শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
১২২। পাকসেনাদের নৃশংসতার বিরুদ্ধে কলকাতার মুসলমান সমাজের প্রভাব | স্টেটসম্যান | ১ মে ১৯৭১ |
পাকসেনাদের নৃশংসতার বিরুদ্ধে কলকাতার মুসলমান সমাজের প্রভাব
(স্টাফ রীপোর্টার)
পশ্চিম পাকিস্তানী আর্মি দ্বারা বাংলাদেশের জনগণের উপর অমানবিক অত্যাচারের প্রতি নিন্দা ও বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকার করতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানানোর জন্য শুক্রবার কলকাতায় মুসলিম নাগরিকদের এক সভায় একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। এতে আরো বলা হয়, ভারত সরকার যেন জাতিসংঘে বাংলাদেশে সংঘটিত এই গণহত্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। গোলাম মহিউদ্দিন (এম.এল.এ) এর সভাপতিত্বে এই সভায় আরো বক্তব্য রাখেন এ.কে.এম ইসহাক (এমপি) এবং জনাব আমজাদ আলী।
বাঙালি মুসলমানদের নিয়ে হুগলির আঞ্জুমানে মহা সিনিয়া একটি মিছিল সার্কাস অ্যাভিনিউ এ বাংলাদেশ মিশনে যায়, যেখানে তারা জনাব হোসেন আলীর সাথে দেখা করে তাদের সমর্থন জানায়। অভিযাত্রী ক্লাব, যারা মিশনের কাছাকাছি একটি ক্যাম্প চালায়, প্রতিনিধিদলকে উষ্ণ অভ্যর্থনা দিয়ে স্বাগত জানায়।
ক্লাবের সভাপতি মিহির সেন সকল বাঙালি মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানান যেন সবাই বাংলাদেশকে তাদের সমর্থন জানান। তিনি ধনিক মুসলমানদের প্রতি আবেদন জানান, তারা যেন তাদের সামর্থ্য মত পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত উদ্বাস্তুদের জন্য কিছু নতুন ক্যাম্প খুলেন এবং দেখা-শুনা করেন।
অন্যদিকে ভারতীয় মজদুর সংঘ আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানায় তারা যেন বাংলাদেশের জনগণের উপর পাকিস্তানি “উপনিবেশবাদীদের’ দ্বারা নৃশংস হামলার নিন্দা জানায়। এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ জাতীয় সমন্বয় কমিটি থেকে বলা হয় যে, স্বল্প মেয়াদি প্রাথমিক চিকিৎসা প্রশিক্ষণ কোর্স কলকাতার এলগিন রোডের নেতাজি ভবনে সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত চলবে।
ইউ.এন.আই এবং পি.টি.আই থেকে আরো বলা হয়, সিপিআই নেতা এন কে কৃষ্ণান এবং রমেশ চন্দ্র সামনের মাসেই মস্কো যাবেন বাংলাদেশের পক্ষে সেখানে জনমত সৃষ্টির জন্য। শুক্রবার নয়া দিল্লীতে দলে সাধারন সম্পাদক রাজেশ্বর রাও এইসব কথা বলেন।
এইদিকে জাতীয় কাউন্সিলের সভায় বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য ভারত সরকারের কাছে আবেদন করা হয় এবং আরো বলা হয়, ইয়াহিয়ার সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতাকামীদের প্রতি তাদের ‘পূর্ণ সমর্থন’ আছে।
পশ্চিমবঙ্গ জনসংঘের সভাপতি হারিপদ ভারতী দাবি করেন, ভারত শুধু বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসাবে স্বীকৃতি দিলেই হবে না, পাকিস্তান থেকে প্রতিদিন যে বৃহৎ আকারে উদ্বাস্তু বর্ডার অতিক্রম করে আসছে তাদের থাকার জন্য পূর্ব বর্ডারে কিছু জায়গা চাইবে।
এই ‘কঠিন’ সময়ে রাজ্যের সকল বিভাগের সকল শ্রেণির মানুষকে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আসাম আইন পরিষদে সর্বসম্মতভাবে একটি আইন পাশ হয়।