You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
৬০। বিবিসিতে প্রচারিত মার্ক টালির সাথে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতকার দি ইয়ার্স এন্ডেভার ১৬ নভেম্বর ১৯৭১

একটি গুরুতর অবস্থা

প্রশ্ন: প্রধানমন্ত্রী, শরণার্থীদের সংকটে আপনি বলেছেন অন্যান্য দেশগুলোর উচিৎ পাকিস্তানের ওপর চাপ দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি দূরীভূত করতে সাহায্য করা যাতে শরণার্থীরা ফিরে যেতে পারে। আপনি কি ধরনের চাপ দেবার কথা বোঝাচ্ছেন?
প্রধানমন্ত্রী: পাকিস্তান অন্যান্য দেশ থেকে সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য পাচ্ছে। এটা থেকে বোঝা যায় যে তারা কোন সাহায্য পূর্ব বাংলায় করবেনা। এটা বেশী দিন চলতে দেয়া যায়না।

প্রশ্ন: কিন্তু আপনি কি মনে করেন এই মুহুর্তে অন্য দেশ এমন কিছু করতে পারে?
প্রধানমন্ত্রী: বেশ উন্মুক্তভাবে বললে; আমি সত্যিই নির্দিস্ট কিছু দেখতে পারছি না। তবে আমি নিশ্চিত কিছু মানুষ আশাবাদী হয়ে জন্ম নেয়। তাই আমি মনে করি সবচেয়ে জটিল সমস্যা ও সমাধান করা যায় যদি কেউ খুঁজে পেতে ইচ্ছুক হয়।

প্রশ্ন: এটা জিজ্ঞাসা করতে সম্ভবত একটু বিব্রত লাগছে। আপনি কি এ ব্যাপারে আমেরিকান সরকারের মনোভাব সম্পর্কে বিশেষভাবে চিন্তিত?
প্রধানমন্ত্রী: আমি আমেরিকান সরকারকে বিছিন্ন করব না কারণ আমি মনে করি যে অনেক সরকার এই বিষয়ে বিব্রত বোধ করছে। উদ্বাস্তুদের সংখ্যা বেশী হবার কারণে এবং আমাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতা কম হবার কারণে আমাদের ব্যাপারে ইতিবাচক অবস্থান নিতে সমস্যা হয়। জনগণের দৃষ্টিও উদ্বাস্তু ইস্যুর কারণে বিভক্ত আছে। আমরা তাদের সহানুভূতি চাই। এটা খুবই দু: খজনক হবে যদি সব মনোযোগ উদ্বাস্তু দের উপর গিয়ে পরে – সমস্যার মূল কারণ এড়িয়ে।

প্রশ্ন: এর কি কোনো প্রতিকার নেই?
প্রধানমন্ত্রী: পূর্ব বাংলার সমস্যার সমাধান করলেই এটা ঠিক হয়ে যাবে।

প্রশ্ন: কিন্তু আপনি আরও নির্দিষ্টভাবে বলবেন কি যে কিভাবে সমস্যার সমাধান হবে?
প্রধানমন্ত্রী: প্রথমে আমার মনে হয় পূর্ব বাংলার জনগণ এবং তাদের নির্বাচিত নেতারা কি চান সেটা দেখা উচিৎ।

প্রশ্ন: তাদের পূর্ণ অধিকার বলতে আপনি কি বুঝাতে চান? স্বায়ত্তশাসন নাকি স্বাধীনতা?
প্রধানমন্ত্রী: এই মুহূর্তে উভয় পক্ষে তিক্ততা এবং ঘৃণা রয়েছে। পূর্ব বাংলার মানুষ কে হত্যা করা হয়েছে। ২৫ মার্চ রাতে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র এবং অনুষদ সদস্যদের অনেককে হত্যা করা হয়েছে সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে। এমনকি এখনো নিহত হচ্ছে বুদ্ধিজীবি, অল্পবয়সী ছেলেমেয়ে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক।

