You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৩৬। কোলকাতায় আর্চবিশপের বিবৃতিঃ শরণার্থীদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তণের ব্যবস্থা করতে হবে হিন্দুস্তান স্ট্যাণ্ডার্ড ২২ মে ১৯৭১

কোলকাতায় আর্চবিশপের বিবৃতিঃ
শরণার্থীদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তণের ব্যবস্থা
করতে হবে

পরম শ্রদ্ধেয় এল.টি. পিচাচী, কোলকাতার আর্চবিশপ, মনে করেন যে পশ্চিম বঙ্গ থেকে শরণার্থীদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন জনগণের আগমন বৃদ্ধি সমস্যার প্রকৃত উত্তর। বিবৃতিতে, তিনি বলেন যে বিশ্বের দেশগুলোর কর্তব্য মানবিক দিক দিয়ে কর্তৃপক্ষকে পূর্ব বঙ্গের স্বাধীনতা এবং প্রত্যেকের নিরপত্তার নিশচয়তা প্রদান করতে প্ররোচিত করা।

বিবৃতিতে বলা হয় যে যদিও ভুক্তভোগীদের জন্য অবিলম্বে ত্রাণ প্রয়োজন, এটাই মর্মান্তিক সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান নয়। ইউএন কর্মীদল দেখেছে যে শরণার্থীরা যত দ্রূত সম্ভব সেখানকার শান্তিপূর্ণ অবস্থা পূনঃপ্রতিষ্ঠা হওয়া মাত্রই তাদের আকাঙ্খিত আশ্রয়ে ফিরে যেতে ইচ্ছুক, কিন্তু প্রত্যাবর্তণ অসম্ভব যদি না পশ্চিম বঙ্গে দ্রূত স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ অবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।

আর্চবিশপ বলেন যে বিশ্বের দেশগুলো পশ্চিম বঙ্গের জনগণের ভয়ানক ভোগান্তিতে জড়িত হতে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং দায়িত্বে ভ্রূক্ষেপ না করেই নির্মমভাবে মন্তব্য করেছেঃ “এটা সম্পূর্নভাবে অভ্যন্তরীন ব্যাপার”। এই কঠোর মনোভাব আমাদের বিশ্বের অংশে বিস্ময় ও দুঃখের কারণ হয়েছে। যখন আমরা দেখি ত্রিশ লক্ষ আক্রান্ত ও গৃহহীন মানুষকে কঠোরভাবে জোড়পূর্বক তাদের দেশত্যাগ করে শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয়গ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়েছে তখন আমরা তাদের কল্যানে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের দাবী জানাই।

গণতান্ত্রিক অধিকারসমূহ গোটা বিশ্বব্যাপি সমর্থনীয় এবং সুরক্ষিত। যদিও সেখানে সত্তর লক্ষের উপরে মানুষ যারা নিজ দেশের সামরিক পদতলে পিষ্ঠ এবং এর একমাত্র কারন তারা সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচনে সন্দেহাতীত ভোটে জয় লাভ করা। “বিবৃতিতে উল্লেখিত।

আনুষ্ঠানিক ভাবেই ইহা নিশ্চিত যে তিনজন ক্যাথলিক ধর্মযাজক পশ্চিম বঙ্গে নিহত হয়েছেন।

বিশপের এলাকাভুক্ত শিলং, শীলচর, কোলকাতা, দার্জিলিং, দমকা, জলপাইগুড়ী, এবং কৃষ্ণনগর গীর্জাগুলো প্রতিবেশি দেশের রাজনৈতিক দন্দ্বের উচ্চস্বর সম্পর্কে অবহিত আছে। কিন্তু নিরপেক্ষতা হয়ত কখনই পরিত্রাণের দাবির কন্ঠরোধ করবে না। ধর্মীয় যাজক এবং বিশপের এলাকাভুক্ত সকল অপেশাদারী লোকজনেরা অটলভাবে সাহায্যের ঘোষনা দিয়েছেন।

প্রার্থনা সভা এবং অনুতাপসূচক সেবা আয়োজিত হয়েছিল। ৪ এপ্রিলে কোলকাতা আর্চডিওসেসে প্রার্থনার দিন ছিল। ১৮ এপ্রিলে সেইন্ট তেরেসা এবং ফাতেমার যাজকপল্লী। ঢাকার আর্চবিশপ টি.এ. গাংগু্লী ও অন্যান্য যাজকবৃন্দ, পাদ্রীবর্গ, সন্ন্যাসী এবং পূর্ব বঙ্গের বিশপের এলাকার সাধারণ নিরাপত্তা কামনার জন্য আমাদের ফাতেমা মঠের মহিলারা কোলকাতা আন্দোলনে গিয়েছেন। সভাটি ব্যক্তিগত নোটে আয়োজিত হয় যেহেতু পূর্ব ভারতের হাজারো ক্যাথলিকদের সাথে পূর্ব বঙ্গের এখনো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এখানে তাদের স্বল্প অথবা কারো কোন সংবাদই নেই, বিবৃতিতে উল্লেখিত।

ব্যাপ্টিস্ট মিশন ছাত্র হলে বাঙালী খ্রিষ্টান কাউন্সিল আয়োজিত সাম্প্রতিক সভায়, কোলকাতা বাংলাদেশের মানুষের জন্য তাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কাউন্সিলটি বিশ্ব চার্চ কাউন্সিলকে প্রতিটি দেশের মধ্যে কূটনীতিক প্রনালীর মাধ্যমে বাংলাদেশের গণহত্যা বন্ধ করার অবস্থা তৈরীর এবং বড় শক্তির মাধ্যমে অস্ত্র এবং গোলাবারুদ সরবারহ প্রতিরোধ করারও অনুরোধ জানায়। কাউন্সিলটি তাদের সদস্য গীর্জা এবং ইন্সটিটিটগুলোর নিকট মানবিক কারনে অকৃপণ সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসার আবেদন জানায়। সব ধরণের অর্থিক অথবা সদয় দান বাঙালী খ্রিষ্টান কাউন্সিলের কোষাধ্যক্ষের নিকট প্রেরণ করা যাবে।
 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!