শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
১১২। বাংলাদেশের সমর্থনে দিল্লিতে সর্বভারতীয় সাহায্য সংস্থা গঠিত | অমৃতবাজার পত্রিকা | ১৪ এপ্রিল, ১৯৭১ |
বাংলাদেশের জন্য জাতীয় সাহায্য সংস্থা
(আমাদের বিশেষ প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রাপ্ত)
নয়াদিল্লি, এপ্রিল ১৩ – বাংলাদেশকে সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান ও একই লক্ষ্যে গঠিত অন্যান্য সংস্থার সাথে সমন্বয় বজায় রাখতে এবং স্বাধীন বাংলাদেশের সরকারকে স্বীকৃতি প্রদানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা তৈরির লক্ষ্যে সর্বস্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্বমূলক একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ প্রফেসর সমর গুহ, এম পি, এর ঘোষণা দেন।
তাঁর কমিটি দ্রুতই কোলকাতায় বাংলাদেশের স্বপক্ষে এক জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করবে। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সম্ভব সবরকম সহযোগিতা প্রদানেরও চেষ্টা চালিয়ে যাবে। কমিটিতে আছেনঃ অনারারি সভাপতি – জনাব এম সি চাগলা; দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি – জনাব কারপুরি ঠাকুর, মুখ্যমন্ত্রী, বিহার; সচিব – প্রফেসর সমর গুহ। বাকিদের মাঝে আছেন বিনা ভৌমিক, পান্নালাল দাশ গুপ্ত, জাহাঙ্গীর কবির, কৃষ্ণ কুমার শুক্লা, সুশীল ধারা, প্রফেসর দিলীপ চক্রবর্তী এবং সরদার আমজাদ আলী।
পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর যেমন পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং নাগাল্যান্ড এই সবকটির মুখ্যমন্ত্রীকে কমিটির সদস্য/পরামর্শক হবার জন্যে আহ্বান জানানো হয়েছে।
আজ এখানে এক সংবাদ সম্মেলনে বিবৃতি দানের সময় প্রফেসর সমর গুহ, এম পি, বাংলাদেশের জন্য জাতীয় সমন্বয় সংস্থার আহ্বায়ক-সচিব বলেন যে “ভারত ও রাশিয়ার সরকারের উচিৎ কোন কালবিলম্ব না করেই বাংলাদেশের সরকারকে স্বীকৃতি প্রদান করা এবং অন্যান্য বিশ্বশক্তির দ্রুত স্বীকৃতি অর্জনের লক্ষ্যে এই সরকারের পক্ষে জোরদার কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়া। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে দমনে রাওয়ালপিন্ডির সামরিক সাম্রাজ্যবাদীদের সমর্থন প্রদান এবং ভারতীয় সাহায্যকে শ্লথ করার লক্ষ্যে ভারতীয় সীমান্তে ১০ ডিভিশন সেনা নিয়োজিত করার মাধ্যমে চীন তাদের কদর্য রূপের প্রকাশ ঘটিয়েছে। বর্ষা আরম্ভ হবার আগেই বাংলাদেশের বেসামরিক জনগণকে ধ্বংস করে দেবার লক্ষ্যে ভারতে আসবার পথগুলোতে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তাদের দ্বিতীয় পর্যায়ের বর্বর আক্রমণ শুরু করেছে। ”
তিনি আরো উল্লেখ করেন যে জাতিসংঘ এক মৃতপ্রায় সংস্থায় পরিণত হয়েছে বিশ্বের সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলো তাদের বিবেক হারিয়ে ফেলেছে।
রাজস্থান ১০ লাখ রুপি সাহায্য করবে
জয়পুর, এপ্রিল ১৩ – রাজস্থানের মন্ত্রীসভা আজ বাংলাদেশ রিলিফ ফান্ডে ১০ লাখ রুপি সাহায্য প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আজ রাজস্থান আইন পরিষদের অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী জনাব মোহনলাল শুখাদিয়া এই ঘোষণা দেন। পরিষদের উভয় পক্ষই এই সিদ্ধান্তকে উল্লাসধ্বনির মাধ্যমে স্বাগত জানান।
জনাব শুখাদিয়া আরো যোগ করেন যে রাজ্য সরকার একটি সুসজ্জিত মোবাইল সার্জিক্যাল ইউনিটও পাঠাবে যার সম্পূর্ণ খরচও রাজ্য সরকারই বহন করবে।
জনাব শুখাদিয়া আরো বলেন যে সংঘর্ষ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরিষদের মন্ত্রী ও সদস্যেরা প্রতিমাসে তাদের একদিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক জনগণের সাহায্যে দান করবেন, এমন একটি প্রস্তাবনাও বিবেচনাধীন আছে (পিটিআই)।