You dont have javascript enabled! Please enable it!

শিরোনামঃ ‘বাস্তব মেনে নিন’
সংবাদপত্রঃ বাংলাদেশ টুডে ভলিউম ১ নং ৫
তারিখঃ ১ নভেম্বর, ১৯৭১

বাস্তবতা মেনে নিন
বিচারপতি চৌধুরীর জাতিসংঘ সদস্যদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান

বৈদেশিক সম্পর্কে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের বিশেষ প্রতিনিধি এবং ১৪ সদস্যের বাংলাদেশের জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল এর নেতা জনাব বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর জাতিসংঘের প্রতি উদাত্ত আহ্বান, “কাগজে কলমে সম্ভাবনার কথা ভাবা থেকে সরে বাস্তবে নেমে আসুন, বাস্তবতাই বাংলাদেশ।’’

জনাব চৌধুরী নিউ ইয়র্কে পিটিআই কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পরই যুদ্ধ করছি। এবং আমাদের কোন সন্দেহ নেই যে জয় আমদের ই হবে। “

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাকে অবশ্যম্ভাবী করে তোলা ঘটনাগুলোর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন , “আমাদের এখন একটাই কাজ বাকি, তা হচ্ছে ইয়াইয়া খানের পশ্চিম পাকিস্তানের শেষ সৈনিককেও বঙ্গোপসাগরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া।’’ তিনি মুক্তিবাহিনী ও অগণিত তরুণ সম্প্রদায়কে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন যারা এই কাজে জড়িত ছিলেন।

যখন পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের প্রতিনিধিদল থেকে জাতিসংঘে যাওয়া কতিপয় বাংলাদেশী ব্যক্তিবর্গের পরিচয় নিয়ে জিজ্ঞেস করা হয় তখন বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতা অসহমত পোষণ করেন এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, “তাদের কে এখানে তাদের ভয়ংকর নেতার (ইয়াহিয়া) বার্তাবাহক হিসেবে পাঠানো হয়েছে এবং জাতিসংঘের দরবারে তাদেরকে প্রতারক হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জনাব চৌধুরী আরো যুক্ত করেন, “এই স্বদেশদ্রোহী সদস্যদের পরিবারকে ঢাকায় জিম্মি করে রাখা হয়েছে। ইয়াহিয়া খান যেভাবে চান সেভাবে যদি তাঁরা কথা না বলেন তাহলে তাদের পরিবারের উপর প্রতিশোধ নেয়া হবে। সুতরাং, আমি বলতে চাইছি, এই ভদ্রলোকেরা নিজেদেরই প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন না কারণ তাঁরা বন্দুকের নিশানার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন।’’

উপনির্বাচন আটকে রাখা এবং বাংলাদেশে তথাকথিত বেসামরিক সরকার নিয়োগের ব্যাপারে ইয়াহিয়া খানের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে জনাব চৌধুরী চতুরতার সাথে বলেন, “ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে । প্রতারকরা স্বাধীনতার দেরী করাতে পারবে না। শেষ মহাযুদ্ধে তারা দ্রুত তাদের পরিণতি বরণ করে নিয়েছিল, এবং বাংলাদেশেও একইভাবে করবে।’’

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!