প্রশ্ন: আমার মনে হয় ভারত যেভাবে উদ্বাস্তু দেখাশোনা করছে তা সার্বজনীন প্রশংসা লাভ করেছে। তারপরেও কিছু লোক কেন ভারত শরণার্থী শিবিরে একটি বৃহৎ জাতিসংঘের দলের উপস্থিতির অনুমতি দেবনা সেটা বলছে – যে সুপারিশ পাকিস্তান করেছিল – এই প্রশ্নের যথাযথ জবাব কি?
প্রধানমন্ত্রী: U.N. পর্যবেক্ষকদের ইতিমধ্যে দশ জন সেখানে আছে। সেটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সংবাদপত্রের ওপর কোন সেন্সরশীপ নেই। যারা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন তাদের ওপর কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। এবং আমাদের নিজেদের ও অন্যান্য দেশ থেকে যারা আছেন কারো উপরে নিষেধাজ্ঞা নেই। তাহলে U.N. পর্যবেক্ষক দলের উদ্দেশ্য কী হবে? যদি একশ U.N. পর্যবেক্ষক আসে এটা কোন ব্যাপার না। কিন্তু আসলে তাদের কোন কাজ থাকবেনা।

প্রশ্ন: পূর্ব পাকিস্তানে গেরিলাদের কারণে সেখানে অস্থিরতা আছে। ভারত তাদের ব্যাপকভাবে আশ্রয় দিচ্ছে বলে রিপোর্ট আছে। আপনি কী মনে করেন এই আশ্রয় ও সহায়তা প্রত্যাহার করলে পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা কিছুটা শান্ত হবে?
প্রধানমন্ত্রী: অবশ্যই না। এর বিপরীতে আমার মনে হয় এটা খুব খারাপ হবে। আপনারা জানেন আমাদের সীমান্তে যে মানুষ আসছে বা যাচ্ছে তা বন্ধ করতে পারবেন না। এমনকি একটি ব্রিটিশ দল আমাদের এখান থেকে না জানিয়ে ভারত ত্যাগ করে সেখানে গেছে এবং ফিরে এসেছে। আপনারা জানেন পূর্ব বাংলার সুবিশাল জনসংখ্যার অনেকে ইংল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য বিভিন্ন দেশে বসবাস করছে যারা এই আন্দোলনকে সমর্থন করে। উপরন্তু গেরিলা কার্যক্রম সমস্ত পূর্ব বাংলায় হচ্ছে – শুধু বর্ডারে নয়। এবং তাদের আধাসামরিক বাহিনী আছে যারা আগে-ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস, ইস্ট বেঙ্গল রাইফেলস এ ছিল যাদের কিছু অস্ত্রও ছিল।

প্রশ্ন: প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে আপনি বলেছেন “গরিবি হটাও ‘ অর্থাৎ দারিদ্র্য নির্মূল কর। এখন পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে শরণার্থীদের বোঝা আসায় ভারতীয় অর্থনীতি খুব নির্মম পরিস্থিতিতে আছে। এই মুহুর্তে ভারতীয় অর্থনীতির অবস্থা কি?
প্রধানমন্ত্রী: অর্থনীতি যেমন স্বাস্থ্যবান হবার কথা তেমন নয়। সমস্যা আরো তীব্রতর হচ্ছে, যদি কেউ মনে করে আমাদের পতন হচ্ছে তাহলে তাদের বলছি, ভারতীয় জনগণ তাদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিখছে। তাদের বিরাট বোঝা বহন করার ধৈর্য আছে। আমার মনে হয় কষ্ট সহ্য করার ধারণক্ষমতাও অসীম।

প্রশ্ন: ভারতের পররাষ্ট্রনীতি সংক্ষেপে জানা যাবে? সোভিয়েত – ভারত শান্তি চুক্তি নিয়ে কিছু মানুষ চিন্তিত কারণ ভারত সবসময় জোট নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। চুক্তিটি ভারতের এতদিনের কর্মকান্ডের সাথে সামঞ্জশ্যপূর্ন নয়।
প্রধানমন্ত্রী: কিন্তু এমনটা তারাই ভাবছেন যারা নিজেরাও জোট নিরপেক্ষতার বিপক্ষে। এই চুক্তি কোন ভাবেই জোট নিরপেক্ষতাকে বাধাগ্রস্ত করেনা। আমরা আমাদের নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এবং আমাদের নিজস্ব পদক্ষেপ নেয়ার স্বাধীনতা রাখি।

প্রশ্ন: ভারত বলে যে তারা চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে চায়। রাশিয়ার সাথে চুক্তির ফলে সেই সম্ভবনা তো আর থাকছে না।
প্রধানমন্ত্রী: কেন নয়? সম্ভবত আপনারা দেখেছেন জনাব চৌ এন লাই কি বলেছেন। তিনি বলেন, এতে কোন সমস্যা হবেনা।

