রাজশাহী শহরের প্রশাসনভার মুক্তিফৌজের হাতে
রাজশাহী, ১২ এপ্রিল-নাটোরের কাছে মুক্তিসেনার হাতে এক’শ পাকফৌজ আজ খতম হয়েছে। রাজশাহী শহরের ক্যান্টনমেন্ট এখনও পরিত্যক্ত। মুক্তিসেনারা আজ সেখানে গিয়ে পরিখাগুলি তন্ন তন্ন করে খোঁজে বের করে খতম করে।
মুক্তিফৌজ রাজশাহী শহরের অসাময়িক প্রশাসনের ভার নিয়েছে। দোকানপাট খোলার জন্য তারা আবেদন জানিয়েছে। কিছু কিছু দোকানপাট ইতিমধ্যে খুলেছে। হানাদাররা যাতে রাতে হানা না দিতে পারে তার জন্য শহরে কারফু জারী করা হয়েছে।
রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট থেকে উৎখাত হয়ে পাকফৌজ এখন রাজশাহী শহরের এক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে আটক রয়েছে। মুক্তিফৌজ পাকসেনাদের পরিত্যাক্ত ছাউনির বাংকারের ভিতর হোসপাইপ দিয়ে জল ঢেলে ঢেলে পরীক্ষা করে দেখছে শক্রু লুকিয়ে আছে কিনা। আজ সকালে রাজশাহী শহরের ওপর আবার পাকিস্তানী বিমান হানা দেয়। তারা বিমান থেকে মেশিনগানের গুলি ছুঁড়ে নাগরিক ও মুক্তিফৌজের ওপর আঘাত হানা চেষ্টা করে।
ওগিকে নগরবাড়ী দিয়ে একদল পাকফৌজ নাটোরের দিকে এগুতে থাকে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে মুক্তিফৌজ তাদের বাধা দেয়। সোনাবাহিনী নৌকায় করে নদী পার হবার চেষ্টা করে। চারপর থেকে কয়েক হাজার মুক্তিফৌজ ওদের ওপর আক্রমণ হানে। প্রবল আঘাতে শক্রুরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। অধিকাংশের কপালে জোটে সলিল সামধি। বাকি সেনারা গ্রামের পথ ধরে নাটোরের দিকে এগুতে থাকে। মুক্তিসেনারা পথে তাদের বাধা দেয়। এদিকে রাজশাহী জেলায় ঝড়-বৃষ্টি নেমে গিয়েছে। পাকফৌজ এর ফলে বিপন্ন।
-আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৩ এপ্রিল, ১৯৭১