সর্বোদয় নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণ বিশ্বের যে সমস্ত রাজনীতিবিদ এবং সরকারী প্রতিনিধিদের এই বলে সতর্ক করে দিয়েছেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, বিশ্ববাসী যদি দ্রুত উপলব্ধি না করেন, তাহলে ভারতবর্ষ পরিস্থিতির মোকাবিলায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনে বাধ্য হবে।
গতকাল শ্রী নারায়ণ এখানে বলেন, তিনি তাঁদের জানিয়ে দিয়েছেন, অবস্থা যদি ক্রমেই খারাপ হতে থাকে এবং বিশ্ববাসী সক্রিয়ভাবে হস্তক্ষেপে ব্যর্থ হয় তাহলে ভারতে তার স্বার্থেই ব্যবস্থা গ্রহনে বাধ্য হবে। ঠিক কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা না বললেও সেটি খুবই কঠোর হবে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন।
তিনি বলেন এ সম্পর্কে ইতিমধ্যে জনগন, রাজনৈতিক দল এবং পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রীর ওপর চাপ বাড়াতে শুরু করেছে।
পূর্ববঙ্গের পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্বকে অবহিত করানোর জন্য বিশ্ব সফরে বহির্গত শ্রী নারায়ণ শুক্রবার লন্ডনে এসে পৌছান। এখানকার কাজ শেষ করে আজ তিনি ওয়াশিংটনে রওনা হয়েছেন।
লন্ডনে চারদিন অবস্থানকালে তিনি শ্রমিক, উদারনৈতিক ও রক্ষণশীল দলের কিছু সংসদ সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করেন।
শ্রী নারায়ণ দুটি বাংলাদেশ সংগ্রাম সমিতির (একটি অবাঙ্গালীদের সমিতি) সভায় উপস্থিত হন, ছাত্র সভায় বক্তৃতা দেন এবং দুটি বৃটিশ টেলিভিশন সংস্থা বিবিসি ও আইটিভির প্রতিনিধিরা তার সাক্ষাৎকার গ্রহন করে।
ভারতীয় সংবাদ প্রতিনিধিকে তিনি জানান, শ্রমিক দলের মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাপারে সহানুভূতি রয়েছে- রক্ষণশীল দলের কিছু এমপিও সহানুভূতিশীল। তাছাড়া তিনি যে সমস্ত সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা প্রত্যেকেই এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন।
তাঁদের এ উপলব্ধি হয়েছে যে, পাকিস্তান অন্যায় করছে এবং নিজেদেরই ক্ষতি করছে।
লন্ডনে আলোচনায় তিনি লক্ষ্য করেছেন, কেউ কেউ মনে করেন আরো দুর্গতি ও সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে চলে মুক্তিসংগ্রাম স্তব্ধ হয়ে যাবে এবং বাংলাদেশের অবস্থা আবার স্বাভাবিক হবে।
পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দফতরের আন্ডার সেক্রেটারীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে শ্রী নারায়ণ তাঁকে বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদসহ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁর এই ধারনা হয়েছে যে, তাঁদের সার্বভৌমত্ব ছাড়া আর অন্য কিছু মেনে নেবার কোন সম্ভাবনা নেই।
এটা মেনে নিতে বৃটিশ সরকার কিভাবে পাকিস্তানকে বাধ্য করবে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সব রকম সাহায্য বন্ধ করলেই এটা হবে। কেননা এখন যে সমস্ত সাহায্য করা হবে তা যুদ্ধের কাজে ব্যবহৃত হবে এবং স্বভাবতই সাহায্যকারী দেশ বাংলাদেশের ঘটনাবলির জন্য দায়ী হবেন।