প্রশ্ন: আপনি কি পাকিস্তান – চীন সম্পর্কে চিন্তিত নন?
প্রধানমন্ত্রী: না।

প্রশ্ন: জাতিসংঘের সম্পর্কে কি অবস্থান? ভারত সবসময় জাতিসংঘে চীন এর এন্ট্রিকে সমর্থিত করেছে। আপনি কি মনে করেন যে এখন যেহেতু চীন অন্তর্ভুক্ত তাই জাতিসংঘের দক্ষতা বাড়বে না কমবে?
প্রধানমন্ত্রী: আমি মনে করি এটি উত্তর দেবার মত কোন প্রশ্ন না। আমি সত্যিই জানি না এটা কিভাবে কাজ করতে যাচ্ছে। কেবল ভবিষ্যতই বলতে পারে। কোন কারণ নেই কম দক্ষ হবার। আপনি বলতে পারেন এটা অন্য দিক মোড় নিতে পারে।

প্রশ্ন: এখন কি আমরা সাহায্য ও বাণিজ্য চালু করতে পারব? প্রেসিডেন্ট নিক্সনের ডলার রক্ষা করার জন্য একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন সিনেটের এইড বিলে। আপনি কি মনে করেন এতে করে বাণিজ্য যুদ্ধ হতে পারে?
প্রধানমন্ত্রী: স্বাভাবিকভাবেই এটা আমাদের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত আমেরিকানদের। আমাদের শুধু তারা যা করবে তার সাথে মিলিয়ে ব্যাবস্থা নিতে হবে।

প্রশ্ন: আমি জানি যে ভারত আই এম এফ এর সম্প্রতি যে নীতি ঘোষণা করেছে তার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে কারণ সেখানে অনুন্নত দেশের দিকে নজর দেয়া হয়নি। আপনি কি মনে করেন ওইসব দেশকে এর আওতায় আনা সম্ভব?
প্রধানমন্ত্রী: আমার স্বার্থ শুধুমাত্র এই সব অনুন্নত দেশের ব্যাপারে। কারণ ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে বিভাজন বেশী হলে তা শুধুমাত্র বিশ্বের অস্থিরতা বাড়াবে। এবং আমি মনে করি এই ভাসমান মুদ্রা খুব সহায়ক হবে না। আমরা আরো স্থিতিশীল অবস্থা চাই।

প্রশ্ন: সর্বশেষে আমি শুধু জানতে চাই ভারত ও পাকিস্তানের পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার সর্বশেষ দৃষ্টিভঙ্গি কি?
প্রধানমন্ত্রী: আমি মনে করি যে প্রধান সমস্যা সীমান্ত নয়। আমি মনে করি মানুষ মৌলিক বিষয়টি জানতে চায়। আপনি যদি আসল সমস্যার মূল দিকটা না সমাধান করে কাজ করেন তাহলে এক সময় মূল সমস্যাটা আরও প্রকট আকার ধারণ করবে।

প্রশ্ন: কিন্তু আপনি কতদিন এই অবস্থা আরও গুরুতর হয়ে যুদ্ধের দিকে চলে যেতে পারে বলে মনে করেন?
প্রধানমন্ত্রী: এটা এখন আরও গুরুতর হয়ে যাচ্ছে।

প্রশ্ন: ভারতের মধ্যে প্রচুর শরনার্থি প্রবেশ করছে যা বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষন করেছে। ভারত এই অবস্থায় কেমন বোধ করছে?
প্রধানমন্ত্রী: আমাদের কিছু করার নেই। পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। এটি ভারতের অর্থনীতি, স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা ও দেশের অখণ্ডতার উপর হুমকি।

প্রশ্ন: কিন্তু পশ্চিম ইউরোপ থেকে সফর করে আপনি কি মনে করেন যে এই সব দেশ ভারত-এর জন্য তাদের যে সহমর্মিতা প্রকাশ করেছে, তা থেকে তারা কিছু বাস্তব পদক্ষেপও নেবে?

