বাংলার মীরজাফরদের স্থান নেই
ডিকেডি আমলের কুখ্যাত নরপিশাচ মােনায়েম খা বুলেটের আঘাতে নিহত ১৩ই অক্টোবর। অদ্যরাত্রে ঢাকা শহর কোর্মিটোলা পাকশাহীর কেন্টেমেন্টের অতি সন্নিকটে বনানীতে নিজ বাসভবনে একজন মুক্তিযােদ্ধা কমাণ্ডার আঘাতে বাংলাদেশের বিংশ শতাব্দির অন্যতম বিশ্বাসঘাতক আইয়ুবের একনিষ্ঠ পােষ্যপুত্র সাবেক গর্ভনর আব্দুল মােনেম খা ইহলীলা সম্বরণ করেছেন। ১৯৬৩ হতে ৬৯ সন পর্যন্ত একটানা সাত বৎসর পূর্ব বাংলার গভর্নর থাকাকালে ঢাকা মীরারগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, এক কথায় সারা দেশের বহু দেশপ্রেমিক নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেছে এই পশ্চিমা দালাল বৰ্ব্বর। কুখ্যাত মিথ্যা আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলা এই কুকুরেরই সাহাযের ফল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গুণ্ডা পােষার প্রচলন এই গুণ্ডাদেরই অপকৃতি। আইয়ুব খান মসনদ ত্যাগ করার পূর্বে তাকে গভর্নরের দায়িত্বভার হতে অপসারণ করে জনগনের হাত হতে রক্ষা করার জন্য স্থায়ী বসবাসের জন্য সপরিবারে করাচীতে নিয়ে যায় । কিন্তু সর্বত্র একই অবস্থা বিবেচনায় ঢাকাতেই ফেরৎ আসে ও কুর্মটোলা সেনানিবাসের ছত্র-ছায়ায় অবস্থান করিতে থাকে। কিন্তু কৃত কর্ম তাকে রেহাই দিল না। তাই তাবেদার মালেকের সরকারকে পরামর্শ দিতে গিয়েই স্বাধীনতা যােদ্ধাদের হাতে নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেল মীরজাফররা কেউ বাংলায় রেহাই পায় স্বাধীনতা সংগ্রামের আতঙ্ক প্রহরী বীর মুক্তি যােদ্ধারা রাজধানী ঢাকা শহর পাক বাহিনীর নাকের ডগার উপর এই নরপিশাচকে খতম করে আবার প্রমাণ করল মুক্তিযােদ্ধারা বাংলার শহরে বন্দরে গ্রামে মুক্তি যােদ্ধারা বাংলার ঘরে ঘরে। অস্ত্রসহ রাজাকারের আত্মসমর্পন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সাধারণ ক্ষমা ঘােষণা করার পর গত ১১ই অক্টোবর কালিয়াকৈর পাক দস্যুদের ঘাটি থেকে চারজন রাজাকার অস্ত্র ও গােলাবারুদসহ আমাদের মুক্তিবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পন করে।
জাগ্রত বাংলা ১:৪
১৪ অক্টোবর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