শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
৯৮। বাংলাদেশে পাক সেনাদের হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ পশ্চিম বঙ্গে সভা ও মিছিল | দৈনিক যুগান্তর | ২৮ মার্চ, ১৯৭১
|
পূর্ববঙ্গে জঙ্গী তান্ডবের প্রতিবাদে পঃ বঙ্গ উত্তাল
(স্টাফ রিপোর্টার)
কলকাতা, ২৭শে মার্চ-সমাজের সর্বস্তরের মানুষ আজ পূর্ব বাংলার মুক্তি সংগ্রামের সমর্থনে সভা-সমিতি আর বিক্ষোভ মিছিলে ‘‘পরম আত্মীয় মুজিবর’’কে অকুন্ঠ সমর্থন জানায়। মুজিবরের জয়ধ্বনিতে মহানগরী আজ মুখরিত ছিল। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা ধর্মঘট করে। পথে ১৪৪ ধারা অমান্য করে তারা পাকিস্তান ডেপুটি হাই কমিশন অফিসের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ জানায়।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শ্রী ইয়াহিয়া খানের কুশপুত্তলিকা দাহ করে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের সভা এদিন প্রস্তাব নিয়েছে-বাংলাদেশের গণহত্যা বন্ধ এবং বঙ্গবন্ধু মুজিবরের নিরাপত্তাবিধানের জন্য ভারত সরকার অবিলম্বে জাতিপুঞ্জের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করুন।
দলমত নির্বিশেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ট্রেড ইউনিয়ন, ছাত্র-শিক্ষক-যুবক এবং শিক্ষাবিদগণ জাতীয়তাবাদী-নায়ক মুজিবরের নেতৃত্বে পূর্ব বাংলার মুক্তি সংগ্রামকে সমর্থন এবং সেখানে জঙ্গীশাহীর গণহত্যা বন্ধের দাবী জানিয়ে প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন, বিবৃতি দিয়েছে। তাঁরা দাবী করেছেন-স্বাধীন বাংলাদেশকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় স্বীকৃতি দিতে হবে।
সারা বাংলায় ছাত্র ধর্মঘট
আজ সারা বাংলায় ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়েছে। বিভিন্ন সভায় ছাত্ররা প্রস্তাব নিয়েছে ‘‘পশ্চিম বাংলার গণতান্ত্রিক ছাত্র সমাজের এই সমাবেশ শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে ‘‘বাংলাদেশের’’ স্বায়ত্তশাসনের অধিকারের সংগ্রামকে পূর্ণ সমর্থন করছে। এবং ইয়াহিয়া খান তাঁর নেতৃত্বে যে গণহত্যা অভিযান শুরু হয়েছে তার তীব্র নিন্দা করছে।
এই সভা ভারত সরকারের কাছে সার্বভৌম স্বাধীন সাধারণতন্ত্রী বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং নৈতিক ও বৈষয়িক সাহায্যদান করার দাবী জানাচ্ছে। ’’
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসভায় সভাপতি ছিলেন শ্রী পরিমল রাউত। ষ্টুডেন্টস হলের ছাত্রসভায় শ্রী রণজিৎ গুহ সভাপতি ছিলেন। আলাদা আলাদাভাবে আজকের ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেন দুই ছাত্র ফেডারশন, ছাত্র পরিষদ, ডি-এস-ও, পি-এস-ইউ, এফ-আর-এস ইত্যাদি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগঠনগুলি এবং কয়েকটি যুব সংগঠন। প্রত্যেকটি সংস্থাই আজ কলকাতাসহ রাজ্যের সর্বত্র শান্তিপূর্ণভাবে শিক্ষায়তনে ধর্মঘট সফল হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।