প্রধানমন্ত্রী: যদিও এখানে মানুষ উদ্বিগ্ন, কিন্তু ইউরোপ সবসময়, ইউরোপীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্বের দিকে তাকায়। অন্য দিকে এশিয়া ও আফ্রিকার সব অন্যান্য দেশ তাদের নিজস্ব সমস্যার কারণে অন্যদের নিয়ে চিন্তার সময় পায়না। ইউরোপীয় অনেক দেশ উপমহাদেশে ‘ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করে। তাই আমি মনে করি এই প্রশ্ন তাদেরকে করুন – কারণ তারাই বলতে পারবেন ভারত দুর্বল, নাকি অস্থিতিশীল; ভারত এশিয়ার শান্তির জন্য কোনো দরকারী কিছু করতে পারবে কিনা।

প্রশ্ন: আপনি কি বলবেন যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আপনার বৈঠক সফল হয়নি যেহেতু আপনি মনে করেন আপনি বোঝাতে ব্যার্থ হয়েছেন?
প্রধানমন্ত্রী: না, আমি হতাশ নই। প্রথমত, আমি কখনো বিশেষ কিছু আশা করিনা। এখন প্রশ্ন হল তারা অনুধাবন করেছেন কিনা অথবা তারা গভীরভাবে এটা সম্পর্কে কিছু করতে চান কিনা।

প্রশ্ন: কাশ্মীরের সমস্যার মত দীর্ঘ ইতিহাস দেখে, মানুষ কি একরকম বিশ্বাস করবে যে এটাও দীর্ঘদিন ধরে চলতে পারে?
প্রধানমন্ত্রী: কোন মানুষ? আপনারা দেখছেন অন্য সব কিছুই আগের মত আছে – ভারত ছাড়া। অন্য দেশ কি ভাবছে তাঁর উপর আমরা নির্ভরশিল না। আমরা জানি আমাদের কি লাগবে এনং আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব। আমরা যে কোন দেশ থেকে সাহায্যকে স্বাগত জানাই। কিন্তু যদি তা না আসে তবু ভালো।

প্রশ্ন: পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তে সামরিক পরিস্থিতি কেমন আপনি কি বলতে পারবেন? কারণ এটা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান গত সপ্তাহে সাঁজোয়া বাহিনী এবং সেনা বাহিনীকে অবস্থান নিতে আহবান জানিয়েছেন যা ইঙ্গিত করে যে যুদ্ধাবস্থা আসছে।
প্রধানমন্ত্রী: আমরা যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। যেহেতু সেনারা নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে জানে, তাই উভয় সীমান্তে তারা প্রস্তুত আছে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এর সেনা মোতায়েনের আগে চিন্তা করা উচিৎ। আমাদের সেনা শুধুমাত্র তখনই সরানো হয় যখন আমরা মনে করি যে আমাদের নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে। আমার কোনো সন্দেহ নেই আমরা এখনো প্রস্তুত না। আমি আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে এর আগে আমরা দুইবার পাকিস্তান দ্বারা আক্রান্ত হয়েছি।

প্রশ্ন: কিন্তু গত সপ্তাহে জানা যায় কিছু ব্যাটেলিয়ন সেখানে কর্মযজ্ঞ করেছে আর কিছু বিমান সেখানে নিযুক্ত ছিল। প্রায় পাঁচশত হতাহত হয়েছে। এটাই কি সীমান্তের চিত্র?
প্রধানমন্ত্রী: আমার এতে সন্দেহ আছে। সীমান্ত জুড়ে সেখানকার কিছু নেতা বিশ্ব ফোরামে কিছু কথা বলে যাচ্ছেন যা আসলে সত্য নয়। এমন কথা এর আগেও শুনেছি অনেক।

প্রশ্ন: কিন্তু সেখানে কিছু কামানের গোলা ব্যাবহ্রিত হয়েছে। পূর্ব দিকে কি নেই?
প্রধানমন্ত্রী: হ্যাঁ, কিছু গোলাবর্ষণ হয়েছে।

প্রশ্ন: তারা কি এখনো চালিয়ে যাচ্ছে?
প্রধানমন্ত্রী: আমি তাই মনে করি।

প্রশ্ন: সীমান্তে উত্তেজনা আপনি কিভাবে দেখছেন তাহলে?
প্রধানমন্ত্রী: হ্যাঁ, এটা খুবই উত্তেজনাকর।

