You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
৮০। লেট পাকিস্তান স্পিক ফর হারসেলফ ভারতের তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয় প্রকাশিত পুস্তিকা ডিসেম্বর ১৯৭১

পাকিস্তানের নিজের বক্তব্য শোনা যাক

এখন দশদিনের মাঝে আমি হয়ত রাওয়ালপিন্ডি ছেড়ে যাব, যুদ্ধে নেমে যাব।
(প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান, এ.পির রিপোর্ট, ২৫নভেম্বর ১৯৭১)

আমি মিসেস গান্ধীর সাথে সাক্ষাত করব না, তিনি আমার কথাবার্তা পছন্দ করেন না। কিন্তু এই ব্যাপারটা আমার কাছে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয় কারণ, তিনি না পেরেছেন মহিলা হতে- না পেরেছেন দেশনেত্রী হতে।

তাঁর বাবার মত তাঁর কোন গুণ নাই। যদি তাঁর সাথে আমার দেখা হয় তাহলে আমি তাকে বলব- “চুপ থাকুন আপনি। দূর হন আপনি”।
(প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এর সাক্ষাৎকার, প্যারিসের ল্য ফিগারোতে প্রকাশিত, সেপ্টেম্বর ১৯৭১)

মানুষ আমাকে ক্ষমতায় বসায়নি। আমিই বসেছি।
(সাংবাদিক সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান, টাইম ম্যাগাজিন রিপোর্ট, ২ আগস্ট ১৯৭১)

এখন সময় জিহাদের এবং রাজনীতি কিংবা ক্ষমতা হস্তান্তরের সময় নয়।
(মৌলভি ফরিদ আহমদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট, পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি, পাকিস্তান টাইমস, লাহোর, ১২ মে ১৯৭১)

এটা হল ভারতের মিথ্যা আস্ফালন ঠেকিয়ে একে ভাল পথে আনার প্রচেষ্টা। ভারতকে জোর খাটিয়ে থামাতে হয় এবং পাকিস্তান শুধু এটাই করবে।
(কোহিস্তান, লাহোর, ৬ আগস্ট ১৯৭১)

আমাদের সৈনিকেরা পুরোপুরি প্রস্তুত এবং আমাদের এখন যুদ্ধ বার্তার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই।
(ব্রিগ. মোহাম্মদ ইউসুফ, ডেপুটি সাবমার্শিয়াল ল এডমিনিস্ট্রেটর, জঙ্গ, করাচী, ১০ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)

দুদেশের মধ্যে যুদ্ধ এটা নিশ্চিত এবং ধর্মের ভিত্তিতেই যুদ্ধ করা হবে।
(সর্দার আব্দুল কাইয়ুম খান, প্রেসিডেন্ট গভর্নমেন্ট পাকিস্তান অকুপাইড, কাশ্মীর, ডন, করাচী, ১৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)

ভারতের বিপক্ষে জিহাদ ঘোষণার জন্যে পাকিস্তান সরকারের পুরো জাতিকেই প্রস্তুত থাকতে বলা উচিত।
(জামায়াত ই ইসলামিক পার্টির প্রধান, সিন্ধু প্রদেশ, জঙ্গ এর রিপোর্ট, ২৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)

পাকিস্তান নিজে থেকেই যুদ্ধটা করেছে যেন প্রতিবেশী দেশ উচিত শিক্ষা পায়, যেটা সে ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে পেয়েও ভুলে গেছে।
(মওলানা মুফতি মাহমুদ, সেক্রেটারী জেনারেল অফ জামায়াতে ইসলামী, পাকিস্তান টাইমসের রিপোর্ট, লাহোর, ৩০ আগস্ট, ১৯৭১)

ইন্ডিয়াকে ধবংস করে দাও। আমরা জয়ী হবো।
(করাচীর গাড়ি গুলোতে সাঁটানো স্টিকারে ছাপানো, জঙ্গ, করাচী, ৮অক্টোবর ১৯৭১)

উপমহাদেশের মুসলমানদের সাথে হিন্দুদের যুদ্ধ ১০০০ বছর ধরে চলছে এবং যুদ্ধটা ইন্ডিয়ার সাথে বিরোধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলবে।
(জেড. এ. ভুট্টো, পাকিস্তান টাইমসের রিপোর্ট, লাহোর, ২১ ডিসেম্বর ১৯৭১)

গিলগিট ও বাস্তিস্তান এর মানুষেরা রাজ্যের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে স্ট্রাইক করছে মার্চের ১ তারিখ থেকে… বলা হচ্ছে রাষ্ট্র জোরপূর্বক দমন পীড়ন নীতিমালা গ্রহন করে সকল রাজনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধ করে দিয়েছে এবং নাগরিক স্বাধীনতা ও দিচ্ছেনা।
(পাকিস্তান অবজারভার, ৭ মার্চ, ১৯৭১)

কাশ্মীর ইস্যুটাকে মানুষের মনে আবারো জাগিয়ে তোলা দরকার, টেবিল বৈঠক করে বন্ধন মুক্তি ঘটবেনা। রক্তের বিনিময়েই মানুষ অধিকার আদায় করে।
(সর্দার আব্দুল কাইয়ুম খান, প্রেসিডেন্ট, গভর্নমেন্ট অফ পাকিস্তান অকুপাইড, কাশ্মীর, ডন, করাচী, ১২ মে ১৯৭১)

জম্মু ও কাশ্মীরকে যুক্ত না করা গেলে পাকিস্তানে শান্তি ফিরে আসবেনা।
(সর্দার আব্দুল কাইয়ুম খান, প্রেসিডেন্ট, গভর্নমেন্ট অফ পাকিস্তান অকুপাইড, কাশ্মীর, পাকিস্তান টাইমস, লাহোর, ৩১ আগস্ট ১৯৭১)

জে এন্ড কে লিবারেশন লিগের প্রেসিডেন্ট, জনাব কে এইচ খুরশিদ (পাকিস্তানের দ্বারা স্বীকৃত) ঘোষণা করেছেন যে-পাকিস্তান সরকারকে দমন ও নগ্ন করার সকল অপচেষ্টার দায় আজাদ কাশ্মীর সরকারের। প্রথমেই আজাদ কাশ্মীর গভর্নমেন্টকে ঢেলে সাজানো দরকার।
(পাকিস্তান টাইমস, লাহোর, ৯ জানুয়ারী, ১৯৭১)

পাকিস্তান খ্রিষ্টান ডেমোক্রেটিক কাউন্সিলের জেনারেল সেক্রেটারী জনাব এন. পত্রাস ও বাবা স্যামুয়েল নামের ৮৫ বছরের এক বৃদ্ধ সহকারে পাঞ্জাবের কিছু ডিস্ট্রিক্টে চার্চ অবমাননার প্রতিবাদে সোমবারে অনশনে গেলেন। জনাম পত্রাস সাংবাদিকদের বললেন যে কিছু দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে দমন পীড়ন চলছে “তার্কিশ আর্ট অফ লাভ ইন পিকচারস” বইটির পাবলিকেশন এর বিরুদ্ধে যা খ্রিষ্টানদের উপর ডাইভার্ট করা হয়েছে এবং পবিত্র স্থানগুলোতে আঘাত এসেছে।
(পাকিস্তান টাইমস, লাহোর, ১৯ জানুয়ারী, ১৯৭১)

জনান আবদুল হাফিজ কারদার, পাঞ্জাব এসেম্বলির নির্বাচিত মেম্বার ও একজন সাবেক ক্রিকেটার ভারতের হকি খেলোয়ারদের পাকিস্তানে বিশ্বকাপ হকি খেলায় (লাহোরে) আমন্ত্রণে বাঁধা দিয়েছিলেন।

তিনি পাঞ্জাবের খেলোয়ারদের ওয়াই.এম.সি.এ হলের একটি রিসিপশন অনুষ্ঠানে বলেছিলেন- ভারতের সাথে এই প্রতিরোধ প্রতিটা ক্ষেত্রে – প্রতিটি বিভাগে ঘটবে এটাই হল পাকিস্তান পিপলস পার্টির বৈদেশিক নীতি। এবং বর্তমান ইলেকশনের জনগনের ম্যান্ডেটের বিরুদ্ধেই পাকিস্তানে ইন্ডিয়ান টিমের আগমনকে ঠেকানো হবে।
(মর্নিং নিউজ, ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৭০)

কিছুক্ষণ হাইজ্যাকারদের সাথে কথা বলে (যারা লাহোরে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স হাইজ্যাক করেছিল) ভুট্টো বললেন – “আমরা তোমাদের সাথে আছি”।
(পাকিস্তান টাইমস, লাহোর, ১ ফেব্রুয়ারী ১৯৭১)

দুজন হাইজ্যাকারের মাঝে একজন মোহাম্মদ আশরাফ লাহোর এয়ারপোর্টে আসা একজন সাংবাদিককে বলেছিল পাকিস্তানের জনগনের চেয়ারম্যান জনাব ভুট্টো সব কিছু তার উপর ছেড়ে দিতে বলেছেন।

ভুট্টো ঢাকা থেকে ফিরেই হাইজ্যাকারদের সাথে দ্রুত দেখা করতে গিয়েছিলেন।
(পাকিস্তান অবজারভার, ১ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭১)

এয়ারপোর্টে একটা ইন্টারভিউতে ভুট্টো বলেছিলেন তিনি তার দলের লোকেদের নির্দেশ দিয়েছেন তারা যেন জম্মু কাশ্মীরে ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (পাকিস্তানের মদদপুষ্ট)এ যোগাযোগ করে যেন ওরা দুই হাইজ্যাকারকে সকল প্রকারের সাহায্য করতে পারে। ভুট্টো দুই বীর হাইজ্যাকারের অনেক প্রসংশা করেছিলেন।
(ডন, করাচী, ৪ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭১)

আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ মুজিবর রহমান প্লেন হাইজ্যাক করার ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করেন। এবং সরকারের এই ঘটনায় অনুসন্ধান বন্ধ করে দেয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন যেন এই অবস্থার একটা পরিসমাপ্তি ঘটে।
(মর্নিং নিউজ, ঢাকা, ৪ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭১)

আমি একটা লিস্ট বানিয়েছি যাতে সেই সব সাংবাদিকের নাম আছে যারা নির্বাচনের সময়কালে আমার পার্টির বিপক্ষে ছিল এবং সবাইকেই থামিয়ে দেয়া হবে।
(জেড.এ. ভুট্টো, পাকিস্তান টাইমস এর রিপোর্ট, লাহোর, ২১ ডিসেম্বর, ১৯৭০)

পাকিস্তান পিপলস পার্টি পাঞ্জাব ও সিন্ধের বড় অংশ জিতে নিয়েছে। কেন্দ্রের প্রকৃত ক্ষমতা এই দুটো অঞ্চলকে ঘিরেই। কেন্দ্রে কোন সরকারই নেই থাকলেও পি.পি.পির সমর্থন ছাড়া চলতে পারবে?
(জেড.এ. ভুট্টো, পাকিস্তান টাইমস রিপোর্ট, লাহোর, ২১ ডিসেম্বর, ১৯৭০)

পাঞ্জাব ও সিন্ধু এখন আর ক্ষমতার জন্যে উচ্চাভিলাষী নয়। জনগনের গনতান্ত্রিক আন্দোলন এই ক্ষমতার বেষ্টনীর বিপক্ষে।
(জনাব তাজউদ্দিন আহমেদ(এখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী), ডন, করাচী, ২২ ডিসেম্বর, ১৯৭০)।

এমনভাবে পুরো সামাজিক ব্যবস্থাকে গঠন করা হয়েছে যেন বাঙালী সংস্কৃতি কোনকালেই মাথা তুলে দাড়াতে না পারে। এমনকি যে গানগুলো শুনলেই মন ভরে যেত সেই গানগুলো ও নিষিদ্ধ হয়ে যায়। রেডিও টেলিভিশনে ইসলামের নামে রবীন্দ্রনাথের গান প্রচারিত হত না। একটা সুক্ষ্ম চাল ছিল এটা-যেন পূর্ব পাকিস্তানের লোকেদের তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা যায়।
(পাকিস্তান টাইমস এ শেখ মুজিবর রহমান, লাহোর, ১ জানুয়ারী ১৯৭১)

পাকিস্তান একটি মুসলমান রাষ্ট্র এবং এতে ধর্ম নিরপেক্ষ সাম্যবাদী সংবিধান কার্যকর।
(মওলানা সৈয়স আব্দুল আলী মওদুদী, জামায়াতী ইসলামী আমীর, ডন, করাচী, ৪ জানুয়ারী, ১৯৭১)

ঢাকায় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় শেখ মুজিবর রহমান অনুধাবন করলেন যে শুধু বাংলাদেশেই নয় পুরো দেশেই আওয়ামীলীগ সংখ্যাগরিষ্ট। এটা দিয়েই শাসনতন্ত্র রচনা করা যেত। কিন্তু তাঁর দলকে ভুট্টো সাহেব ও অন্যান্যদের কাছে সাহায্য চাইতে হবে।
(পাকিস্তান অবজারভার, ৩০ জানুয়ারী, ১৯৭১)

আওয়ামীলীগের প্রধান, শেখ মুজিবর রহমানকে মিথ্যা অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর উপর অভিযোগ করা হয়েছে যে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের উপর ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। তিনি বলেছেন যদি পশ্চিম পাকিস্তানের প্রাদেশিক অংশ গুলো বাংলাদেশের মত সমান অধিকার না চায় অথবা যদি সমপরিমান অতিরিক্ত ক্ষমতা কেন্দ্রে সমর্পন না করে তাহলে এই ছয়দফা দাবী নিজের অবস্থান হারাবে।

আওয়ামীলীগের এই প্রধান আরো বলেন তাঁর পার্টি কখনোই এই ছয় দফা দাবীকে পশ্চিম পাকিস্তানের প্রাদেশিক অংশগুলোকে জোর পূর্বক আরোপ করার চেষ্টা করেনি।
(ডন, করাচী, ১৫ ফেব্রুয়ারী ১৯৭১)

পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান জনাব জুলফিকার আলী ভূট্টো ন্যাশনাল এসেমব্লীর কার্যক্রম থামানোর দাবী জানালেন। তিনি বললেন যে পিপিপি ন্যাশনাল এসেমব্লীতে একটা গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেছে। উনার পার্টির ৮৫জন সদস্যকে ছাড়া এই সম্মেলন সংগঠিত হলে তিনি জাতীয় আন্দোলন শুরু করবেন। ভুট্টো সাহেব বললেন পিপিপি চায় যে পাকিস্তানের মানুষেরা যারা ঢাকা থেকে এসে ক্ষমতা চায় তাদের উপর প্রতিশোধ নিক। যদি পাকিস্তান না পারে তাহলে পিপিপি নিজেই এই দায় কাঁধে তুলে নেবে। তিনি আর বলেন কেউ যদি এই সেশনে যোগ দেয় তাহলে পার্টি থেকে তাকে বহিষ্কার করা হবে।
(ডন, করাচী, ১ মার্চ, ১৯৭১)

পাকিস্তান ডেমোক্রটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট জনাব নুরুল আমীন এক জবানীতে বললেন- তিনি ন্যাশনাল এসেম্বলির এমন বন্ধ ঘোষণা মোটেই আশা করেননি। তিনি অবাক হয়েছেন।
(ডন, করাচী, ২ মার্চ, ১৯৭১)

বেঙ্গল ন্যাশনাল লীগের জেনারেল সেক্রেটারী জনাব আলী আহাদ( আহাদ গ্রুপ) বলেনঃ “এই ন্যাশনাল এসেমব্লীর নাটকীয় রদ ঘোষণা এই দেশের জনগণের ক্ষমতা বিজয়ীদের হাতে হস্তান্তরের প্রশ্নে একটি সাবোটাজ”।
(ডন, করাচী, ১ মার্চ, ১৯৭১)

এয়ার মার্শাল (রিঃ) নুর খান প্রেসিডেন্টের ঐ মুহুর্তের পরামর্শদাতাদের দায়ী করেন এবং কিছু আমলাকে দায়ী করেন যারা রাজনৈতিক দলগুলোকে ন্যাশনাল এসেম্বলিতে যেতে নিষেধ করেছিল। আমলাতন্ত্র ছেয়ে গিয়েছিল দেশে। এরা জনগণের ক্ষমতা ভয় পেত। তাই “গনতান্ত্রিক সরকার” শব্দটা তাদের কাছে ঈশ্রাফিলের শিঙার শব্দের মতো মনে হত।

ওরা ভুটো সাহেবকে পেল নিজেদের ইচ্ছের ক্রিড়ানক হিসেবে। ভুট্টো সাহেবের একমাত্র ইচ্ছেই ছিল ক্ষমতায় আরোহন করা। উনাকেই আমলারা পেল যে নিজেদের ক্ষমতার জন্যে দেশকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে, যেন তিনি নিজে পশ্চিম অংশ পুরোটা দখল করে নিতে পারেন।
(জাসারাত, করাচী, ৭ মার্চ, ১৯৭১)

বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবিগণ, সাংবাদিক্, রাজনীতিক, সামাজিক এবং ব্যবসায়ী পরিষদ এবং ছাত্র ও কর্মীরা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্যে চাপ দিলেন।
উনারা ভাবলেন পূর্বপাকিস্তানকে পশ্চিম অংশ নিজেদের সকল অধিকার শান্তিমতই দিয়ে দেবে।
(ডন, করাচী, ১০ মার্চ, ১৯৭১)

মুসলিম লীগের প্রধান মুমতাজ মোহাম্মদ খান দৌলতানা অনুধাবন করেছিলেন যে শেখ মুজিবর রহমানের দাবীগুলো যৌক্তিক এবং পাকিস্তানের বর্তমান অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্যে এগুলোকে মেনে নেয়া উচিত।
(ডন, করাচী, ১৪ মার্চ, ১৯৭১)

পাঞ্জাব আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মালিক হামিদ সরফরাজ বললেন যে জনাব জুলফিকার আলী ভুট্টো একটা অস্বস্থিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছেন যা মানুষের কাছে রাজনৈতিক অদক্ষতার প্রমাণ। তিনি আরো বলেন যে পূর্ব পাকিস্তান এখন শেখ মুজিবর রহমানের কথায় চলছে এবং তিনি যদি চান তাহলে এই দেশ দুভাগ হয়ে যাবে সহজেই। কিন্তু এটা সত্যি যে শেখ মুজিব নয় বরং ভুট্টো সাহেবই মূল বিচ্ছিন্নতাবাদী।
(ডন, করাচী, ১৭ মার্চ, ১৯৭১)

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবর রহমানের সাথে দেশের সাংগঠনিক সমস্যার পুনসমাধানের জন্যে বসেছিলেন।
যখন সাংবাদিকেরা শেখ মুজিবর রহমানকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলেন, তখন আওয়ামীলীগের এই প্রধান বললেন- আমার জন্মদিন কি? আমার মৃত্যুদিবসই বা কি? আমি আমার মানুষের মাঝে আছি। আমার মানুষের কোন নিরাপত্তা নাই। ওদের মৃত্যু হচ্ছে।
(পাকিস্তান টাইমস, লাহোর, ১৮ মার্চ, ১৯৭১)

পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ওয়ালি গ্রুপ) বেলুচিস্তান শাখা একটি মিটিং এ শেখ মুজিবর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে মার্শাল ল তুলে দেয়ার জন্যে দাবী জানালো। তিনি ভুট্টো সাহেবে অপেক্ষাকৃত কম শক্তির দলকে ক্ষমতায়নের মাধ্যমে দ্বিজাতিতত্ত্ব নীতির ও বিরোধিতা করেন।
(ডন, করাচী, ১৯ মার্চ, ১৯৭১)

(ইউএন সেক্রেটারী জেনারেল ইউ থ্যান্ট’ এর সমাধির উপর শেখ মুজিবর রহমানের প্রতি অবিচারের বিরুদ্ধে মতামত অঙ্কিত আছে)ঃ

ইউ থ্যান্ট শেখ মুজিবর রহমানের শাস্তি ও পাকিস্তানের আভ্যন্তরীন বিষয়াদির ব্যাপারে সাম্যবাদী ছিলেন। দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনাহুতের মত হস্তক্ষেপের জন্যে পাকিস্তানের জনগন কখনোই ইউ.ট্যান্টকে ক্ষমা করবেনা।
(কোহিস্তান, লাহোর, ১৮ আগষ্ট, ১৯৭১)

শেখ মুজিবর রহমানের মৃত্যুদন্ড কার্যকর বিলম্বিত হওয়া এবং বিশ্বজনমতকে এতে নাক গলাতে দেয়ার জন্যে পাকিস্তান সরকারই দায়ী। মরক্কো, সুদান ও ঈজিপ্ট থেকে সরকারকে শিক্ষা নেয়া উচিত ছিল যেখানে বিশ্বাসঘাতকদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করতে মুহুর্ত ও বিলম্ব হয়না।
(নাবাবী ওয়াক্ত, লাহোর, ১৬ আগষ্ট, ১৯৭১)

পাকিস্তান সরকারের দ্রুত সমস্ত কারাবন্দীদের মুক্তি দেয়া উচিত। সরকারের উচিত রাজনৈতিক নেতাবৃন্দের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া, অনেক মানুষ যারা ভিন্ন মতাবলম্বী তারা বিনা বিচারে কারাবন্দী আছে তাদের ওয়ারেন্ট তুলে নেয়া।
(মীর গাউস বক্স বিজেঞ্জো, প্রেসিডেন্ট, বেলুচিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ওয়ালী গ্রুপ), ডন এর রিপোর্ট, করাচী, ৩০ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১)

… এবং তারআগে
“দুটো জাতি-জিন্নাহ সাহেব! প্রত্যেকটা প্রদেশে মুখোমুখি? সব শহরে? সব গ্রামে?
‘দুটো জাতি- প্রত্যেকটা প্রদেশে মুখোমুখি। সব শহরে এবং সব গ্রামে এবং এটাই একমাত্র সমাধান।
‘একটা ভয়াবহ সমাধান জিন্নাহ সাহেব’।
“এটা ভয়াবহ, কিন্তু একমাত্র সমাধান”।
(জনাব এম.এ. জিন্নাহ এডওয়ার্ড থমসনের সাথে একটা ইন্টারভিউতে, এনলিস্ট ইন্ডিয়ান ফর ফ্রিডম এর বাণী, লন্ডন, ১৭৪০, ৫২ নং পৃষ্ঠা)

পাকিস্তান জয় করার জন্যে রক্তপাতই একমাত্র পথ, এবং দরকার হলে অমুসলিমদের হত্যা করা হবে, এবং তা হবে মুসলমানদের জন্যে অহিংস।
(সর্দার আব্দুর রব নিসার, ৩০ জুলাই, ১৯৪৬)।

পাকিস্তান একটা বাধ্যবাধকতার মাঝে আছে, এটা আন্তর্জাতিক হোক বা অন্য যেকোনভাবেই হোক, এটাই কাশ্মীরে সৈন্য পাঠাতে বাধা দিচ্ছে।
(স্যার মোহাম্মদ জাফরুল্লাহ খান, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী, করাচীতে ৮সেপ্টেম্বর, ১৯৪৮)

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস রুম থেকে উল্লসিত লাখো জনতার উদ্দেশ্যে লিয়াকত আলী খান ঘোষণা করেনঃ ‘আজ থেকে আমাদের প্রতীক হবে এটা এবং জানালা দিয়ে তিনি তার মুষ্টিবদ্ধ হাত বের করে রাখলেন।
(ডন, করাচী, জুলাই ২৮, ১৯৫১)

যদি জাতিসংঘ নিজেদের চোরের দল প্রমান করে, এতে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা প্রমান করবই যে আমরা কাশ্মীর আমরা আমাদের অস্ত্র দিয়েই স্বাধীন করতে পারি।
(মিয়ান মুমতাজ দৌলাতানা, চীফ মিনিস্টার পাঞ্জাব,
জমিনদার, লাহোর ১৭ জানুয়ারি, ১৯৫২)

আমরা যদি ইসলামের দিক-নির্দেশনা মোতাবেক বাঁচতে চাই এবং আমাদের সঠিক ইসলামের ছাঁচে তৈরি করতে চাই, তাহলে আমাদের শত্রুদের আমাদের তলোয়ার এর শক্তি দিয়ে যাচাই করতে হবে। আমি নেহেরু কে সাবধান করেছি যদি সে তার দৃষ্টিভঙ্গি না বদলায়, পাকিস্তানিরা দিল্লি অভিমুখে অগ্রসর হতে এবং ভারতীয়দের একটি শিক্ষা দিতে দ্বিধা করবেনা।
(এ এম কোরায়েশী, পশ্চিম পাকিস্তানি বিধানসভা সদস্য,
মুসলমান, করাচী, ৮ মার্চ, ১৯৫৬)

তাদের(নেহেরু এবং ভারত) কে জবাব একমাত্র যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ও সিয়েটোর সহায়তায় কাশ্মীর দখল ও বাংলাদেশ চুক্তি করেই দেয়া যাবে।
(নয়া রশ্মি, করাচী, ১ এপ্রিল ১৯৫৬)

আমাদের উচিৎ ভারতের সাথে সকল প্রকার আলোচনা বন্ধ করে দেয়া এবং চূড়ান্ত ফয়সালা করা। এবং এই ফয়সালা একমাত্র যুদ্ধের মাধ্যমেই হতে পারে। আল্লাহ আমাদের সাথে আছে।
(প্রি এলাহী বক্স, সাবেক মন্ত্রী, সিন্ধু প্রদেশ
নয়া রশ্নি, করাচী, ১৬ এপ্রিল ১৯৬৫)

আমরা প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে প্রস্তুত, আক্রমণাত্মক এবং আত্মরক্ষামূলক উভয়ই, যেকোন দেশের সাথে যারা আমাদের একমাত্র শত্রু ভারতের বিপক্ষে আমাদের সাহায্য করবে।
(সর্দার আব্দুর রব নিশতার, সভাপতি, মুসলিম লীগ, লাহোর ২৬ নভেম্বর, ১৯৫৬)

আমরা তাদের(বাগদাদ চুক্তিতে ব্রিটেনকে) আমাদের আত্মরক্ষাজনিত কারনে। আমাদের প্রথম দায়িত্ব আমাদের প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করা, নির্দিষ্টভাবে ভারতের বিপক্ষে অন্য কেউ যাই বলুক না কেন।
(মালিক ফিরোজ খান নূর, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তান
পাকিস্তান টাইমস, লাহোর, ৮ ডিসেম্বর, ১৯৫৬)

আমরা বামপন্থীদের অধিকরণ, অনুপ্রবেশ ও আগ্রাসন নিয়ে ব্যাপক উদ্বিগ্ন। আমরা আমাদের তাদের প্রভাব থেকে যতদূর সম্ভব সরিয়ে রাখতে চাই। পৃথিবীর শান্তি আসলে মুক্ত গণতন্ত্রের হাতেই নিহিত।
(এইচ.এস সোহরাওয়ার্দী, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লস এঞ্জেলেসের একটি সংবাদ সম্মেলনে,
সিভিল ও মিলিটারী গেজেট, ১৭ জুলাই ১৯৫৭)

এটা বিশ্বাস করা কষ্টকর যে পকিস্তানের একজন প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলতে পারেন যে আমরা ১১ বছর ধরে কাশ্মীর দ্বন্দের সমাধার জন্য ভারতকে শুধু যুদ্ধের হুমকিই দিয়ে আসছি। কিন্তু তবুও জনাব নুন এটা বলেছেন সোমবারে।
(লিডার, করাচী, ৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৮)

মানুষ এখনো প্রথম এবং সবচেয়ে কার্যকরী অস্ত্র যুদ্ধের। এবং পাকিস্তান যেহুতু সর্বশ্রেষ্ঠ বাহিনী সেহুতু তারা ভারত বা যেকোন পশ্চিমা দেশকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে নিজেদের স্বাধীনতা সংরক্ষন ও হেফাজত করতে।
(চৌধুরী গোলাম আব্বাস, সভাপতি, জম্মু এবং কাশ্মীর মুসলিম সম্মেলন
ডন, করাচী, ২২ ডিসেম্বর ১৯৬২)

পশ্চিম পাকিস্তানের অজনপ্রিয় সরকারের একটি প্রচলিত রীতি হয়ে দাড়িয়েছে যে সর্বদা দেশের জনপ্রিয় রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ভারতীয় দালাল বলা।
(সংবাদ, ঢাকা, ৮ ডিসেম্বর, ১৯৬৪)

