শিরোনাম | সংবাদপত্র | তারিখ |
শেখ মুজিবের বিচার ও
বিশ্ব প্রতিক্রিয়া |
বাংলাদেশ
টরোন্টোঃ নং৩ |
২৫ আগষ্ট, ১৯৭১ |
শেখ মুজিবের বিচারের ঘোষণা
রাওয়ালপিন্ডি,
আগষ্ট ৯,- “পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পায়তারা” ও অন্যান্য অভিযোগে বিশেষ সামরিক আদালতে “পূর্বপাকিস্তান” নেতা শেখ মুজিবে রবিচার করা হবে, গতকাল এক সরকারী ঘোষণায় এ কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বিচারিক কার্যাক্রম আগামী কাল থেকে শুরু হবে এবং তা হবে রুদ্ধদ্বার বিচার। মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন যে, আইন অনুসারে অপরাধীকে তার স্বপক্ষে লড়ার প্রস্তুতিগ্রহণের জন্য জন্য তাঁর পছন্দানুযায়ী পরামর্শ নিয়োগসহ যথোপযুক্ত সকল সুযোগ সুবিধাদিদেয়া হবে, তবে পরামর্শককে অবশ্যই পাকিস্তানের নাগরিক হতে হবে।
বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়াঃ
জাতিসংঘ, নিউইয়র্ক, আগষ্ট ১০, মহাসচিব থান্ট এই মর্মে হুশিয়ারী জানিয়েছেন যে পূর্ব পাকিস্তান নেতা, শেখ মুজিব, এর পরিণতি “পাকিস্তানের সীমানার বাইরে অনিবার্য প্রতিক্রিয়া” বয়ে আনবে।জনাব থান্ট জানিয়েছেন যে তিনি প্রতিদিন অনেক সরকার কাছ থেকেশেখ মুজিবের ব্যাপারে উদ্দেগ জানতে পারেন, যিনি আওয়ামী লীগ দলের প্রধান। শেখ মুজিব সম্পর্কিত জনাব থান্টের বিবৃতি বলছে যে, মহাসচিবের “মনে হচ্ছে যে এটি একটি মারাত্মক সংবেদনশীল ও কোমলবিষয় যা সদস্য রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পর্কিত, এক্ষেত্রে যা পাকিস্তান।” “এই বিষয়টি মানবিক এর পাশাপাশি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্ন পক্ষের জন্য অত্যন্ত আগ্রহ ও উদ্বেগের বিষয়।”জনাব থান্ট বলেন যে যতক্ষণ পর্যন্ত না কোন রকম সমঝোতায় পৌছা যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত অত্র অঞ্চলে শান্তি ও স্বাভাবিক জীবন যাত্র পুনরুদ্ধার সুদুর পরাহত।
ওয়াশিংটনঃ
আগস্ট ১০, ১১ জন সেনেটর আহব্বান জানিয়েছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার শেখ মুজিবের প্রতি সমবেদনা দেখানোর ব্যাপারে তাদের ‘গভীর আশার’ কথাপাকিস্তানকে বোঝাতে সক্ষম হবে। সেনেটর ফ্রেড আর হ্যারিস যিনি অক্লামের ডেমোক্রেট বলেছেন যে শেখমুজিবের মৃত্যু হলে তাঁর প্রতি অনুগত মিলিয়ন পূর্ব পাকিস্তানি অস্থিরতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে এবং এটা হচ্ছে ঠিক সেই সময়ে যখন যেকোন সময়ে ইন্ডিয়া পাকিস্তানের মাঝে যুদ্ধ শুরু হতে পারে।
ওয়াশিংটন
আগষ্ট ১১, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলয়াম রজার্স পাকিস্তানকে এইমর্মে হুশিয়ার করেছেন যে যদি পূর্ব পাকিস্তান নেতা শেখ মুজিবের বিচারে কোন [সংক্ষিপ্ত বিচারিক ব্যবস্থা] গৃহীত হয় তবে এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে যুদ্ধের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।জনাব রজার্স ইংগিত দেন যে, যদি গোপন সামরিক আদালতে বিচারাধীন শেখ মুজিব’কে [পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পায়তারার দোষে মৃত্যুদন্ড কিংবা দীর্ঘমেয়াদী কারাদন্ড দেয়া হয় তবে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন হারাতে পারে।]
প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো এর পক্ষে পাকিস্তানে কানাডার হাইকমিশনার প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে শেখ মুজিবের ভাগ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে [উদারতার ও মানবিকতার মূল্যায়ন] অনুসরণের জন্য অনুরোধ করেছেন। যদিও বিচারিক প্রক্রিয়াটি পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ বিষয়, তবুও কানাডার সরকার অনুধাবণ করছে যে এর ফলাফল আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া বয়ে আনবে বলে একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন।