You dont have javascript enabled! Please enable it!
        শিরোনাম          সংবাদপত্র          তারিখ
  মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযান      বাংলাদেশ টুডে*

সংস্করণ ১ : নং ৮

    ১৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

 

[*বাংলাদেশ টুডে : গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ, মুজিবনগর সরকারের লন্ডনস্থ বাংলাদেশ মিশনের প্রচার বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত একটি পাক্ষিক।]

মুক্তিবাহিনীর অগ্রাভিযান
(বিশেষ প্রতিনিধি হতে)

অপমানিত এবং ক্লান্ত পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনী তাদের নিহত সহযোদ্ধাদের জন্য শোক পালন করার পাশাপাশি নিজেদের ও একইরকম পরিণতির জন্য অপেক্ষা করছিল বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা,মুক্তিবাহিনী, মুক্তিফৌজের হাতে,যাদের সংখ্যা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে কৌশল ও দক্ষতা ও ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুদ্ধচলাকালীন গত পঁচিশ সপ্তাহে ভয়ানক রক্তপিপাসু জান্তা ইয়াহিয়া খানের আদেশ পালনের মূল্য ২৫,০০০ পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্য তাদের জীবন দিয়ে দিয়েছে।শুধুমাত্র গত সপ্তাহেই ৭০ জন পাকিস্তানী সৈনিকের মৃতদেহ বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকায় আনা হয়।এতে কোন সন্দেহ নেই যে পশ্চিম পাকিস্তানী নওজোয়ানরা মানুষ এবং অর্থ উভয়ক্ষেত্রেই তাদের পেশার মূল্যের প্রতি আশংকাজনক ভাবে প্রশ্ন তোলা শুরু করেছে।
বর্বর আক্রমণকারীদেরকে গেরিলা আক্রমণ এবং হত্যা করার পাশাপাশি মুক্তিবাহিনীর প্রধান পরিকল্পনা ছিল যোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিকল করে দেওয়া। “দি টাইমস” এর সূত্র অনু্যায়ী, ৯০% ক্ষুদ্র সেতু এবং ব্রিজ রাস্তায়। এবং, পশ্চিম পাকিস্তানী প্রচারকরা এই কৌশল এবং দক্ষতা সবসময়ের মত ভারতীয়দেরই হতে পারে বলে গণ্য করার কারণে দূর্বল হয়ে পড়েছে।
এটি একটি বহুল পরিমাণে প্রমাণিত সত্য যে, বাংলাদেশী গেরিলাদের যুদ্ধক্ষমতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।ঢাকায় সামরিক বাহিনীর অনেক বাধানিষেধ থাকা সত্ত্বে ও এমতে,ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জের সকল রেল সম্বন্ধীয় নিয়ম কানুন অমান্য করে গত শুক্রবার একটি যাত্রীবাহী ট্রেনে গেরিলা কর্তৃক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
বর্তমানে সিলেট,রংপুর এবং কুমিল্লার কাছাকাছি সীমান্ত এলাকায় ঢাকার দিকে অগ্রসর গেরিলাদের নিয়মিত তৎপরতা রয়েছে। বিস্তৃত সীমান্ত এলাকা পুরোপুরিভাবে মুক্ত এবং বেশীরভাগ গ্রামীণ এলাকাই আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে। “দি ডেইলি টেলিগ্রাফ” এর মিস ক্লেয়ার হলিংসয়ারথ ঢাকার ৪০ মাইলের আশে পাশে একটি গণ্যমান্য এলাকায় বাংলাদেশী পতাকা উড়তে দেখেছেন বলে দাবী করেন।
ইয়াহিয়া খানের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর বিজয় অনিবার্য। এই অনিবার্যতার কারণ শুধুমাত্র মুক্তিবাহিনীর সামরিক দক্ষতাই নয়,বরং সহযোগিতা যা আমাদের নির্ভীক মুক্তিসেনারা দেশের জনগণের কাছ থেকে পাচ্ছে যাকে মিস হলিংসওয়ারথ “মানুষের কাছে বাংলাদেশ” নামে অভিহিত করেন।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!