মুক্তিবাহিনীর হাতে দুই সপ্তাহে পাঁচশত শত্রু সৈন্য খতম
অক্টোবর মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে পাঁচ শতাধিক শত্রু সৈন্য বাঙলাদেশের রণাঙ্গনে খতম হইয়াছে। প্রত্যেক রণাঙ্গনে গেরিলা যুদ্ধ তীব্রতর হইয়াছে। | মুক্তিবাহিনীর সদর দপ্তর হইতে প্রচারিত সমর-বুলেটিনে প্রকাশ, গত ৪ঠা অক্টোবর কসবায় বড় একটি লঞ্চের উপরে আক্রমণ করিয়া মুক্তিবাহিনী লঞ্চটি ডুবাইয়া দেয়। ইহাতে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র ও গােলাবারুদসহ তৃতীয় পাঞ্জাব রেজিমেন্টের ২০০ সৈন্য খতম হয়। ৩রা অক্টোবর বাঁচারামপুরে অপর একটি লঞ্চ ডুবাইয়া মুক্তিবাহিনী ১০ জন শত্রু সৈন্যকে খতম করিয়াছে। এই এলাকায় অপর একটি অভিযানে গেরিলারা ৩টি স্পিডবােট ও ১০টি নৌকা ডুবাইয়া দেওয়ায় শত্রু পক্ষে ১ জন লেফটেন্যান্ট। কর্ণেল ও ১জন ক্যাপ্টেন সহ ১৪ জন খতম হয়। ঢাকা কুমিল্লা চট্টগ্রাম রণাঙ্গনে গেরিলারা এই সময়ে অনেকগুলি অভিযান পরিচালনা করে। উল্লেখযােগ্য হইতেছে ঃ ৩রা অক্টোবর আনন্দপুর ও ধানিকান্দায় ৬০ জন, ২রা অক্টোবর পশরুরাম চিতােলিয়ায় ৪০ জন ও অপর কয়েকটি অভিযানে ৩০ জন শত্রু সেন্য গেরিলাদের হাতে খতম হয়।
কুমিল্লা জেলার পাঞ্চারা, কোটেশ্বর, অনলপুর ও মােহনপুর এলাকায় অভিযান চালাইয়া মুক্তিবাহিনী ১৭ জন শত্রু সৈন্যকে খতম করে। নােয়াখালিতে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে হানাদারদের সহিত গেরিলাদের কয়েকটি বীরত্বপূর্ণ সামনা-সামনি লড়াই হয়। ৩রা অক্টোবর মুক্তিবাহিনী ফেনির নিকট মুহরি নদী অতিক্রম করিয়া তাহাদের প্রতিরক্ষা ঘাটি তৈরী করে। হানাদাররা খুব খাপ্পা হইয়া গেরিলাদের ঘাটির অত্যন্ত কাছে আসিয়া আক্রমণ চালায়। গেরিলারাও বীরত্বের সহিত সুসংহতভাবে পাল্টা আক্রমণ চালায়। কিছুক্ষণ তীব্র লড়াইয়ের পর হানাদাররা ১৯ জন মৃত সৈন্য রাখিয়া চম্পট দেয়। এই সংঘর্ষকালে এক পর্যায়ে উভয়পক্ষে প্রায় হাতাহাতি লড়াই হয় ও ৪০ জন হানাদার সৈন্য। নিহত হয়।
মুক্তিযুদ্ধ ১ : ১৫
১৭ অক্টোবর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