সর্বত্র হানাদার বাহিনীর নাভিশ্বাসঃ
মুক্তি সেনাদের অগ্রগতি। কুমিল্লা জেলায় গেরিলা যােদ্ধাদের আক্রমণে পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনীর জনৈক মেজর ও অফিসারসহ ১৪১ জন হানাদার সৈন্য নিহত হয়। গেরিলাযােদ্ধারা উক্ত জেলার বিভিন্ন রাস্তা, সেতু, কালভার্ট ইত্যাদি ধ্বংস করেন এবং জেলার প্রধান যােগাযােগ ব্যবস্থা বিছিন্ন করে দিয়েছেন। ফলে খান সেনাদের কাছে খাদ্য ও অন্যান্য জিনিস পত্র পাঠানাে বন্ধ হয়ে গেছে। এই অঞ্চলেই এক দল রাজাকার প্রচুর অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। আশুগঞ্জের কাছে মুক্তিযােদ্ধারাও হাজার টনের একটি মালবাহী জাহাজ এবং একটি ট্রেনের ৩টি কামরা ধ্বংস করে দেন। সমগ্র জেলাতেই মুক্তি বাহিনীর গেরিলাযােদ্ধারা রেল লাইন তুলে ফেলেন এবং রেল যােগাযােগ ব্যবস্থা অচল করে দেন। গত সপ্তাহে একজন অফিসার-সহ ৪জন বাঙালী সেনা পাকিস্তানী সামরিক অক্টোপাস থেকে কোন রকমে পলায়ন করে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে ভারতের সীমান্ত পেরিয়ে পাঞ্জাবে প্রবেশ করেছেন। গত ৪ঠা অক্টোবর একটি সামরিক জীপে করে উক্ত অফিসার অন্য ওজন বাঙালীকে সাথে নিয়ে ভারতীয় এলাকায় প্রবেশ করেন। গত মার্চ মাসে বাঙালীদের বিরুদ্ধে জঙ্গী সামরিক বাহিনীর আক্রমণ শুরু হওয়ার পর ও পর্যন্ত পাকিস্তান সামরিক বিভাগের ৫০ জনের অধিক বাঙালী ঘৃণাভরে চাকরী ত্যাগ করে ভারতে প্রবেশ করেন এবং তারা পরে মুক্তিবাহিনীতে যােগদান করে শক্র হননের মহান দায়িত্ব নিয়েছেন।
জয়বাংলা (১) ১; ২৪
২২ অক্টোবর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