ওরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন-আরও গুলিগোলা চাই
(রাজনৈতিক সংবাদদাতা)
দুদিনের লড়াইয়ে গোটা পূর্ব পাকিস্তানে প্রায় এক লক্ষ লোক মারা গিয়েছেন বলে বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে ভারত সরকারের দফতরগুলিতে খবর পৌছেছে। বিভিন্ন সীমান্ত ঘাঁটি থেকে যেসব খবর আসছে তার সারমর্মঃ মুজিবর রহমানের সমর্থক পুলিশ ও ইপিআর বাহিনীর লোকজনদের লোকজনের গুলি ফুরিয়ে এলেও তাঁরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। সেনাবাহিনী নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে।
লড়াই এখনও সবচেয়ে বেশি চলছে ঢাকা ও রংপুরে। এই দুই এলাকায় হাজার হাজার সাধারণ মানুষও সেনাদের বিরুদ্ধে গেরিলা কায়দায় লড়াই চালাচ্ছেন। পাক সেনাবাহিনী এই দুই এলাকায় ট্যাঙ্ক নিয়ে নেমেছে। তারাও ট্যাঙ্ক থেকে অবিরাম গুলি চালাচ্ছে।
পূর্ব পাকিস্তানের দুটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ওপরের কয়েকটি ব্রিজও আওয়ামী লীগের সমর্থকরা উড়িয়ে দিয়েছেন। এই দুটি সড়কই ঢাকার সঙ্গে চট্রগ্রাম এবং যশোরের যোগাযোগ রক্ষা করত। এই দুটি সড়ক দিয়ে এই সেনাবাহিনীর গাড়ি এগোতে পারেনি। এছাড়া মুজিবর রহমানের সমর্থকরা বিভিন্ন রাস্তায় সৈন্যদের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করার জন্য নানারকমের প্রতিোধ সৃষ্টি করেছেন। বহু এলাকায় রাস্তা খুড়ে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় ওপারের লোকেরা এসে এপারে গুলি চেয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন যে তাঁদের গুলি ফুরিয়ে যাচ্ছে। গুলিগোলা না পেলে আর লড়াই চালাতে পারছেন না। কিন্তু তাদের সবাইকেই এপার থেকে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। কুষ্টিয়া অঞ্চল থেকে একজন এসডিও-ও গুলি চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন।
-আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৮শে মার্চ, ১৯৭১