কিছুদিন ধরেই শাসকগোষ্ঠী গনতন্ত্রকামী অভ্যুত্থান কে দমন করার জন্য শুধুমাত্র পুলিশের উপর আর অধিক নির্ভর করছেনা। বরঞ্চ হিটলার ও মুসোলিনির পদাঙ্ক অনুসরন করে একদল ভাড়াটে গুন্ডা নিরস্ত্র দেশবাসীর উপর লেলিয়ে দিয়েছে।
(দৈনিক ইত্তেফাক, ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর, ১৯৬৪)

১৯৫৮ সালে ক্ষমতা দখলের পর, আইয়ুব খান ভারত কে উত্তরীয় দেশগুলোর হুমকি মোকাবেলায় একটি যৌথ সামরিক চুক্তির প্রস্তাব দেন। সে রাতেই সেই বিপদ জাদুবলে উধাও হয়ে যায় এবং রাতারাতি উত্তর বন্ধু হয়ে যায় এবং পাশাপাশি নিরন্তর ভারতবিরোধী কথার জেহাদে লিপ্ত হয়। যথারীতি কাশ্মীর নিয়ে একটি চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়। পরিস্থিতি এমন মনে হচ্ছে যেন পাকিস্তানি শাসকেরা ভারতের সাথে ঝামেলা করার ব্যাপারে মনস্থির করেছেন।
(‘ভীমরুল’ দৈনিক ইত্তেফাক, ঢাকা, ১৩ ডিসেম্বর, ১৯৬৪)

কাশ্মীরকে ভারতের ইউনিয়নের সাথে একীভূত করার পদক্ষেপে বাধা দিতে এক হাজারের ও বেশী যোদ্ধা আজ যুদ্ধবিরতি রেখা অতিক্রম করবে।
(মাশরিক, লাহোর, ২৯ জানুয়ারি, ১৯৬৫)

একীভূত করার পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একমাত্র জবাব হল জিহাদ করা; পাকিস্তানের জাতিসংঘ থেকে পদত্যাগ করা উচিৎ।
(জং, করাচী, ১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৫)

আমরা যুদ্ধ-ভীত নই, এবং যুদ্ধের সময় যুদ্ধে যেতে দ্বিধা করবনা।
(ডন, করাচী, ১১ মার্চ, ১৯৬৫)

আমাদের উচিৎ একটি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়া, একটি জিহাদের প্রস্তুতি নেয়া।
(ডন, করাচী, ২২ মার্চ, ১৯৬৫)

আমি আমাদের সৈনিক প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ করছি এখনি আক্রমণ করতে, কারন প্রতিবাদে কাজ হবেনা।
(ডন, করাচী, ২৩ মার্চ ১৯৬৫)

দুর্নীতিগ্রস্থ রাজনৈতিক ব্যবস্থা যেটা দেশের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে সেটাকে গণতন্ত্রের সাথে তুলনা দেয়া যায়না।
(দৈনিক ইত্তেফাক, ঢাকা ২৩ মার্চ, ১৯৬৫)

১৯৫৬ সালের গনতান্ত্রিক সংবিধান দূরে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। জনগন সকল প্রকার মৌলিক ও রাজনৈতিক অধিকার হতে বঞ্চিত। এমনকি জাতি, ধর্ম, বর্ন, গোত্র নির্বিশেষে জনগণের ভোটাধিকার, যেটি বিদেশী শাসনের সময় ও বলবৎ ছিল, যেটির অধীনেই পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেই অধিকার জনগনের থেকে কেড়ে নেয়া হয়েছে। জনগনের অর্থনৈতিক মুক্তি আজ অধরা স্বপ্ন। আজকের সরকার কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক কোটিপতি ও পুঁজিপতি কে অবাধ সুযোগ দিয়েছে তাদের মুনাফা বাড়ানোর। অথচ অপরদিকে ১০ কোটি মানুষ আজ প্রচণ্ড দারিদ্র্যে দিনানিপাত করছে ও দেউলিয়া হয়েছে। অল্পকিছু মানুষ আমাদের শিল্প ও অর্থনৈতিক উন্নতির সুবিধাভোগী। একদিকে লাখো মানুষের ক্ষুধা এবং অন্যদিকে অল্পকিছু মানুষের সমৃদ্ধি ও ঐশ্বর্য- এটাই পাকিস্তানের বর্তমান চিত্র।
(সংবাদ, ঢাকা, ২৩ মার্চ, ১৯৬৫)

যাদের দৃষ্টি স্বার্থপরতার প্রবৃত্তি দ্বারা আচ্ছন্ন আমরা তীব্রভাবে তাদের বিপক্ষে। তাদের সৎ বা অসৎ যেকোন উপায় ভালো যদি সেটা তাদের নিজেদের খিদমত করতে পারে। তাদের উদ্দেশ্য আত্মতুষ্টি দেশের কল্যাণ নয়।
(ফাতিমা জিন্নাহ, ডন করাচী, ১৩ এপ্রিল ১৯৬৫)

