You dont have javascript enabled! Please enable it!

শিরোনামঃ ভয়ঙ্কর বুদ্ধিজীবী নিধন
সংবাদপত্রঃ বাংলাদেশ ভলিউম ১: নং ২৭
তারিখঃ ২২ ডিসেম্বর, ১৯৭১

বাংলাদেশে পাকিস্তানের ভয়াবহ বুদ্ধিজীবী হত্যা

ইন্দো-বাংলা যৌথ বাহিনীর কাছে আসন্ন পরাজয়ের আগে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর প্রধানসহ আরো কিছু অফিসার মিলে বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবীদের হত্যার একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করে। ৬ ডিসেম্বর তারিখে ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন সর্বভৌম এবং পৃথক আইনী সত্ত্বা হিসেবে ঘোষণা দেয়ার পর ঢাকা ক্যান্টমেন্টের জেনারেলের অফিসে হত্যা করার জন্য কম করে ৭ হাজার বুদ্ধিজীবীর তালিকা করা হয়েছিল।

৭ থেকে ১৩ ডিসেম্বর, পাকিস্তানী হানাদার সেনাবাহিনী দ্বারা এই ষড়যন্ত্রটি নিখুঁত ভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছিল যার ফলশ্রুতিতে এই ছয় রাতে পুরো প্রদেশে শত শত বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছিল। ঢাকায় হত্যাকান্ডের সংবাদ বাংলাদেশের বিশিষ্ট পণ্ডিত ও বুদ্দিজীবিদের হত্যাকান্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে।মোহাম্মদপুর এবং অন্যান্য স্থানের আশেপাশে মৃতদেহ গুলো এখন খোলা মাঠে পড়ে আছে এবং পঁচতেছে। এটা স্পষ্ট প্রতীয়মান যে তারা যে পরিমাণ হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছিল সে পরিমাণে হত্যা করতে পারে নাই তবে তারা তাদের সাধ্যমত সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছে।মুখোশ দিয়ে মুখ ঢাকা একদল সশস্ত্র লোক দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, ডাক্তার, সরকারী কর্মকর্তা সহ সব বিশিষ্ট নাগরিকদের হয় তাদের কর্মস্থল থেকে অথবা বাসা থেকে পিকাপে তোলা হয়েছিল এবং পরে তাদেরকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছিল এবং খোলা মাঠে ও ঢাকার রাস্তায় ফেলে রেখে গিয়েছিল। এখন পর্যন্ত হত্যাকান্ডের শিকার হওয়া যাদের নাম জানা গিয়েছে তারা হলেন অধ্যাকাপক মুনীর চৌধুরী, ডাঃ রাব্বি, ডাঃ আবুল খায়ের, শহিদুল্লাহ কায়সার, সিরাজুদ্দিন হোসাইন, ডাঃ আলীম চৌধুরী, ডাঃ গিয়াসুদ্দিন আহমেদ।

এটা গণহত্যার চাইতে বেশি ছিল। এটা বুদ্ধিজীবী হত্যার চাইতে বেশি ছিল, এটা এমন একটি গণহত্যা ছিল যার উদ্দেশ্য ছিল নতুন জন্ম নেয়া বাংলাদেশের সেরা নাগরিকদের হত্যা করা। ইতিহাস এর আগে কখনও একটি জাতির এমন ভয়াবহতা, আপত্তিকর ঠাণ্ডা মাথার হত্যাকান্ড প্রত্যক্ষ করেনি।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!