প্রশ্ন: যুদ্ধের পরিবেশ কি থেমে যাচ্ছে নাকি আরও ঘনীভূত হচ্ছে?
প্রধানমন্ত্রী: যুদ্ধ একটি মন্দ জিনিস। ভারত সবসময় যুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। আজ আমরা মনে করি যে, ভারতীয় জনগণের স্বার্থ যেমন বিবেচ্য তেমনি এশিয়ায় শান্তি তথা বিশ্বের শান্তি, স্থিতিশীলতা, অখণ্ডতাও বিবেচ্য। এটাই মূল বিষয়।

প্রশ্ন: হ্যাঁ, আমি সত্যি বলতে চাচ্ছি যে ভারত যুদ্ধের দিকেই যাচ্ছে হয়তো। যদিও আপনি বলেছেন এটা এড়িয়ে যাবার ব্যাপারে আপনি খুব মনযোগী। তবুও বলব পরিস্থিতি যদি যুদ্ধের অবশ্যম্ভাবিকতার দিকে যায় তাহলে আপনি কি থামাতে পারবেন?
প্রধানমন্ত্রী: আমরা এটা থামিয়েছি। তাহলে যদি শান্ত না থাকতাম এবং সংযত না হতাম তাহলে খারাপ দিকেই যেত যুদ্ধ পরিস্থিতি। আমি বা আমার সরকারের কেউ কি যুদ্ধের পক্ষে একটি শব্দও উচ্চারণ করেছে? কিন্তু আপনারা যদি অন্য পক্ষের কিছু বক্তব্য শোনেন তাহলে দেখবেন তারা পাবলিকলি কিভাবে ইঙ্গিত দিয়ে কথা বলেছেন।

প্রশ্ন: আপনি কি মনে করেন পাকিস্তান আক্রমণ করতে পারে?
প্রধানমন্ত্রী: নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা। এটি নির্ভর করবে আগ্রাসন এর উপর। ১৯৬৫ সালে হাজার হাজার অনুপ্রবেশকারীদের পাঠানো হয় কিন্তু তারা তা স্বীকার করেনি। কিন্তু পরে জানা গেল যে সেটি আগ্রাসন ছিল এবং উদ্যেশ্য ছিল সেনাবাহিনীর জন্য পথ পরিষ্কার করা।

প্রশ্ন: আপনি কি বিশ্বাস করেন উদ্বাস্তুদের ঢোকার ব্যাপারে কঠোর হলে অবস্থা কিছুটা ভালো হবে? হয় কূটনৈতিক অথবা সামরিক? এখন কি পরিস্থিতি অনুকূলে আছে?
প্রধানমন্ত্রী: আমি জানি না পরিস্থিতি এর অনুকূলে আছে কিনা। কিছু কাজ সম্পন্ন করা বাকি আছে। আমরা পাকিস্তান সমস্যার সাথে নিজেদের ভারাক্রান্ত করতে চাচ্ছিনা। তাদের সমস্যা খুব বড়। নির্বাচনে প্রচুর লোক তাদের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। বর্তমান সরকারের তত্ত্বাবধানেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল ভোট। তাই জুলুম, হত্যা বা সীমান্ত জুড়ে পুশ করা শুরু করে তারা। তাই কেন আমরা অন্য দেশের সমস্যা আমাদের মাথায় নেব? এর কি কোন যুক্তি আছে?

প্রশ্ন: কিন্তু আপনি কতটা দৃঢ় প্রত্যয়ী? আপনি যা বলেছেন তা কতটা বিশ্বাসযোগ্য?
প্রধানমন্ত্রী: আমি কোন কিছু বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ করতে আগ্রহী নই। আমি আমার দেশের জনগণের ভবিষ্যত এবং বর্তমান নিয়ে চিন্তিত। তারা আমাকে বিশ্বাস করে এবং আমি তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারিনা।

প্রশ্ন: আপনি প্রথম পদক্ষেপ বলেছেন উদ্বাস্তুদের প্রবেশ থামাতে হবে কিন্তু কিভাবে?
প্রধানমন্ত্রী: গণহত্যা, ধর্ষণ, গ্রাম পোড়ানো থামাতে হবে।
প্রশ্ন: আপনি অবস্থার উন্নতির জন্য প্রথম পদক্ষেপের কথা বলেছেন। বলেছেন উদ্বাস্তুদের দেশত্যাগ বন্ধ করতে হবে। কিন্তু ভারত যে গেরিলাদের সাহায্য করছে যারা পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে লড়াই করছে। আপনি কি মনে করেন না যে গেরিলাদের সাহায্য করা বন্ধ করলে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হবে?
প্রধানমন্ত্রী: তার মানে কি বলতে চাচ্ছেন আমরা হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়ার ইন্ধন দিচ্ছি? প্রথম কী ঘটেছিল? ব্রিটিশ সংবাদপত্র, ফরাসি, আমেরিকার পত্রিকাসমূহ, কানাডিয়ান সংবাদপত্র, আরব সংবাদপত্রের সংবাদদাতাদের হিসাব অনুযায়ী কত জন মানুষ নিহত হয়েছে তার আগে? গেরিলাযুদ্ধ শুরু হবার অনেক আগে থেকেই গণহত্যা চলছিল।

