আওয়ামী লীগর নেতারা এপারে
তাঁদের আবেদনঃ অস্ত্র চাই
আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা সোমবার ওপার থেকে এপার এসেছেন। সকলেরই একই লক্ষ্য ভারত থেকে অস্ত্র সাহায্য সংগ্রহ করা। এদের মধ্যে একজন আছেন নবনির্বাচিত পাক জাতীয় পরিষদের সদস্য। তিনি মালদহ জেলা সীমান্ত দিয়ে ঢুকেছেন।
এদিকে, মুক্ত কুষ্টিয়ায় এইদিন পূর্ণ কর্তৃত্ব হাতে নিয়েই আওয়ামী লীগের শাসকরা ট্রাঙ্ক টেলিফোনে ব্যবস্থা চালু করে দিয়েছেন। সোমবার দুপুরেই মুক্ত কুষ্টিয়ার প্রধান পরিচালক ডাঃ আসাবুল হক টেলিফোনে শ্রী অজয়কুমার মুখোপধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরও আবেদন ছিলঃ আপনারা অবিলম্বে সাহয্য পাঠান।
ডাঃ হক জানান, এখন কার্যত হাজার নিরস্ত্র মানুষ সৈন্যদের আক্রমন করছে। এত মানুষ এসে লড়াইয়ে যোগ দিচ্ছে যে, সেনাবাহিনী মেশিনগান চালিয়েও মেরে শেষ করতে পারছে না। তিনি জানান, কুষ্টিয়া, পাবনা, যশোর, খুলনায় একদিন হাজার হাজার মানষ বল্লম ও সড়কি নিয়ে এসে সেনাবাহিনীর ঘাঁটি আক্রমন করেছে। হাজার হাজার মেরেছেও। কিন্তু তাঁরা পিছিয়ে যাননি। তিনি জানান, সোমবার রাত্রিতেই বৃহত্তম আঘাত হানা হবে ঘাঁটিগুলির উপর।
কুষ্টিয়া মিলিটারী ব্যারাককে চর্তুদিক দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। সৈন্যদের বলা হয়েছে আত্নসমর্পন করতে। ডাঃ হক জানান, পাবনায় ও সেনাবাহিনীকে আত্নসমর্পণ করতে বলা হয়েছি। কিন্তু তারা করেনি। ফলে তাদের সবাইকে মরতে হয়েছে। জনতা আহত পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাদের ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে বিজয়োল্লাস করেছে।
ডাঃ হক বলেনঃ কত হাজার হাজার মানুষের যে ইতিমধ্যে মারা গিয়েছে তার কোন গুণতি নেই। কিন্তু তবু মানুষ মরতে ভীত নয়।
তিনি যশোর থেকে খবর পেয়েছেন যে, সেনাবাহিনী কোণঠাসা হয়েছে। খুলনায় সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত।
স্টাফ রিপোর্টার জানান, বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের বহু কর্মী এবং মুক্তিসেনা সীমান্ত পার হয়ে পশ্চিম বঙ্গে এসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে সাহায্য চাইছেন।
-আনন্দবাজার পত্রিকা, ৩০ মার্চ,১৯৭১