You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.08 | বুদ্ধিজীবীদের উদ্যোগে ‘সংগ্রামী স্বাধীন বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি’ গঠিত | দৈনিক আনন্দবাজার - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সূত্র তারিখ
৮৮। বুদ্ধিজীবীদের উদ্যোগে ‘সংগ্রামী স্বাধীন বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি’ গঠিত দৈনিক আনন্দবাজার ৮ই এপ্রিল, ১৯৭১

 
বুদ্ধিজীবী সাহিত্যিক শিক্ষাবিদদের সংস্থা
সংগ্রামী স্বাধীন ‘বাংলাদেশ’ সহায়ক সমিতি

গত ৪ঠা এপ্রিল পশ্চিম বাংলার বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবি, প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, সমাজকর্মী, সাংবাদিক প্রভৃতি ভারতীয় সংস্কৃতি ভবনে মিলিত হয়ে ‘সংগ্রামী স্বাধীন বাংলাদেশে সহায়ক সমিতি’’ নামে একটি সংস্থা গঠন করে। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সম্ভাব্য সকল উপায়ে সাহায্য করা এই সমিতির উদ্দেশ্য।

ইতিপূর্বে মুখ্যমন্ত্রী শ্রী অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা সহায়ক কমিটি (কমিটি ফর অ্যাসিসট্যান্স টু দ্য ফ্রিডম স্ট্রাগল ইন বাংলাদেশ) নামে যে সংস্থা গঠিত হয়েছে, এই সমিতি তাঁর সঙ্গে যোগ রেখে কাজ এবং সমিতির অর্থ সংগ্রহ এবং অন্যান্য সাহায্য ওই কমিটির মাধ্যমে যথাস্থানে পাঠানো হবে।

নতুন এই সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন শ্রী তারা শংকর বন্দোপাধ্যায়। শ্রী সন্তোষ কুমার ঘোষ এবং শ্রী বিনয় সরকার যথাক্রমে কোষাধ্যক্ষ এবং যুগ্ম-সম্পাদক। সমিতির কার্যালয়ঃ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন হল, ৬২, বিপনবিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিট, কলকাতা।

সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত একটি প্রস্তাবে সমিতি বাংলাদেশ পশ্চিম পাকিস্তানী জংগীশাহীর গণহত্যা, ধ্বংসলীলা, নারীধর্ষণ এবং লুণ্ঠনের তীব্র নিন্দা করেন। প্রস্তাবে বলা হয়, ভারত সরকার যেন কালবিলম্ব না করে শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ঔষধাদি এবং অন্যান্য সকল রকম সাহায্য পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

সেদিনের সভায় বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবিদের হত্যার জন্য এবং ওখানে রেড-ক্রসের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার জন্য পাকিস্তানী জংগীশাহীর প্রতি ধিক্কার প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশের অবস্থা নিরুপণ করার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জকে একজন পরিদর্শক পাঠানোর ব্যবস্থা করতেও অনুরোধ করা হয়।

মুক্তিযোদ্ধাদের নানা রকম সাহায্যের দরকার। সকলকে তাঁদের সাধ্যমত দান সমিতির দফতরে শ্রী সন্তোষ কুমার ঘোষের নিকট পাঠাতে অনুরোধ করা হয়েছে।

দৈনন্দিন কাজ চালানোর একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠিত হয়েছে। তার সভাপতি শ্রী এস পি মিত্র।

প্রথম দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন : সর্বশ্রী তুষার কান্তি ঘোষ, মনোজ বসু, এস পি মিত্র, নির্মল ভট্টাচার্য, বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়, শৈবাল গুপ্ত, প্রবোধ কুমার সান্যাল, এন দত্ত মজুমদার, পি বসু মল্লিক, এস কে দত্ত, রঘুবীর চক্রবর্তী, এস ব্যানার্জী, ও পি শাহা। এছাড়া সমিতির আছেন শ্রী সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়, শ্রী এস এন সেন, শ্রীমতি রমা চৌধুরী, শ্রী পি কে বসু প্রভৃতি।

৬ এপ্রিল সমিতির অপর এক সভায় একটি কো-অরডিনেশন কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটিতে আছেনঃ সর্বশ্রী মনোজ বসু, প্রবোধ কুমার সান্যাল, অজিত রায় মুখার্জি, হরেন মজুমদার, নির্মল ভট্টাচার্য, সুশীল রায়, শৈবাল গুপ্ত, সন্তোষ কুমার ঘোষ (শেষোক্ত দুইজন যুগ্ম-আহবায়ক) অন্যান্য যেসব সংস্থা বাংলাদেশের সাহায্যকল্পে কাজ করছেন, কো-অরডিনেশন কমিটি তাদের সঙ্গে যোগ রক্ষা করবেন এবং দেখবেন যাতে সকলের কাজ যুক্ত হয়ে বাংলাদেশের সংগ্রামকে তার লক্ষ্যের পথে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।