প্রশ্ন: কিন্তু আমি আসলে পরিস্থিতি থামানোর ব্যাপারে বলছিলাম।
প্রধানমন্ত্রী: এখন প্রশ্নটা কি তাহলে? প্রশ্নের অর্থ কি আমরা ইন্ধন দিচ্ছি? আমরা যদি গণহত্যা সমর্থন করতাম তাহলে এটা কি থামানো যাবে? আপনি কি মনে করেন মানুষের সামনে তাঁর পরিবারের মহিলাদের ধর্ষন করবে আর তারা বসে বসে দেখবে? অবশ্যই না – আমরা এই পরিস্থিতি থামাতে চাই। সেখানে যা হচ্ছে তা সবচেয়ে খারাপ ধরনের যুদ্ধ, সবচেয়ে খারাপ ধরনের নৃশংসতা।

প্রশ্ন: কিন্তু গেরিলাদের না থামিয়ে কিভাবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে থামানো যায়? তারা তো তাদের দেশের শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য তেমনটা করতে বাধ্য থাকবে। তাই প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে কি করতে পারেন আপনি?
প্রধানমন্ত্রী: হিটলার যখন তাণ্ডব চালাচ্ছিলেন তখন আপনারা কেন বলেননি। আসুন চুপ থাকি – শান্তি কামনা করি জার্মানির। ইহুদীরা মরুক, বেলজিয়াম মরুক, ফ্রান্স মরুক। আপনি কি বলবেন তখন সব নিশ্চুপ ছিল?

প্রশ্ন: কিন্তু কিভাবে তাহলে এই প্রথম ধাপ নিয়ন্ত্রণ করার প্রস্তাব করেন …?
প্রধানমন্ত্রী: আমরা বিশ্ব সম্প্রদায়কে সজাগ করছি। তারা সংবাদপত্র থেকে জানতে পারছে কি হচ্ছে। লোকজন তথ্য দিচ্ছে। আমরাও আমাদের বেশীর ভাগ খবর নিচ্ছি ব্রিটিশ, অ্যামেরিকানসহ বিদেশী পত্রিকাগুলো থেকেই।

প্রশ্ন: তাহলে কি আপনি সমস্যা নিষ্পত্তির জন্য বিস্তৃত রূপরেখা দিতে পারবেন?
প্রধানমন্ত্রী: আমরা বাংলাদেশের জনগণের নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নিতে পারিনা। এটা শুধুমাত্র তারা নিজেরা নিতে পারেন। কিন্তু আমি কেবল বলতে পারি যেহেতু ইতিমধ্যে একটি গণতান্ত্রিক ও মুক্ত নির্বাচন হয়েছে। এই অবস্থায় আরেকটি নির্বাচন করা প্রহসনমূলক।

প্রশ্ন: কিন্তু আপনি বলেছেন যে উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ঠিক করার দরকার – তাতে যদি পূর্ন স্বাধীনতা এই মুহুর্তে অর্জিত না হয় তবুও। স্বায়ত্তশাসন কি পূর্ণ স্বাধীনতার চেয়ে কম নয়?
প্রধানমন্ত্রী: এটা সম্পূর্ন তাদের উপর নির্ভর করে। এটা আমরা দেখাতে চাইনি। এটা তাদের দেখানোর বিষয়। আমরা কোন বিশেষ খেলার কথা বলছিনা যে তারা একটি পদক্ষেপ নিলে তারপরে আমরা নেব। আমরা লাখ লাখ মানুষের জীবন সম্পর্কে কথা বলেছি।