কাশ্মীরের সমস্যা সমাধানে জিহাদই একমাত্র পন্থা।
(পাকিস্তান টাইমস, লাহোর ২৮ শে এপ্রিল, ১৯৬৫)

যখন রনে যুদ্ধ চলছিল, ভারতের একমাত্র বিমানবাহী রণতরী ভিকরান্ত, এবং অন্যান্য ট্যাংকার গুলো পাকিস্তানের একটি সাবমেরিন দেখে আরব সাগরে পালাতে বাধ্য হয়েছিল।
(জং, করাচী, ৩ মে, ১৯৬৫)

হাজার হাজার রাজাকার যুদ্ধবিরতি ভাঙতে প্রস্তুত এবং কাশ্মীরে প্রবেশ করে তাদের ভাইদের মুক্ত করে আনতে প্রস্তুত।
(সর্দার রহমতুল্লাহ, রাজ্য পরিষদের সদস্য,
পাকিস্তান টাইমস, ১৭ মে ১৯৬৫)

পাকিস্তান সরকারের উচিৎ যুদ্ধবিরতির বিপরীতে তাদের আপত্তি জানিয়ে দেয়া এবং কাশ্মীরকে একটি পূর্নাঙ্গ জিহাদ শুরুতে সাহায্য করা।
(সর্দার আব্দুল কাইয়ুম খান,
ডন, করাচী, ২৫ মে ১৯৬৫)

গত সাত বছরেও আমরা কোন নির্বাচন দিতে পারিনি তাদের নিজস্ব সরকার নির্বাচন করে নিতে, এটা আমাদের কাজের কোনভালো প্রতিফলন নয়। দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদ ছাড়া বাকি সকল পদই অ-কাশ্মীরী নাগরিক দ্বারা পদায়ন করা। তিক্ত সত্য এটাই যে আমাদের থাকাকালীন সময়ে আজাদ কাশ্মীরে আমরা আমাদের অজনপ্রিয় করে তুলেছি, এবং ইহা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।
(সিভিল ও মিলিটারি গেজেট, ৫ জুন ১৯৬৫)

আমরা যেকোন ভারতীয় ষড়যন্ত্রে চীনের সাহায্য প্রাপ্তি সুভাগ্য মনে করব।
(আজাদ, ঢাকা, ৬ জুন, ১৯৬৫)

আজ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেই শুধু অসমতা নয় বরং প্রশাসনিক, কার্যনির্বাহী এবং বিধানিক ক্ষেত্রেও অসমতা বিরাজমান। কারন যেকোন বিধানিক প্রস্তাবেই প্রেসিডেন্ট ভেটো দেন। প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থাতেও চরম অসমতা। পূর্ব-পাকিস্তানিরা কারো হাঁস-মুরগীর খাবার নয় এবং হতেও চায়না। অনেক ক্ষেত্রেই পূর্ব-পাকিস্তানিদের মতামত বা কল্যাণ অগ্রাহ্য করেই নানারকম রীতিনীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এগুলো তেমন কোন ব্যাপার হত না যদি আমাদের একটি গনতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত সরকার যেখানে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা মন্ত্রীসভার নিকট থাকত এবং মন্ত্রীসভা একটি সার্বভৌম সংসদের নিকট দায়বদ্ধ থাকতেন।
(নুরুল আমিন, পূর্ব পাকিস্তান পরিষদে,
পাকিস্তান অবজার্ভার, ঢাকা, ৬ জুলাই ১৯৬৫)

ভারতের সাথে যুদ্ধের ঘটনায় পাকিস্তানের সৈন্য দিল্লি পর্যন্ত মার্চ করবে, লাল দুর্গ অধিকার করবে এবং পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করবে।
(পাকিস্তান টাইমস, লাহোর, ১১ জুলাই, ১৯৬৫)

পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ এই তথ্য হতেই জানা যায় যে, পুর্ব পাকিস্তানের প্রতিটি গ্রামে পশ্চিম পাকিস্তানি কর্মকর্তা।
( এ.এম.কামারুজ্জামান, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে,
পাকিস্তান টাইমস, লাহোর ২০ জুলাই, ১৯৬৫)

ভারত বিশ্ববাসীকে বোঝানোর চেষ্টা করছে যে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাবহৃত অস্ত্র কেবল পকিস্তান থীক আসতে পারে। এটা বিশ্বাস করা বোকামী যে অস্বাভাবিক সরকারের বিপক্ষে যেকোন জনপ্রিয় প্রতিরোধ অস্ত্রের অভাবে আজকের পৃথিবীতে বেশীদিন টিকে থাকবে।
(পাকিস্তান, লাহোর টাইমস, ১৭ অগাস্ট, ১৯৬৫)

কাশ্মীরিরা যুদ্ধবিরতিতে কোন পক্ষ না, এবং যুদ্ধবিরতি রেখা অতিক্রম করার অধিকার তাদের রয়েছে।
(ডন, করাচী, ২২ অগাস্ট, ১৯৬৫) 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!