You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
৯৭। পাকিস্তানের দুষ্কৃতিকারীরা আসামে ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চালাচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুখ্যমন্ত্রীর রিপোর্ট দৈনিক ‘হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড’ ২৩ ই জুলাই, ১৯৭১

পাকিস্তানের দুষ্কৃতিকারীরা আসামে ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চালাচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুখ্যমন্ত্রীর রিপোর্ট

আমাদের বিশেষ প্রতিনিধি, নয়াদিল্লী, সেপ্টেম্বর ২ – বলা হচ্ছে যে এর আগে আসাম থেকে যেসব পাকিস্তানি গুপ্তচর ও নাশকতাকারীদের ভারত ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল, তারাই উদ্বাস্তুর ছদ্মবেশে আবার ভারতে অনুপ্রবেশ করছে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী মহেন্দ্রমোহন চৌধুরী দিল্লিতে এসে প্রধানমন্ত্রীকে আসামের বর্তমান নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত করেন। প্রধানমন্ত্রীর ইন্দিরাগান্ধীর সাথে সেই বৈঠকে তিনি তাকে জানান যে নাশকতাকারীরা আসামে ধ্বংসাত্মক কাজ চালাচ্ছে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ নানা গুরুত্তপূর্ন স্থাপনা নষ্ট করতে সচেষ্ট রয়েছে।

জানা যায়, জনাব চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীকে অবিলম্বে বাংলাদেশের সাথে আসামের ১, ৩০০ কিলোমিটার সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করতে বলেন। এপ্রসঙ্গে স্মরণীয় যে এর আগে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে এসে তিনি তাকে আসামে কেন্দ্রীয় সংরক্ষিত বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি করতে বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আজ জানান যে, গত কয়েক সপ্তাহের ভেতর আসাম সরকার ৫০ জনকে পাকিস্তানি চর সন্দেহে গ্রেফতার করেছে। গতমাসে কেচারে একটি ট্রেন উড়িয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করা হয়।

গতকালই মহেন্দ্রমোহন চৌধুরী প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সাথে দেখা করে তাকে জানান যে, এই পরিস্থিতি সামাল দেবার মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আসামের হাতে নেই এবং কেন্দ্রীয় সরকারকেই বরং পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে হবে। তিনি আগামীকাল আবার প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করবেন। মুখ্যমন্ত্রী এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভারতের পূর্বাঞ্চলে মেঘালয়, মনিপুর, ও ত্রিপুরা এই তিনটি প্রদেশ গঠনের জন্য প্রস্তাবিত বিল নিয়ে কথা বলেন।

অন্য এক বৈঠকে, রাজ্যের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী নন্দিনী সাতপথীর কাছে জনাব চৌধুরী, এবং তার সহকর্মী বাসুদেব শর্মা আবেদন জানান যে সীমান্তে প্রচারণা বৃদ্ধি করতে হবে এবং কেচারে নতুন বেতার সম্প্রচারকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে. রাজ্যে পাকিস্তানি গুপ্তচরদের দ্বারা ছড়ানো গুজবে আতংক সৃষ্টি হচ্ছে। জানা যায় সাতপথী তাদের কে বলেন যে কেচারে শীঘ্রই বেতারকেন্দ্র বসানো হবে। এই উদ্দেশে জমি ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু জনাব চৌধুরী তাকে জানান যে আলাদা বেতারভবন নির্মাণ করতে অনেক সময় নষ্ট হবে, তাই বরং অবিলম্বে বাড়ি ভাড়া করে সেখানে বেতারকেন্দ্র স্থাপন করা উচিত। জানা যায় সাতপথী তার প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী এর পরে জ্বালানি তেল ও রসায়ন বিষয়ক মন্ত্রী পিসি শেঠীর সাথে দেখা করে প্রস্তাবিত পেট্রোক্যেমিকাল ভবন নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তে আসতে অনুরোধ করেন। শেঠী তাকে জানান যে পেট্রোক্যেমিকাল ভবনের জমি নির্বাচন এই মাস শেষের পূর্বেই হয়ে যাবে। তিনি আরো জানান যে আগামী মাসে তিনি আসামে ভবনের উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী স্থানীয়সরকার মন্ত্রীকে সি পেন্টের সাথে আসামে তিনটি নতুন রাজ্য স্থাপনের ব্যাপারে কথা বলেন। আগামীকাল তারা আবার মিটিং করছেন।
 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!