প্রশ্ন: আপনার সাম্প্রতিক বক্তৃতায় আপনি বলেছেন যে আপনি একটি আগ্নেয়গিরির উপর বসা, আমি মনে করি আপনি একটি খাঁচার ভিতরে বসা যেটি সব সমস্যা থেকে দূরে। আপনি বলেছেন পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্য স্থিতিশীলতা আনতে হবে – কিন্তু সেটা কিভাবে সম্ভব?
তাদের একত্রিত করবেন কিভাবে?
প্রধানমন্ত্রী: আমরা জানি না তারা কিভাবে একত্রিত হবে। এটা আমাদের উদ্বেগের বিষয়। যদিও বিষয়টি পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক শাসক এবং পূর্ববাংলার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে। পাকিস্তানের সেনা আমাদের পূর্ব সীমান্তেও জড়ো হচ্ছে। তাই একটি খাঁচার ভিতরে বসে থাকার অবস্থা আমাদের নেই। এর মানে এই নয় যে আমরা কিছু জানিনা। আমরা সজাগ আছি। তবে আমরা জানিনা পূর্ববাংলার জনগণ কী করবে। তাদের সিদ্ধান্ত তারাই শুধু নিতে পারে।

প্রশ্ন: কিন্তু আপনি যখন পুর্ব পাকিস্তান মুক্তকারিদের সাহায্য করছেন তখন তো আপনি হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারেন না। আপনি জড়িত আছেন এবং আপনাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতির আলোচনার প্রস্তাব দিলেও আপনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এটি কি আপনার অবস্থানের সাথে একটি স্ববিরোধিতা নয়?
প্রধানমন্ত্রী: একদম না। আপনি কি চান যেসব মানুষ ভারতে প্রবেশ করছে আমি তাদের হত্যা করি? ঠেকাতে হলে রাস্তা একটাই তাহলে তাদের খুন করতে হবে। এছাড়া আসলে আর কোন পথ নেই।

প্রশ্ন: না, অবশ্যই না। আমি তা সুপারিশ করি না।
প্রধানমন্ত্রী: কিন্তু তেমনটাই মনে হয় —

প্রশ্ন: কিন্তু আমি ভাবছি আপনি কেন আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন? এটা কি গুরুত্বপূর্ণ নয় – অন্তত বড় কোন ঝামেলা হবার আগে?
প্রধানমন্ত্রী: কার সাথে কিসের কথা? এখন পর্যন্ত, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সবাইকে বলছেন যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক। এখন, হয় সে জানে না কী ঘটছে বা তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে মিথ্যা বলছেন। যেটাই হোক, সেক্ষেত্রে আলাপের ভিত্তি কি?

প্রশ্ন: আপনি কি মনে করেন ভারত উপ-মহাদেশের দুই দেশের বিভাজনের ফলে এটা ব্যর্থ হয়েছে?
প্রধানমন্ত্রী: আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছি ভারতীয় জনগণ পুরো জিনিসটার বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু আমি ও আমাদের নেতারা মনে করেছি এই ভাবে শান্তি আনতে হবে। এটা ভারতকে এগিয়ে নেবার এবং ভারতের দরিদ্র মানুষের জন্য একটি ভাল জীবন গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। তারা এটা গ্রহণ করেছিল এবং আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ছিলাম না। পাকিস্তানের জনগণের প্রতি আমার বন্ধু সুলভ মনোভাব আছে। তারা একটি সামরিক শাসন চালাচ্ছে যা তাদের জনগণের জন্য কল্যাণকর না।

প্রশ্ন: পূর্ববাংলায় যা হচ্ছে তা কি ভারতকে বিপদের সংকেত দেয় না?
প্রধানমন্ত্রী: তেমনটা নয়।

প্রশ্ন: এতে কি ভারতের মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতাও বাড়তে পারে?
প্রধানমন্ত্রী: না না। কারণ আমরা আমাদের মানুষের সাথে মোকাবেলা করতে পারি এবং আমরা দেখি যখন তাদের বৈধ ক্ষোভ তারা প্রকাশ করে আমরা তা সমাধান করি।

