শিরোনাম | সুত্র | তারিখ |
১০৩। সারা বিশ্বের প্রতি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর আহবান জানিয়ে গৃহীত শাসক কংগ্রেস নির্বাহী পরিষদের প্রস্তাব। | ‘শিকাগো সান টাইমস’ | ৩১ মার্চ, ১৯৭১ |
ভারতীয় পক্ষ পুর্ব পাকিস্তানের জন্য মৌখিক স্বান্তনা চায়
নয়াদিল্লী(অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস): প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কংগ্রেস রবিবার ভারতের জনগনের কাছে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনে সর্বাত্তক সমর্থন দেয়ার অনুরোধ জানান।
কিন্তু ভারতের ৭০০ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা পূর্ব পাকিস্তানিদের যেকোন প্রকার সরাসরি সহায়তা থেকে বিরত থাকবে।
“কিছু প্রতিনিধিদের কাছ থেকে পূর্ব পাকিস্তানিদের অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ অস্বীকার করে মিসেস গান্ধী বলেন, আমরা যেটা করছি সেটা হল বিশ্ব দরবারে এবং জাতিসংঘে আমাদের সীমান্তে ঘটে যাওয়া নিষ্ঠুর গণহত্যার বিপক্ষে আওয়াজ তোলা”
প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান সরকারের সমালোচনা করে বলেন যে, ‘পূর্ব পাকিস্তানে ঘটে যাওয়া ব্যাপার নিয়ে ভারতের মন্তব্য করার অধিকার নেই’, এবং একথা বলে তিনি ঐ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেন।
মিসেস গান্ধী বলেন, “ভারতের অন্য দেশের আভ্যন্তরিক ব্যাপারে নাক গলানোর কোন ইচ্ছে নেই”। “কিন্তু সীমান্তের ওপারে নির্যাতন ও অবাধ গণহত্যার ব্যাপারে চুপ থাকতে পারেনা”।
শান্তিপুর্ন সমঝোতার উদ্যোগ
“সেখানে যা হচ্ছে তা কাউকে রাগান্বিত করতেই পারে, কিন্তু তাকে অবশ্যই এই ব্যাপারগুলো ঠান্ডা মাথায় বিবেচনা করা উচিৎ। আমাদের এমন কিছু বলা হতে সতর্ক থাকা উচিৎ যেটি শুধু পূর্ব পাকিস্তানকে আহত করবে”।
কৃষ্ণনগরের এক সীমান্তবর্তী শহর থেকে ভারতের ইউনাইটেড নিউজ এক বার্তায় বলে যে রোববার ভোরের একটু আগে, পূর্ব পাকিস্তানে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর বোমাবর্ষনের সময় পাকিস্তানী জঙ্গিবিমান ভারতের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। এ ব্যাপারে ভারতের বিমানবাহিনী থেকে কোন নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি”।
রেডিও পাকিস্তানের খবরে যানা যায় যে, ভারত নয়াদিল্লী থেকে ভারত-পূর্বপাকিস্তান সীমান্তে পূর্বের সীমান্তরক্ষী বাহিনিকে শক্তিশালী করার জন্য অতিরিক্ত সীমান্তরক্ষী বাহিনী এনেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র এটি বাতিল করে দেন এবং বলেন নিরাপত্তা বাহিনীর একমাত্র কাজ হচ্ছে সীমান্ত যাতে অসুরক্ষিত না হয় সেটা নিশ্চিত করা।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী স্মরণ সিং বলেন, পাকিস্তানী সরকার দাবি করে যে তাদের পূর্ব প্রদেশে ঘটনাবলি তাদের একটি অভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং বিশ্ব সম্প্রদায় সেটি মানতে পারবেনা। তিনি দলীয় সমাধার প্রস্তাবনা করেন।
আমাদের ভাতৃবৃন্দ এবং প্রতিবেশিবৃন্দ
তিনি বলেন, ‘ভারতের জন্য এটি একটি বিশেষ উদ্বেগের ব্যাপার,” কারন যাদের বিরুদ্ধে সাঁজোয়া যান এবং ভারী অস্ত্র ব্যাবহার করা হচ্ছে, তারা আমাদেরই ভাই এবং প্রতিবেশী। সেখানে যা হচ্ছে সেটি দ্বারা আমরাও অনাক্রান্ত নই।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রী কিছু প্রতিনিধিদের দাবি নাকচ করে দেন যে ভারতের উচিৎ পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীন সরকারকে যত দ্রুত সম্ভব কূটনৈতিক স্বীকৃতি দেয়া।
“তিনি মন্তব্য করেন, সবকিছুর জন্যই একটি সঠিক সময় রয়েছে” “যদি আমরা এসব ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করি এটার মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হবে। আমি চাইনা এটি একটি বিতর্কিত ব্যাপারে রূপান্তরিত হোক”।
কংগ্রেস পার্টি বিশ্বের সকল জাতির নিকট “এসকল অমানবিক নৃশংসতা থামাতে জরুরি এবং গঠনমূলক ব্যাবস্থা” নেবার আবেদন জানান।