প্রশ্ন: আপনি কি দেখছেন যে উপমহাদেশে ক্ষমতার অপব্যাবহার ও রাজ্যের ভাষাগত পার্থক্যের কারণে যে পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে তা কি আপনি ঠেকাতে পারবেন?
প্রধানমন্ত্রী: হ্যা মানুষ বোঝা খুব কঠিন। আমাদের ১৬ টি ভাষার লোকদের মাঝে; ২০ টিও হতে পারে – কোন বৈরিতা তৈরি করার পরিকল্পনা আমাদের নেই। আমরা মনে করি আমরা এক। আমাদের মাঝে কোন দ্বন্দ্ব থাকলেও জরুরী অবস্থায় আমরা এক থাকতে পারি। আমাদের সীমানা জুড়ে যা হচ্ছে অথবা তিন বছর যে খরা হয়েছিল তখন আমরা এক ছিলাম।

প্রশ্ন: আপনি ঠিক বলেছেন। এক সপ্তাহ আগে প্রচুর উদ্বাস্তু আপনার উপর এসে পড়ল – তখন কেবল আপনি জগণের ম্যান্ডেট পেয়েছিলেন। ভারতের আমূল পরিবর্তন এবং সংস্কারের উপর প্রতিশ্রুতিশীল হয়ে আপনি জয়ী হয়েছেন। কিন্তু এখন শরণার্থী সমস্যার কারণে আপনি বিপদগ্রস্ত। নির্বাচনী অঙ্গীকার এর ব্যাপারে এই মুহুর্তে আপনার অবস্থান কি?
প্রধানমন্ত্রী: শুনতে অবাক লাগতে পারে ভারতীয় মানুষের সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা ও পরিপক্বতা পশ্চিমাদের চেয়ে বেশী। তাদের ক্ষোভ আছে, দাবি আছে। কিন্তু অসুবিধার সময়ে আমরা একসঙ্গে দাঁড়াতে পারি। আমাদের কষ্ট সহ্য করার অসীম ক্ষমতা আছে। যদি আমাদের তা করা লাগে আমরা করব।

প্রশ্ন: আমি বলতে চাচ্ছি আপনি কি মনে করেন আপনি আপনার কথা যদি পূরণ করতে না পারেন তাহলে গণতন্ত্র নিজেই ভূলুণ্ঠিত হবে?
প্রধানমন্ত্রী: না। ভারতে এমনটি হবেনা। গণতন্ত্র পৃথিবীর সব দেশ থেকে চলে যেতে পারে – কিন্তু ভারত থেকে নয়। শুধুমাত্র বিদেশীরাই ভাবে যে গণতন্ত্র হুমকির মুখে। আমি কখনই এক মুহুর্তের জন্যও তা বিশ্বাস করি না।

প্রশ্ন: কিন্তু আপনি নিজে কেমন বোধ করেন যখন আপনি দেখেন যে ভারতে যে পরিবর্তনের ভিত্তিতে নির্বাচিত হয়েছে এটা এখন বিপন্ন হতে চলেছে?
প্রধানমন্ত্রী: হ্যাঁ, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা আমাদের দারিদ্র্য হ্রাস করেছি। আমাদের বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবিচার ও বৈষম্য আছে এখনো। কিন্তু কিছু ব্যাপার তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ – বিশেষ করে যেখানে দেশের স্বাধীনতা জড়িত। আমি মনে করি রাজনৈতিক দলগুলোও – হোক ডানে/বামে বা কেন্দ্রে – তারাও আমাদের নিরাপত্তা ইস্যুতে আমাদের সাথে থাকবে।

প্রশ্ন: অত্যন্ত সংক্ষিপ্তভাবে, প্রধানমন্ত্রী, পরিশেষে, আপনাকে এই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করার জন্য বলা হয়েছে। আমাদের ভাগ্য আসলে দুই বা তিন শত বছর পরে নির্ধারিত হবে। তবু সেই সময়টাকে আপনি কেমন দেখতে চান?
প্রধানমন্ত্রী: প্রথমত অতীতকে ভুলতে হবে। আগের সমপর্ক কেমন ছিল বিশেষ করে সেগুলো। স্বাধীনতার সাথে সাথে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়েছে। এমন সময় ছিল যখন আমাদের তেমন বন্ধুত্বপূর্ন সমপর্ক ছিল না। কিন্তু আমি মনে করি আমরা এখন একটি নতুন ভিত্তিতে বন্ধুত্ব করতে পারি। আরও প্রাসঙ্গিকতার সাথে, উভয় দেশের বিভিন্ন সমস্যায় সাহায্য করতে পারি। পারস্পরিক সুবিধার অবস্থান তৈরি করতে পারি। 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!